Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

দর্শক
মানস সরকার

রাস্তার দিকে ভালো করে একবার তাকিয়ে নিয়ে মন্দিরা শেষ পর্যন্ত ঢুকে এল অনুষ্ঠান বাড়ির ভিতর। বুকটা ভারী লাগছে। বোঝা যাচ্ছে, সমীর আর আসবে না। নাকে-মুখে কোনও রকমে দুটো রেশনের মোটা চালের ভাত আর কাঁচালঙ্কা দেওয়া ডালসেদ্ধ গুঁজে দুপুর বারোটার সময় হোঁচট খেয়ে বেরতে বেরতে বলেছিল, ‘আকাশনীল বাড়ির সামনেই ন’টা পর্যন্ত অপেক্ষা কোরো। এলে তার মধ্যেই চলে আসব।’
ন’টা রাত হিসাবে শীতের শেষে মফসসল শহর চন্দননগরে অনেকটা। তারপর বিয়েবাড়ি নয়, জন্মদিন। আমন্ত্রিত সবাই প্রায় এসে পড়েছে। ঢোকার মুখেই মিকি মাউস সেজে দাঁড়িয়ে থাকা মডেলটা এগিয়ে এসে মাথা ঝাঁকাল। সামান্য ছেঁড়া গ্লাভস পরা দুটো হাত জোড় করে নমস্কার করল। মন্দিরা কুঁকড়ে দাঁড়িয়ে পড়েও আবার এগিয়ে গেল। যে কোনও অনুষ্ঠান বাড়িতে আজকাল এটা দারুণ ফ্যাশন। সে বিয়েবাড়ি হোক বা জন্মদিন। শ্রাদ্ধবাড়িতে দেখেনি। কোনওদিন হয়তো সেখানেও চালু হয়ে যাবে। জন্মদিন বলে এখানে মিকি মাউস। কোন বিয়েবাড়িতে যেন চার্লি চ্যাপলিন দেখেছিল, মনে করতে পারল না। গার্গীর পাঁচ বছরের ছেলে দু’চারজন বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে দারুণ লাফালাফি করছে গোটা হল জুড়ে। ভীষণ ছটফটে আর স্মার্ট সব বাচ্চাগুলো। একটা বাচ্চাকে বলতে শুনল, ‘মিকি মাউস কথা বলবে না?’ গার্গীর ছেলে নীলাভ্রর গলায় বিরক্তি ঝরে পড়ল, ‘বাইকে করে একজন এসে নামিয়ে দেওয়ার পর থেকে একবারও কথা বলেনি।’
দুই
গার্গীকে ঘিরে রয়েছে বেশ কয়েকজন মহিলা আর পুরুষ। প্রত্যেকে একেবারে যেন পার্লার থেকে এসে সরাসরি এখানে ঢুকেছে। লক্ষ করল মন্দিরা। সবার চুলটাই কৃত্রিমভাবে সোজা করা। তাতে অদ্ভুত রং। অনেকটা আমের বউলের মতো। প্রত্যেকেই অনবরত কপালের উপর উঠে আসা চুল কানের উপর দিয়ে তুলছে আর মাঝেমধ্যে মোবাইলে দেখে নিচ্ছে নিজেকে। আত্মরূপ দেখে মোহিত যেন। এদের থেকে কম দামি শাড়ি পরে আছে ও। মেক আপও সেরকম নেই। খুব একটা সে নিয়ে মাথাব্যথাও নেই। সমীরের স্থায়ী রোজগার নেই। হাতের গিফট প্যাকটা মুঠোয় আর একটু শক্ত করে ধরল মন্দিরা। সমীরই কাল রাতে এনে ধরিয়ে দিয়েছিল। জিজ্ঞাসা করলে বলেছিল, ‘আশাপূর্ণা দেবীর ছোটদের গল্পের একটা বই কুমারদার দোকানে অনেকটা ছাড়ে পেয়ে গেলাম। নিয়ে নিলাম। কিন্তু গার্গীর ছেলে কি বাংলা গল্পের বই পড়বে?’
