Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ঘাটশিলার বীরেশ
রাজেশ কুমার

ব্যাগ বোঁচকা আর এক কিলো পুঁটিমাছ নিয়ে সকাল সকাল পড়লাম এক অশান্তিতে। 
হয়েছেটা কী, দু’দিনের জন্য ঘুরতে এসেছিলাম ঘাটশিলা। ঠিক ঘুরতে না বলে শনির দশা কাটাতেই বলা ভালো। অনেক দিন বেড়াতে যাব, বেড়াতে যাব ভাবলেও যাওয়া হচ্ছিল না কোথাও। কিছু না কিছু বিপত্তি এসে হাজির হচ্ছিল ঠিক। বাচ্চা-কাচ্চা ছোট, বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মায়েদের অসুস্থতা, পোষ্যদের নিয়ে সমস্যা, টাকা পয়সার টানাটানি আরও কত কী! যদিও এসবের কোনওটাই আমার ব্যক্তিগত নয়। সবই বন্ধুবান্ধবদের। 
আমি ঝাড়া হাত পা মানুষ। পায়ের তলায় সর্ষে। সমস্যা টমস্যা এখনও আমায় ছুঁয়ে দেখতে পারেনি একেবারেই। যেখানে যা পাই আগডুম, বাগডুম ঘুরে বেড়াই। তবে সোলো ট্রিপ একেবারেই পছন্দ নয় আমার। নিজেকে কেমন হতভাগ্য মনে হয়। বিশেষত সন্ধেবেলা, সারাদিন ঘোরাঘুরির পর হোটেল কিংবা লজে ফিরে আয়েশ করে গল্প করা, স্মৃতি রোমন্থন অথবা একে অপরের সিক্রেটস নিয়ে লেগপুলিং করার জন্য দু’একজন এক গ্লাসের বন্ধু না থাকলে ঠিক জমে না। 
চলছিল ভালোই। তবে গৌতম বুদ্ধ বলেছিলেন না, জগৎ সংসার দুঃখের কারণ! শেষ পর্যন্ত ঘটেছিল ওটাই। স্কুল, কলেজের বন্ধুগুলো বিয়ে সংসার করল কি জগৎ দুঃখময় হয়ে উঠল আমার কাছে। বেড়ানোর ব্যাচেলর গ্রুপ গেল বন্ধ দোকানের সাইনবোর্ড হয়ে। আমি পড়লাম মস্ত বিপদে। সারা সপ্তাহ না হয় অফিস করব। কিন্তু ছুটির দিনগুলো কাটাব কীভাবে!  হন্যে হয়ে চেষ্টা করলাম অন্য গ্রুপ বানানোর। বিয়ে তো কি গার্লফ্রেন্ড থাকলেও চলবে না। 
তবে সে চেষ্টাও জমাট বাঁধল না সেভাবে। স্কুল, কলেজের অন্তরঙ্গতা কী চাকরি জীবনে গড়ে ওঠে! বাজেট, হিসাব, ভাগাভাগি এসবের চক্করে আটকে গেল নিখাদ স্ফূর্তিটাই। ওদিকে আবার ট্যুর কোম্পানির প্রতিও অ্যালার্জি আছে আমার। বেড়ানোটাকে কেমন যেন যান্ত্রিক আর ক্লান্তিকর করে তোলে তারা। এখানে নিয়ে যাব না, সেখানে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না, দুপুরে মাছ রাতে মাংস খেতে হবে বাধ্যতামূলক। না হলে পনির। রুটিন ভাঙতে গেছি নাকি গড়তে বোঝা যায় না সেটাই। খুড়তুতো ভাই অয়ন বলল, তোর আসলে ঘোরা বেড়ানোয় মন নেই, ওইসব বন্ধুদের সঙ্গে এদিক সেদিক ছ্যাবলামো করে বেড়ানোই উদ্দেশ্য। মেজাজটা গেল বমকে। মনে মনে বললাম, হ্যাঁ, তুমি তো হিউয়েন সাং। একা ঘুরে জগৎ উদ্ধার করে দাও। 
