মোহন বাগান
হোসে মোলিনা দিমিত্রি পেত্রাতোস
আইএসএলের অন্যতম সফল দল। গত মরশুমে লিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন তারা। চলতি মরশুমে এসিএল-২’এ অংশগ্রহণ করবে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। তার জন্য বড় বাজেটের দল গড়েছে ম্যানেজমেন্ট। ইতিমধ্যেই চলতি মরশুমে ডুরান্ড কাপের ফাইনাল খেলেছে তারা। এবার সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই লক্ষ্য মোহন বাগানের।
শক্তি: কোচ হোসে মোলিনা ভারতীয় ফুটবলে বেশ অভিজ্ঞ। অতীতে তার প্রশিক্ষণে ট্রফি জিতেছে এটিকে। চলতি মরশুমে ফের স্প্যানিশ কোচের উপর ভরসা রেখেছে ম্যানেজমেন্ট। সোনায় মোড়া আক্রমণভাগ যে কোনও রক্ষণে কাঁপুনি ধরানোর জন্য যথেষ্ট।
দুর্বলতা: স্ট্রাইকিং লাইন যতটা শক্তিশালী রক্ষণ ততটাই নড়বড়ে। দুই বিদেশি আলড্রেড ও রডরিগেজ এখনও আস্থা অর্জনে ব্যর্থ। স্বদেশি ডিফেন্ডারদের মধ্যে শুভাশিস বসু বহু আগে সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন।
কোচের মুখে: অতীতের সাফল্য নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। প্রথম ম্যাচেই কঠিন প্রতিপক্ষ মুম্বই এফসি। তার আগে দল গুছিয়ে নেওয়াই প্রধান লক্ষ্য।
নজরে যাঁরা: জেমি ম্যাকলারেন, জেসন কামিংস, দিমিত্রি পেত্রাতোস, গ্রেগ স্টুয়ার্ট, লিস্টন কোলাসো, মনবীর সিং, আপুইয়া, সাহাল আব্দুল সামাদ, অনিরুদ্ধ থাপা, বিশাল কাইথ।
ফর্মেশন: ৩-৫-২
সম্ভাবনা: চলতি মরশুমে আইএসএল জয়ের অন্যতম দাবিদার মোহন বাগান সুপার জায়ান্ট।
ইস্ট বেঙ্গল
কার্লেস কুয়াদ্রাত দিমিত্রিয়াস দিয়ামানতাকোস
আইএসএলের প্রথম চারটি মরশুম ভুলতে চাইবেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। এখনও পর্যন্ত সুপার সিক্সে পৌঁছতে ব্যর্থ মশালবাহিনী। ভারতীয় ফুটবলে অন্যতম ঐতিহ্যশালী ক্লাবের সঙ্গে এই ট্র্যাক রেকর্ড একেবারেই বেমানান। চলতি মরশুমে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শক্তিশালী দল গঠন করেছে ক্লাব ও লগ্নিকারী সংস্থা। তবে এসিএল-টুয়ের বাছাই পর্ব ও ডুরান্ড কাপে ব্যর্থতার পর প্রবল চাপে কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। আইএসএলে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেরা ছয়ে জায়গা করে নিতে বদ্ধপরিকর ইস্ট বেঙ্গল।
শক্তি: গোছানো মাঝমাঠ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স দলের সম্পদ। ক্রমাগত বল ফিড করতে পারেন তালাল। নন্দ, বিষ্ণুর মতা উইং-হাফ শক্তি বাড়াবেন।
দুর্বলতা: দুই উইং ব্যাক দলের দুর্বল জায়গা। স্টপারে হিজাজি ও লালচুংনুঙ্গা ভরসা দিতে ব্যর্থ। তার উপর আনোয়ারকে নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত জানায়নি ফেডারেশন। সবমিলিয়ে রক্ষণ নিয়ে চিন্তায় কুয়াদ্রাত।
