Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ঘাটশিলার বীরেশ
রাজেশ কুমার

ব্যাগ বোঁচকা আর এক কিলো পুঁটিমাছ নিয়ে সকাল সকাল পড়লাম এক অশান্তিতে। 
হয়েছেটা কী, দু’দিনের জন্য ঘুরতে এসেছিলাম ঘাটশিলা। ঠিক ঘুরতে না বলে শনির দশা কাটাতেই বলা ভালো। অনেক দিন বেড়াতে যাব, বেড়াতে যাব ভাবলেও যাওয়া হচ্ছিল না কোথাও। কিছু না কিছু বিপত্তি এসে হাজির হচ্ছিল ঠিক। বাচ্চা-কাচ্চা ছোট, বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মায়েদের অসুস্থতা, পোষ্যদের নিয়ে সমস্যা, টাকা পয়সার টানাটানি আরও কত কী! যদিও এসবের কোনওটাই আমার ব্যক্তিগত নয়। সবই বন্ধুবান্ধবদের। 
আমি ঝাড়া হাত পা মানুষ। পায়ের তলায় সর্ষে। সমস্যা টমস্যা এখনও আমায় ছুঁয়ে দেখতে পারেনি একেবারেই। যেখানে যা পাই আগডুম, বাগডুম ঘুরে বেড়াই। তবে সোলো ট্রিপ একেবারেই পছন্দ নয় আমার। নিজেকে কেমন হতভাগ্য মনে হয়। বিশেষত সন্ধেবেলা, সারাদিন ঘোরাঘুরির পর হোটেল কিংবা লজে ফিরে আয়েশ করে গল্প করা, স্মৃতি রোমন্থন অথবা একে অপরের সিক্রেটস নিয়ে লেগপুলিং করার জন্য দু’একজন এক গ্লাসের বন্ধু না থাকলে ঠিক জমে না। 
চলছিল ভালোই। তবে গৌতম বুদ্ধ বলেছিলেন না, জগৎ সংসার দুঃখের কারণ! শেষ পর্যন্ত ঘটেছিল ওটাই। স্কুল, কলেজের বন্ধুগুলো বিয়ে সংসার করল কি জগৎ দুঃখময় হয়ে উঠল আমার কাছে। বেড়ানোর ব্যাচেলর গ্রুপ গেল বন্ধ দোকানের সাইনবোর্ড হয়ে। আমি পড়লাম মস্ত বিপদে। সারা সপ্তাহ না হয় অফিস করব। কিন্তু ছুটির দিনগুলো কাটাব কীভাবে!  হন্যে হয়ে চেষ্টা করলাম অন্য গ্রুপ বানানোর। বিয়ে তো কি গার্লফ্রেন্ড থাকলেও চলবে না। 
তবে সে চেষ্টাও জমাট বাঁধল না সেভাবে। স্কুল, কলেজের অন্তরঙ্গতা কী চাকরি জীবনে গড়ে ওঠে! বাজেট, হিসাব, ভাগাভাগি এসবের চক্করে আটকে গেল নিখাদ স্ফূর্তিটাই। ওদিকে আবার ট্যুর কোম্পানির প্রতিও অ্যালার্জি আছে আমার। বেড়ানোটাকে কেমন যেন যান্ত্রিক আর ক্লান্তিকর করে তোলে তারা। এখানে নিয়ে যাব না, সেখানে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না, দুপুরে মাছ রাতে মাংস খেতে হবে বাধ্যতামূলক। না হলে পনির। রুটিন ভাঙতে গেছি নাকি গড়তে বোঝা যায় না সেটাই। খুড়তুতো ভাই অয়ন বলল, তোর আসলে ঘোরা বেড়ানোয় মন নেই, ওইসব বন্ধুদের সঙ্গে এদিক সেদিক ছ্যাবলামো করে বেড়ানোই উদ্দেশ্য। মেজাজটা গেল বমকে। মনে মনে বললাম, হ্যাঁ, তুমি তো হিউয়েন সাং। একা ঘুরে জগৎ উদ্ধার করে দাও। 
মনে মনে বলা কথায় কথা বাড়ে না। অয়ন সরে পড়ল বিজেতার ভঙ্গিতে। আমি ভিতরে ভিতরে গোমড়াচ্ছিলাম। এমন সময় দেখা হল এক ভূগোলবিদের সঙ্গে । সে বলল, বাবা, অপেক্ষা কর। পৃথিবীটা গোল। সুমেরু থেকে সোজা হেঁটে গেলে যেমন কুমেরু আসে, বিয়ের পর দু-তিন বছর কাটলেই আড্ডাবাজ ছেলেরা আবার বউ ছেড়ে বয়েজ ঠেকে ফিরে আসে ঠিক। কথাটা আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। হঠাৎ-ই একদিন ঋষির ফোন এল। 
—খুব বোর লাগছে। কয়েক দিনের জন্য কোথাও ঘুরে এলে হয় না!  