মনে মনে বলা কথায় কথা বাড়ে না। অয়ন সরে পড়ল বিজেতার ভঙ্গিতে। আমি ভিতরে ভিতরে গোমড়াচ্ছিলাম। এমন সময় দেখা হল এক ভূগোলবিদের সঙ্গে । সে বলল, বাবা, অপেক্ষা কর। পৃথিবীটা গোল। সুমেরু থেকে সোজা হেঁটে গেলে যেমন কুমেরু আসে, বিয়ের পর দু-তিন বছর কাটলেই আড্ডাবাজ ছেলেরা আবার বউ ছেড়ে বয়েজ ঠেকে ফিরে আসে ঠিক। কথাটা আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। হঠাৎ-ই একদিন ঋষির ফোন এল। 
—খুব বোর লাগছে। কয়েক দিনের জন্য কোথাও ঘুরে এলে হয় না!  
প্রথমটায় মনে হয়েছিল ভুল শুনছি। তারপর চমকে উঠে জিজ্ঞেস করলাম, বউ বাচ্চা সমেত! মানে তোর! 
ঋষি বলল, না না বন্ধুদের সঙ্গে। অনেক কষ্টে রাজি করিয়েছি বউকে। বলেছে, দীঘা ছাড়া অন্য কোথাও হলে যেতে পার। আমি জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলাম কেন! দীঘায় কী এখনও সমস্যা আছে নাকি! তারপর চুপ করে গেলাম হঠাৎ-ই। সব বিষয়ে মাথা না ঘামানোই ভালো। তড়িঘড়ি কনফারেন্সে নিলাম চাঁদু আর ভোম্বলকে। 
চাঁদু বলল, চাপ নেই। বউ কিছু দিন ধরেই বাপের বাড়ি যাব, বাপের বাড়ি যাব করছে। তাহলে ওই সময় ওকে রেখে আসব। ভোম্বলও সহমত হল। গম্ভীরভাবে বলল, হুম ম্যানেজ করতে হবে। অনেকদিন হল শুধু ঘর আর অফিস, অফিস আর ঘর। 
ঠিক হল কাছাকাছি কোথাও থেকে শুরু করা যাক আবার। তারপর না হয় বড়সড়। সেই মতো দিন ঠিক হল। শুক্রবার রাতে বেরিয়ে রবিবার ফেরা। চাঁদু নীরস গলায় বলল, দীঘা যাওয়া যখন বারণ তখন সেই ঘাটশিলাই যেতে হয়। বিভূতিভূষণের বাড়িটা এখনও আছে। আমরা সবাই রাজি হয়ে গেলাম এক কথায়। আমাদের প্রথম ট্রিপও এভাবেই ঠিক হয়েছিল অনেক বছর আগে, কলেজ লাইফে, বাংলা অনার্স পড়ার সময়। বাড়ি থেকে দীঘা যেতে দেয়নি, সবারই নাকি জলে ফাঁড়া আছে! দার্জিলিং যাওয়ার টাকা ছিল না। আমরা ঘাটশিলা চলে এসেছিলাম স্টিল এক্সপ্রেসে ধরে। কুমিরছানার মতো সামনে রেখেছিলাম বিভূতিভূষণের বাড়ি, যাতে আমাদের অভিভাবকেরা বোঝেন আমরা কতটা সিনসিয়ার এবং সাহিত্যপরায়ণ ছাত্র। এখন আমি ছাড়া সবার অভিভাবক পাল্টেছে। ভোম্বল বলল, তবুও যাই বলিস না কেন দীঘা যাওয়ায় ফাঁড়া আমাদের রয়েই গেল দেখছি। আমরা সবাই অর্থপূর্ণ হাসি হেসে উঠলাম। অনেক দিন পর বিজ্ঞাপনের ঝরনার মতো একটা তাজা হাওয়া বয়ে গেল আমাদের ভেতর। 
