বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

বরানগর মঠ: প্রতিষ্ঠা কাহিনি

শ্রীরামকৃষ্ণের দেহাবসানের ১৫ দিনের মাথায় ছেড়ে আসতে হয়েছিল কাশীপুর উদ্যানবাটী। সারদা দেবী গৃহীভক্ত বলরাম বসুর পরিবারের সঙ্গে তীর্থে চললেন। গুরুভাইদের নিয়ে পথে নেমে এসেছিলেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত। সব ছেড়ে নবীন সন্ন্যাসীদের মঠে যাওয়ার ডাক দিতেন। কিন্তু কোথায় মঠ? মুশকিল আসানে এগিয়ে এসেছিলেন কলকাতার সিমলা পাড়ায় ডস্ট কোম্পানির ম্যানেজার সুরেন্দ্রনাথ মিত্র। তাঁর কথায় বাড়ি খোঁজা শুরু করেন বরানগরের বাসিন্দা, নরেনের বন্ধু ভবনাথ চট্টোপাধ্যায়। শর্ত ছিল ভাড়া বেশি হওয়া যাবে না। তেমন বাড়ি পেতে অবশ্য বেশি দেরি লাগেনি। শ্রীরামকৃষ্ণের অন্ত্যেষ্টিস্থল কাশীপুর মহাশ্মশানের কাছে, গঙ্গার তীরে পরামানিক ঘাট রোডেই মিলল খোঁজ। টাকির জমিদার মুন্সিবাবুদের পোড়ো বাড়ি। স্থানীয়দের কাছে ভূতের আস্তানা হিসেবেই পরিচিত। ইট বের করা ভাঙা কাঠামোয় ছ’খানা ঘর। পেছন দিকটা ভাঙা। সামনে খানিকটা খোলা জমি। ভিতরে আবর্জনা আর জঙ্গল। সেখানে শেয়াল আর সাপখোপের বাসা। মাসিক ভাড়া ১১ টাকা।
দিনটা ছিল ১৯ অক্টোবর, ১৮৬৬। মঙ্গলবার। নরেনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা হল বরানগর মঠ। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের সদস্যদের দ্বারা স্থাপিত প্রথম মঠ। সেখানেই দিনরাত চলত জপধ্যান এবং শ্রীরামকৃষ্ণ, শঙ্করাচার্য, রামানুজ ও খ্রিস্টের দর্শন ও শিক্ষা নিয়ে আলোচনা। মঠের প্রথম দিনগুলির কথা বলতে গিয়ে নরেন্দ্রনাথ পরে বলেছিলেন, ‘বরাহনগর মঠে আমরা অনেক ধর্মাচরণ করেছি। রাত তিনটে নাগাদ ঘুম থেকে উঠে জপধ্যানে মগ্ন হতাম। সেই দিনগুলিতে বৈরাগ্য কি প্রবল ছিল! বাইরের জগৎ আছে কি নেই, সেকথা একবার মনেও হত না।’ ১৮৮৭ সালের প্রথম দিকে আটজন গুরুভাইকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ন্যাস ব্রত গ্রহণ করেন নরেন্দ্রনাথ। ধারণ করেন নতুন নাম— স্বামী বিবেকানন্দ।
বরানগর মঠের তখন আশ্রমিকদের মূল পরিধান কৌপীন। বাইরে যাওয়ার বহির্বাস মাত্র একটি। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেটি পরতেন সকলে। ঘরে মাছ ধরার জালের মতো মাদুর আর মাথায় দেওয়ার জন্য একটি করে ইট। খাবার বলতে তেলাকুচো পাতার ঝোল-ভাত। কোনও দিন একটু দুধ জোগাড় হলে সকলে আঙুল ছুঁইয়ে মুখে দিয়ে একে অপরকে জিজ্ঞাসা করতেন, ‘কি হে ভাই, বল পাচ্ছ?’
১৮৯৭ সালে জরাজীর্ণ বাড়িটি ধূলিসাৎ হয়ে যায়। স্বামীজি তখন পাশ্চাত্য সফরে। মঠ পুনর্গঠনের কোনও উদ্যোগই নেওয়া যায়নি। ৭৬ বছর পর, ১৯৭৩ সালে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের স্বামী রামানন্দের তত্ত্বাবধানে ‘বরানগর মঠ সংরক্ষণ সমিতি’ গড়ে বাগানের একটি অংশ দখল করেন স্থানীয়রা। শুরু হয় সমাজসেবা। ২০০১ সালে জমিটি তাঁরাই তুলে দেন বেলুড় মঠের হাতে। 

12th     May,   2024
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা