প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
সারা দেশেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার এখনও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। প্রতিদিন আরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। অবশ্য সুখের খবর হল, প্রতিদিন করোনা থেকে সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। কমছে প্রাণহাণির হার। বিশেষত, কলকাতায় রোগ সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের শয্যাসংখ্যার সরকারি হিসেবই জানিয়ে দিচ্ছে সেকথা। ফলে ভবিষ্যতে এই অসুখ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
মাস্ক ‘মাস্ট’
এই অবস্থায় ছাত্রদের পড়াশোনা চালু করা, সঙ্গে ট্রেন-মেট্রো চালু করা এগুলো নিয়ে কিছু অংশের মানুষ আতঙ্কে ভুগছেন। তাঁরা ভয় পাচ্ছেন, পরিবহণ ব্যবস্থা, স্কুল, কলেজ চালু হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এছাড়া সব কিছু চালু হলে রোজকার জীবনের ব্যস্ততাও বাড়বে। ফলে হাত ধোওয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বারংবার ব্যবহারের সতর্কবিধিও মেনে চলা সম্ভব হবে না। এমনকী লকডাউন করার পরেও মানুষ যে সব নিয়ম মানছেন, সেকথা হলফ করে বলা যায় না।
সম্প্রতি বেশ কিছু সংস্থার করা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ৪৪ শতাংশ মানুষ বাইরে বেরনোর সময় মাস্ক ব্যবহার করছেন! এমতাবস্থায় লকডাউন আলগা করা হচ্ছে মানে যে সবাই বিপদমুক্ত, এমন বলা যাবে না। অথচ জীবন চালাতে হলে কিছু কিছু ছাড় দিতেই হবে। অতএব আমাদের আগের তুলনায় বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
মনে রাখতে হবে সংক্রমণের বিরুদ্ধে সচেতনতাই এখন হাতিয়ার।
মেট্রোয় কী কী সতর্কতা?
মেট্রো চালু হচ্ছে। শহর ও শহরতলির একটা বড় সংখ্যক মানুষ মেট্রো পাকড়ে অফিসপাড়ায় ফিরতে চাইবেন আগের মতোই। অতএব মেট্রো ধরতে চাইলেও কঠোর নিয়ম মানতে হবে—
মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
গ্লাভস পরলেও ভালো হয়।
সহযাত্রীদের সঙ্গে যতটাসম্ভব দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখাও দরকার।
মেট্রো ট্রেন চালাতে হলেও কঠোর নিয়ম পালন করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। প্রতিবার মেট্রো চালানোর রেক নিয়ম মেনে জীবাণুমুক্ত করা জরুরি।
ভিড়ে কীভাবে সামাজিক দূরত্ব?
ট্রেন-মেট্রো পুরোদমে চালু হলে, যাতায়াতও পুরোদমে শুরু হবে। এই কারণে সকলের একটাই প্রশ্ন, দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে তো? সেক্ষেত্রে সবকটি মেট্রো ও ট্রেন একবারে না ছেড়ে, প্রথমে কয়েকটি রুট ও লাইনে ট্রেন-মেট্রো চালানোর ছাড়পত্র দিলে ভালো (যেটুকু জানা যাচ্ছে, তাই করা হচ্ছে, যেমন স্মার্ট কার্ড ছাড়া মেট্রোয় চাপা যাবে না, তিনভাগের এক ভাগ মেট্রো চলবে)।
মানুষ নিয়ম মানলে, সতর্ক থাকলে তারপর সব রুটে ট্রেন-মেট্রো চালানোর ব্যাপারে ভাবা উচিত। তবে ভিড় যেভাবে বাড়ছে, সতর্ক থাকা ছাড়া উপায় নেই। অর্থাৎ ট্রেন-মেট্রোয় উঠলে মুখে সর্বদা মাস্ক পরে থাকতেই হবে। এই ভিড়ের মধ্যেও কিন্তু থ্রি-লেয়ার মাস্ক একমাত্র রক্ষাকবচ। অতএব কোনওভাবেই মুখ থেকে মাস্ক সরালে চলবে না। অন্তত এভাবে কিছুটা হলেও সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
স্কুল কলেজে সাবধানতা
স্কুল-কলেজে লেখাপড়া শুরু করার কথা হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সপ্তাহে কতদিন, কত সংখ্যক পড়ুয়া স্কুলে যাবে তা ঠিক করতে হবে। এছাড়া স্কুল কতক্ষণ চলতে পারে, তা নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। কারণ ছোট ক্লাস রুমে একে অপরের সঙ্গে দৈহিক দূরত্ব বজায় রেখে বসা সম্ভব নয়।
কয়েকটি বিষয়ে অভিভাবকরা অবশ্যই তাঁদের সন্তানকে সচেতন করুন। প্রথমত, স্কুলে থাকাকালীন সময়ে মাস্ক কোনওমতেই খোলা যাবে না। দ্বিতীয়ত, অন্যের থেকে যথাসম্ভব দূরত্ব বজায় রেখে বসতে হবে। টিফিন কারও সঙ্গে ভাগ করে খাওয়া যাবে না। বারবার হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে ইত্যাদি। এছাড়া কোনও ছাত্রের পরিবারের কোনও একজন সদস্যের শরীর খারাপ হলে স্কুলে আসা যাবে না।
পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে আমাদের আরও উদার হওয়া উচিত এই সময়ে। পরীক্ষার নম্বর নয় বরং জোর দিতে হবে বিষয়বস্তু বোঝার উপরে। পড়ুয়াদের বই পড়া ও প্রশ্নের উত্তর নিজের মতো লেখার ক্ষেত্রে ভাবনাচিন্তার অবকাশ দেওয়া উচিত। আপাতত এভাবেই জীবনের চাকা ঘোরাতে হবে। কারণ, জীবন থেমে থাকে না।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক
ছবি: সায়ন চক্রবর্তী, মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