মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
সাধন-পথে আটটি স্তর বা যোগের অঙ্গ বর্ণিত আছে’:
যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম,
প্রত্যাহার, ধারণা, ধ্যান, সমাধি।
সত্য, সাধুতা, অহিংসা, ব্রহ্মচর্য, নিস্পৃহতা—এই সকল যম। শুদ্ধি, সন্তোষ, তপস্যা, ধর্মশাস্ত্র পাঠ ও ঈশ্বরে কর্মফল সমর্পণ—হইল নিয়ম। আরাধ্যদেবে মনঃসংযোগ করিয়া, দেহের কষ্ট না হয় এরূপ দীর্ঘকাল স্থিরভাবে উপবেশন-অবস্থার নাম আসন। আসন-সিদ্ধি লাভ হইলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিরোধ ও পরিহার বিষয়ে বিশেষ ক্ষমতা জন্মে। ইহাই প্রাণায়াম। প্রাণায়ামে প্রাণবায়ু অন্তরে স্থির অর্থাৎ নিরুদ্ধভাবে অবস্থান করে। আমাদের বহির্মুখী চক্ষু-কর্ণ ইত্যাদি দ্বারা চিত্তের উপর প্রতিক্রিয়া জন্মায়। প্রাণায়ামে এই সকল ইন্দ্রিয় প্রশান্ত হইয়া অন্তর্মুখী হয়। ইন্দ্রিয়াদি অন্তর্মুখী হইলে চিত্ত বহিঃদর্শন, বহিঃশ্রবণ ইত্যাদি হইতে প্রতিনিবৃত্ত হয়। ইহাই প্রত্যাহার। যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম ও প্রত্যাহার—এই পাঁচটিকে যোগের বহিরঙ্গ বলা হয়। ইহাতে দেহ ও চিত্ত যোগাভ্যাসের উপযোগী হয়।
বাহ্য বিষয় হইতে চিত্ত সম্পূর্ণ প্রতিনিবৃত্ত হইলে ইহাকে আসন ও প্রাণায়ামের সাহায্যে নাভিচক্র, হৃদয়, নাসিকাগ্রভাগ ইত্যাদি আধ্যাত্মিক স্থানে, অথবা বাহিরে স্থিত আরাধ্য দেবমূর্তি প্রভৃতিতে স্থির করার নাম ধারণা।
পূর্বোক্ত যে-কোন আধ্যাত্মিক স্থানে চিত্তের ধারণা-শক্তি অর্জিত হইলে চিত্তকে ওই ধারণা বিষয়ে একাগ্রতার সহিত অবস্থান করানোর নাম ধ্যান। ধারণার উৎকৃষ্ণ কর্ম ধ্যান। এই অবস্থায় চিত্ত বিনা চেষ্টায় আপনা আপনি স্থির থাকে।
ধ্যানের পরিণাম সমাধি। ধ্যানে ধারণাগ্রস্ত ভাবটি অর্থাৎ চিত্তবৃত্তি জাগ্রত থাকে; সমাধিতে বস্তুভাব বা চিত্তবৃত্তি থাকে না।
আধ্যাত্মিক বিষয়ে ধারণা, ধ্যান ও সমাধি লাভ হইলে, তাহাকে সংযম বলে। ধারণা, ধ্যান ও সমাধি—এই তিনটি যোগের অন্তরঙ্গ। বহিরঙ্গ ও অন্তরঙ্গ যোগ যিনি লাভ করিয়াছেন, তিনিই যোগী।