উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
দুর্ঘটনা বা বয়সজনিত কারণে মানুষের শরীরে নানা রকমের রোগের সঞ্চার হয়। মাঝেমধ্যে সেইসব রোগ বিরাট আকার ধারণ করে। বিকল হয়ে যেতে পারে মানব দেহের অঙ্গ। শুধুমাত্র ক্লিনিক্যাল চিকিত্সার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যায় না। অত্যাধুনিক যন্ত্র এবং শারীরিক অনুশীলনের দরকার হয়। এই বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরের কোনও অঙ্গের কর্মদক্ষতা ফিরিয়ে আনাকেই বলা হয় ফিজিওথেরাপি। এই কাজ যিনি করেন তাকেই ফিজিওথেরাপিস্ট বলা হয়। এই পেশা প্রকৃত অর্থে অ্যালায়েড হেলথ প্রফেশন। মূল চিকিত্সার সঙ্গে প্রয়োজন হলে এই ধরনের সহায়ক চিকিত্সার সাহায্য নেওয়া হয়। দক্ষ পেশাদার ফিজিওথেরাস্টিদের চাহিদা বেশ ভালো।
এই কোর্সে কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর লোকোমোটর ডিজেবিলিটিস সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয়। এই কোর্সে পড়ার জন্য এখনই আবেদন করতে পারেন।
কোথায় পড়বেন?
ব্যাচেলার অব ফিজিওথেরাপি পড়ানো হয় নিস্নলিখিত প্রতিষ্ঠানগুলিতে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর লোকোমোটর ডিজেবিলিটিস, কলকাতা
স্বামী বিবেকানন্দ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব রিহ্যাবিলিটেশন ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ, কটক
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এমপাওয়ারম্যান্ট অব পার্সনস উইথ মাল্টিপল ডিজাবিলিটিস, চেন্নাই
এই প্রতিষ্ঠানগুলি প্রত্যেকটাই কেন্দ্রের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ। প্রার্থী বাছাই করা হবে একটি জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে। কোর্সের মেয়াদ সাড়ে চার বছর।
আসনসংখ্যা: কলকাতা ৫২টি, কটক ৬২টি এবং চেন্নাই ১৫টি। কোর্স ফি: প্রতি বছর কম-বেশি ৪৪ হাজার টাকা। হোস্টেল ফি অতিরিক্ত।
কারা পড়বেন?
কমপক্ষে মোট ৫০ শতাংশ নম্বরসহ ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিদ্যা নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণরা আবেদন করতে পারেন। তফসিলি এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নম্বরে নিয়মানুসারে ছাড় পাবেন। ভর্তির সময় নির্দিষ্ট বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়ার বয়সসীমা দেখে নিতে হবে। তফসিলি এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীরা বয়সে পাঁচ বছরের ছাড় পেয়ে যাবেন। প্রতিষ্ঠানের তরফে জানানো হয়েছে, ফাইনাল ইয়ারর ছাত্রছাত্রীদের ৬ মাসের কম্পালসরি ইন্টার্নশিপে পাঠানো হয় বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায়। ইন্টার্নশিপ চলাকালীন নির্দিষ্ট হারে স্টাইপেন্ড দেওয়া হয়।
প্রবেশিকা পরীক্ষার পদ্ধতি
প্রার্থী বাচাই করা হয় একটি জাতীয়স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে। পরীক্ষাতে ১০০টি অবজেক্টিভ ধরনের মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন থাকে। প্রথম পার্টে জেনারেল এবিলিটি এবং জেনারেল নলেজ বিষয়ে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। দ্বিতীয় পার্টে ফিজিক্স (৩০ নম্বর), কেমিস্ট্রি (৩০ নম্বর) এবং ম্যাথামেটিক্স বা বায়োলজি (৩০ নম্বর) বিষয়ক প্রশ্ন। ইংরেজিতেই প্রশ্ন হবে।
আবেদনের পদ্ধতি
অনলাইনে অথবা অফলাইনে আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে আবেদন করার ওয়েবসাইট হল www.niohkol.in-এ। অনলাইনে আবেদন করার সময় সাম্প্রতিক কালে তোলা প্রার্থীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে। কালো কালিতে নিজের এবং অভিভাবকের সই লাগবে। ফি বাবদ দিতে হবে মোটামুটি ৭৫০ টাকা। (তফসিলি এবং দৈহিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৬০০ টাকা) ফি দিতে হবে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া কালেক্টের মাধ্যমে। ফি জমা দিয়ে পাওয়া ই-রিসিপ্ট এবং আবেদনপত্র সাবমিটের পর পূরণ করা আবেদনপত্রের এক কপি করে প্রিন্ট আউট নেবেন। এগুলি কোথাও পাঠাতে হবে না। নিজের জন্যই রাখতে হবে।
অনলাইনে আবেদনের জন্য আবেদনপত্র ডাউনলোড করতে হবে www.niohkol.nic.in থেকে।
এছাড়াও এই কোর্স দিল্লির পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পার্সনস উইথ ফিজিক্যাল ডিজাবিলিটিসেও পড়ানো হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি কেন্দ্রের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ একচি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। কোর্সটি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা স্বীকৃত। মোট ৫৯টি আসন রয়েছে। কোর্স ফি প্রতি বছর কম-বেশি ৪২ হাজার ১০০ টাকা। ছাত্রীদের জন্য হস্টেলের সুবিধা রয়েছে। হস্টেল ফি অতিরিক্ত।
কারা পড়বেন?
কমপক্ষে মোট ৫০ শতাংশ নম্বরসহ ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিদ্যা নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণরা আবেদন করতে পারেন। তফসিলি এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ নম্বর পেলেই হবে। যাঁরা তিন বছর বা তার বেশি সময় ধরে নিয়মিতভাবে পড়াশোনার সঙ্গে যুক্ত নন, তাঁরা আবেদন করবেন না। পরীক্ষাতে মোট ২০০ টি মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন থাকবে। অনলাইনে আবেদন করতে হবে www.iphnewdelhi.in-এর মাধ্যমে। পরীক্ষার ফি বাবদ নেট ব্যাঙ্কিং বা ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে মোটামুটি ১ হাজার ২০০ টাকা জমা করতে হয় । তপসিলি এবং দৈহিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে তা কম-বেশি ৬০০ টাকা।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ
এই বিষয় নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পড়া যায়। ফিজিওথেরাপির ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তরে স্পেশালাইজেশন করা যায় রিহ্যাবিনিটেশন, নিউরোলজি, পডিয়াট্রিক্স, স্পোর্টস, ইলেক্ট্রোথেরাপি এবং অন্যান্য বিষয়।
কাজের সুযোগ
ফিজিওথেরাপিস্টের কাজের সুযোগ রয়েছে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি স্বাস্থ্যপ্রকল্প, সাইকিয়াট্রিক ক্লিনিক, জেরিয়াট্রিক কেয়ার সেন্টার, স্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রিতে। রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনার সুযোগও। এছাড়া বিভিন্ন শিল্প ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কনসালট্যান্ট, ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিশনার বা অ্যাডভাইজার হিসেবে স্বাধীনভাবে কাজ কার যায়। এই ক্ষেত্রগুলো ছাড়াও বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাতেও কাজের সুযোগ রয়েছে।