বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

বাস্তব ও প্রতিশ্রুতির টানাপোড়েনেই জমজমাট চা বলয়ের নির্বাচনী লড়াই

রাহুল দত্ত, আলিপুরদুয়ার: একদিকে পাট্টা ও চা-বাগানের জমির অধিকার। অন্যদিকে, চা-সুন্দরী ও অবসরকালীন বয়সসীমা বৃদ্ধি। পাশাপাশি চা শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি লাগু। এমনই ইস্যুগুলিকে সামনে রেখে উত্তরের চা বলয়ে জমজমাট ভোটের লড়াই। যুযুধান দু’পক্ষ তৃণমূল ও বিজেপি। তাদের লড়াই মূলত কাজের বাস্তব বনাম নয়া প্রতিশ্রুতি ঘিরে।  তৃণমূলের দাবি, চা-বাগানের শ্রমিকদের স্বার্থ পূরণে বিভিন্ন পরিষেবা বাস্তবায়িত করেছে তারা। উল্টোদিকে, বিজেপির দাবি, চা-শ্রমিকদের প্রকৃত দাবিদাওয়া পূরণ না করে শুধু চমকের রাজনীতি করছে তৃণমূল। দু’দলের চাপানউতোরে জমে উঠেছে চা-বাগানের ভোট প্রচার। 
আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট চা-বাগান কেন্দ্রিক। তা‌ই চা বলয়ে একটি চলতি কথা আছে, ‘চায়ে বাগান যেকার, ভোট সেকার’। স্বভাবতই তৃণমূল এবং বিজেপি দু’দলেরই নজর চা বাগানের ভোটে। এই চা শ্রমিকদের রায়েই নির্ধারিত হবে আলিপুরদুয়ারের ভাগ্য। যদিও যাঁরা ভোটভাগ্য নির্ণায়ক, সেই চা শ্রমিকদের সার্বিক অবস্থা নিয়ে সেভাবে আলোচনা কোথায়! আক্ষেপ চা বাগানের আনাচে কানাচে।  
এক চা শ্রমিকের কথায়, তৃণমূল ও বিজেপি দু’দলই নিজেদের মতো করে উন্নয়ন-প্রতিশ্রুতির কথা বলছে। কিন্তু, গত সাত-আট বছর ধরে চা-বাগানের বিভিন্ন স্কিমে কেন্দ্রীয় অনুদান আসা পুরোপুরি বন্ধ। প্রতিবাদে ধারাবাহিক আন্দোলন প্রয়োজন। তা হচ্ছে কোথায়। কেন এই টাকা আসা বন্ধ? স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, এই টাকা টি-বোর্ডের মাধ্যমে চা-বাগানকে দিত দিল্লি। যদিও টি-বোর্ড সূত্রে খবর, চা-বাগানের জন্য অধিকাংশ কেন্দ্রীয় প্রকল্পই এখন বন্ধ। বহুদিন টাকা আসছে না। মূলত চা-বাগানের পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের বিভিন্ন কাজে এই প্রকল্পের টাকা ব্যবহার করা হতো। এর মধ্যে উন্নত চা-গাছ রোপণ থেকে বাগানের বিদ্যুৎ, স্কুল, নিকাশি ব্যবস্থার মতো একাধিক প্রকল্প ছিল। সবক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধ। টি বোর্ড সূত্রে দাবি, বর্তমানে একমাত্র ছোট চা-বাগানগুলির জন্য একটি প্রকল্প খাতায়-কলমে চালু রয়েছে। তবে এই প্রকল্পে শেষ টাকা এসেছিল বছর চারেক আগে। কেন অনুদান বন্ধ? এ প্রশ্নের জবাব নেই টি বোর্ডের। 
চা বাগানে তৃণমূলের নেতৃত্বে থাকা সঞ্জয় কুজুর বলেন, রাজ্য যে উন্নয়নমূলক পরিষেবা চা শ্রমিকদের দিচ্ছে, সেগুলিই তাঁরা বেশি করে প্রচার করছেন। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধ থাকা নিয়েও তাঁরা সরব।  চা­ শ্রমিকদের বোঝানো হচ্ছে, কীভাবে দিল্লির সরকার তাঁদের বঞ্চিত করছে। অন্যদিকে, বিজেপি সমর্থিত চা-বাগান সংগঠন বিটিডব্লুইউ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ হাতি বলেন, পাট্টা দেওয়া বা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কোনও প্রভাবই ফেলবে না। চা শ্রমিকদের আসল দাবি, জমির অধিকার। সেবিষয়ে তৃণমূল চুপ। দিল্লিতে ফের বিজেপির সরকার গঠিত হলে এই অধিকার তাঁরা পাবেন বলে আশাবাদী।  কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়েও তাঁদের সঙ্গে দিল্লির ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে দাবি সন্তোষবাবুর। 
এদিকে, ইস্যুর পাশাপাশি চা বাগানের ভোটে এবার আরও একটি বড় ফ্যাক্টর, আদিবাসী বিকাশ পরিষদের ব্যানারে থাকা রাজেশ লাকড়া ওরফে টাইগার। ২০২১ সালে এই টাইগারই তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে মনোজ টিগ্গার বিরুদ্ধে বিধানসভা ভোটে লড়াই করেছিলেন। বর্তমানে তিনি দল ছেড়ে পুরনো ঠিকানায় ফিরে যান। এই অবস্থায় আলিপুরদুয়ারে নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়েছে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। কাটাকাটিতে তৃণমূল-বিজেপির চা-বাগানের ভোট কতটা নিজের দিকে টানতে পারবেন টাইগার, সেটাই বড় প্রশ্ন। 

15th     April,   2024
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