রাজ্য

আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে অ্যাপায়ন করে আনা হয়েছে এদেশে, সিএএ মানব কেন? 

রাহুল দত্ত, দিনহাটা : ‘বিচ্ছিন্ন হয়েছিলাম। দূর থেকে দেখতাম কাছের ইন্ডিয়াকে! বড় দেশ, বড় আশ্রয়, ওখানে থাকলে ভালো কিছু হবে মনে হয়েছিল। হাল ফিরবে সংসারের, নিজেদের। এই আশাতেই বাংলাদেশের দিকে থাকা ছিটমহল থেকে এপারের মাটিতে পা রেখেছিলাম, ভারতীয় হয়েছিলাম। কিন্তু, কোথায় কী! এখন মনে হচ্ছে নাগরিকত্বের নামে ঠকিয়ে দিল আমাদের। ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ে পর্বে এদেশে যখন প্রবেশ করেছিলাম, চারিদিকে কত আনন্দ-উৎসব। ফুল ছড়িয়ে স্বাগত জানানো হয় আমাদের। প্রতিশ্রুতি মিলল ঝুড়িঝুড়ি। কিন্তু, মোদি সরকার তো আর ফিরেই তাকাল না। ফিরে যাওয়ার সুযোগ থাকলে, চলে যেতাম। দুঃখ হয়! নাগরিকত্বের এই করুণ দশা দেখে মনে হয়, যেন কোনও জেলখানায় রয়েছি। এর উপর এখন নতুন করে সিএএ’র হুঁশিয়ারি নিয়ে মাঝেমধ্যে ভয় হয়! কী করব জানি না?’ এক নিঃশ্বাসেই নিজেদের হালের কথা শোনাচ্ছিলেন বছর ৩০’র রঞ্জিত বর্মন। শুধু তিনিই নন। তাঁর মতো রয়েছেন আরও অনেকে। খাতায়-কলমে এরাই দেশের নবীনতম নাগরিক। প্রায় প্রত্যেকের গলাতেই শোনা গেল প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় দিল্লির বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা। দিনহাটার কৃষি খামারের পিছনে বাংলাদেশের দিকে থাকা ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দাদের জন্য স্থায়ী পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। গত ন’বছর ধরে ‘ভারতীয়’, এমন ২৫০’র কিছু বেশি মানুষ সেখানে বসবাস করেন। যত্ন করে নিয়ে আসা লোকজনের সঙ্গে যদি এই ব্যবহার করা হয়, তাহলে সিএএ’র মাধ্যমে যে বা যাঁরা নাগরিকত্বের আশা রাখছেন, ভবিষ্যতে তাঁদের জন্য যে কী অপেক্ষা করছে, সেটাও সবাইকে ভেবে দেখতে বলছেন ছিটমহলের ‘নব্য ভারতীয়রা’।  
কিন্তু, তাঁদের কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, যা পূরণ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা লাবনী রায় এবং শ্যামল রায় একযোগে বলেন, দিল্লির সরকার বলেছিল, বাংলাদেশে যে বা যাঁরা জমিজমা ছেড়ে আসছেন, সেগুলির দাম আদায় করতে সহযোগিতা করা হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশে থাকা জমি বিক্রি করতে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দিল্লি। শ্যামলবাবু আরও বলেন, আড়াই বিঘে জমি ছিল বাংলাদেশে। সব ছেড়ে চলে আসতে হয়। টাকা তো পেলামই না। উল্টে এখানে সংসার টানতে সামান্য কাঠের কাজ করতে হচ্ছে। রঞ্জিত বর্মন বলেন, গোয়ালঘর বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, গোরু মেলেনি। যে আবাসনে তাঁরা থাকছেন, তার কোনও নথিও তাঁদের কাছে নেই। এদেশে এসে জমি বা কাজ মেলার আশা করেছিলাম, কিন্তু কোথায় কী! লাবনী রায় বলেন, দিল্লি থেকে নেতা-মন্ত্রী এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এককালীন ৫ লক্ষ টাকাও দেওয়া হবে। তাও মেলেনি আজ পর্যন্ত। আরেক বাসিন্দার কথায়, জমির দাম মেলা, কাজ পাওয়া তো দূরের কথা, যে আবাসনগুলিতে থাকছি, সেখানে জলের লাইন পর্যন্ত নেই। বাড়িতে থাকার নথি নেই, অথচ বিদ্যুতের বিল দিতে হচ্ছে। এখন অনেক সময় শুনছি, সিএএ’তে ফের নাগরিকত্বের আবেদন করতে হবে। কিন্তু, কেন করব? আমরা আন্তর্জাতিক চুক্তিতে এদেশে এসেছি। ভারত সরকার অতিথি আপ্যায়নে আমাদের এনেছে। তাহলে নাগরিকত্বের প্রশ্ন উঠছে কেন? সিএএ-এনআরসি নিয়ে ভয় পাইনি। আবেদনও করব না। এক বাসিন্দা খলিলুর রহমানের কথায়, শুধু নিজেদের হকের অধিকার ফিরে পেতে চাই। একইসঙ্গে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দিল্লি,  সেটা যেন পূরণ হয়, এটাই তাঁদের একমাত্র আবেদন। 
3Months ago
কলকাতা
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা