দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যে ঈশ্বরী পাটনীর কালজয়ী বর প্রার্থনা ছিল এটাই। ‘অন্নপূর্ণা ও ঈশ্বরী পাটনী’র এই অবিস্মরণীয় পংক্তিতে সন্তানের মঙ্গলচিন্তা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে সন্তানের মঙ্গলার্যে বিরাট কোনও লোভ না দেখিয়ে শুধুমাত্র দুধ-ভাতের আজীবন জোগান প্রার্থনা করা। সুস্থ-সবল সন্তানের জন্য ভাতের সঙ্গে দুধের অপরিহার্যতার কথাও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে এই প্রার্থনায়।
আসলে প্রায় পৌনে তিনশো বছর আগে দুধ সম্পর্কে যে মূল্যায়ন ছিল তা আজও বর্তমান। বরং বহুলাংশে তা বেড়েছে। কারণ, প্রোটিনের তরল উৎস হিসেব এর পুষ্টিমূল্য অপরিসীম। গোদুগ্ধের বিভিন্ন উপাদানের আন্তর্জাতিক গড়ে চোখ রাখলেই তা স্পষ্ট হবে। দুধে জল, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন এবং ভিটামিন ও খনিজ লবনের শতকরা পরিমাণ যথাক্রমে ৮৬.৫, ৪.৮, ৪.৫, ৩.৫ এবং ০.৭। তাই ‘গোরুর দুধে সোনা আছে’ মন্তব্য অবিজ্ঞানসুলভ হলেও, গোদুগ্ধ যে নিজগুণে মহিমান্বিত, তা সর্বৈব সত্য। সেজন্যই হয়তো একালের জীবনমুখী গানেও শোনা যায়, ‘দুধ না খেলে হবে না ভালো ছেলে।’
তবে দুগ্ধমাহাত্ম্যের কথা বহু আগে থেকে জানা থাকলেও, সবার কাছে তা সহজলভ্য ছিল না। বাটি ভর্তি দুধ-কলা, আম, কাঁঠাল চটকে তা সেবন করার সময় মোটা গোঁফে তার ছাপ রাখাটা যেন ছিল জমিদারি কালচার। দু’কাপ চায়ে আধসের দুধ মিশিয়ে পান করার সামর্থ্য, প্রাপ্যতা ও বিলাসিতা ক’জনেরই বা আর ছিল! ১৯৭০ সালের আগে ভারত ছিল দুধ উৎপাদনে ঘাটতিপূর্ণ দেশ এবং বিশ্বে পঞ্চাশতম স্থানে। কিন্তু ওই বছর গুজরাতের আনন্দ জেলায় শুরু হয় ‘অপারেশন ফ্লাড’ (দুধের বন্যা বা পর্যাপ্ততা বোঝাতে)। মূলত গোরুর দুধকেন্দ্রিক এই সমবায় আন্দোলন ‘শ্বেত বিপ্লব’ নামেও গোটা বিশ্বে পরিচিত। ফল ফলতে শুরু করল। তিন দশকের মধ্যে দুধ উৎপাদনে বিশ্বে পঞ্চাশতম স্থান থেকে ভারত উঠে এল প্রথম স্থানে। ১৯৯৮ সালে আমেরিকাকে পিছনে ফেলে দিয়ে ভারতের এই শিরোপা অর্জন। বিপ্লব তো বটেই!
