দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
এখন টাকা ফেরতের সময়। অথচ হাতে তা চোকানোর তহবিল নেই। ফলে, চূড়ান্ত আর্থিক সঙ্কটে তারা। শুধু ব্যাঙ্ক নয়, বেশ কয়েকটি ডুবতে-বসা বেসরকারি সংস্থাতেও এলআইসির টাকা খাটছে। যেসব কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার ২৬ শতাংশ সরকার নিজের কাছে রেখে বাকিটা বিক্রি করে দিচ্ছে তাদের শেয়ার এলআইসিকে বিক্রি করা হচ্ছে। এই অর্থ সরকারি কোষাগারে ভরে ঘাটতি মেটানোর রাস্তা নিয়েছে কেন্দ্র। কোনও সংস্থার শেয়ার দর বাজারে না উঠলেও তা বেশি দাম দিয়ে এলআইসিকে দিয়ে কেনানো হয়েছে। এলআইসি সেই শেয়ার বাজারে বিক্রি করলে স্বাভাবিকভাবে দর পাবে না। লোকসান পুরোটাই বইতে হবে এলআইসিকে। জানা গিয়েছে, আবাসন শিল্পকে বাঁচানোর তহবিল গড়তেও স্টেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে টাকা ঢালবে এলআইসি। ফলে উঠছে প্রশ্ন, আবাসন প্রকল্পের কাজ শেষ করতে এলআইসি যে টাকা ধার দেবে, তা শোধ না-হলে কী হবে? সংস্থার পলিসি গ্রাহকদের চিন্তার কারণ নেই তো? আম জনতার সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে এমন নয়ছয় করা বন্ধ না-হলে, আচমকা একদিন এলআইসিও লাটে উঠবে। এমনই আশঙ্কা করছে দেশের সাধারণ মানুষ। যেসব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার কিনেছে এলআইসি তার মধ্যে রয়েছে কোল ইন্ডিয়া, এনটিপিসি, এনএইচপিসি, এনবিসিসি এবং হিন্দুস্থান কপার। মোদি সরকারের জমানাতেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার কেনা দ্বিগুণ হারে বাড়াতে হয়েছে এলআইসিকে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রথম মোদি সরকারের মেয়াদে (২০১৪-১৫ থেকে ২০১৮-১৯) বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ২২.৬ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার কিনছে এলআইসি। তার আগে ইউপিএ সরকারের (২০০৯-১০ থেকে ২০১৩-১৪) সময়েও এলআইসির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ৬.২ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছিল। মোদি সরকারের প্রথম দফার তুলনায় দ্বিতীয় দফার গোড়াতেই শেয়ার কেনায় হার বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিযোগ, ১৯৫৬ সালে তৈরির পর থেকে ২০১৪ পর্যন্ত প্রায় ছয় দশকে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, সংস্থা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঢালা হয়েছে এলআইসির মোট ১১.৯৪ লক্ষ কোটি টাকা। সেখানে ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২২.৬৪ লক্ষ কোটি। অর্থাৎ, মাত্র পাঁচ বছরে তার বৃদ্ধির পরিমাণ ১০.৭ লক্ষ কোটি টাকা। যে-ধরনের সংস্থায় এই বিপুল অর্থ ঢালা হচ্ছে, যথেষ্ট সংশয় তাকে ঘিরেই। বিরোধীদের তোপ, একের পর এক দুরবস্থা সামাল দিতে এলআইসিকেই এগিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত পুঁজিকে ঝুঁকির মুখে ফেলা হচ্ছে কেন? অর্থনীতির বিগড়ানো ইঞ্জিন মেরামতির চেষ্টা করা তো দূর অস্ত, বরং সাধারণ মানুষের কষ্টের সঞ্চয় নিয়েও ছিনিমিনি খেলা শুরু করেছে কেন্দ্র।