একটা রিসর্ট বুক করলাম অনলাইন। বাগান টাগান আছে, বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বলেই মনে হল। আজকাল ইন্টারনেট, ব্লগ এসে এসবের সুবিধা হয়েছে খুব। অনেক কিছু তথ্য পাওয়া যায় হাতের মুঠোয়। 
পরিকল্পনা অনুযায়ী বেরিয়ে পড়লাম। এবারেও স্টিল এক্সপ্রেস। তবে নন এসি থেকে এসিতে। আর লজ ছেড়ে রিসর্টে। এই ক’বছরে অ্যাচিভমেন্ট বলতে এতটুকুই। সে যাইহোক, রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ নামলাম ঘাটশিলা স্টেশনে। আমাদের চেহারায় সামান্য জেল্লা লাগলেও স্টেশনটা প্রায় একই রকম রয়ে গিয়েছে। বাইরে অটো স্ট্যান্ড। ঋষি এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, অমুক রিসর্ট যাবে? অটোওয়ালা একটু হেজিটেট করল। কী যেন ভাবল। তারপর বলল, বসুন। এক সময় বাঙালি দলে দলে হাওয়া বদল করতে আসত এসব জায়গায়। বাংলা ভাষার সঙ্গে যোগটা তাই এখনও রয়েই গিয়েছে এদের। বাঙালি দেখলে বাংলাতেই কথা বলে। ভোম্বল বলল, কলকাতা হলে হিন্দি বলত। আমি চোখ টিপে থামালাম ওকে। বেড়াতে এসে বিতর্কিত বিষয় আলোচনা করা ঠিক নয়। 
অটোয় উঠলাম আমরা। এদিকের অটোগুলো বেশ বড় বড়। দশজন আরামসে একসঙ্গে চলে যাবে। আর আমরা তো মাত্র চার। অটো ছুটে চলল রিসর্টের দিকে। রাস্তায় বেশ কিছু ছোট ছোট লজ। দেখেই বোঝা যাচ্ছে নতুন হয়েছে। চাঁদু জিজ্ঞেস করল, কাল কোথায় কোথায় যাওয়া যেতে পারে! 
অটোওয়ালা বলল, বুরুডি লেক, ধারাগিরি ফলস, গালুদি ব্যারেজ, সুবর্ণরেখা নদী, বিভূতিভূষণের বাড়ি আর ফুলডুংরি পাহাড়। ফুলডুংরি শুনেই আমার মনে পড়ে গেল উৎপলকুমার বসুর সেই বিখ্যাত কবিতা, ‘শ্বাসকষ্ট উঠলেই বুঝতে পারি ফুলডুংরি পাহাড় আর বেশি দূরে নয়...’। ভোম্বল জিজ্ঞেস করল, তোমার সঙ্গে গেলে কত নেবে! অটোওয়ালা বলল, সব মিলিয়ে এক হাজার। ঋষি চিৎকার করে উঠল, ড্যাম চিপ। আমি অটোওয়ালার ফোন নাম্বারটা নিয়ে নিলাম। জানলাম ওর নাম বীরেশ মাহাতো। বীরেশ আমাদের দশ মিনিটে রিসর্ট পৌঁছে দিল। 
এমনিতে ছিমছাম, আশপাশে কিছু নেই। রিসর্টের পিছন দিকে চাষজমি, জঙ্গল। তারও পরে পাহাড়ের সিল্যুয়েট, যেন হাতির মতো নেমে এসেছে দলমা থেকে। রাতেরবেলা রিসর্টের মালিক এল। বাঙালি হলেও চেহারায় বেশ রুক্ষভাব। প্রাথমিক আলাপ সেরে এলেন গাড়ির কথায়। 
—কাল তাহলে কোথায় কোথায় যাচ্ছেন! একটা গাড়ি করে দিই সবকিছু ঘুরিয়ে দেখিয়ে দেবে।  
জিজ্ঞেস করলাম, ভাড়া কত!
বলল, চার হাজার। 
চার হাজার! আঁতকে উঠল ঋষি। যেন জমি বাড়ি বন্ধক দিতে লাগবে ওকে। ভোম্বল বলল, না, দাদা আমরা একটা অটো দেখে নিয়েছি। ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, দুপুরের খাওয়া-দাওয়া! আমি বললাম রাস্তাতেই করে নেব। বুরুডি লেকের ধারে দেশি চিকেন আর ভাত। আগেরবার খেয়েছিলাম। মুখে লেগে আছে এখনও। রিসর্ট মালিক উঠে গেলেন, কথা বাড়ালেন না আর। 
পরের দিন ব্রেকফাস্ট সেরে আমরা বেরিয়ে পড়লাম বীরেশ মাহাতোর অটোয়। অটো তো নয় সে যেন বিজয় রথ। গড়গড়িয়ে চলছে। অনেকদিন পর পুরনো বন্ধুরা সব একসঙ্গে। খানিক যেতেই দু’পাশে রুখামাঠ, গাছপালা, ছাগলচরা রাস্তা। দূরে টিলা পাহাড়, মাথার ওপর খোলা আকাশ। মনটাই যেন শরীর থেকে বেরিয়ে মিশে গেল এসবের সঙ্গে। বুরুডি লেকে বোটিং করে অর্ডার দিলাম লাঞ্চের। বীরেশই ঠিক করে দিল দোকান। বলল, একটা নাগাদ আপনাদের খাবার রেডি হয়ে যাবে। 
বিকেলের দিকে অটো এসে থামল সুবর্ণরেখার তীরে। এই নদীটিকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে কত গল্প, উপন্যাস। পড়ন্ত রোদে চকচক করছে সুবর্ণরেখার জল। সত্যিই কী সোনা পাওয়া যায় এই জলের মধ্যে থেকে! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম আমি। কতকগুলো ছেলেমেয়ে মাছ ধরছিল। হঠাৎ একজনের জালে উঠল সোনার গুঁড়ো মাখা ছোট ছোট মাছ। একগাদা, নড়াচড়া করছে এক সঙ্গে। 
আমাদের মনটাও নেচে উঠল। আজকাল বাজারে এসব পাওয়া যায় কোথায়! চারদিকে তো শুধু চালানি মাছ। ভোম্বল এগিয়ে গেল। দরদাম করে, নিল কেজি খানেক। বলল, রিসর্টে নিয়ে যাই, ভেজে দিতে বলব। চাঁদু বলল, শুকনো মাছভাজা খাওয়া যায় নাকি! গলায় আটকাবে না!
ঋষি আঁতকে উঠল, ‘আমার বউ কিন্তু দিব্যি দিয়েছে। ওই জন্যই দীঘা ছাড়েনি।’ 
অগত্যা, ঠিক হল কাল দুপুরে পুঁটিমাছ ভাজা, ডাল আর কচি পাঁঠা। আমরা সবাই লাফিয়ে উঠলাম, হুররে...। ফুলডুংড়ি পাহাড় না গিয়ে সোজা ফিরে এলাম রিসর্টে। 
কিন্তু ওই, গৌতম বুদ্ধ আরও বলেছিলেন, আকাঙ্ক্ষাই দুঃখের কারণ। পুঁটিমাছের আকাঙ্ক্ষা করেছ কি মরেছ। রিসর্ট কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার জানিয়ে দিল তারা ওসব ধোয়া, বাছা, ভাজাভাজির ঝামেলা করতে পারবে না। ভর সন্ধেয় যেন বোমা পড়ল মাথার ওপর। এই এতগুলো মাছ নিয়ে এখন আমরা করব কী! 
চাঁদু বলল, সব চক্রান্ত। গাড়ি নিইনি তাই। না হলে টাকা দিলে মাছ ভেজে দেবে না কেন! মাছের সঙ্গে ওদের কীসের শত্রুতা!
আমি বললাম, মাছের সঙ্গে নয়। মনে হচ্ছে আমাদের সঙ্গে। 
শেষ পর্যন্ত আমাদের আশঙ্কাই সত্যি হল। সকাল ন’টায় চেক আউট। আর বিকেল তিনটেয় ট্রেন। রিসর্ট মালিক বললেন, ঘরের পুরো ভাড়া লাগবে। একটা টাকাও ছাড়া যাবে না।
ভোম্বল বলল, আমাদের দুটো ঘর। একটা ছেড়ে দিচ্ছি। আর একটার ভাড়া দিচ্ছি। কয়েক ঘণ্টার তো ব্যাপার। রিসর্ট মালিক রাজি হলেন না। বললেন, বাজারে জোড়া কলা কখনও আলাদা আলাদা বিক্রি হতে দেখেছেন!  
প্রচণ্ড অবাক হলাম আমরা। চেয়েছিলাম ঘর, দেখিয়ে দিল কলা। সারাদিনের আনন্দ মাটি হয়ে গেল এক মুহূর্তেই। একটা তেতো রস যেন গলায় ঢেলে দিয়ে গেল কেউ।
চাঁদু বলল, এভাবে অপমানিত হয়ে ফেরা যাবে না। ব্যবস্থা একটা করতেই হবে। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মাছগুলো রাখার ব্যবস্থা করলাম। প্রকৃতির দান, ওগুলোকে কিছুতেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। 
পরদিন রিসর্ট ছাড়লাম ঠিক সকাল ন’টাতেই। পিঠে লাগেজ, হাতে পুঁটিমাছ। রাস্তায় হন্যে হয়ে খুঁজছি আইস প্যাক। হঠাৎ বীরেশের এন্ট্রি, অটো নিয়ে। যেন নাসিরুদ্দিন শাহ, ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো। সব শুনে বলল, আমার সঙ্গে চলুন। বন্দোবস্ত করে দিচ্ছি। আমরা দরাদরি ছাড়াই উঠে বসলাম বীরেশের অটোয়। এ সময় দরাদরির নয়, বাসন্তীর ইজ্জতের। অতএব চল ধন্ন...।  
 বীরেশ বলল, মালিকটা ভালো নয়। ডন ছিল আগে। আমরা এরকমই কিছু একটা সন্দেহ করেছিলাম।
চাঁদু বলল, গব্বর সিং। আগে খেয়াল করিনি। এখন দেখছি অনলাইন রিভিউয়ে অনেকেই লিখেছে খারাপ অভিজ্ঞতা। বীরেশ আমাদের হাজির করল ফুলডুংড়ি পাহাড়ে। সেখানেই হল খাওয়া দাওয়া। ভাত, কড়কড়ে পুঁটিমাছ ভাজা, ডাল, আর আলুর চোখা। সুযোগ বুঝে দৌড় মারল কচি পাঁঠা। বীরেশ বলল, এত কম সময়ে মাটন রাঁধা সম্ভব নয়। 
আমরা দ্বিগুণ আনন্দে খেলাম। এসেছিলাম বেড়াতে হয়ে গেল বনভোজন। ফুলডুংড়ি পাহাড়ের পাদদেশে সবুজ ঘেরা ছোট্ট জঙ্গলে। ঘটমান ঘাটশিলায় এও কম কী! তবুও কেন যেন মেনে নিতে পারছিলাম না ঠিক। ভোম্বল বলল, ফিরে গিয়ে রিভিউ লিখব একটা। আমি বললাম, থাক। তার চাইতে বরং বীরেশের কথাই লিখি। 
18th  August, 2024
ডক্টর মিশ্র
নন্দিনী নাগ

সল্টলেকে ঝাঁ-চকচকে চেম্বার, একতলা একটা ফ্ল্যাটের পুরোটা নিয়ে। সাদা পাথরের তিন ধাপ সিঁড়ি ডিঙিয়ে কাঠের জাঁকালো সদর দরজা। সেই দরজা পেরিয়ে ভেতরের হলঘরে সোফার মধ্যে শরীর ছেড়ে দেওয়ার পর মিসেস দত্তের মনে ডাক্তারবাবুর প্রতি বেশ সমীহ জন্মাল। বিশদ

12th  January, 2025
অস্তরাগ
সঞ্জয় রায়

অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভা নদীর জলে গলে গলে যাচ্ছে। বসন্ত বাতাসে চরাচর জুড়ে গোধূলির অদ্ভুত বর্ণচ্ছটায় প্রকৃতি যেন মায়াময়। চিত্রপটে স্যিলুট হয়ে বসে আছে দু’টি নরনারী। জীবনের প্রান্তদেশে পৌঁছে দু’টি মন পরস্পর খুঁজে পেয়েছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অদ্ভুত মিল। বিশদ

05th  January, 2025
অতীতের আয়না: সাহেবি বড়দিন ও নিউ ইয়ার
অমিতাভ পুরকায়স্থ

কাজকর্ম শিকেয় তুলে পাঁচ দিন ধরে বাঙালির দুর্গোৎসব পালন যাঁরা বাঁকা চোখে দেখেন, তাঁদের আঠারো শতকের কলকাতা থেকে ঘুরিয়ে আনতে পারলে বেশ হতো। সে সময় শহরের সাহেব-মেমদের বড়দিন উপলক্ষ্যে খানা-পিনা-নাচ-গান ও কেনাকাটার হুল্লোড়ের মরশুম চলত দিন দশেক। বিশদ

05th  January, 2025
গুপ্ত রাজধানী: ইন্ডিয়া গেট
সমৃদ্ধ দত্ত

গরিব ও মধ্যবিত্তদের কাছে সেই আর্থিক শক্তি কোথায়! রবিবার অথবা ছুটির দিন কিংবা ন্যাশনাল হলিডে হলেই কোনও বৃহৎ শপিং মল অথবা মাল্টিপ্লেক্সে যাবে! অনেকক্ষণ মেনুকার্ড দেখার পর শেষ পর্যন্ত বরাবরের মতোই ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন অর্ডার করার বিলাসিতাও যাদের থাকে না, তারা যাবে কোথায়? বিশদ

05th  January, 2025
কেউ দেখেনি
প্রদীপ আচার্য

নিরাপদর নিরাপদে থাকার সুখ উবে গেল। গ্রামের নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার একটা আলাদা সুখ আছে। সেই সুখের মুখে আজ ঝামা ঘষে দিল একটা জানোয়ার। সবাই সাপের ভয় দেখিয়েছে। বিশদ

29th  December, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হোলি ট্রিনিটি চার্চ
সমৃদ্ধ দত্ত

দিল্লি মানেই ইতিহাসের গল্প। এর আনাচকানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপত্য। এরমধ্যে বেশ কয়েকটির খোঁজ এখন আর রাখেন না পর্যটকরা। ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে গোপনেই পড়ে রয়েছে সেইসব স্থাপত্য। তারই খোঁজে গুপ্ত রাজধানী। বিশদ

29th  December, 2024
আজও রহস্য: রেস কোর্সের অশরীরী
সমুদ্র বসু

ভূত মানুন আর না মানুন, ভূত-প্রেত নিয়ে আগ্রহ কিন্তু সবার। আমাদের আশপাশের গ্রাম, শহর, মফস্‌সল থেকে শুরু করে খোদ কলকাতা শহরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে ব্যাখ্যার অতীত বিভিন্ন ঘটনা আজও ঘটে। সেই তালিকায় আছে কলকাতা রেস কোর্সেরও নাম। বিশদ

29th  December, 2024
চোর  মিনার

গম্বুজ। সমাধি। শহিদ স্তম্ভ। এসবই তো ইতিহাসের চিহ্ন হিসেবে সর্বত্রই  দেখা যায়।  কখনও মসৃণ বহিরঙ্গ। কখনও চিত্রাঙ্কন। আবার কোনও সময় ভাস্কর্যের নমুনা থাকে বহির্গাত্রে। কিন্তু এই মিনারের স্তম্ভগাত্রে এত গর্ত কেন? মাটি থেকে সোজা উঠে গিয়েছে আকাশের দিকে। বিশদ

22nd  December, 2024
কলকাতা এক পরীর দেশ

আসলে আমরা খেয়াল না করলেও আমাদের চারপাশের হাওয়ায় এখনও দিব্যি নিঃশ্বাস নেয় আঠেরো-উনিশ শতকের কলকাতা। আর সেই পুরনো কলকাতার স্মৃতিকে ধরে রাখার অন্যতম প্রতীক হল— পরী।
  বিশদ

15th  December, 2024
লাল মন্দির

সমৃদ্ধ দত্ত
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লালকেল্লা ও লাল মন্দির। একটি জগৎ বিখ্যাত। অন্যটি স্বল্প খ্যাত। লাল মন্দিরের উচ্চতা তো কম নয়। লালকেল্লার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদনি চকের দিকে তাকালেই চোখে পড়ার কথা। অথবা সেভাবে পর্যটকদের দৃষ্টিগোচরই হয় না।
বিশদ

15th  December, 2024
ডাক দিয়েছে কোন সকালে
বিজলি চক্রবর্তী

হরি হে তুমি আমার সকল হবে কবে...।’ গলা ছেড়ে গানটা গাইতে গাইতে বিশ্বরূপ রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল। হাতের কাজ বন্ধ করে নবনীতা বিশ্বরূপের মুখোমুখি হল। বিশ্বরূপ গান বন্ধ করল না। নবনীতার চোখের মুগ্ধতা তাকে উৎসাহিত করে। বিশ্বরূপের গানের ভক্ত নেহাত কম নয়। বিশদ

15th  December, 2024
আদরের পিউ
কৌশানী মিত্র

অনির্বাণের কাল নাইট ছিল। সারারাত দুর্দান্ত পরিশ্রম গিয়েছে। জুনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে এই অদ্ভুত একটা আধা গ্রাম-আধা শহর মতো জায়গাটায় এসে থাকতে শুরু করেছে ও। এখানে আসার পর থেকেই সকাল-দুপুর-রাত কেমন গুলিয়ে যায় অনির্বাণের। বিশদ

08th  December, 2024
প্রতিশোধ
সাবিনা ইয়াসমিন রিঙ্কু

মাত্র ছ’মাসেই যে ফল পেয়ে যাবে ভাবতে পারেনি জয়তী! প্রদীপ্ত কি নিজেও ভাবতে পেরেছিল বাষট্টি থেকে চুরানব্বই হবে! বেশ লম্বা বলে বাইরের লোকরা পার্থক্যটা অতটা ধরতে না পারলেও জয়তী জানে পুরনো প্যান্টগুলো আর কোমর পর্যন্ত উঠতে চাইছে না। বিশদ

01st  December, 2024
বনের মানুষ

—মাস্টার, আজ ডিম বাদ দে, হামাদিগের ছেলে-মেয়েগুলান কেউ খাবেকনি রে!
—কেন?
—হামার সঙতে আসে ওই শর্বরী টুডুটা আছে না? উয়ার ছেলেটোর গায়ে ‘মায়ের দয়া’ বের হইচে। উয়ার লিগে হামাদের পাড়ার সবার মাছ-মাংস-ডিম খাওয়াটো বারণ আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
একনজরে
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। সম্প্রতি খোলা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়েও সংঘাত সামনে এসেছে। তার মধ্যেই ভারত থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। ...

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অবশেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়দের বিরুদ্ধে বিচার পর্ব শুরু হল। মঙ্গলবার কড়া নিরাপত্তায় কলকাতার বিচার ভবনের বিশেষ আদালতে রুদ্ধদ্বার কক্ষে দীর্ঘসময় ধরে ওই শুনানি চলে। ...

পানীয় জলের পাইপলাইন দিয়ে জলের সঙ্গে বের হল আস্ত সাপ। মঙ্গলবার দুপুরে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের গ্রুপ-ডি কর্মীদের কোয়ার্টারে এমন ঘটনায় হইচই শুরু হয়। আতঙ্কে বাসিন্দারা ...

পারদ নামতেই পৌষমাস মাটি মাফিয়াদের! স্থলভাগের জমি কেটে পাচারের কথা বহুশ্রুত। মাটি মাফিয়াদের নজর এখন নদীর জলে। মাঝ নদীতে গিয়ে জলের তলার অংশের মাটি তুলে ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন।  অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