মন্দিরা বলেছিল, ‘ও নিয়ে তুমি ভেব না। তাছাড়া বিয়ে, জন্মদিনে বই উপহার দেয় না লোকে এখন। আমরা দিচ্ছি। এ ব্যাপারটাই তো নতুন।’ 
‘কী জানি, ওরা কেমন করে নেবে। আসলে...।’ সমীরের কথা শেষ না করার কারণ অজানা ছিল না মন্দিরার। কোভিডের পর সেই যে ওদের নাটকের দলটা ভাঙল, আর গড়ে ওঠেনি। মানুষজন অন্য জীবিকা আর জীবনে ফিরে গেছে। কিন্তু মন্দিরা বোঝে, একটা শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেছে। যেমন, সমীর। এই তিন বছরেও অন্যকিছু করে উঠতে পারেনি।
কলেজ থেকেই নাটক অন্ত প্রাণ সমীর। স্রেফ শখের কারণে নয়। নাটকের সঙ্গে জুড়ে থাকতে গিয়ে গ্র্যাজুয়েশনের পর আর ইউনিভার্সিটি গেল না। একটা গ্রুপ নাটকের দলের সঙ্গে কাটিয়ে দিয়েছে প্রায় দশ বছর। প্রাণ দিয়ে চরিত্রে অভিনয় করেও সমীরের বরাবরের একটা আক্ষেপ, দর্শক নেই। প্রায়ই বলে, শম্ভু মিত্র, অজিতেশ, উৎপল বা বিজন ভট্টাচার্যের স্বর্ণযুগ আর ফেরা শক্ত বাংলা নাটকে। সবসময় ব্যতিক্রম কিছু ভাবে বা রোজই নিয়ম করে পড়াশোনা-মঞ্চে লড়াই করেও সংসার সচল রাখার ক্ষেত্রে বরাবর সমীর আগাগোড়া মন্দিরার পাশে থেকেছে। 
তিন
মন্দিরা কাজ করে আশা কর্মী হিসাবে। মাইনে এমন কিছু নয়। দু’জনের সংসারটা যেমন করে হোক চালিয়ে নিতে পেরেছে। হ্যাঁ, দু’জনেরই। বিবাহিত জীবনের পাঁচ বছর পরেও ওর আর সমীরের মধ্যে ইচ্ছে থাকলেও তৃতীয় কেউ আসেনি। টুকটাক শো, আর এদিক-ওদিক করে চলছিল তাও। কাজ যখন একেবারেই নেই, তখনও সাহস দিয়ে বলেছিল, ‘চিন্তা কোরো না। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।’ শুকনো মুখে সমীর বলেছিল, ‘কী করে বলছ কথাটা? চারপাশের অবস্থা বেশ খারাপ। সংস্কৃতির বাজার বেশ মার খেয়েছে। এমনিই দর্শক সংখ্যা কমছিল। এ বার হল পুরো শূন্য হয়ে যাবে। লোক পেটে খাবে না নাটক দেখবে!’ চুপ করে গিয়েছিল সেদিন মন্দিরা। নিজের জীবনটাই তো আস্ত একটা রুদ্ধশ্বাস নাটক। চন্দননগর কলেজে মগরা থেকে পড়তে এসে ইতিহাস অনার্সের সমীরের সঙ্গে আলাপ, প্রেম। ওর অবশ্য পাস কোর্স। সমীর এক বছরের সিনিয়র হলেও দু’জনেই দু’জনকে ‘তুই তোকারি’ করত প্রথমে।
গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পরই বুঝতে পারছিল সমীরকে বিয়ে করলেই ভালো হয়। বিরাট কিছু সম্ভাবনা না থাকলেও এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ওদের দু’জনের বোঝাপড়াটা গড়ে উঠেছে। 
চার
মন্দিরার বাবা প্রাইমারি স্কুলের টিচার। মাকে দিয়ে বলাতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন। বছর কয়েক পরে সমীরকে রেজিস্ট্রি করে চন্দননগরে ওদের বাড়িতে চলে আসার পরের এক বছর মেয়ের মুখ দেখতে আসেনি বাবা। তারপর ধীরে ধীরে আবার সম্পর্ক সহজ হয়েছে। বিশেষত শাশুড়ি মারা যাবার পর। সমীরের বাবা মারা গেছে অনেক ছোটবেলায়। কোনও ভাইবোনও নেই। মন্দিরাও একমাত্র মেয়ে। তবে বাবা-মায়ের কাছে মন্দিরা কখনও কোনও সাহায্য চায়নি। সমীরকেও আগাগোড়া এ ব্যাপারে স্বাধীনচেতা মনে হয়েছে। একটা সময় সমীরকে দেখে মন্দিরার ভেতরে ভয় করতে শুরু করেছিল। ওজন কমে যাচ্ছিল, মুখে দাড়ি, লম্বা চুল। একদিন রাতে খাওয়ার সময় বলেছিল, ‘ঠিক করে খাওয়া-দাওয়া কর। প্রচণ্ড রোগা হয়ে যাচ্ছ।’ অন্যমনস্কভাবে সমীর প্রশ্ন করেছিল, ‘কী করে বুঝলে?’
‘বাঁ হাতের আংটি আলগা হয়ে গেছে। দেখতে পেয়েছি।’ সমীরের মুখে হাসির রেখা ভেসে উঠেছিল, ‘ওই জন্যই মাঝের আঙুলে পরেছি।’
‘খুলে রাখ কিছুদিন। পড়ে গেলে।’ 
‘না’, দৃঢ় গলায় বলেছিল সমীর। বুঝতে পেরেছিল মন্দিরা। আংটিটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ওদের বিয়ের স্মৃতি। নিজের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের সব টাকা তুলে কিনেছিল। রেজিস্ট্রির সময় পরিয়ে দিয়েছিল বরের আঙুলে। লক্ষ করে দেখেছে, সমীর আংটিটা কোনও অবস্থায় খুলতে চায় না। দু’সপ্তাহ আগে রোববারের বেলায় বাজার করে প্রায় নাচতে নাচতে ঢুকল সমীর। বাথরুমে তখন জামাকাপড় থুপে থুপে কাচছে মন্দিরা। কোনও কিছু খবর দেওয়ার থাকলে বিয়ের পর থেকেই খেয়াল করেছে নাম ধরে ডাকতে ডাকতে ওর কাছে চলে আসে। বাথরুমে দরজার সামনে সমীর দাঁড়াতেই চোখে এসেছিল দাড়ির ভেতর থেকেও ওর মুখের ঝিলমিল। বলেছিল, ‘বাসুদেবদা ফোন করেছিল।’ গালের উপর ছিটকে পড়া গুঁড়ো সাবানের ফেনা হাত দিয়ে মুছে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল মন্দিরা। সমীর বলেছিল, ‘নতুন দল করেছে। কী কপাল, সঙ্গে সঙ্গে শো-ও পেয়েছে পরপর কয়েকটা।’
‘তাই?’ হাসি চলকে উঠেছিল মন্দিরার মুখেও।
‘হ্যাঁ। পরপর শো।’ বলেই সমীর ঘুরে বাজারের ব্যাগ রাখতে চলে গিয়েছিল রান্নাঘরে। ভেতরে বুড়বুড়ির মতো উঠে আসছিল কথাটা। বলেনি মন্দিরা। থাক, সময়-সুযোগ করে বলবে ঠিক। এর মধ্যে পর পর তিন-চারদিন বেরিয়েছে সমীর। অনেকটা রাত করে ফিরেছে। প্রত্যেকবার এসে কিছু টাকা গুঁজে দিয়েছে ওর হাতে। মন্দিরা অবাক হয়ে বলেছে, ‘সংসার তো চলছে। আমার তো কোনও অসুবিধা নেই।’ সামান্য চুপ থেকে সমীর বলেছে, ‘নিজের অ্যাকাউন্টে জমা কর। কাজে লাগবে।’ 