প্রথমটায় মনে হয়েছিল ভুল শুনছি। তারপর চমকে উঠে জিজ্ঞেস করলাম, বউ বাচ্চা সমেত! মানে তোর! 
ঋষি বলল, না না বন্ধুদের সঙ্গে। অনেক কষ্টে রাজি করিয়েছি বউকে। বলেছে, দীঘা ছাড়া অন্য কোথাও হলে যেতে পার। আমি জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলাম কেন! দীঘায় কী এখনও সমস্যা আছে নাকি! তারপর চুপ করে গেলাম হঠাৎ-ই। সব বিষয়ে মাথা না ঘামানোই ভালো। তড়িঘড়ি কনফারেন্সে নিলাম চাঁদু আর ভোম্বলকে। 
চাঁদু বলল, চাপ নেই। বউ কিছু দিন ধরেই বাপের বাড়ি যাব, বাপের বাড়ি যাব করছে। তাহলে ওই সময় ওকে রেখে আসব। ভোম্বলও সহমত হল। গম্ভীরভাবে বলল, হুম ম্যানেজ করতে হবে। অনেকদিন হল শুধু ঘর আর অফিস, অফিস আর ঘর। 
ঠিক হল কাছাকাছি কোথাও থেকে শুরু করা যাক আবার। তারপর না হয় বড়সড়। সেই মতো দিন ঠিক হল। শুক্রবার রাতে বেরিয়ে রবিবার ফেরা। চাঁদু নীরস গলায় বলল, দীঘা যাওয়া যখন বারণ তখন সেই ঘাটশিলাই যেতে হয়। বিভূতিভূষণের বাড়িটা এখনও আছে। আমরা সবাই রাজি হয়ে গেলাম এক কথায়। আমাদের প্রথম ট্রিপও এভাবেই ঠিক হয়েছিল অনেক বছর আগে, কলেজ লাইফে, বাংলা অনার্স পড়ার সময়। বাড়ি থেকে দীঘা যেতে দেয়নি, সবারই নাকি জলে ফাঁড়া আছে! দার্জিলিং যাওয়ার টাকা ছিল না। আমরা ঘাটশিলা চলে এসেছিলাম স্টিল এক্সপ্রেসে ধরে। কুমিরছানার মতো সামনে রেখেছিলাম বিভূতিভূষণের বাড়ি, যাতে আমাদের অভিভাবকেরা বোঝেন আমরা কতটা সিনসিয়ার এবং সাহিত্যপরায়ণ ছাত্র। এখন আমি ছাড়া সবার অভিভাবক পাল্টেছে। ভোম্বল বলল, তবুও যাই বলিস না কেন দীঘা যাওয়ায় ফাঁড়া আমাদের রয়েই গেল দেখছি। আমরা সবাই অর্থপূর্ণ হাসি হেসে উঠলাম। অনেক দিন পর বিজ্ঞাপনের ঝরনার মতো একটা তাজা হাওয়া বয়ে গেল আমাদের ভেতর। 
একটা রিসর্ট বুক করলাম অনলাইন। বাগান টাগান আছে, বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বলেই মনে হল। আজকাল ইন্টারনেট, ব্লগ এসে এসবের সুবিধা হয়েছে খুব। অনেক কিছু তথ্য পাওয়া যায় হাতের মুঠোয়। 
পরিকল্পনা অনুযায়ী বেরিয়ে পড়লাম। এবারেও স্টিল এক্সপ্রেস। তবে নন এসি থেকে এসিতে। আর লজ ছেড়ে রিসর্টে। এই ক’বছরে অ্যাচিভমেন্ট বলতে এতটুকুই। সে যাইহোক, রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ নামলাম ঘাটশিলা স্টেশনে। আমাদের চেহারায় সামান্য জেল্লা লাগলেও স্টেশনটা প্রায় একই রকম রয়ে গিয়েছে। বাইরে অটো স্ট্যান্ড। ঋষি এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, অমুক রিসর্ট যাবে? অটোওয়ালা একটু হেজিটেট করল। কী যেন ভাবল। তারপর বলল, বসুন। এক সময় বাঙালি দলে দলে হাওয়া বদল করতে আসত এসব জায়গায়। বাংলা ভাষার সঙ্গে যোগটা তাই এখনও রয়েই গিয়েছে এদের। বাঙালি দেখলে বাংলাতেই কথা বলে। ভোম্বল বলল, কলকাতা হলে হিন্দি বলত। আমি চোখ টিপে থামালাম ওকে। বেড়াতে এসে বিতর্কিত বিষয় আলোচনা করা ঠিক নয়। 
অটোয় উঠলাম আমরা। এদিকের অটোগুলো বেশ বড় বড়। দশজন আরামসে একসঙ্গে চলে যাবে। আর আমরা তো মাত্র চার। অটো ছুটে চলল রিসর্টের দিকে। রাস্তায় বেশ কিছু ছোট ছোট লজ। দেখেই বোঝা যাচ্ছে নতুন হয়েছে। চাঁদু জিজ্ঞেস করল, কাল কোথায় কোথায় যাওয়া যেতে পারে! 
