ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরই প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় খবরাখবর সংগ্রহ করতে ও অপরাধ মোকাবিলায় ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে তৈরি করেন ভিলেজ পুলিস বাহিনী। তাঁদের জন্য ৩১০ টাকা দৈনিক মজুরি ধার্য করা হয়। অস্থায়ী কর্মী হিসেবেই দেখানো হয় এঁদের। বছরে কোনও ছুটির ব্যবস্থাও নেই। তবে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, পরে তাঁদের বেতন বাড়বে। সেই আশাতেই গ্রামের বহু ছেলেমেয়ে ভিলেজ পুলিস হতে চেয়ে আবেদন করেন। প্রতিটি জেলাতেই ভালো সংখ্যায় কর্মী নেওয়া হয়।
কিন্তু ভিলেজ পুলিসে কর্মরতদের বক্তব্য, সাত বছর হয়ে গেলেও তাঁদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে সরকার একটি শব্দও খরচ করেনি। অথচ সিভিক ভলান্টিয়ারদের (সিভিএফ) বেতন বাড়িয়েছে প্রশাসন। বছরে নির্দিষ্ট সংখ্যায় তাঁরা ছুটিও পান। সিভিএফদের আন্দোলনের পরই সরকার বাধ্য হয় এই সিদ্ধান্ত নিতে। এমনকী তাঁদের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মধ্যে আনা যায় কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। অথচ ভিলেজ পুলিস নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা নেই। পুলিসকর্মীদের যা কাজ, তার অধিকাংশটাই তাঁরা করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটিতে যাচ্ছেন। গ্রামে গিয়ে খবরাখবর সংগ্রহ করছেন। এমনকী তল্লাশিতেও তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সবই হচ্ছে, কিন্তু সাত বছরে বেতন এক পয়সাও বাড়েনি। স্থায়ী করা হবে কি না, এই নিয়ে বিভিন্ন সময়ে একাধিক জায়গায় দরবার করেছেন তাঁরা। কিন্তু কোনও মহল থেকেই কিছু সদুত্তর মেলেনি। এমনকী এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টাও করেছেন। সমস্ত রকম প্রচেষ্টা বিফলে যাওয়াতেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবার অনশনে বসবেন। যাতে প্রশাসনের কাছে বার্তা যায়। বিশেষত তাঁরা চাইছেন মুখ্যমন্ত্রীর কানে বিষয়টি তুলতে। সেই কারণে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে জায়গাকে বেছে নিয়েছেন তাঁরা। জানা যাচ্ছে, উত্তরবঙ্গ থেকে সবচেয়ে বেশি ছেলেমেয়ে আসার কথা। দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই ২৪ পরগনা সহ অন্যান্য জেলা থেকেও ভিলেজ পুলিসে কর্মরতদের আসার কথা। যদিও সেখানে অনশনে বসার অনুমতি মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ ওই এলাকা হাই সিকিউরিটি জোনের মধ্যে পড়ে। পুলিস অনুমতি মিলবে না ধরে নিয়েই বিকল্প জায়গা কোথায় হতে পারে, তা নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে।
এদিকে ভিলেজ পুলিসের আমরণ অনশন কর্মসূচির বিষয়ে জানতে পারার পরই নড়েচড়ে বসেছেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্তারা। কোনওভাবেই তাঁরা যাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বা কালীঘাট চত্বরে বসতে না পারেন, তার জন্য সমস্ত রকম প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। কোন কোন জেলা থেকে আসছেন তাঁরা, কীভাবে আসছেন এবং নেতা কারা রয়েছেন, সেইসব তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। যাতে তার ভিত্তিতে আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখা যায় এবং সরকার তথা প্রশাসনকে কোনও অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে না পড়তে হয়।