দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম বিশ্বজিৎ ধারা(২৫)। তিনি পাশের গ্রাম গৌরবাজারের বাসিন্দা। বিশ্বজিৎবাবু সোনার দোকানের কর্মী ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার প্রধান রাস্তা দিয়ে সর্বক্ষণ অবৈধ বালিবোঝাই লরি ও ডাম্পার বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। এর জেরেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন পথচারীরা। অবিলম্বে অবৈধ বালির কারবার ও ওভারলোডেড গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবিতে সরব হন তাঁরা। রাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সোমবার সকাল থেকে পুলিসকে ঘিরে ফের বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি এলাকায় এসে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিস ঘাতক লরিটি আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইদিন রাতে বিশ্বজিৎবাবু পাণ্ডবেশ্বরের বনগ্রাম এলাকা থেকে কাজ শেষে দোকানের মালিকের বাইকের পিছনে বসে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত ৮টা নাগাদ মাধাইপুর এলাকায় একটি অতিরিক্ত বালিবোঝাই লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই বাইকের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। ঘটনায় গুরুতর জখম হন বিশ্বজিৎবাবু ও বাইক চালক উজ্জ্বল স্বর্ণকার। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বিশ্বজিৎবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা ঘাতক লরিতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। যদিও দুর্ঘটনার পর ঘাতক লরির চালক চম্পট দিয়েছে। বিশ্বজিৎবাবুর বাড়িতে দুর্ঘনার খবর পৌঁছতেই গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে গৌরবাজার এলাকায় পরপর আরও সাতটি অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাকে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, বিশাল পুলিস বাহিনীর পাশাপাশি কমব্যাট ফোর্স নামাতে হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও রাতে এলাকায় পুলিস পিকেট বসানো হয়। ফের এদিন সকালে ঘটনাস্থলে এলাকার বাসিন্দারা প্ল্যাকার্ড হাতে ঘটনার প্রতিবাদে পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা দাবি করেন, এলাকায় বালিবোঝাই গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে।
এলাকার বাসিন্দা পরিমল পাল ও গৌতম পাত্র বলেন, এলাকায় প্রায় সাতটি বালিঘাট রয়েছে। অজয় নদ থেকে বালি তুলে মাফিয়ারা অবৈধভাবে অতিরিক্ত বালিবোঝাই লরি ও ডাম্পার এলাকা দিয়ে নিয়ে যায়। ওই গাড়িগুলি দ্রুতগতিতে এলাকা দিয়ে যাতায়াত করায় রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত বেহাল হয়ে গিয়েছে। বালির গাড়িতে এর আগেও একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেও কোনও সুরাহা হয়নি। আমাদের দাবি, অবিলম্বে বালির গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে।
দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, এলাকার বিধায়ক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মৃতের পরিবারের সঙ্গে তিনি কথাও বলেছেন। আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, এই এলাকা দিয়ে কোনও বালিবোঝাই গাড়ি চলাচল যাতে না করে তার ব্যবস্থা করতে। এলাকায় কোনও অবৈধ বালিঘাট নেই। বৈধ বালিঘাট থেকে অতিরিক্ত বালিবোঝাই গাড়ি অবৈধভাবে চলাচল করছে বলে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। বিধায়কের নির্দেশ মতো কাজ করব। এছাড়া মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের ডিসি(পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা বলেন, ঘটনায় অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ঘাতক গাড়িটি পুলিস আটক করেছে।