অটোওয়ালা বলল, বুরুডি লেক, ধারাগিরি ফলস, গালুদি ব্যারেজ, সুবর্ণরেখা নদী, বিভূতিভূষণের বাড়ি আর ফুলডুংরি পাহাড়। ফুলডুংরি শুনেই আমার মনে পড়ে গেল উৎপলকুমার বসুর সেই বিখ্যাত কবিতা, ‘শ্বাসকষ্ট উঠলেই বুঝতে পারি ফুলডুংরি পাহাড় আর বেশি দূরে নয়...’। ভোম্বল জিজ্ঞেস করল, তোমার সঙ্গে গেলে কত নেবে! অটোওয়ালা বলল, সব মিলিয়ে এক হাজার। ঋষি চিৎকার করে উঠল, ড্যাম চিপ। আমি অটোওয়ালার ফোন নাম্বারটা নিয়ে নিলাম। জানলাম ওর নাম বীরেশ মাহাতো। বীরেশ আমাদের দশ মিনিটে রিসর্ট পৌঁছে দিল। 
এমনিতে ছিমছাম, আশপাশে কিছু নেই। রিসর্টের পিছন দিকে চাষজমি, জঙ্গল। তারও পরে পাহাড়ের সিল্যুয়েট, যেন হাতির মতো নেমে এসেছে দলমা থেকে। রাতেরবেলা রিসর্টের মালিক এল। বাঙালি হলেও চেহারায় বেশ রুক্ষভাব। প্রাথমিক আলাপ সেরে এলেন গাড়ির কথায়। 
—কাল তাহলে কোথায় কোথায় যাচ্ছেন! একটা গাড়ি করে দিই সবকিছু ঘুরিয়ে দেখিয়ে দেবে।  
জিজ্ঞেস করলাম, ভাড়া কত!
বলল, চার হাজার। 
চার হাজার! আঁতকে উঠল ঋষি। যেন জমি বাড়ি বন্ধক দিতে লাগবে ওকে। ভোম্বল বলল, না, দাদা আমরা একটা অটো দেখে নিয়েছি। ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, দুপুরের খাওয়া-দাওয়া! আমি বললাম রাস্তাতেই করে নেব। বুরুডি লেকের ধারে দেশি চিকেন আর ভাত। আগেরবার খেয়েছিলাম। মুখে লেগে আছে এখনও। রিসর্ট মালিক উঠে গেলেন, কথা বাড়ালেন না আর। 
পরের দিন ব্রেকফাস্ট সেরে আমরা বেরিয়ে পড়লাম বীরেশ মাহাতোর অটোয়। অটো তো নয় সে যেন বিজয় রথ। গড়গড়িয়ে চলছে। অনেকদিন পর পুরনো বন্ধুরা সব একসঙ্গে। খানিক যেতেই দু’পাশে রুখামাঠ, গাছপালা, ছাগলচরা রাস্তা। দূরে টিলা পাহাড়, মাথার ওপর খোলা আকাশ। মনটাই যেন শরীর থেকে বেরিয়ে মিশে গেল এসবের সঙ্গে। বুরুডি লেকে বোটিং করে অর্ডার দিলাম লাঞ্চের। বীরেশই ঠিক করে দিল দোকান। বলল, একটা নাগাদ আপনাদের খাবার রেডি হয়ে যাবে। 
বিকেলের দিকে অটো এসে থামল সুবর্ণরেখার তীরে। এই নদীটিকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে কত গল্প, উপন্যাস। পড়ন্ত রোদে চকচক করছে সুবর্ণরেখার জল। সত্যিই কী সোনা পাওয়া যায় এই জলের মধ্যে থেকে! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম আমি। কতকগুলো ছেলেমেয়ে মাছ ধরছিল। হঠাৎ একজনের জালে উঠল সোনার গুঁড়ো মাখা ছোট ছোট মাছ। একগাদা, নড়াচড়া করছে এক সঙ্গে। 
আমাদের মনটাও নেচে উঠল। আজকাল বাজারে এসব পাওয়া যায় কোথায়! চারদিকে তো শুধু চালানি মাছ। ভোম্বল এগিয়ে গেল। দরদাম করে, নিল কেজি খানেক। বলল, রিসর্টে নিয়ে যাই, ভেজে দিতে বলব। চাঁদু বলল, শুকনো মাছভাজা খাওয়া যায় নাকি! গলায় আটকাবে না!