কোচের মুখে: ডুরান্ড কাপের ব্যর্থতা ভুলতে ফুটবলাররা মুখিয়ে। সুপার সিক্সে পৌঁছতেই হবে। অজুহাতের জায়গা নেই।
নজরে যাঁরা: দিয়ামানতাকোস, তালাল, সাউল।
ফর্মেশন: ৪-৫-১ অথবা ৩-২-৪-১
সম্ভাবনা: আনোয়ারকে পেলে রক্ষণের শক্তি বাড়বে। ডিফেন্স গুছিয়ে নিতে পারলে এই দলকে নিয়ে আশাবাদী হতে পারেন সমর্থকরা।
মুম্বই সিটি
পিটার ক্র্যাটকি লালরিনজুয়ালা ছাংতে
একই মরশুমে প্রথম দল হিসেবে আইএসএলের খেতাব জয় ছাড়াও লিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয় বাণিজ্যনগরীর দলটি। ভারতীয় ফুটবলে অন্যতম ধারাবাহিক ফ্র্যাঞ্চাইজি দল। বর্তমানে অধিকাংশ শেয়ার সিটি গ্রুপের হাতে। পেশাদার ম্যানেজমেন্টে ফান্ডিংয়ের সমস্যা নেই। বাছাই করে ফুটবলার নির্বাচনের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত দক্ষ মুম্বই এফসি’র থিঙ্কট্যাঙ্ক।
শক্তি: অত্যন্ত ব্যালান্সড দল। ছাংতে, ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ, জেরেমি মানজোরো, জন টোরাল সমৃদ্ধ জমাট মাঝমাঠ যে কোনও রক্ষণের ত্রাস। ছোট ছোট পাসে বল পজেশন রাখে মুম্বই দল।
দুর্বলতা: গত মরশুমে দলের ফুসফুস ছিলেন পেরেরা ডিয়াজ ও নাগুয়েরা। এই দুই বিদেশি এবার দল ছেড়েছেন। অন্যতম সেরা ভারতীয় মিডিও আপুইয়াকে ছিনিয়ে নেয় মোহন বাগান। ফলে দুরন্ত কম্বিনেশন কিছুটা নষ্ট খেয়েছে।
কোচের মুখে: কেউই অপরিহার্য নয়। মুম্বই সিটির জার্সি পরে এগারো জন ফুটবলার মাঠে নামবে। দ্রুত ছন্দ পাওয়া জরুরি।
নজরে যাঁরা: ছাংতে, ব্রেন্ডন, ফন ডি’লিপ।
ফর্মেশন: ৩-৫-২
সম্ভাবনা: কাগজে কলমে খুবই শক্তিশালী মুম্বই। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নতুন সেট-আপ তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। কম্বিনেশন গড়ে উঠলে এই দল চ্যাম্পিয়নশিপের দাবিদার।
মহমেডান স্পোর্টিং
আন্দ্রে চেরনিশভ সিজার মানজোকি
পাঁচের দশক মহমেডান স্পোর্টিংয়ের সোনালি অধ্যায়। ১৯৩৪-১৯৩৮ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচবার ঘরোয়া লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নজির গড়েন সাবু, রহমতরা। আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব এবার দেশের এক নম্বর টুর্নামেন্টে অংশ নেবে। আইএসএলে অভিষেকেই চমক দিতে তৈরি সাদা-কালো ব্রিগেড।
শক্তি: আই লিগ জয়ী দলের অধিকাংশ ফুটবলারকে ধরে রাখতে পেরেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। রুশ কোচ দলকে হাতের তালুর মতো চেনেন। প্রবল জনসমর্থন ফুটবলারদের বাড়তি অনুপ্রাণিত করবে।