পাঁচ
নেমন্তন্নে গেলে দু’জনেই যায়। আজ কেমন একা একা, অদ্ভুত লাগছে। না, তবুও খাবে মন্দিরা। একাই। গার্গীর কাছে বইয়ের গিফট প্যাকটা এগিয়ে ধরল, ‘এটা নীলাভ্রর জন্য।’
অমায়িক হাসল গার্গী। চন্দননগরে মন্দিরার সঙ্গেই দু-বছর এক টিউশনে পড়ত। পড়াশোনাতেও বেশ ভালো ছিল। দু’একজনের মুখে শুনেছিল, কোনও ডাক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। বছর খানেক আগে ভিজিটে বেরিয়েছিল চন্দননগরের দক্ষিণ দিকে। খুব সুন্দর বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়াতেই বেরিয়ে এসেছিল গার্গী। বলেছিল, ‘ব্যালকনি থেকে দেখছিলাম তোকে। দেখ, ঠিক চিনে ফেলেছি দূর থেকেও।’ তারপর বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা। ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়া। ফোন, মেসেজ। আবার ওর বাড়িতে যাবে বলেও যাওয়া হয়নি মন্দিরার। গার্গী উঁচু গলায় ছেলেকে ডাকল, ‘নীল, নীল এ দিকে এসো,’ তারপর মন্দিরাকে বলল, ‘বর কোথায়?’ 
 ‘এই...পরপর শো থাকছে। তোর বর কোথায়?’
‘পেশেন্ট। তোদের ওই উত্তর চন্দননগরেই দুপুরে একটা অ্যাক্সিডেন্ট। ও তো সার্জেন। ইমিডিয়েট কিছু অ্যাডভাইস দরকার। তাই গেল। চলে আসবে।’
গার্গীর বলার মধ্যে একটা প্রচ্ছন্ন যেন তৃপ্তি আছে। ওর ছেলে এগিয়ে এসে বইয়ের গিফট প্যাকটা নিয়ে মায়ের হাতে তুলে দিয়ে চলে গেল। চারপাশটা বেলুন, ফুল দিয়ে চমৎকার সাজানো। হলের পাশের অংশটায় বোধ হয় বুফে সিস্টেমে খাওয়ানো শুরু হয়ে গেছে। অনবরত কিছু লোকের হাঁকডাক, চামচ আর প্লেটের শব্দ ভেসে আসছে। গার্গী ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বার্থডে বয়ের কেক কাটা কীভাবে হবে, সে সব নিয়ে। আশপাশের বেশ কয়েকজন ঘাড় ঘুরিয়ে মন্দিরাকে দেখল। গোটা হলের মধ্যে ওই-ই বোধ হয় একমাত্র যে তাঁতের সাধারণ শাড়ি পরে এসেছে, মুখে সেভাবে মেকআপ নেই, দামি গয়না নেই, কথায় কথায় কায়দা করে ফোন দেখা নেই। বা কম খেয়ে বেশি ফেলে দেওয়াও নেই।
হেসে ফেলল নিজের মনেই মন্দিরা। সমীর থাকলে কী বলত! এখানে  এতগুলো লোক কৃত্রিমভাবে আভিজাত্যের অভিনয় করে যাচ্ছে, অথচ সেটা ঠিকঠাক হচ্ছে না। মানে, মন্দিরা তো দর্শক হিসাবে খাচ্ছেই না। অন্যরাও না। যদি তাই না হতো, একে অপরকে আড়চোখে এ ভাবে দেখত না। নিজেরই তারিফ করে ফেলল, এই তো সমালোচক হয়ে উঠছে এবার নাটকের। নিজের তলপেটে হালকা করে একবার অজান্তে হাত বুলিয়ে নিল মন্দিরা। নাহ, খেতে এসেছে, খেয়ে নেওয়াটা খুব দরকার। এবং পেট পুরে, ঢঙ না করে। তাছাড়া দেরিও হয়ে গিয়েছে অনেকটা। বেশ কয়েকজন খেয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।
ছয়
বাড়ির সামনে এসে মন্দিরা দেখল গ্রিলের তালা ভেতর থেকে বন্ধ। তার মানে সমীর ফিরে গেছে। চাবি দিয়ে ভেতর থেকে খুলে দরজা বন্ধ করে হাত-পা-মুখ ধুয়ে শোওয়ার ঘরে ঢুকে দেখল বালিশের উপর হেলান দিয়ে অপেক্ষা করতে করতে কখন সমীর ঢলে পড়েছে ঘুমে। ঠোঁট দুটো অল্প ফাঁক হয়ে আছে। মাথার বড় চুলগুলো ঘাঁটা। খোলা জানলা দিয়ে হালকা পূর্ণিমা ঘরের নাইট ল্যাম্পের আলোর সঙ্গে মিশে কেমন যেন মায়াবী করে তুলেছে পরিবেশ।
কী ভেবে সমীরের পাশটায় বসে ওর মাথায় হাত রেখে চুলগুলো পরিপাটি করে তুলে দিল মন্দিরা। আস্তে আস্তে চোখ খুলে হাসল ও, ‘কখন এলে? ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।’ 
‘এই তো। খাবে না?’ 
‘না,’ আবার চোখ বন্ধ করে ফেলল সমীর, ‘ওখান থেকে প্যাকেট দিয়ে দিয়েছিল। খেয়ে নিয়েছি।’
‘কেমন হল মিকি মাউসের শো?’ সমীরের একটা হাত নিজের দু’হাতে তুলে নিয়েছে মন্দিরা।
হাতটা সরিয়ে নিয়ে ধড়মড় করে উঠে বসল সমীর, ‘তুমি চিনতে পেরেছিলে!’
ওর হাতটা আবার নিজের হাতে নিয়ে মন্দিরা বলল, ‘ছেঁড়া গ্লাভস দিয়ে তোমার হাতের আংটিটা দেখা না গেলে বোধহয় আমিও পারতাম না। কিন্তু কেন! তোমার কাজ তো শুধু নাটক করা। আমি তো আছি। এ ভাবে মডেল সেজে ... আমার কেমন লাগছে।’
অন্য হাতটা মন্দিরার পিঠে দিয়ে ওর কাছে আরও সরে এল সমীর। ঘন হয়ে বলল, ‘ভেব না, আর কিছুদিন চালাই। সত্যি বলছি, দল আমাদের এ বার খুলে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের নাটকে যে তৃতীয় চরিত্রও চলে এসেছে।’
সমীরের ডানহাত মন্দিরার তলপেটের উপর গভীর মমতায় বুলিয়ে যেতে থাকে। 
চোখ জ্বলছে। গলায় বাষ্প। তাও মন্দিরা বলে, ‘তুমি জানতে?’
উপর-নীচ ধীরে মাথা নেড়ে সমীর একটা অদ্ভুত হাসি হাসল, ‘হ্যাঁ, টয়লেটে প্রেগন্যান্সি টেস্ট স্লাইডটা মগের নীচে ফেলে এসেছিলে।’
মন্দিরা তাকিয়ে থাকে সমীরের দিকে। সমীর, মন্দিরার দিকে। এ আশ্চর্য নাটকের একমাত্র দর্শক তখন এক মায়ের শরীরের ভেতর হাত-পা ছুড়ছে...। 
07th  July, 2024
ফেরা
ছন্দা বিশ্বাস 

সোপান সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বলল, ‘তাহলে কী ঠিক করলি?’ পরমের হাতে সিগারেটটা অসহায়ভাবে পুড়ছিল। ওরা ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টেশনে ঢোকার মুখে বাঁ-পাশে একটা স্মোকিং জোনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। কয়েকজন জার্মান যুবতী দ্রুত সিগারেট নিঃশেষ করে ভিতরে ঢুকে গেল।  বিশদ

গগনবাবু ও প্যাংলা তাপস
রম্যাণী গোস্বামী

গগনবাবু একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মোটামুটি উপরতলার কর্মী। যাদবপুরে নিজেদের ফ্ল্যাট। মাস গেলে ইএমআই বাদ দিলে মাঝারি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স, কয়েকটা মিউচুয়াল ফান্ড, হৃষ্টপুষ্ট গিন্নি, ফ্যাশানেবল কলেজ পড়ুয়া কন্যা এবং একটি মাহিন্দ্রা কেইউভি— এই হল মোটামুটি তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান। বিশদ

01st  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হনুমান মহারাজজি
সমৃদ্ধ দত্ত

 

সেই গল্পটা তো আমাদের সকলেরই জানা। মহাশক্তিশালী ভীম হস্তিনাপুর যাওয়ার পথে একটি জঙ্গল পেরচ্ছিলেন। তাঁর শরীরে তো একশো হাতির শক্তি। সেকথা সর্বজনবিদিত। দ্বিতীয় পাণ্ডব নিজেও সেকথা জানেন। সোজা কথায় তাঁর নিজের বাহুবল নিয়ে যে গর্ব ছিল একথাও অবগত আমরা।  বিশদ

01st  September, 2024
ছেলের সঙ্গে দেখা
সন্দীপন বিশ্বাস

বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল সুভদ্রার। ঝাপানডাঙা স্টেশনে সে বসে আছে। এখানে এসেছিল এক গুরুবোনের বাড়ি। ফিরে যাচ্ছে উত্তরপাড়ায়, নিজের ঘরে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। এখনও কয়েকটা কাক ডাকছে। কেমন ক্লান্ত স্বর ওদের। স্টেশনের শেডের ওপর বসে কাকগুলো। বিশদ

25th  August, 2024
ঘাটশিলার বীরেশ
রাজেশ কুমার

ব্যাগ বোঁচকা আর এক কিলো পুঁটিমাছ নিয়ে সকাল সকাল পড়লাম এক অশান্তিতে। হয়েছেটা কী, দু’দিনের জন্য ঘুরতে এসেছিলাম ঘাটশিলা। ঠিক ঘুরতে না বলে শনির দশা কাটাতেই বলা ভালো। অনেক দিন বেড়াতে যাব, বেড়াতে যাব ভাবলেও যাওয়া হচ্ছিল না কোথাও। কিছু না কিছু বিপত্তি এসে হাজির হচ্ছিল ঠিক। বিশদ

18th  August, 2024
অভিশপ্ত কুলধারা

অলৌকিক তকমা স্থান-নামের সঙ্গে আলাদা মাত্রা যোগ করে। অলৌকিক ব্যাপার নিয়ে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী দু’পক্ষেরই নিজস্ব দাবিদাওয়া আর মতামত অন্তহীন।
  বিশদ

11th  August, 2024
দিল্লি দরবার
সমৃদ্ধ দত্ত

এমন কিছু নতুনত্ব নয়। এরকম দরবার এবং উৎসব আগেও হয়েছে। একবার সেই ১৮৭৭ সালে। ভারতের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বেশ কয়েক বছর পর মহারানি ভিক্টোরিয়ার ‘বিশেষ অভিষেক’ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিশদ

11th  August, 2024
হেড অফিসের বড়বাবু

বার দশেক হোঁচট খেয়ে প্রায় পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলে নিয়ে পার্থ এসে দাঁড়াল অফিসের গেটে। পার্থ বড়ুয়া। জুনিয়র অফিসার।
বিশদ

11th  August, 2024
ছোট গল্প: মাগুরমারি সাঁকো
সৌমিত্র চৌধুরী

বাঁকের মুখে স্টিয়ারিং ডান দিকে ঘুরাতেই চোখে পড়ল। একটা সাঁকো। মনে হচ্ছে বেশ পুরনো। দূর থেকে ব্রেকে আলতো করে পা ছোঁয়াল বিপুল। চাকা গড়িয়ে গড়িয়ে কিছুদূর এগল। পুলের কাছে আসতেই ব্রেকে আরও একটু চাপ দিয়ে থামিয়ে দিল। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল বিপুলের। বিশদ

04th  August, 2024
গুপ্ত রাজধানী: লালকেল্লা
সমৃদ্ধ দত্ত

জায়গাটা অনেকটাই কম। যেভাবে সাম্রাজ্য ছড়াচ্ছে আর হিন্দুস্তানের বাইরে থেকে আরও দলে দলে সমস্ত স্তরের মানুষ ভাগ্যান্বেষণে ক্রমাগত এসেই চলেছে, এরপর তো রাজধানীটাই ঩ঘিঞ্জি হয়ে যাবে। আরও বেশি খোলামেলা জায়গা দরকার। কোথায় নিয়ে যাওয়া যায় রাজধানী? বিশদ

04th  August, 2024
অতীতের আয়না: সাহেবদের হুঁকো বিলাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

মহিলা দিন কয়েক হয়েছে বিলেত থেকে এসেছেন এদেশে। এদেশীয় এক বিদুষী মেমসাহেবের সঙ্গে মহিলার বন্ধুত্ব হয়েছে। তার মতো খাঁটি ইংলিশ নন, তবে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা হওয়ায় বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করার জন্য তার বাড়িতে এসে দেখেন শ্রীমতী হেয়ার-ড্রেসারের তত্ত্বাবধানে কবরী সজ্জায় ব্যস্ত। বিশদ

04th  August, 2024
ছোট গল্প: জামাইয়ের মোবাইল 
বিপুল মজুমদার

হ্যালো অর্পি, শোন মা, সামনের জামাইষষ্ঠীতে ওঙ্কারকে একটা স্মার্টফোন দিতে চায় তোর বাবা। তা তোদের যদি কোনও চয়েস থাকে, ইয়ে মানে কোনও কালার বা কোম্পানি, তাড়াতাড়ি সেটা জানিয়ে দিস তো ভালো হয়।’ বিশদ

28th  July, 2024
আমির খসরু ও বসন্ত উৎসব
সমৃদ্ধ দত্ত

সুফি সাধক হজরত নিজামউদ্দিনের কাছে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসে শান্তির খোঁজে। স্বস্তির সন্ধানে। নিবেদিত প্রাণ নিয়ে তাঁরা সকল দুঃখ-দুর্দশা, ক্ষোভ ক্রোধের আহুতি দিতে চায় এখানে। এই নিজামউদ্দিনের কাছে। তিনি তো সাধারণ সাধক নন। বিশদ

28th  July, 2024
আজও রহস্য: ন্যাশনাল লাইব্রেরির অশরীরী 
সমুদ্র বসু

বেলভিডিয়ার গার্ডেন হাউস, আলিপুর। এই নামে না চিনলেও ন্যাশনাল লাইব্রেরি কলকাতা বললে সহজেই চিনবেন অধিকাংশ মানুষ। এই গ্রন্থাগার ভবন ও সংলগ্ন এলাকাটির পোশাকি নাম বেলভেডিয়ার এস্টেট। বেলভিডিয়ার হল গথিক ঘরানার বিশেষ স্থাপত্য। বিশদ

28th  July, 2024
একনজরে
হরিরামপুরে দু’মাস ধরে মেয়েকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। কিশোরীর অভিযোগ পাওয়ার পর বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের বাড়ি হরিরামপুর থানার গোকর্ণ এলাকায়। ...

