মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদে (ইং ১৮২৮, ৩০শে সেপ্টেম্বর) আবির্ভূত এই মহাত্মা মানুষের কল্যাণে পরমপ্রেমে এই জগৎকে কি মহামূল্যবান সম্পদ অকৃপণভাবে উজাড় করে দিয়ে গেছেন তা গীতা, বেদ, বেদান্ত, তন্ত্রসহ সনাতন ধর্মের সর্বশাস্ত্রের অনুমোদিত যোগপথের অনুগামী অধ্যাত্মপিয়াসী সাধকরাই অনুভব করতে পারেন। সাধনার মাধ্যমে অন্তর্জগতে যা অনুভব করতে হয় তা সাধনহীন মানুষ জানবে কি করে? তিনি আর্য্য ভারতের উচ্চকোটীর যোগীপুরুষদের মতো নিজের জীবনে পূর্ণ চতুরাশ্রম পালন করেছেন; সারাজীবন দায়িত্বের সাথে চাকরী করা থেকে শুরু করে ছেলেপুলে মানুষ করা, পারিবারিক ও সামাজিক দায়দায়িত্ব পালন করা ইত্যাদি নিষ্ঠার সাথে করেছেন এবং এরই মাঝে শৃঙ্খলার সাথে এমন এক সাধন করলেন যা তাঁকে সাধনার চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত করলো। তাঁর নিজের হাতে বাংলা হরফ অথচ হিন্দী ভাষায় লেখা, গোপনে রেখে যাওয়া এবং মৃত্যুর পর প্রকাশিত ২৬ খানা ডায়রীই তাঁর সাধনার ক্রমোন্নতি, বিভিন্ন পর্য্যায়ে নানা প্রকার দর্শন শ্রবণ এবং চূড়ান্তে ব্রহ্মজ্ঞানের কথা প্রকাশ করে। গোপন দিনলিপিতে কোথাও লিখেছেন, ‘যো আত্মসূর্য্য ওহি ব্রহ্ম ওহি হম শ্যামাচরণ।’ কিছুদিন পর এক জায়গায় লিখলেন, ‘হমহি মহাপুরুষ পুরুষোত্তম।’ আরও এগিয়ে গিয়ে লিখলেন, ‘হমহি আদি পুরুষ ভগবান।’ তাঁর লেখা ডায়রীর বিষয়সকল কোন কল্পনাবিলাস নয়; এসব অনুভূতিলব্ধ জ্ঞানের কথা। সাধনার মাধ্যমে নিজ অন্তরে বোধগম্য; আলোচনার বিষয় নয়। তিনি আমাদের শোনালেন ধর্ম কি। যা সবকিছু ধারণ করে আছে অর্থাৎ যে অনির্দ্দেশ্য, অব্যক্ত, অক্ষর, কালাতীত ও সর্বভূতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সত্ত্বা বর্ত্তমান তাই ধর্ম। ধর্ম কোন পৃথক বস্তু নয়, বরং পৃথক ভাবই অধর্ম। যা ধর্ম তাই ঈশ্বর, তাই ভগবান্ তাই ব্রহ্ম।
অশোককুমার চট্টোপাধ্যায়ের ‘যোগ প্রবন্ধে ভারতমাতা’ থেকে