দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
অন্যদিকে, হাট থেকে কিছুটা দূরে জঙ্গলের মাঝে সারি সারি গোরু বাঁধা রয়েছে। সেখানে কার্যত সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। ওই অঞ্চলে কাউকে ছবিও তুলতে দেওয়া হয় না। তারজন্য চলে নজরদারিও। প্রতিদিনই গোরুর সংখ্যা কমবেশি হতে থাকে। অভিযোগ, ওই জঙ্গল পথেই মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে রমরমিয়ে চলছে এই গোরু পাচার। এই ঘটনায় ইলামবাজারজুড়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
বীরভূমের ইলামবাজারের সুখবাজার হাট হল দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সবথেকে বড় গোরুর হাট। প্রতি শনিবার বসে এই হাট। কোটি কোটি টাকার গোরু কেনাবেচা হয় এই হাট থেকে। ইলামবাজার থেকে দু’টি পথে গোরু অন্যত্র পাচার হয়ে থাকে। ছোট ম্যাটাডোর, ট্রাক, ছোট ও বড় লরি প্রভৃতিতে জয়দেব ফেরিঘাট হয়ে অজয় নদ পার হয়ে গোরু চলে যায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। অন্যদিকে, ইলামবাজার জঙ্গলের ভিতরের পথ হয়ে মুর্শিদাবাদ। সেখান থেকে বাংলাদেশেও পাচার হয় গোরু বলে জানা গিয়েছে। জঙ্গলের মাঝে একটি ফাঁকা জায়গায় সারি সারি বড় লরি, ট্রাক দাঁড় করিয়ে চলে গোরু বোঝাইয়ের কাজ। আশ্চর্যজনকভাবে অধিকাংশ লরি, ট্রাকে দেখা মেলে না নম্বর প্লেটের। নম্বর প্লেটহীন এই গাড়িগুলি করেই চোরাপথে চলে গোরু পাচারের কারবার। এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কাউকে ছবি তুলতে দেওয়া হয় না। তারজন্য রীতিমতো নজরদারি চলে।
প্রসঙ্গত, বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা যে জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করেছিলেন তাদের যোগসূত্র মিলেছিল এই ইলামবাজারের সুখবাজার গোরুর হাটের সঙ্গে। এই হাট থেকে গোরু পাচারের আড়ালে চলত জঙ্গি কার্যকলাপ। বীরভূম থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই গোরুর হাট। তদন্তকারী অফিসাররা এই হাটে তল্লাশিও চালিয়ে ছিলেন। তারপরেও অভিযোগ উঠেছে পুলিসকে টাকা দিয়ে রমরমিয়ে চলছে গোরু পাচারের এই বেআইনি কারবার। মাসকয়েক আগে ইলামবাজার থেকে বোলপুর রোডে জঙ্গলের রাস্তায় পুলিসের প্রকাশ্যে গাড়িপিছু টাকা নিয়ে গোরুবোঝাই গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার ছবি ধরা পড়েছিল ক্যামেরায়। জঙ্গলের রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে পুলিস টাকা নিয়ে বেআইনি গোরুর গাড়িগুলি ছেড়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছিল গোরু কারবারিরা।
গাড়ির চালক, পাইকাররা জানায়, ছোট ম্যাটাডোর হলে ২০০টাকা, একটু বড় গাড়ি হলে ৩০০টাকা ও লরি হলে ৫০০টাকা করে নেয় পুলিস। টাকা দিলে গাড়ি যেতে দেয় পুলিস। তারপরেও আবার দেখা গেল ইলামবাজারের এই গোরুর হাট থেকে রমরমিয়ে চলছে নম্বর প্লেটহীন ট্রাক, লরি করে বেআইনিভাবে গোরু পাচার।
এই বিষয়ে বোলপুরের মহকুমা পুলিস আধিকারিক অভিষেক রায় বলেন, নম্বর প্লেটবিহীন কোনও গাড়িতে গোরু পাচার হওয়ার খবর আমাদের কাছে নেই। যদি কোনওভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটে তাহলে তা পুলিসের নাকা চেকিংয়ে ধরা পড়ে যাবে। এছাড়াও ইলামবাজারের সুখবাজার গোরুর হাট থেকে কন্টেনারে করে গোরু বাইরে নিয়ে যাওয়ায় সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবুও যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে তা আটকানোর জন্য ইলামবাজার থানাকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।