বিপ্লব সম্পর্কে একটা প্রবাদসম কথা আছে। ‘এভরি রেভ্যুলিউশন ওয়াজ ফার্স্ট আ থট ইন ওয়ান ম্যানস মাইন্ড’। বিশ্বে ‘গ্রিন রেভ্যুলিউশন’ বা সবুজ বিপ্লবের পিছনে যেমন নরম্যান বোরলগ, যাঁকে সবুজ বিপ্লবের জনক বা ‘বিশ্বের অন্নদাতা’ বলা হয়, তেমনই ভার্গিস ক্যুরিয়েনকে বলা হয় ভারতে ‘শ্বেত বিপ্লবের জনক’ বা ‘সিল্ক ম্যান অব ইন্ডিয়া’। তাঁর জন্ম তারিখ ২৬ নভেম্বরকে ‘জাতীয় দুগ্ধ দিবস’ হিসেবে মান্য করা হচ্ছে ২০১৪ সাল থেকে। কেরলের কালিকটে (বর্তমানে কোঝিকোড়) জন্ম নেওয়া এই ব্যক্তিটির পুরস্কারের তালিকায় চোখ রাখলেই বোঝা যায় ডেয়ারি শিল্পে তাঁর অবদান কতখানি। আন্তর্জাতিক স্তরে ‘অর্ডার অব এগ্রিকালচারাল মেরিট’ (ফ্রান্স ১৯৯৭), ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ’ (১৯৮৯), ‘ইন্টারন্যাশনাল পার্সন অব দ্য ইয়ার’ (১৯৯৩), ‘ওয়াটেলার পিস প্রাইজ’ (১৯৮৬, নেদারল্যান্ড), ‘রামন ম্যাগসাইসাই অ্যাওয়ার্ড’ (১৯৬৩)। আর জাতীয় স্তরে ‘কৃষি রত্ন’ (১৯৮৬), ‘পদ্মশ্রী’ (১৯৬৫), ‘পদ্মভূষণ’ (১৯৯৬), ‘পদ্মবিভূষণ’ (১৯৯৯)-এ ভূষিত তিনি। মূলত তাঁর নেতৃত্বেই সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছতে পেরেছিল ‘শ্বেত বিপ্লব’।
গুজরাতের আনন্দ জেলায় এদেশের প্রথম ডেয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৩০ সালে। ‘পলসন’ ব্র্যান্ড হিসেবে। কিন্তু ওই ডেয়ারিতে দোয়ানো দুধ নিয়ে আসা গ্রামের মানুষেরা নানাভাবে বঞ্চিত হতেন। কারণ, সরকার এই প্রান্তিক দুধচাষিদের দুধ সংগ্রহ করে মুম্বই শহরে তা সরবরাহের একচেটিয়া ক্ষমতা দিয়েছিল পলসনকে। বঞ্চিত হতে হতে কাইরা অঞ্চলের দুধ সরবরাহকারীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিল ক্রমশ। তাঁরা তখন স্থানীয় নেতা ত্রিভূবনদাস প্যাটেলের নেতৃত্বে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের শরণাপন্ন হন। তিনি বিক্ষুব্ধ কৃষকদের (ডেয়ারি বা দুধ-কৃষক) আলাদাভাবে একটা সমবায় গড়ার পরামর্শ দেন। সেই মোতাবেক জন্ম নিয়েছিল ‘কাইরা ডিস্ট্রিক্ট কো-অপারেটিভ মিল্ক প্রোডিউসারস ইউনিয়ন’। এই সমবায় আন্দোলন যাতে আরও জোরদার হয়, সেজন্য তিনি কৃষকদের কাছে মোরারজি দেশাইকে পাঠান। এরপর গ্রামে গ্রামে এরকম সমবায় গড়ে উঠতে লাগল। ১৯৪৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর ‘আনন্দ মিল্ক ইউনিয়ন লিমিটেড’ (যা ‘আমূল’ নামে সকলের কাছে পরিচিত) রেজিস্টার্ড হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা সেই ত্রিভূবনদাস প্যাটেল। ১৯৪৮ সালের জুন মাসে কাইরা কো-অপারেটিভ ‘বোম্বে মিল্ক স্কিম’-এর জন্য দুধের পাস্তুরাইজেশন শুরু করে। ১৯৪৯ সালে ডঃ ক্যুরিয়েন আমূলে যোগদান করেন এবং প্রকৃত শ্বেত বিপ্লবের গতি জোর পায়।
যে সমবায় মডেলের দ্বারা সাফল্যের মুখ দেখা, তা ‘আনন্দ প্যাটার্ন’ নামে ততদিনে দেশ-বিদেশে আলোচিত। এই মডেলের বৈশিষ্ট্য হল প্রান্তিক দুধ-চাষিরা সংগৃহীত দুধ এনে দেবেন গ্রামের সমবায় সমিতিতে। সেখান থেকে সব গ্রামের মিলিত দুধ যাবে জেলার দুগ্ধ ইউনিয়নে। সবশেষে রাজ্য দুগ্ধ পরিষদে গিয়ে তা গচ্ছিত হবে। আমূলের ক্ষেত্রে ক্যুরিয়েনের এই তিন ধাপবিশিষ্ট সমবায় মডেলের সফল রূপায়ণ দেখে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী জাতীয় ডেয়ারি উন্নয়ন নীতির ক্ষেত্রেও তা অনুসরণের পরিকল্পনা করেন। আসলে এই মডেলের সাফল্যের পিছনে চারটে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ছিল। এক, প্রান্তিক দুধ চাষিদের হাতেই থাকছে তাঁদের ডেয়ারির মালিকানা। দুই, তাঁদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই গ্রামীণ সমবায় সোসাইটি এবং জেলার ইউনিয়নগুলি নিয়ন্ত্রণ করেন। তিন, ডেয়ারি চালানো এবং ব্যবসা পরিচালনার জন্য পেশাদার লোক নিয়োগ করে তারা। চার, সমবায়গুলি দুধ চাষিদের চাহিদা ও দাবির বিষয়ে সহানুভূতিশীল ও সক্রিয়।
এই মডেলের উপর ভিত্তি করেই ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জাতীয় ডেয়ারি উন্নয়ন পর্ষদ’ (এনডিডিবি) চেয়ারম্যান পদে অভিষিক্ত হন ডঃ ক্যুরিয়েন। এর পাঁচ বছর বাদে ১৯৭০ সাল থেকে শুরু হল ডঃ ক্যুরিয়েনের ‘বিলিয়ন-লিটার আইডিয়া’ রূপায়ণের স্বপ্নের প্রকল্প ‘অপারেশন ফ্লাড’। এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্যগুলি ছিল প্রচুর দুধ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলা, যাতে প্রতিটি নাগরিক দুধের সঠিক জোগান পেতে পারেন। এর সঙ্গে দুধের গুণমান উন্নত করা, ভারতের শহর ও নগরের দুধ উৎপাদনকারী ও ভোগকারীদের মধ্যে জাতীয় ‘মিল্ক গ্রিড লিঙ্কিং’-এর ব্যবস্থা করা, ঋতুনির্ভর এবং আঞ্চলিক মূল্য পার্থক্য কমিয়ে আনা, ভোক্তাদের সঠিক দামে দুধ পাওয়ার ব্যবস্থা করা, উৎপাদক ও ভোগকারীদের মাঝে মধ্যস্বত্বকারীদের বিলোপ ঘটানো, গ্রামীণ মানুষদের উপার্জন বাড়িয়ে দারিদ্র্য দূরীকরণ ইত্যাদি বিষয়গুলিও ছিল এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
এই প্রকল্প রূপায়িত হয়েছিল তিনটি ধাপে। প্রথম ধাপের সময় ১৯৭০-১৯৮০। ঠিক হয়েছিল ১৯৭৫-এর মধ্যেই প্রকল্প রূপায়িত হবে। কিন্তু সেটা হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। প্রকল্পের এই ধাপে ব্যয় হয়েছিল ১১৬ কোটি টাকা। ‘বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প’-র মাধ্যমে ইউরোপীয় ইকনমিক কমিউনিটি ভারতকে যে স্কিমড গুঁড়ো দুধ ও মাখন-তেল দিয়েছিল, তা বিক্রি করে এই ধাপের অর্থের জোগান হয়েছিল। এই ধাপে চারটে মেট্রোপলিটন শহরের (দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা ও চেন্নাই) উপভোক্তাদের সঙ্গে দেশের ১৮টি অগ্রগণ্য দুগ্ধশালার (মিল্ক শেড) সংযোগ স্থাপন সম্ভব হয়েছিল।
প্রথম ধাপের লক্ষ্য ছিল ওই চার মহানগরে মার্কেটিংয়ের দ্বারা ডেয়ারি বিভাগকে সংগঠিত করা, গ্রামীণ ডেয়ারি পশুদের উন্নতি ঘটিয়ে দুধের উৎপাদন ও সংগ্রহ বাড়ানো এবং দুধের বাজারে দুধ চাষিদের ভাগ বাড়ানো। দ্বিতীয় ধাপে (১৯৮০-১৯৮৫) মিল্ক শেডের সংখ্যা ১৮ থেকে বেড়ে হল ১৩৬। প্রান্তিক দুধ চাষির সংখ্যা ৪২ লক্ষ ৫০ হাজার, যাঁরা দেশের ৪৩ হাজার গ্রামীণ সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত। দুধের গুঁড়ো উৎপাদন ২২ হাজার টন থেকে বেড়ে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টন হল। শহরে ২৯০টি দুধের আউটলেট খোলা হল। তৃতীয় ধাপে (১৯৮৫-১৯৯৬) মিল্ক শেডের সংখ্যা ১৩৬ থেকে বেড়ে হল ১৭৩, ডেয়ারি সমবায়ের সংখ্যা বেড়ে হল ৭৩ হাজার। এই ধাপে মূলত গবাদি পশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে গবেষণা ও উন্নতির দিকে গুরুত্ব দেওয়া হল।
