সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
সুভাষচন্দ্রবাবুর আদিবাড়ি বীরভূমের পারুলিয়ায়। বাবা প্রয়াত জয়দেব দত্ত অণ্ডাল হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি এবং বিএড এবং বিশ্বভারতী থেকে পিএইচডি ডিগ্রি করেন। ১৯৯৬ সালের ২৬ জুলাই কাঁকসার অযোধ্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগ দেন। ২০০৭ সালে বর্ধমানের কাঞ্চননগর ডিএন দাস হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হয়ে আসেন। বর্তমানে তিনি বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুরে থাকেন। সুভাষচন্দ্রবাবুর পরিবারের প্রায় সকলেই শিক্ষকতায় যুক্ত। তাঁকে নিয়ে তাঁর পরিবারে ১৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁর কথায়, বাবা জয়দেব দত্ত এবং বীরভূমের স্বাধীনতা সংগ্রামী মিহিরলাল চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাই এই জাতীয় পুরস্কার তিনি তাঁর বাবার নামেই উৎসর্গ করতে চান।
সুভাষচন্দ্রবাবুর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ৩৫টি জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর একটি গবেষণাপত্র পেটেন্টও পেয়েছে। এর আগেও তিনি একাধিক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ২০১৪ সালে এই কাঞ্চননগর ডিএন দাস হাইস্কুলে জেলাস্তরে ‘নির্মল বিদ্যালয়’ পুরস্কার, ২০১৫ সালে রাজ্যস্তরে ‘শিশু মিত্র বিদ্যালয়’ পুরস্কার এবং ২০১৬ সালে ‘বেস্ট ইনোভেটিভ স্কুল’ পুরস্কার পেয়েছে। গতবার তিনি নিজেও শিক্ষারত্ন পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন।
সুভাষচন্দ্রবাবুর নেতৃত্বেই স্কুলের চেহারায় বদল এসেছে। স্কুলে ঢুকলেই সেই বদলের ছবি দেখা যাবে। মূল গেটের পাশেই সাজানো বাগান। সেখানে সব্জি, ওষুধের গাছ এবং ১৭ রকমের ফলের গাছ রয়েছে। এক একজন মণীষীর নামে বাগানের আটটি গ্যালারি করা হয়েছে। স্কুলের দেওয়ালে স্বাস্থ্যবিধির সচেতনতা। স্কুলের সিঁড়িতেও ইংরেজির মাসের নাম লেখা। স্কুল চত্বরের গাছে পাখিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম বাসা। সেখানে পেঁচা থেকে সব ধরণের পাখিরাই বসবাস শুরু করেছে। প্রধান শিক্ষকের কথায়, পেঁচার জন্য স্কুলে বাস্তুতন্ত্র ফিরেছে। আগে অফিস ঘরের ড্রয়ারে ইঁদুরে বাচ্চা দিত। এখন ইঁদুর হাওয়া। সাপও নেই। এছাড়াও সবার নতুন পরমর্শ গ্রহণ করার জন্য স্কুলে লাগানো হয়েছে আইডিয়া বক্স। সরকারি সাহায্য ছাড়াই বিশাল কম্পিউটার ল্যাবও রয়েছে। জীব বৈচিত্র বাক্স, আরও পানীয় জলের ব্যবস্থা, প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক শৌচালয় প্রভৃতি একগুচ্ছ নতুন কাজ করে দেখিয়েছেন তিনি। সব কাজের সাফল্য হিসাবে জাতীয় পুরস্কারের স্বীকৃতিতে খুশি সুভাষচন্দ্রবাবু।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার ই-মেল মারফত দিল্লি থেকে জাতীয় পুরস্কারের চিঠি পেয়েছি। রাজ্য থেকে ছ’জন মনোনীত হয়েছিলেন। তার মধ্যে আমি একাই পুরস্কার পাচ্ছি। স্বাভাবিকভাবেই ভালো লাগছে। তবে, এই পুরস্কার আমার একার পুরস্কার নয়। স্কুলের সমস্ত সহকর্মী শিক্ষক, কর্মী, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, পরিচালন সমিতি, এলাকার মানুষ সহ এটা সবার পুরস্কার। কারণ, এই স্কুলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পিছনে তাঁদের সকলের অবদান রয়েছে। তাই এই জাতীয় পুরস্কারের আনন্দও আমি তাঁদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।