দুর্বলতা: ক্লাব ও লগ্নিকারী সংস্থার তালমিলের অভাবে অনেক দেরিতে শুরু হয়েছে প্রি-সিজন প্রস্তুতি। কোনও ঘরোয়া টুর্নামেন্ট না খেলে কার্যত সরাসরি আইএসএলে নামবে সিনিয়র দল। দ্রুত কম্বিনেশন তৈরি না হলে বিড়ম্বনা বাড়বে।
কোচের মুখে: কঠিন টুর্নামেন্ট। এবারের আইএসএল মহমেডানের অ্যাসিড টেস্ট।
নজরে যাঁরা: আলেক্সিস, সিজার মানজোকি, কাসিমভ।
ফর্মেশন: ৪-৪-২
সম্ভাবনা: প্রথম ম্যাচে কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে মহমেডানের প্রতিপক্ষ নর্থইস্ট ইউনাইটেড। ঘরের মাঠে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিলে দল বাড়তি অক্সিজেন পাবে। বিদেশিরা ক্লিক করে গেলে চলতি আইএসএলে ডার্ক হর্স হতে পারে চেরনিশভের দল।
নর্থইস্ট ইউনাইটেড
হুয়ান পেড্রো নেস্টর
মরশুমের শুরুতেই ডুরান্ড কাপ ঘরে তুলেছে পাহাড়ি দলটি। অল উইন জয়ের পারফরম্যান্সে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তারা। সেই আত্মবিশ্বাসের পুঁজি নিয়েই এবার আইএসএলে নামতে চলেছে হুয়ান পেড্রো ব্রিগেড।
শক্তি: গতির বিস্ফোরণে প্রতিপক্ষের বক্সে হানা দিতে ওস্তাদ নর্থইস্ট। দুই উইঙ্গার জিতিন ও থোই সিং দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন। নিয়মিত গোল পাচ্ছেন গুয়েলিরমো ফার্নান্ডেজ। তবে দলের নিউক্লিয়াস নেস্টর। ম্যাচ পরিচালনায় বড় ভূমিকা গ্রহণ করেন তিনি।
দুর্বলতা: দলে ধারাবাহিকতার অভাব। তাছাড়া ম্যারাথন লিগের জন্য রক্ষণ ততটাও পরিণত নয়।
কোচের মুখে: ডুরান্ড কাপ অতীত। তবে যে কোনও জয় দলকে চাঙ্গা করে দেয়। আইএসএলের আগে তাই আত্মবিশ্বাসী গোটা শিবির। এবার ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের।
নজরে যাঁরা: জিতিন, পার্থিব, থই সিং, আজেরাই, গুয়েলিরমো, নেস্টর।
ফর্মেশন: ৪-৫-১
সম্ভাবনা: আইএসএলের সুপার সিক্সে জায়গা কারে নিতে পারে নর্থইস্ট ইউনাইটেড।
ওড়িশা এফসি
সের্গিও লোবেরা হুগো বোমাস
আইএসএলের অন্যতম শক্তিশালী দল। কোচ সের্গিও লোবেরা ভারতীয় ফুটবল হাতের তালুর মতো চেনেন। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী দল গড়েছে ম্যানেজমেন্ট। এবার আইএসএলে ট্রফির খরা কাটাতে বদ্ধপরিকর তারা।
শক্তি: আক্রমণাত্মক ফুটবল দর্শন নিয়ে মাঠে নামে লোবেরা ব্রিগেড। রয় কৃষ্ণা, ডিয়েগো মরিসিও সমৃদ্ধ আক্রমণভাগ বেশ শক্তিশালী। চলতি মরশুমে হুগো বোমাসকে দলে নিয়ে মাঝমাঠ আরও জমাট করেছে তারা।
দুর্বলতা: রক্ষণের ধারাবাহিকতার অভাব।
কোচের মুখে: এবার বোমাস দলে আসায় মাঝমাঠের শক্তি বেড়েছে। তাঁর সঙ্গে কৃষ্ণার বোঝাপড়া জমে গেলে সোনায় সোহাগা। গতবার খেতাবের কাছাকাছি গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি।
নজরে যাঁরা: রয় কৃষ্ণা, ডিয়েগো মরিসিও, হুগো বোমাস, আহমেদ জাহু।
ফর্মেশন: ৪-৩-২-১
সম্ভাবনা: আইএসএল ট্রফি ও লিগ-শিল্ড জয়ের অন্যতম দাবিদার ওড়িশা এফসি ।