ভারতীয় সেনা দিবস
৩৭: রোমের রাজা নিরো জন্মগ্রহণ করেন
১৫৫৯: ইংল্যান্ডের রানি হলেন প্রথম এলিজাবেথ
১৭৫৯: লন্ডনে মানুষের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জাদুঘর ব্রিটিশ মিউজিয়ামের উদ্বোধন হয়, এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৭৫৩ সালে
১৭৮৪: কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হল এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল
১৮৩২: আইফেল টাওয়ারের স্থপতি গুস্তাভ আইফেল জন্মগ্রহণ করেন
১৮৭৩: বাংলার দ্বিতীয় সাধারণ রঙ্গালয় ওরিয়েন্টাল থিয়েটারের উদ্বোধন
১৮৭৫: ভারতীয় মৌসুম বিজ্ঞান বিভাগ সংক্ষেপে আইএমডি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৭৫: কলকাতায় দ্য স্টেটসম্যান ইংরাজী দৈনিক পত্রিকা সংযুক্তরূপে প্রকাশ শুরু
১৮৭৮: লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারীরা প্রথম ডিগ্রি লাভের সুযোগ পান
১৯৩৪: ভারতের বিহারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়
১৯৩৮: ফুটবলার চুনী গোস্বামীর জন্ম
১৯৫৬: বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর জন্ম
২০০১: অনলাইনভিত্তিক বহুভাষার মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া যাত্রা শুরু
২০০৯: দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক তপন সিনহার মৃত্যু
 ২০১৮: শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী পণ্ডিত বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৫.৮৩ টাকা ৮৭.৫৭ টাকা
পাউন্ড ১০৪.০৫ টাকা ১০৭.৭৪ টাকা
ইউরো ৮৭.৩০ টাকা ৯০.৬৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৮,৩০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৮,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৪,৮০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৯,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৯,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১ মাঘ, ১৪৩১, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫। দ্বিতীয়া ৫২/৩৩ রাত্রি ৩/২৪। পুষ্যা নক্ষত্র ১০/১৩, দিবা ১০/২৮। সূর্যোদয় ৬/২৩/৮, সূর্যাস্ত ৫/৮/৫৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৯ মধ্যে পুনঃ ৯/৫৮ গতে ১১/২৪ মধ্যে পুনঃ ৩/০ গতে ৪/২৬ মধ্যে। রাত্রি ৬/৩ গতে ৮/৪১ মধ্যে পুনঃ ১/৫৮ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ১/৩৪ গতে ৩/০ মধ্যে। রাত্রি ৮/৪১ গতে ১০/২৭ মধ্যে। বারবেলা ৯/৪ গতে ১০/২৫ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৫ গতে ১/৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৩/৪ গতে ৪/৪৪ মধ্যে। 
১ মাঘ, ১৪৩১, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫। দ্বিতীয়া রাত্রি ৩/৫২। পুষ্যা নক্ষত্র দিবা ১১/১৯। সূর্যোদয় ৬/২৬, সূর্যাস্ত ৫/৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৭ মধ্যে ও ১০/০ গতে ১১/২৯ মধ্যে ও ৩/১০ গতে ৪/৩৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১৫ গতে ৮/৫০ মধ্যে ও ২/০ গতে ৬/২৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ১/৪২ গতে ৩/১০ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৫০ গতে ১০/৩৩ মধ্যে। কালবেলা ৯/৬ গতে ১০/২৭ মধ্যে ও ১১/৪৭ গতে ১/৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৩/৬ গতে ৪/৪৬ মধ্যে।   
১৪ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
দিল্লি-এনসিআর এলাকায় কুয়াশার দাপট, সকাল থেকে বাতিল ৭টি বিমান, দেরিতে ১৮৪টি উড়ান

10:37:00 AM

ভূস্বর্গে ঠান্ডার কাঁপুনি, শ্রীনগরের ডাল লেকে হালকা বরফের আস্তরণ

10:37:00 AM

বেলা বাড়লেও কুয়াশায় ঢাকা পশ্চিম মেদিনীপুরের  পিংলা

10:26:00 AM

মালদহ টাউন স্টেশন দিয়ে মাদক পাচারের চেষ্টা, পাকড়াও ৩ পাচারকারী
ফের মালদহ টাউন স্টেশন দিয়ে মাদক পাচারের চেষ্টা। জিআরপি'র জালে ...বিশদ

10:24:12 AM

আজ কংগ্রেসের নতুন সদর দপ্তর ইন্দিরা ভবনের উদ্ধোধন, উপস্থিত হলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

10:18:00 AM

দক্ষিণ কোরিয়ার বরখাস্ত হওয়া প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তার করল পুলিস

10:07:00 AM