ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
ফ্লিপকার্ট কিরানার হাত ধরে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হচ্ছে দেশের ছেলে-মেয়েরা। ব্যাপারটা কী বোধহয় ঠিক বোধগম্য হল না তাই না? ই-কমার্স সাইট ফ্লিপকার্ট নতুন একটি প্রোগ্রাম দেশজুড়ে লঞ্চ করেছে। যার মাধ্যমে ছোট ব্যবসায়ী বং এমএসএমই গ্রুপের ব্যক্তিরা উপকৃত হতে পারেন। এই নতুন প্রোগ্রামের নাম ফ্লিপকার্ট কিরানা। সংস্থার দাবি, এর মাধ্যমে দেশের অসংখ্য ছোট ব্যবসায়ীরা যেমন আর্থিক লাভবান হবেন তেমনই তাঁরা তাদের স্বপ্নও পূরণ করতে পারবেন। আসুন ব্যাপারটা একটি উদাহরণের মাধ্যমে বোঝানো যাক।
বহুদিন বাদে বীণা তাঁর স্কুলের কাছে বেড়াতে এসেছে। পুরোনো সকল স্মৃতি রোমন্থন করছে। সেই সময়ই স্কুলের সামনে থাকা মুদিখানার দোকানের দিকে চোখ পড়ে তাঁর। মনে পড়ে ছোটবেলায় এ দোকান থেকে কত পপিন্স, হরেকরকম লজেন্স সে কিনেছে। একছুটে দোকানের সামনে চলে যায়। দেখা করে মালকিনের সঙ্গে, যাকে সে মাসি বলে ডাকত। বহুদিন পরে বীণাকে দেখতে পেয়ে খুশি হন তিনি। কথায় কথায় উঠে আসে কাজকর্মের কথা। দোকানের মালকিন জানান, এখন আর আগের মতো ব্যবসা চলে না। বহু মাল কিনলেও অনেক সময়ই তা বিক্রি হয় না। কমেছে খদ্দেরও। মুশকিল আসানে এগিয়ে আসে বীণা। জানায় ফ্লিপকার্ট কিরানার কথা। ততক্ষণে মালকিনের মেয়ে দোকানে এসেছে। সেও ব্যাপারটা শুনে উৎসাহিত হয়। বীণা তাঁকে জিজ্ঞাসা করে তাঁর আধার, প্যান এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে কী না? জবাবে হ্যাঁ শুনে বিনা বলে ব্যাস তাহলে তো আর কোনও ব্যাপারই নেই। ফ্লিপকার্ট অ্যাপের মাধ্যমে কিরানায় নাথ নথিভুক্ত করে অনবোর্ডিং করিয়ে দেয়। এরপর সংস্থার তরফ থেকে একটি ভেরিফিকেশন হয়। যার নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে তার সঙ্গে দেখা করতে আসে সংস্থার এক বিজনেস ম্যানেজার। তাঁকে ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হয়।সামান্য কয়েকটা প্রসেস এর পর সংস্থার আপনার চারদিনের ট্রেনিং হবে। তারপর আর কী অ্য উইন্ডো অব অপারচুনিটির মাধ্যমে শুরু হয়ে যাবে আপনার কাজ। সংস্থার পক্ষ থেকে আপনাকে একটি কয়েকটি ব্যাগও দেওয়া হবে। তাতে জিনিস ভরে নিজের স্কুটি বা বাইকে চড়ে অর্ডার অনুযায়ী গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে জিনিসপত্র।
কিন্তু টাকাকড়ি পাবেন কী ভাবে? সেই কথাই ভাবছেন তো? সেটা আরও সহজ। মাসে দুবার ফ্লিপকার্টের পক্ষ থেকে সরাসরি আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া ইন্সেন্টিভ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেই টাকার পরিমাণ বাড়ানোর সুযোগও পাবেন আপনি। শিলংয়ের ইফনি কুরবা এবং ইন্ডালিন খারখারান নামের দুই যুবতীও ফ্লিপকার্টের এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পেরেছেন। ইন্ডালিনের ছোট বেলার স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার। ভাগ্যচক্রে সেই সুযোগ মিলেও গেল। ফ্লিপকার্টের এক সামগ্রী ডেলিভারি দেওয়ার সময় দেখা হয় এক স্কুলে প্রিন্সিপালের সঙ্গে। কথায় কথায় তাঁকে মনে কথা জানায় সে। এরপরই ইভিনিং স্কুলে পার্ট টাইম টিচার হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করেন ওই ব্যক্তি। শিক্ষকতার কাজের পাশাপাশি কিরানাতেও সমানতালে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ইন্ডালিন। তিনি জানিয়েছেন, ফ্লিপকার্টের মাধ্যমেই দু’হাতে রোজগার করার সুযোগ মিলেছে। কালিম্পংয়ের প্রণয় এবং তাঁর দিদির একটি ক্যান্টিন খুলেছিলেন। কিন্তু লকডাউনের ফলে তা বন্ধ হয়ে যায়। সংসার কী ভাবে চলবে এই চিন্তা কুরে কুরে খেতে থাকে তাঁকে। এইসময় তাঁর এক বন্ধু তাঁকে জানায় কালিম্পংয়ে ফ্লিপকার্টের নতুন অফিস খুলছে। লোক নেওয়া হচ্ছে সেখানে। শুনেই সেখানে গিয়ে কাজের আবেদন করে প্রণয়। কিরানায় নাম নথিভুক্ত হয়ে যায় তাঁর। কালিম্পংয়ে নানা জায়গায় লাগাতার পার্সেল ডেলিভারি করতে থাকেন। সেই বছরই বেস্ট পারফর্মার অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। এরপর আর কী টাকা জমিয়ে কিনে ফেলেন একটি গাড়ি। এই গাড়ি কেনার ফলে আগের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেশি পার্সেল ডেলিভারি করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন প্রণয়। ভবিষ্যতে বড় ব্যবসায়ী হওয়ার ইচ্ছ রয়েছে। তাঁর আশা সেটিও ফ্লিপকার্টের মাধ্যমে খুব তাড়তাড়ি সম্ভবপর হবে। গৌহাটির রানি রামপালের স্বপ্ন ছিল বড় ডান্সার হওয়ার। কিন্তু আর্থিক সমস্যার ফলে তা পূরণ হয়নি। মাঝপথেই ডান্স স্কুল ছেড়ে দিতে হয় তাঁকে। কিন্তু ফ্লিপকার্ট কিরানায় টাইম ফ্লেক্সিবেল হওয়ায় কাজ এবং ডান্স দুটোই করতে পারছেন রানি। একই ভাবে দিল্লির আমনও ফ্লিপকার্ট কিরানার মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন পূরণে সফল হয়েছে। লকডাউনে কোথাও কাজ পাচ্ছিলেন না তিনি। কিন্তু সংস্থার এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে সংসারের দায়িত্বও তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। দেশজুড়ে এমন নজির ভুরিভুরি রয়েছে। আর তা সবই সম্ভব হয়েছে ফ্লিপকার্টর মাধ্যমে।