কেরল ব্লাস্টার্স
মিকায়েল স্টাহরে নোয়া সাদিউ
আইএসএলে সবচেয়ে বড় চোকার্স দক্ষিণের এই ফ্রাঞ্চাইজি দল। তিনবার ফাইনালে পৌঁছলেও খেতাব জিততে ব্যর্থ তারা। গত মরশুমে দুরন্ত শুরু করেও সুপার সিক্সে মুখ থুবড়ে পড়ে ইভান ভুকোমানোভিচের দল। কোচ বদলের পর হতাশা ভুলে চলতি মরশুমে সাফল্য পেতে মরিয়া টিম ম্যানেজমেন্ট।
শক্তি: দুরন্ত ফ্যান বেস দ্বাদশ ব্যক্তির ভূমিকা নেয়। স্ট্রাইকার নোয়া সাদিউকে ছিনিয়ে নিয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছে থিঙ্কট্যাঙ্ক।
দুর্বলতা: ধারাবাহিকতার অভাব। সাহাল, জিকসনের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলারদের বিক্রি করার সিদ্ধান্ত বিস্ময়কর। অতিরিক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ডুবেছে দল।
কোচের মুখে: রাতারাতি সাফল্য আসে না। তার জন্য সময় প্রয়োজন। দায়িত্ব নেওয়ার পর দলকে শেপে আনার চেষ্টা করছি।
নজরে যাঁরা: নোয়া, লুনা, রাহুল কেপি।
ফর্মেশন: ৪-৪-২
সম্ভাবনা: নতুন কোচ এখনও পরীক্ষিত নন। ঘরের মাঠে পুরো পয়েন্ট তুলে নিতে পারলে দল বাড়তি অক্সিজেন পাবে। তবে তার জন্য রাহুল কেপিদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।
পাঞ্জাব এফসি
প্যানাগিওটিস ডিলাম্পেরিস মুশাগা বাকেঙ্গা
গত মরশুমেই আইএসএল খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে। লিগ পর্বে তারা শেষ করেছিল আট নম্বরে। ২২ ম্যাচে জিতেছিল মাত্র ছ’টি। হারতে হয়েছিল ১০টি ম্যাচে। তবে গতবার তাঁদের উল্লেখযোগ্য জয় ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে । ঘরের মাঠে তারা ৪-১ গোলে হারিয়েছিল মশাল বাহিনীকে। এবার কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ দিয়ে লিগ অভিযান শুরু করবে পাঞ্জাব।
শক্তি: লুকা মাজেনের সঙ্গে আক্রমণে যুক্ত হয়েছেন মুশাগা বাকেঙ্গা, এজিকুয়েল ভিদাল ও আসমির সুলজিক। ফলে দলের ভেদশক্তি যে বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য।
দুর্বলতা: দলে তরুণ ফুটবলার বেশি। তাই অনভিজ্ঞতার জন্য অনেক ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করতে হয়েছে পাঞ্জাবকে।
কোচের মুখে: গতবারের থেকে এই দল অনেকটাই শক্তিশালী। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য থাকবে সুপার সিক্সের ছাড়পত্র আদায় করা।
নজরে যাঁরা: লুকা, বাকেঙ্গা, ভিদাল, আসমির।
ফর্মেশন: ৪-৫-১
সম্ভাবনা: আসন্ন আইএসএলে বড় দলগুলির গাঁট হয়ে উঠতে পারে পাঞ্জাব।
এফসি গোয়া
মানোলো মার্কুয়েজ আর্মান্দো সাদিকু
