শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
মহারাজ— তোমার যে ঐরকম বাজে পরিবেশ ভাল লাগছে না, সময় সময় ভগবানকে চিন্তা করতে ইচ্ছা করছে, না করতে পারলে দুঃখ হচ্ছে, এটাই তো ভাল। এটা কি তাঁর কম দয়া? চেষ্টা কর, করতে করতেই হবে। গীতায় আছে, ‘অনন্তকালে চ মামেব স্মরন্মুক্তবা কলেবরম্। যঃ প্রয়াতি স মদ্ভাবং যাতি নাস্ত্যত্র সংশয়।।’— যিনি মৃত্যুকালে আমাকে স্মরণ করেন, তিনি আমাকেই প্রাপ্ত হন।
ভক্ত— যাতে চেষ্টা করতে পারি, আশীর্বাদ করুন, তাহলেই হবে।
মহারাজ— আশীর্বাদ তো আছেই, কিন্তু তোমাকে চেষ্টা করতে হবে।
ভক্ত— আপনি এইমাত্র একজনকে বললেন যে, সবসময় তাঁর চিন্তা করতে হবে। কিন্তু আমাদের জীবনে তো প্রাত্যহিক কাজকর্ম করতে হবে, সেগুলো করতে করতে কি করে তাঁকে চিন্তা করব?
মহারাজ— কাজ তো করতেই হবে। কাজ করতে করতে তার মধ্যেই তাঁকে চিন্তা করতে হবে।
ভক্ত— স্মরণ-মনন?
মহারাজ— হ্যাঁ।
ভক্ত— আপনি বললেন যে ভগবান বলছেন, মৃত্যুকালে আমাকে স্মরণ করলে আমাকেই প্রাপ্ত হয়। কিন্তু কেউ হয়ত সারা জীবন স্মরণ মনন করল, অথচ মৃত্যুর সময় কঠিন রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে স্মরণ করার ক্ষমতা হারাল, তখন তার কি হবে?
মহারাজ— তার নিশ্চয়ই হবে, ভগবান কি আর দেখবেন না যে এ সারাজীবন আমাকে স্মরণ করেছে। তার একটা ফল তো আছে।
ভক্ত— যে স্মরণ করতে পারে না তার কি একটু কম হয়?
মহারাজ— একটু কেন, অনেকটাই কম হয়। একটা সাধারণ চলতি কথায় আছে, ‘জপ-তপ কি কর, মরণের ভয় কর।’ মানে জপ-তপ করছ কিন্তু দেখো যেন মৃত্যুকালে তাঁকে স্মরণ করতে পার। কথাটা সাধারণ, কিন্তু খুব দামী। সারাজীবন অভ্যাস থাকলেও যে ঠিক মৃত্যু সময়ে স্মরণ করতে পারবেই এমন কোনও কথা নেই। আবার যে সারাজীবন কিছু করল না, সে হয়ত মৃত্যু সময় দৈবযোগে স্মরণ করল। যেমন অজামীলের উপাখ্যানে আছে, তার ছেলের নাম ছিল নারায়ণ।’ সে মৃত্যু সময় তার ছেলেকে নারায়ণ বলে ডেকেছিল। তাই নারায়ণ বললেন, যখন ডেকেছে যেতে হবে। তা নারায়ণ কি এতই বোকা যে ছেলেকে ডেকেছে আর তিনি সাড়া দেবেন।