মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
বদন-চাঁদ কোন কুঁদায়ে কুঁদিলে গো
কে না কুঁদিলে দুই আঁখি।
দেখিতে দেখিতে মোর পরাণ যেমন করে
সেই সে পরাণ তার সাথী।।
নাসিকার আগে দোলে এ গজ-মুকুতা গো
সোণায় মুড়িত তার পাশে।
বিজুরী জড়িত যেন চাঁদের কালিমা গো
মেঘের আড়ালে থাকি হাসে।।
রতন কাড়িয়া কেবা যতন করিয়া গো
কে না পরাইয়া দিল কাণে।
মনের সহিতে মোর এ পাঁচ পরাণি গো
যোগী হবে উহারি ধেয়ানে।।
অভিষেকের পর দামোদরকে হাতে লইয়া তাঁহাকে মুছাইয়া সিংহাসনে রাখিতে গিয়া দেখেন,—সেখানে মানুষের দু’খানি কাঁচা পা আসন জুড়িয়া রহিয়াছে। তিনি প্রথমে ভাবিলেন, হয়ত ইহা দেখার ভুল। কিন্তু যতই অভিনিবেশসহকারে দেখিতে লাগিলেন, ততই দেখিতে পাইলেন—দামোদরের সিংহাসনোপরি দুইখানি কাঁচা পা, অথচ দেহের অন্য কোন অংশ দেখা যাইতেছে না।
ভক্তের সহিত ভগবানের লীলাখেলার পরিচয় তাঁহার জীবনে ইতঃপূর্বেও কিছু কিছু ঘটিয়াছিল, কিন্তু আজিকার এই রহস্যের তিনি কিছুই সমাধান করিয়া উঠিতে পারিলেন না। তাঁহার শরীর রোমাঞ্চিত হইয়া উঠিল, হাত কাঁপিতে লাগিল, দামোদর মেঝেতে পড়িয়া গেলেন। তাঁহার অত্যন্ত ভয় হইল, হাত হইতে নারায়ণশিলা কখনও ত পড়িয়া যান নাই! আজ এমন হইল কেন? দামোদরকে তুলিয়া বারবার ভক্তিসহকারে প্রণাম করিলেন, পুনরায় অভিষেকান্তে মন্ত্র পাঠপূর্বক তুলসী দিলেন,—আবার সেই পা! তুলসী যাইয়া পড়িল সেই পায়! একবার, দুইবার, তিনবার,— দামোদরের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত তুলসী বারবার সেই পায়েই যাইয়া পড়িল। বাহ্যজ্ঞানশূন্য হইয়া গৌরীমা ভূমিতলে পড়িয়া গেলেন। গৌরীমার সেবার প্রতি বলরাম বসুর পরিবারস্থ সকলেরই বিশেষ দৃষ্টি ছিল। ঐ দিন বেলা বাড়িয়া চলিল, তথাপি ঘরের ভিতর হইতে তিনি বাহিরে আসিতেছেন না, এমন-কি, তাঁহার কোন সাড়াশব্দও পাওয়া যাইতেছে না দেখিয়া জনৈকা মহিলা তাঁহার ঘরের দরজা একটু ফাঁক করিয়া দেখিতে পাইলেন—গৌরীমা ভূমিতলে পড়িয়া আছেন, আর তাঁহার দুই চক্ষু বাহিয়া দরবিগলিতধারায় অশ্রু ঝরিতেছে। বলরাম বসুর পত্নী কৃষ্ণাভাবিনী দেবী সংবাদ পাইয়া ছুটিয়া আসিলেন, কিন্তু অনেক ডাকাডাকি করিয়াও গৌরীমার কোন উত্তর পাইলেন না। তিনি শঙ্কিত হইয়া তাঁহার অবস্থা স্বামীকে জানাইলেন। বলরাম বসু তথায় আসিয়া দেখিয়া বুঝিলেন, ইহা কোন ব্যাধি নহে,—ভাবাবেশ।