বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: বড় বড় হাসপাতালগুলিকে করোনা যুদ্ধে শামিল হওয়ার আহ্বান করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী এবার কলকাতার বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলির তালিকা প্রস্তুত করছে রাজ্য। তালিকায় গুরুত্ব দেওয়া হবে তাদের, যারা ইতিমধ্যেই ‘কোভিড ১৯’ রোগীর চিকিৎসা করেছে। বর্তমানে শহরের তিনটি বড় হাসপাতাল গোষ্ঠীর চারটি হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসা চলছে। এ প্রসঙ্গে পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠনের অন্যতম শীর্ষকর্তা এবং আমরি হাসপাতাল গোষ্ঠীর সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, আমরা সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এ এক ধরনের জাতীয় বিপর্যয়। আমাদের গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সল্টলেক আমরির অ্যানেক্স বাড়িটিকে সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের করোনা টাস্ক ফোর্স সূত্রের খবর, এই লড়াই চলা পর্যন্ত হাসপাতালগুলিকে জনস্বার্থে অস্থায়ী অধিগ্রহণ করবে রাজ্য। অর্থাৎ ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী সহ গোটা প্রতিষ্ঠানটিকেই করোনা যুদ্ধে পরিচালিত করবে সরকার। এই তালিকায় শহরের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজটিকেও রাখতে পারে রাজ্য। এছাড়া রাজ্যের ১১টি সরকারি-বেসরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ, পাঁচটি সরকারি-বেসরকারি আয়ুর্বেদিক কলেজ এবং একটি বেসরকারি ইউনানি কলেজকেও শামিল করা হবে। মঙ্গলবার এমনই জানিয়েছেন করোনা টাস্ক ফোর্সের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি বলেন, কলকাতার এই কলেজগুলিকে প্রথমে নেওয়া হবে। শহরে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়লে আমরা সেখানে লেভেল ওয়ান রোগীদের রাখব— যাঁদের মূলত জ্বর-সর্দি ইত্যাদি প্রাথমিক স্তরের উপসর্গ দেখা দেবে। প্রসঙ্গত, দি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ শাখার তরফে কিছুদিন আগেই করোনা যুদ্ধে রাজ্যের ১১টি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজকে ব্যবহার করার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হয়। তৃণমূলপন্থী ডাক্তার সংগঠন প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের হোমিওপ্যাথি শাখার রাজ্য সভাপতি ডাঃ শ্যামল মুখোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি করোনা লড়াইয়ে আমাদের কলেজগুলিকে শামিল করেন, আমরা গর্বিত বোধ করব। একইভাবে এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থাকার বার্তা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ আয়ুর্বেদিক পরিষদের সহ সভাপতি ডাঃ প্রদ্যোৎবিকাশ মহাপাত্র বলেন, সেক্ষেত্রে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটাই অনুরোধ থাকবে, করোনা রোগীদের প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা করার যেন সুযোগ পান আয়ুর্বেদিক ডাক্তাররা।
সূত্রের খবর, কলকাতার শুধু চার-পাঁচটি বড় প্রাইভেট হাসপাতাল এবং একটি মেডিক্যাল কলেজ ধরলে প্রায় দুই হাজার শয্যার জোগান পাবে সরকার। যাবতীয় আয়ূশ মেডিক্যাল কলেজ ধরলে কমবেশি আরও এক হাজার রোগী রাখার ব্যবস্থা হয়ে যেতে পারে।