সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় নজর দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীরে অবনতি। নানাভাবে অর্থ অপচয়। কর্মপরিবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।প্রতিকার: ... বিশদ
মার্চের শুরুতেই সূর্যের চোখরাঙানি শুরু। খাতায় কলমে যে বসন্ত, কে বলবে! দিনের বেলায় বাইরে বেরলেই ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা। এই সবে শুরু, আগামীদিনে আরও প্রখর রোদ্দুর অপেক্ষা করে বসে আছে। তাই এই তীব্র তাপদাহের মধ্যে শরীরকে ঠিক রাখতে খাবার সম্পর্কে একটু বিশেষ সচেতনতা দরকার বইকি। তবে জানলে অবাক হবেন, এই কঠিন সময়টাকে নির্ঝঞ্ঝাটে কাটিয়ে দেওয়ার সমস্ত খাদ্য প্রকৃতি আমাদের সামনেই সাজিয়ে রেখেছে। এবার এমনই কিছু সব্জি এবং শাকের সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক যা আপনার শরীরকে গ্রীষ্মের নানা সমস্যা থেকে রেহাই দিতে পারে—
ঝিঙে— ঘামের সঙ্গেই শরীর থেকে বেরিয়ে যায় সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরিনের মতো দরকারি ইলেকট্রোলাইটস। এই ঘাটতি পূরণের কাজে ঝিঙে হতে পারে আপনার হাতের কাছের অন্যতম বিকল্প। কারণ ঝিঙের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে সোডিয়াম, পটাশিয়াম সহ বিভিন্ন খনিজের সমাহার রয়েছে। এছাড়া ঝিঙে হজমেও বিশেষভাবে সাহায্য করতে পারে। পাশাপাশি দুর্বলতা কাটাতেও এই সব্জির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। নানান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ এই খাদ্য রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে জোরালো করতেও সাহায্য করে। গোটা গ্রীষ্মকাল জুড়েই এই সব্জি পাওয়া যায়।
ঢেঁড়শ— নামে যাবেন না, গুণের দিক থেকে এই সব্জির জবাব নেই! গরমেই এই সব্জির ফলন বাড়ে। ঢেঁড়শ নানাভাবে শরীরকে সুস্থসবল রাখতে সাহায্য করে। আর সবথেকে বড় কথা, ঢেঁড়শ হল শীতল প্রকৃতির সব্জি। তীব্র গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এই খাদ্য। তাই ঢেঁড়শ খেলে অনেকের ঠান্ডাও লাগে। পাশাপাশি পেটের নানা সমস্যাতেও দারুণ কাজ করে এই সব্জি। এই সব্জিতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি, লোহা সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান। তাই শরীরের সার্বিক পুষ্টি রক্ষাতেও ঢেঁড়শের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।
পটল— মোটামুটি প্রতিটি বাঙালি পরিবারেই পটল খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এই বিশেষ খাদ্যবস্তুটি আয়রন, সোডিয়াম সমৃদ্ধ। ফলে শরীরে খনিজের ঘাটতি পূরণেও এই খাদ্যের গুরুত্ব আছে। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি যা শরীরের পুষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ। আবার এই সহজপাচ্য খাদ্যটি গরমের নানাবিধ পেটের সমস্যা, হজমের সমস্যা দূরে রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
সজনে ডাঁটা— এই বিশেষ খাদ্যটি নানান গুণে সমৃদ্ধ। এই ডাঁটার মধ্যে রয়েছে ক্যালশিয়াম, আয়রনের মতো খনিজ। এছাড়া সজনে ডাঁটা নিয়মিত খেলে চিকেন পক্স সহ এই সময়ে নানাবিধ ভাইরাসগঠিত রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে ইমিউনিটি তৈরি করে। পাশাপাশি হজমশক্তির উন্নতিতেও এই সব্জির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। আবার রক্তচাপের সমস্যা এবং ঘুমের বিভিন্ন অসুখে এই সব্জি খেলে উপকার মেলে।
গিমে শাক— গ্রাম-বাংলার এই বিশেষ রসদ আজ অবহেলিত। যদিও গুণাগুণের নিরিখে এই শাককে টেক্কা দেওয়া বেশ কঠিন। গরমেই এই শাক বেশি পাওয়া যায়। স্বাদে তিতো। এই শাকে রয়েছে ভিটামিন এ, সি। আছে নানান খনিজ। ফলে শরীরে ভিটামিন ও খনিজর ঘাটতিও মেটে। গরমকালে খিদে বাড়াতে সাহায্য করে এই শাক। শরীরকে সার্বিকভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
কচি নিম পাতা— নিমের গুণাগুণ নিয়ে যত বলা যায়, ততই কম। নানাবিধভাবে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে নিম পাতা। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই খাদ্য। তাই গরমের বিভিন্ন সংক্রামক রোগ দূরে রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। এছাড়া নিম হজমের সমস্যা কমায়। হার্ট ভালো রাখে। গরমে বেড়ে ওঠা মূত্রনালীর নানা অসুখকে প্রতিহত করে। আর সকলেই নিশ্চয়ই জানেন, ডায়াবেটিসের মতো কঠিন রোগকে প্রতিহত করতেও নিম পাতার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই শুধু গ্রীষ্ম নয়, গোটা বছরই পাতে থাকুক কচি নিম পাতা।
হিমচে শাক— আরও একটি অবহেলিত খাদ্য। এই শাকটিও নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। রয়েছে ভিটামিন এবং খনিজ। এছাড়া নিয়মিত এই শাকটি খেলে রক্ত পরিষ্কার থাকে। পাশাপাশি গরমের বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি দূরে রাখতেও সাহায্য করে। অরুচি দূর করতেও হিমচে শাক যথেষ্ট কার্যকরী।
অন্যান্য
পেঁপে, কুমড়ো, কাঁচকলা, গাজর, পুঁইশাক, পালংশাক, লালশাক সহ বাজারজাত প্রায় প্রতিটি শাকসব্জিই গুণে সমৃদ্ধ। তাই সব শাকসব্জিই খান।
কতটা খাবেন?
রোজই দিনে দু’বেলা অন্তত একবাটি শাকসব্জি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তবেই পাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি।
কীভাবে রান্না?
শাকসব্জি রান্নার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন। ময়লা যেন না থাকে। তেল, মশলা কম ব্যবহার করে রান্না করুন।
লিখেছেন সায়ন নস্কর