অমৃতকথা

কৃষ্ণানুরাগ

এক ভক্ত চীৎকার করে বলেন, “হায়, আমি মথুরা দর্শন করতে পারলাম না! যে মথুরার নাম শুনলে আমার শরীর রোমাঞ্চিত হয়, আমি সেই স্থান দর্শন করতে পারলাম না। সুতরাং আমার এই চোখের কি প্রয়োজন?” এই উক্তি থেকে মথুরা দর্শনের তীব্র উৎকণ্ঠা প্রকাশিত হয়, যার উদয় গভীর কৃষ্ণভক্তি থেকে হয়। এই গভীর কৃষ্ণানুরাগ ভীমের মধ্যে তখন প্রকাশ পেয়েছিল, যখন তিনি ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে চাপা স্বরে বলতে থাকেন, “আমার বাহুযুগল বজ্রের মতো, কিন্তু শিশুপাল যখন কৃষ্ণের নিন্দা করছিল, তখন আমি তাকে পিষে ফেলতে পারলাম না। সুতরাং এই বাহু দিয়ে আমার কি প্রয়োজন?” এখানে ভীমসেন অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন এবং সেই ক্রোধের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি অসহায় বোধ করেন। ক্রোধজনিত এই অসহায় বোধের কারণ হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি গভীর আসক্তি। এটি ক্রোধজনিত শ্রীকৃষ্ণের প্রতি গভীর আসক্তির একটি দৃষ্টান্ত।
অর্জুন যখন শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ দর্শন করেন, যাঁর চোখ ঝলসানো ধারাল দন্ত-সমন্বিত মুখমণ্ডল সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে গ্রাস করছিল, তখন অর্জুনের মুখ শুষ্ক হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় অর্জুন আত্মবিস্মৃত হয়েছিলেন এবং ভুলে গিয়েছিলেন যে, তিনি হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণের সখা এবং সর্বদাই তিনি শ্রীকৃষ্ণের কৃপার উপর নির্ভরশীল। এই ঘটনাটি নিকৃষ্ট পরতন্ত্রতার একটি উদাহরণ।
কখনও কখনও বীভৎস কার্যকলাপও কৃষ্ণপ্রেম বর্ধিত করে। প্রেমানুভূতি প্রকাশক এই ভয় মোহ থেকে উৎপন্ন হয়। শ্রীমদ্ভাগবতের দশম স্কন্ধে যাজ্ঞিক ব্রাহ্মণদের উক্তি—“আমরা তিনটি মহান সুযোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি। আমরা উচ্চ ব্রাহ্মণ-বংশে জন্মগ্রহণ করেছি, যথাযথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা যজ্ঞোপবীত লাভ করেছি, এবং আমরা সদ্‌গুরুর কাছ থেকে বিধিবৎ দীক্ষা লাভ করেছি। কিন্তু হায়! এই সমস্ত সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও আমরা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের ব্রহ্মচর্য পালনও ব্যর্থ হয়েছে।” এইভাবে ব্রাহ্মণরা তাঁদের কার্যকলাপের নিন্দা করতে থাকেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন যে, উচ্চ বংশে জন্ম, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সত্ত্বেও তাঁরা মায়াশক্তির দ্বারা মোহিত। তাঁরা স্বীকার করেছিলেন যে, ভগবানের প্রতি ভক্তিহীন মহান যোগীরাও মায়ার প্রভাবে আচ্ছন্ন। কৃষ্ণভক্তিবিহীন কর্মকাণ্ডীয় যজ্ঞ অনুষ্ঠান করার ফলে, সেই ব্রাহ্মণেরা এই ব্যর্থতা অনুভব করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্তিযুক্ত নৈরাশ্যের একটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে অরিষ্টাসুর যখন ব্রজবালাদের আক্রমণ করে, তখন তাঁরা চীৎকার করে শ্রীকৃষ্ণকে বলেন, “হে কৃষ্ণ! আমাদের তুমি রক্ষা কর! আমাদের তুমি রক্ষা কর!” এই নৈরাশ্য কৃষ্ণাসক্তিপূর্ণ।কেশী দৈত্য যখন শ্রীকৃষ্ণের হাতে নিহত হয়, তখন কংস অত্যন্ত নিরাশ হয়ে পড়ে। সে বলে, “কেশী দৈত্য আমার প্রাণাধিক প্রিয় ছিল, কিন্তু সে আজ অসভ্য, অশিক্ষিত, রণবিদ্যায় অনভিজ্ঞ একটি গোপবালকের হাতে নিহত হয়েছে। আমি যদিও দেবরাজ ইন্দ্রকে অনায়াসে পরাভূত করেছি, তবুও আমার বেঁচে থাকা নিরর্থক।” এই নৈরাশ্য শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্তির ছোঁয়া রয়েছে, এটিকে নৈরাশ্য-জনিত রতির আভাস বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
শ্রীল রূপ গোস্বামীর বিরচিত ‘ভক্তিরসামৃতসিন্ধু’ থেকে
8h 8m ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

শরিকি সম্পত্তি মামলায় ফল অনুকূল হতে পারে। উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান গবেষণায় উন্নতির যোগ। অর্থাগম হবে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৩ টাকা৮৪.৯৭ টাকা
পাউন্ড১০৭.৮৭ টাকা১১১.৬৫ টাকা
ইউরো৮৯.৬৮ টাকা৯৩.০৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা