সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
প্রশ্ন উঠেছে, বস্তি উন্নয়নের কাজে যে নোডাল অফিসার রয়েছেন, কেন তাঁর কাছে এই গাফিলতির জন্য পুরসভার কর্তারা কৈফিয়ত তলব করবেন না? এক বছর আগে যে কমিউনিটি শৌচাগার অনুমোদন হয়েছিল, এক বছরেও তার কাজ হয়নি কেন? যদিও এই নিয়ে বক্তব্য জানার জন্য পুরসভার কমিশনার বিজিন কৃষ্ণাকে মঙ্গলবার একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
হাওড়া শহরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বস্তি পিলখানা বস্তি। কিন্তু, সেখানকার অবস্থা তথৈবচ। এখানেও হাজারের বেশি মানুষ বসবাস করেন। কিন্তু, সেখানে পর্যাপ্ত শৌচালয় নেই। অথচ গত বছর এখানকার জন্য আটটি শৌচাগার অনুমোদন হয়েছিল। তার কাজও সম্পূর্ণ হয়নি। হাওড়া পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে দয়াল ব্যানার্জি রোডের বস্তিতেও হাজারের বেশি মানুষ বসবাস করেন। এক বছর আগে এখানকার জন্য আটটি শৌচাগার অনুমোদন হয়েছিল। তার মধ্যে মাত্র তিনটি শৌচাগারের কাজ অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে। বাকিগুলি কবে হবে তা কেউ জানেন না। ২ নম্বর রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোডে নেপালি বস্তি আছে। সেখানেও মাত্র তিনটি শৌচাগার। অথচ এখানে আটটি শৌচাগার অনুমোদন হয়েছিল। হাওড়া পুরসভার কাজিপাড়ার কাছে চড়াবস্তি। এখানে হাজারের বেশি মানুষ বসবাস করেন। এখানেও আটটি কমিউনিটি শৌচাগার অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু, তার তিনটি আগে হয়েছে। আর বাকি তিনটির কাজ চলছে। কিন্তু, সেগুলি কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না। এছাড়াও হরিজন বস্তিরও একই অবস্থা। কিন্তু, গত বছর পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে প্রতিটি বস্তির জন্য আটটি করে শৌচাগার তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী যে বস্তিতে গিয়ে দেখেছিলেন, ৪০০ জন মানুষের জন্য মাত্র দু’টি কমিউনিটি শৌচাগার আছে, সেখানেও আটটি শৌচাগার তৈরি করার অনুমোদন আছে। তাহলে কেন তা হয়নি তা নিয়েই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তবে শুধু শৌচাগার নয়। বাস্তবে হাওড়া শহরের বস্তিগুলির কোনও উন্নয়নই হয়নি। বস্তির মধ্যে যাতায়াতের রাস্তা অনেক কাঁচা অবস্থায় আছে। সেগুলি কংক্রিট করা হয়নি। বস্তির ভিতরে পর্যাপ্ত আলো নেই। দু’একটি একটি আলো এক সময় লাগানো হলেও সেগুলির বাল্ব ফিউজ হয়ে যাওয়ার পর আর বদল হয়নি। নিকাশি ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। গত সপ্তাহের লাগাতার বৃষ্টিতে ২ নম্বর রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোডের বস্তিতে জল রাস্তার উপর হাঁটু সমান ছিল। কারও কারও ঘরের ভিতর জল ঢুকে গিয়েছিল। সোমবার ওই এলাকার এক বাসিন্দা মুখ্যমন্ত্রীকে সেই কথা জানিয়েছিলেনও। হরিজন বস্তিতেও রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। ওই জল পার হয়েই লোকজনকে চলাচল করতে হয়েছে। সবচেয়ে সমস্যা হয় পানীয় জল নেওয়ার ক্ষেত্রে। পুরসভার কলগুলির উচ্চতা দু’থেকে আড়াই ফুট। রাস্তার উপর এক থেকে দেড় ফুট জল দাঁড়িয়ে যায়। ওই অবস্থায় পুরসভার কলগুলি থেকে জল নিতে গেলে লোকজনকে নর্দমা ছাপিয়ে উঠে আসা জলের মধ্যেই বালতি বা হাঁড়ি রেখে জল নিতে হয়। এতে জলঘটিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। তাঁদের অনেকেরই আশা, মুখ্যমন্ত্রী এবার তাঁদের দিকে মুখ ফেরানোয়, হয়তো অচিরেই এই দুর্দিন শেষ হতে পারে! সেই আশাতেই তাকিয়ে আছেন বস্তিবাসীরা।