প্রকল্প শুরুর ২৮ বছরের মাথায় দুধ উৎপাদনে পঞ্চাশতম দেশ থেকে প্রথম স্থানে উঠে এল ভারত। আরও কিছু তথ্যে নজর রাখলে বোঝা যাবে এই প্রকল্পের সাফল্য কতখানি। ১৯৭০ সালে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২ কোটি টন। বর্তমানে তা ১৬ কোটি ৭০ লক্ষ মেট্রিক টন। প্রতি বছর উৎপাদন বৃদ্ধির হার প্রায় ৪.৫ শতাংশ, যখন বিশ্বে এই হার ১.৮ শতাংশ। আর এই বৃদ্ধিতে ভারতের অবদান ১ শতাংশ। দুধের মাথা পিছু দৈনিক ব্যবহার এদেশে ১৯৫০-৫১ সালে ছিল ১৩০ গ্রাম। ২০১৭-১৮ তে এসে তা বেড়ে হয়েছে ৩৭৪ গ্রাম, বিশ্বের ক্ষেত্রে যা ২৯৪ গ্রাম। দেশে উৎপাদিত প্রধান দুই শস্য ধান ও গমের একত্র মূল্য যা, তার থেকে উৎপাদিত দুধের মূল্য বেশি— ৬.৫ লক্ষ কোটি টাকা।
এই বিরাট সাফল্যের অনুষঙ্গ হিসেবে বিতর্কও আছে। ঠিক যেমন কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়াতে সবুজ বিপ্লবের জন্য উচ্চফলনশীল বীজ, তার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার এবং জলের চাহিদার বাহুল্য নিয়ে বিতর্ক, ঠিক তেমনই শ্বেত বিপ্লবের ক্ষেত্রে অন্যতম বিতর্ক উচ্চ দুগ্ধ উৎপাদনকারী বিদেশি গবাদি আমদানি নিয়ে। উচ্চফলনশীল বীজের সার-জলের চাহিদা যেমন খুব বেশি, তেমনই এইসব উচ্চ দুগ্ধউৎপাদনকারী গবাদিদের খাই-খরচও এত বেশি যে, ভারতীয় প্রেক্ষাপটে সমস্যার কারণ বইকি!
তবে সব বড় কাজের কিছু ভুলত্রুটি থাকেই। তা সেই কাজের মহত্বকে খাটো করতে পারে না। ‘অপারেশ ফ্লাড’-এর অবদান ভারতবর্ষে সেরকমই। এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ডেয়ারি উন্নয়ন প্রকল্প যার মাধ্যমে ডেয়ারি ফার্মই হয়ে উঠেছে ভারতের সর্ববৃহৎ স্ব-বহমান (সেলফ-সাসটেনেবল) গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী ব্যবস্থা। আর এতে মহিলাদের বিপুল অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্য। বস্তুত, সমবায় আন্দোলনের জয়ধ্বজা উড়িয়েছে এই শ্বেত বিপ্লব। প্রায় ১০১ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ দেশের তথা বিশ্বের দারিদ্র্য দূরীকরণে সমবায় আন্দোলনের গুরুত্বের কথা সবিস্তারে বলেছিলেন যার একটা অংশ এই শ্বেত বিপ্লবের ক্ষেত্রে হুবহু মিলে যায়। তিনি লিখেছিলেন, ‘কোনও চাষির গোয়ালে যদি তার নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত এক সের মাত্র দুধ বাড়তি থাকে, সে দুধ লইয়া সে ব্যবসা করিতে পারে না। কিন্তু একশো, দেড়শো চাষি আপন বাড়তি দুধ একত্র করিলে মাখন-তোলা কল আনাইয়া ঘিয়ের ব্যবসা চালাইতে পারে।...এমনি করিয়া অনেক গৃহস্থ অনেক মানুষ একজোট হইয়া জীবিকা নির্বাহ করিবার যে উপায় তাহাকেই য়ুরোপে আজকাল কো-অপারেটিভ-প্রণালী এবং বাংলায় ‘সমবায়’ নাম দেওয়া হইয়াছে। আমার কাছে মনে হয়, এই কো-অপারেটিভ-প্রণালীই আমাদের দেশকে দারিদ্র্য হইতে বাঁচাইবার একমাত্র উপায়। আমদের দেশ কেন, পৃথিবীর সকল দেশেই এই প্রণালী একদিন বড়ো হইয়া উঠিবে।’ তাঁর এই ভবিষ্যদ্বাণীকেই প্রবলভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এই শ্বেত বিপ্লব। দেশের প্রতিটি সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে, এই হোক শ্বেত বিপ্লবের সুবর্ণ জয়ন্তী বছরের অঙ্গীকার।