সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তম শ্রেণীর এক পডুয়া চলতি শিক্ষাবর্ষে ১১১ দিনের মধ্যে মাত্র ১২ দিন স্কুলে আসায় শ্রেণী শিক্ষক এদিন সেই ছাত্রকে বাড়ি থেকে তার অভিভাবককে ডেকে আনতে বলেছিলেন। ছাত্রটি বাড়িতে গিয়ে শিক্ষক তাকে মারধর করেছে বলে জানায়। ছাত্রের অভিভাবকরা স্কুলে এসে কারও কথা না শুনে শ্রেণী শিক্ষককে নিগ্রহ করে। অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক ছাত্রটিকে স্কেল দিয়ে মেরে গালে ও গলায় কালসিটে দাগ বসিয়ে দিয়েছেন। দু’পক্ষই মৌখিকভাবে বিষয়টি রায়গঞ্জ থানার পুলিসকে জানিয়েছে। রায়গঞ্জ থানার আইসি সুরজ থাপা বলেন, স্কুলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে একটা ঝামেলা হয়েছিল। তবে এখনও কোনও পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
রায়গঞ্জ শহরের থানা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা হলেও সপ্তম শ্রেণীর ওই ছাত্রটি শহরের উকিলপাড়ায় পিসির বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে। বাড়ির খুব কাছে স্কুল হওয়া সত্ত্বেও ছাত্রটি নিয়মিত স্কুলে যেত না। শ্রেণী শিক্ষক সঞ্জয় কুণ্ডু বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে ছাত্রটি পরীক্ষার জন্য সাত দিন ও বাকি মাত্র পাঁচ দিন ক্লাস করেছে। অনেকদিন পর এদিন ছাত্রটি স্কুলে আসে। অনিয়মিত আসায় এদিন একটু বকাবকি করে অভিভাবককে স্কুলে ডেকে আনতে বলেছিলাম। ভেবেছিলাম অভিভাবক এলে তাঁর কাছেই জানতে চাইব কেন ছাত্রটি স্কুলে নিয়মিত আসছে না। ক্লাস নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে সহকারী প্রধান শিক্ষকের ঘরে গিয়েছিলাম। আচমকা কয়েকজন মহিলা সেখানে ঢুকে আমার উপর চড়াও হন। আমার কোনও কথা না শুনে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিয়ে আমার হাতে আঁচড় দিয়ে আমাকে রক্তাক্ত করে দিয়েছেন। অন্যান্য শিক্ষকরা ওই অভিভাবকদের বোঝাতে গেলে তাঁদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের চেয়ার উল্টে দিয়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন। ছাত্রটিকে আমি মারধর করিনি। সে ভয়ে বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের কী বলেছে জানি না। এমন নিন্দাজনক ঘটনা ঘটবে ভাবতেই পারছি না।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক নীলমাধব নন্দী বলেন, চাকরি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। এমন অভিজ্ঞতা আগে কখনও হয়নি। অভিভাবকরা স্কুলে এসে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা কোনও আলোচনা না করে এভাবে শিক্ষকের উপর চড়াও হবেন, এটা মেনে নিতে পারছি না। শ্রেণী শিক্ষক ছাত্রটিকে নিয়মিত স্কুলের আনার ব্যবস্থা করতে অভিভাবককে তলব করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের এমন মারমুখী মনোভাব হলে অন্য শিক্ষকরা স্কুলের পডুয়াদের সামান্য শাসনও করতে পারবেন না। অভিভাবকদের ওই তাণ্ডবের পর পুলিস স্কুলে এসেছিল। পুলিসকে পুরো ঘটনার কথা জানিয়েছি। ছাত্রটির বাবা বলেন, আমার এক আত্মীয় মারা যাওয়ায় ছেলে কিছুদিন ধরে স্কুলে যেতে পারেনি। এদিন সে স্কুলে গেলে তাকে স্কেল দিয়ে পেটানো হয়। স্কুলের শ্রেণী শিক্ষকের মারে ছেলের গালে, গলায় কালসিটে দাগ পড়েছে। এদিকে, ছাত্রটির পরিবারের লোকরা এদিন একাধিকবার থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েও পরে অভিযোগ না জানিয়ে ফিরে গিয়েছেন। এদিন রায়গঞ্জ থানায় দাঁড়িয়ে স্কুলে তাণ্ডব চালানো ও শিক্ষক নিগ্রহের কথা যদিও অস্বীকার করেছেন ছাত্রটির মা ও পিসি।