ভারতীয় ফুটবলে অন্যতম পাওয়ার হাউস গোয়া। ডেম্পো, সালগাওকরের মতো ক্লাব দল একটা সময় কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছুড়ে দিয়েছে কলকাতার তিন প্রধানকে। সেই রমরমা এখন অতীত। ব্রুনো কুটিনহো, ব্রহ্মানন্দর রাজ্যে ফুটবলের আবেগ আবর্তিত হয় এফসি গোয়াকে ঘিরে। পাঁচ বছর আগে সের্গিও লোবেরার কোচিংয়ে আইএসএলের লিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।
শক্তি: স্প্যানিশ কোচ মানোলো মার্কুয়েজ সাফল্যের রসায়ন জানেন। আক্রমণাত্মক ফুটবলে বিশ্বাসী। জয় গুপ্তা, সেরিটন ফার্নান্ডেজের মতো তরুণ ফুটবলার দলের সম্পদ। কার্ল ম্যাকহাগ, আর্মান্দো সাদিকুরা বৈচিত্র্য বাড়াবেন। জাতীয় দলের পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজির দায়িত্বও সামাল দেবেন মানোলো।
দুর্বলতা: মাঝমাঠের ইঞ্জিন ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ দল ছেড়েছেন। রক্ষণ নিয়ে চিন্তা থাকছেই।
কোচের মুখে: দলে প্রতিভার অভাব নেই। বড় মঞ্চে মেলে ধরতে হবে।
নজরে যাঁরা: বোরহা, আয়ুষ ছেত্রী, কার্ল ম্যাকহাগ, সাদিকু।
ফর্মেশন: ৪-৪-২
সম্ভাবনা: রক্ষণ পোক্ত রাখতে পারলে যে কোনও দলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে পারে।
চেন্নাইয়ান এফসি
আওয়েন কোয়েল জর্ডন উইলমার
দু’বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন। তবে কোটি কোটি টাকা ইনভেস্ট করার বদলে এবার স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করেছে দক্ষিণের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি দল। চেনা বিদেশি রিক্রুট করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
শক্তি: আওয়েন কোয়েল সফল কোচ। ভারতীয় ফুটবল হাতের তালুর মতো চেনেন। দুরন্ত টিম স্পিরিট ড্রেসিং-রুমের সম্পদ। ফুটবলারদের গড় বয়স কম। কিয়ান, গুরকিরাতরা প্রমাণ করতে মুখিয়ে। উইলমার ও চিমার মতো স্ট্রাইকার গোল করতে পারেন।
দুর্বলতা: অভিজ্ঞতার অভাব। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের হাই-প্রেসিং স্ট্র্যাটেজির সামনে সাফল্য পাওয়া শক্ত।
কোচের মুখে: টিম ম্যানেজমেন্টের মানসিকতা অত্যন্ত পজিটিভ। প্রি-সিজন প্রস্তুতি নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগিয়ে চলছি।
নজরে যাঁরা: কিয়ান, এলসিনহো, উইলমার জর্ডন, ড্যানিয়েল চিমা।
ফর্মেশন: ৪-৪-২
সম্ভাবনা: বিদেশিরা নিজেদের মেলে ধরতে পারলে আইএসএলের কালো ঘোড়া হতেই পারে চেন্নাইয়ান।
বেঙ্গালুরু এফসি
জেরার্ড জারগোজা পেরেরা ডিয়াজ
ফ্র্যাঞ্চাইজি দল হিসাবে ভারতীয় ফুটবলে আত্মপ্রকাশ। ধূমকেতুর গতিতে উত্থান। ইতিমধ্যেই একবার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সুনীল ছেত্রীরা। কাগজে-কলমে বেশ শক্তিশালী দল গড়েছে বেঙ্গালুরু এফসি।
