বিশেষ কোনও পারিবারিক কারণে মানসিক দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে। কাজকর্মের ক্ষেত্রে বিশেষ সুখবর পেতে পারেন। ... বিশদ
নতুন প্রজন্ম যা চায়
এখন সকলেই কমবেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তারা এমন খাবার চাইছে যাতে ভিটামিন ও প্রোটিনের ভাগ বেশি, ক্যালোরির ভাগ কম। সেই অনুযায়ী আমরা খাবারের রেসিপি বানাচ্ছি। হয়তো ক্রিমের বদলে ইয়োগার্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। চিজের বদলে পনির দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে স্বাদের ষোলো আনাই বজায় রাখা হচ্ছে।
ফিউশনের নয়া রূপ
ফিউশন কুইজিন সম্পূর্ণই যুগের হাওয়া। একটা সময় ছিল যখন লোকে ইউরোপিয়ান রান্নার সঙ্গে ভারতীয় উপকরণ মিশিয়ে নতুন ধরনের পদ চাইতেন। সেই চাহিদা অনুযায়ী তরমুজ দিয়ে চিকেন বানিয়ে তার ফোড়ন হিসেবে হয়তো পাঁচফোড়ন ব্যবহার করা হতো। বা অরেঞ্জ ফিশের সঙ্গে তিলের গার্নিশ করা হতো। কিন্তু এই চাহিদাটা চিরস্থায়ী হল না। এই স্বাদগুলোয় যেহেতু খুব বেশি অদলবদল সম্ভব হয় না, তাই তার ভ্যারাইটিও কম হয়। একটা পর্যায়ের পর স্বাদটা মানুষের মুখে একঘেয়ে লাগতে থাকে।
খাঁটি রান্নার স্বাদ চিরন্তন
মজার কথা হল, খাঁটি স্বাদের কদর কিন্তু চিরকালীন। সেই কারণে পুরনো রান্না, হারানো রান্না ইত্যাদির রেসিপি নিয়ে এত গবেষণা হচ্ছে। গ্রামগঞ্জ থেকে মেঠো রান্নার রেসিপি খুঁজে এনে তা-ই পরিবেশন করা হচ্ছে রেস্তরাঁয়। সেই স্বাদের কিন্তু কদর যুগে যুগে সমান থাকবে। আসলে লোকে খাঁটি জিনিস চায়।
স্বাদ বদল
যে কোনও জিনিসের বিবর্তন প্রয়োজন। নাহলে তা একঘেয়ে হয়ে যায়। রান্নার ক্ষেত্রেও এর অন্যথা হয়নি। তবে এই যে বিবর্তন তারও আবার অনেক স্তর রয়েছে। মধ্য বয়সের মানুষ সবসময়ই তেল ঝাল মশলা কম খেতে চান। আবার অল্পবয়সিদের মধ্যে এমন চাহিদা নেই। তারা স্বাদের দিকটা বেশি চায়। যা তাদের মুখে রোচে তাই তারা ভালোবেসে খায়। সাধারণ ট্রেন্ড যদি বলেন, তাহলে বলব ইতালিয়ান, এশিয়ানের পাশাপাশি বাঙালি খাবারের চাহিদা চিরকালই আছে।
স্বাস্থ্য এবং স্বাদ
রোস্ট, গ্রিল, স্টিমড খাবারের মধ্যে নানা ধরনের রেসিপি রোজই আবিষ্কার করছি আমরা। যেমন অরেঞ্জ রোস্টেড চিকেন, লেমনগ্রাস গ্রিলড ফিশ, স্টিমড টোফু বা চিকেন ইন স্যস অব ইওর চয়েস— এই ধরনের খাবার আমরা আরও বেশি বানানোর চেষ্টা করছি। এতে স্বাস্থ্যের পাশাপাশি স্বাদও বজায় রাখা হয়। কিছু সব্জি এমনও আছে যাতে প্রোটিন ও ভেজিটেবল একত্রে পাওয়া যায়। তারই অন্যতম মাশরুম, অ্যাসপারাগাস ইত্যাদি। এগুলো নিরামিষ পদ হিসেবেও পরিবেশন করা হয় আবার আমিষের সঙ্গেও রান্না করা হয়।
স্বাদের মিলমিশ চাই
এমন রান্না করতে হবে যার প্রতিটি স্বাদ একে অপরের সঙ্গে মিশে যায়। উপকরণগুলো এমনভাবে বাছতে হবে যাতে কোনওটাই আলদা করে চেয়ে না থাকে। এটা আমরা রান্নায় ভীষণভাবে মেনে চলি। যেমন, আজ যে রেসিপি পরিবেশন করব সেটা একটা হোলমিল। এতে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারাল সবই পাবেন। এমন স্যস এই পদটির সঙ্গে পরিবেশন করা হয় যা স্বাস্থ্যকর এবং পদের স্বাদবর্ধকও বটে। আর এই পদটি বাড়িতেও বানাতে পারেন। তেমনই একটি পদের রেসিপি দেব।
পেস্তা ক্রাস্টেড চিকেন
উপকরণ: চিকেন স্টাফিংয়ের জন্য: বোনলেস চিকেন ব্রেস্ট ৪টে, বোনলেস চিকেন কুচিয়ে কাটা ১৫০ গ্রাম, ক্রিম চিজ ১২০ গ্রাম, শিতাকে মাশরুম ৮০ গ্রাম, পেস্তা কুচি করে কাটা ৫০ গ্রাম, গ্রেট করা গাজর ৫০ গ্রাম, রসুন কুচি ১০ গ্রাম, ডিমের সাদা ১টা, নুন স্বাদমতো, ইংলিশ মাস্টার্ড ২০ গ্রাম, কোটিংয়ের জন্য: ডিম ২টো, ব্রেড ক্রাম্বস ১০০ গ্রাম, গুঁড়ো করা পেস্তা ৫০ গ্রাম, অলিভ অয়েল ৩০ মিলি। চিকেন ডেমি গ্লেজের জন্য: রোস্ট করা চিকেন বোন ৫০০ গ্রাম, চিকেন স্টক ৫০০ মিলি, রেড ওয়াইন ১০০ মিলি, টম্যাটো পেস্ট ৩০ গ্রাম, সাদা মাখন ৩০ গ্রাম, সাদা পেঁয়াজ কুচি ৫০ গ্রাম, রসুন কুচি ১০ গ্রাম, জোয়ান পাতা ১০ গ্রাম, তেজপাতা ১টা, নুন স্বাদ মতো, গোলমরিচ ২ গ্রাম। ভাজা পেঁয়াজের জন্য: সাদা পেঁয়াজ স্লাইস ৫০ গ্রাম, মাখন ২০ গ্রাম, অলিভ অয়েল ১০ মিলি, নুন সামান্য, গোলমরিচ ২ গ্রাম। বাকি উপকরণ: আলু ৪টে, সাদা মাখন ৫০ গ্রাম, লেবুর রস ১০ মিলি।
পদ্ধতি: চিকেন ব্রেস্ট বাদে স্টাফিংয়ের উপকরণগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। তা ফ্রিজে রেখে দিন আধ ঘণ্টা। চিকেন ব্রেস্ট পিস মাঝখান থেকে কেটে প্যাকেটের মতো করে নিন। এবার স্টাফিং দিয়ে তা ভরে দিন। ধারগুলো টুথপিক দিয়ে গেঁথে দিন। তারপর তাতে ইংলিশ মাস্টার্ড মাখান। ডিমের গোলায় ডুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বস এবং গুঁড়ো পেস্তা মাখিয়ে ভেজে নিন। তারপর তা ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে আভেনে বেক করুন ২০ মিনিট। ডেমি গ্রেজের সব উপকরণ একসঙ্গে কড়াইতে ফুটিয়ে নিন। তা ছেঁকে স্যসটা রেখে দিন। পেঁয়াজ ভেজে লাল করে নিন। আলু চাকা করে কেটে নুন আর লেবুরস মাখিয়ে রেখে দিন। তারপর তা ভেজে নিন। এবার প্লেটিংয়ের সময় চিকেন ব্রেস্ট সাজান। তার উপর ডেমি গ্লেজ স্যস ছড়িয়ে দিন। আলু ও পেঁয়াজ ভাজা দিয়ে পরিবেশন করুন।