সকালে ৩২টি ওয়ার্ডের রাস্তা পরিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহও করে উলুবেড়িয়া পুরসভা। এবার রাতেও রাস্তা পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নিল তারা। শনিবার রাতে ...

নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ফের আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। অন্তত ২০০ জন চাকরিপ্রার্থী সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েও মেধাতালিকায় স্থান পায়নি। অথচ ...

আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ঢাকে কাঠি পড়ছে। কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি মোহন বাগান সুপার জায়ান্ট ও মুম্বই সিটি এফসি। দেশের সেরা টুর্নামেন্টের আগে কতটা তৈরি অংশগ্রহণকারী ১৩টি দল। কোচেরা কী বলছেন, ফুটবলপ্রেমীদের চোখ থাকবে কাদের দিকে— ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস
১৮৮৬: দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গের পত্তন হয়
১৯২৬: সঙ্গীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকার জন্ম
১৯৩৩: সঙ্গীতশিল্পী আশা ভোঁসলের জন্ম
১৯৩৯:  হিন্দু সন্ন্যাসী, রামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠের প্রতিষ্ঠাতা  স্বামী অভেদানন্দর  মৃত্যু
১৯৫৬: অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তীর জন্ম
২০২২: দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে উন্মোচিত হল নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ২৮ ফুট উচ্চতার কালো গ্রানাইটের মূর্তি
২০২২: বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.১৩ টাকা ৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড ১০৮.৩২ টাকা ১১১.৮৭ টাকা
ইউরো ৯১.২৫ টাকা ৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
05th  September, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭১,৬০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭২,০০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৮,৪০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৩ ভাদ্র, ১৪৩১, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। পঞ্চমী ৩৬/৫ রাত্রি ৭/৫৯। স্বাতী নক্ষত্র ২৫/১৫ দিবা ৩/৩১। সূর্যোদয় ৫/২৪/৫১, সূর্যাস্ত ৫/৪৩/৪৯। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/১৪ গতে ৯/৩০ মধ্যে। রাত্রি ৭/১৬ গতে ৮/৫০ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ প্রাতঃ ৬/১৪ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ১/৩৬ মধ্যে। রাত্রি ৬/২৯ গতে ৭/১৬ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৭ গতে ৩/৫ মধ্যে। বারবেলা ১০/১ গতে ১/৫ মধ্যে। কালরাত্রি ১/২ গতে ২/৩০ মধ্যে। 
২২ ভাদ্র, ১৪৩১, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। পঞ্চমী দিবা ৩/৫৫। স্বাতী নক্ষত্র দিবা ১/৭। সূর্যোদয় ৫/২৪, সূর্যাস্ত ৫/৪৭। অমৃতযোগ দিবা ৬/১৩ গতে ৯/৩০ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/১৬ গতে ৮/৫০ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৬/১৩ মধ্যে ও ১২/৪৭ গতে ১/৩৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৩০ গতে ৭/১৬ মধ্যে ও ১১/৫৭ গতে ৩/৪ মধ্যে। বারবেলা ১০/২ গতে ১/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ১/২ গতে ২/৩০ মধ্যে।
৪ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
তুহিনকান্ত পান্ডেকে অর্থসচিবের পদে নিয়োগ করল কেন্দ্রীয় সরকার

07-09-2024 - 11:47:15 PM

মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে নির্মীয়মাণ বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার

07-09-2024 - 11:21:33 PM

আম্বানি পরিবারের গণেশ পুজোতে সস্ত্রীক হাজির অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত

07-09-2024 - 11:20:18 PM

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিওর্জিয়া মেলোনি

07-09-2024 - 11:18:42 PM

আম্বানি পরিবারের গণেশ পুজোতে হাজির অভিনেতা সলমন খান

07-09-2024 - 11:15:13 PM

আম্বানি পরিবারের গণেশ পুজোতে হাজির অভিনেত্রী মাধুরি দীক্ষিত

07-09-2024 - 10:44:53 PM