শক্তি: চলতি মরশুমে ডুরান্ড কাপ সেমি-ফাইনালে মোহন বাগানের কাছে টাই-ব্রেকারে হারলেও নজর কাড়ে বিএফসি’র লড়াই। রাহুল ভেকে, নিখিল পুজারি, গুরপ্রীত সিং, সুনীল ছেত্রীর মতো পোড়খাওয়া ভারতীয় ফুটবলার দলকে ভরসা দিচ্ছেন। পেরেরা ডিয়াজ ও নাগুয়েরার উপস্থিতিতে শক্তিশালী আক্রমণভাগ।
দুর্বলতা: ডুরান্ড কাপে ৭০ মিনিটের পর ফিটনেসের অভাব প্রকট হয়েছে। রক্ষণও তৈরি নয়। চাপের মুখে কোচ জেরার্ড জারগোজার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
কোচের মুখে: ঘরের মাঠে প্রথম প্রতিপক্ষ ইস্ট বেঙ্গল। ওদের হারানোই প্রথম লক্ষ্য।
ফর্মেশন: ৩-৫-২
সম্ভাবনা: দলে অভিজ্ঞ ফুটবলারের আধিক্য রয়েছে। ছন্দ পেয়ে গেলে চমক দিতে পারে।
হায়দরাবাদ এফসি
থংবই সিংটো হোয়াও ভিক্টর
২০২২ সালে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু আর্থিক সমস্যায় জেরবার নিজামের শহরের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল। তার উপর পরের পর ট্রান্সফার ব্যানে জর্জরিত দল। জোড়াতালি দিয়ে কোনওরকমে স্কোয়াড খাড়া করাই তাদের চ্যালেঞ্জ।
শক্তি: টিম স্পিরিট আর তরুণ ফুটবলারদের নাছোড় মনোভাব।
দুর্বলতা: অনেক দেরিতে শুরু হয়েছে অনুশীলন। কার্যত অপ্রস্তুত অবস্থায় মাঠে নামতে হবে কোচ থংবই সিংটোকে। শুরুতে মুখ থুবড়ে পড়লে প্রত্যাবর্তন খুবই কঠিন।
কোচের মুখে: পরিস্থিতি নতুন করে বোঝানোর কিছুই নেই। জুনিয়র ফুটবলারদের কাছে নিজেদের প্রমাণের এটাই সুযোগ। এটুকু বলতে পারি, হায়দরাবাদ এফসি লড়াই করবে।
নজরে যাঁরা: অ্যালেক্স সাজি, হোয়াও ভিক্টর
ফর্মেশন: ৪-৫-১
সম্ভাবনা: নতুন ইনভেস্টর দল গোছানোর সময় পায়নি। কোনওরকমে মরশুম শেষ হলে স্বস্তি পাবে হায়দরাবাদ এফসি।
জামশেদপুর এফসি
খালিদ জামিল সিভেরিও তোরো
২০২১-২০২২ মরশুমে আওয়েন কোয়েলের অধীনে আইএসএলের লিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু কোচ বদলের পরেই পড়তে শুরু করে পারফরম্যান্স গ্রাফ। গতবার নড়বড়ে শুরুর পর মাঝ মরশুমে খালিদ জামিলের হাতে দায়িত্ব তুলে দেয় ইস্পাত নগরীর এই ফ্র্যাঞ্জাইজি দল। তাঁর প্রশিক্ষণে ঘুরে দাঁড়ায় জামশেদপুর। এবার স্কোয়াডে বেশ কিছু পরিবর্তন করেছেন খালিদ। নিয়েছেন অভিজ্ঞ বিদেশি ও স্বদেশি ফুটবলার।
শক্তি: দীর্ঘদিন ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় কোচের অভিজ্ঞতা দলের বড় ভরসা। ফিটনেসেও প্রতিপক্ষকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা ধরে জামশেদপুর।
দুর্বলতা: ধারাবাহিকতার অভাব ভাবাচ্ছে খালিদকে।
কোচের মুখে: ম্যাচ অনুযায়ী পরিকল্পনা করে এগতে চাই। আত্মবিশ্বাস বজায় রাখা জরুরি।
নজরে যাঁরা: সিভেরিও তোরো, জাভি হার্নান্ডেজ, নংডম্বা নাওরেম, মহম্মদ সানান।
ফর্মেশন: ৪-৪-২
সম্ভাবনা: সুপার সিক্সে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।