ঋষি আঁতকে উঠল, ‘আমার বউ কিন্তু দিব্যি দিয়েছে। ওই জন্যই দীঘা ছাড়েনি।’ 
অগত্যা, ঠিক হল কাল দুপুরে পুঁটিমাছ ভাজা, ডাল আর কচি পাঁঠা। আমরা সবাই লাফিয়ে উঠলাম, হুররে...। ফুলডুংড়ি পাহাড় না গিয়ে সোজা ফিরে এলাম রিসর্টে। 
কিন্তু ওই, গৌতম বুদ্ধ আরও বলেছিলেন, আকাঙ্ক্ষাই দুঃখের কারণ। পুঁটিমাছের আকাঙ্ক্ষা করেছ কি মরেছ। রিসর্ট কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার জানিয়ে দিল তারা ওসব ধোয়া, বাছা, ভাজাভাজির ঝামেলা করতে পারবে না। ভর সন্ধেয় যেন বোমা পড়ল মাথার ওপর। এই এতগুলো মাছ নিয়ে এখন আমরা করব কী! 
চাঁদু বলল, সব চক্রান্ত। গাড়ি নিইনি তাই। না হলে টাকা দিলে মাছ ভেজে দেবে না কেন! মাছের সঙ্গে ওদের কীসের শত্রুতা!
আমি বললাম, মাছের সঙ্গে নয়। মনে হচ্ছে আমাদের সঙ্গে। 
শেষ পর্যন্ত আমাদের আশঙ্কাই সত্যি হল। সকাল ন’টায় চেক আউট। আর বিকেল তিনটেয় ট্রেন। রিসর্ট মালিক বললেন, ঘরের পুরো ভাড়া লাগবে। একটা টাকাও ছাড়া যাবে না।
ভোম্বল বলল, আমাদের দুটো ঘর। একটা ছেড়ে দিচ্ছি। আর একটার ভাড়া দিচ্ছি। কয়েক ঘণ্টার তো ব্যাপার। রিসর্ট মালিক রাজি হলেন না। বললেন, বাজারে জোড়া কলা কখনও আলাদা আলাদা বিক্রি হতে দেখেছেন!  
প্রচণ্ড অবাক হলাম আমরা। চেয়েছিলাম ঘর, দেখিয়ে দিল কলা। সারাদিনের আনন্দ মাটি হয়ে গেল এক মুহূর্তেই। একটা তেতো রস যেন গলায় ঢেলে দিয়ে গেল কেউ।
চাঁদু বলল, এভাবে অপমানিত হয়ে ফেরা যাবে না। ব্যবস্থা একটা করতেই হবে। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মাছগুলো রাখার ব্যবস্থা করলাম। প্রকৃতির দান, ওগুলোকে কিছুতেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। 
পরদিন রিসর্ট ছাড়লাম ঠিক সকাল ন’টাতেই। পিঠে লাগেজ, হাতে পুঁটিমাছ। রাস্তায় হন্যে হয়ে খুঁজছি আইস প্যাক। হঠাৎ বীরেশের এন্ট্রি, অটো নিয়ে। যেন নাসিরুদ্দিন শাহ, ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো। সব শুনে বলল, আমার সঙ্গে চলুন। বন্দোবস্ত করে দিচ্ছি। আমরা দরাদরি ছাড়াই উঠে বসলাম বীরেশের অটোয়। এ সময় দরাদরির নয়, বাসন্তীর ইজ্জতের। অতএব চল ধন্ন...।  
 বীরেশ বলল, মালিকটা ভালো নয়। ডন ছিল আগে। আমরা এরকমই কিছু একটা সন্দেহ করেছিলাম।
চাঁদু বলল, গব্বর সিং। আগে খেয়াল করিনি। এখন দেখছি অনলাইন রিভিউয়ে অনেকেই লিখেছে খারাপ অভিজ্ঞতা। বীরেশ আমাদের হাজির করল ফুলডুংড়ি পাহাড়ে। সেখানেই হল খাওয়া দাওয়া। ভাত, কড়কড়ে পুঁটিমাছ ভাজা, ডাল, আর আলুর চোখা। সুযোগ বুঝে দৌড় মারল কচি পাঁঠা। বীরেশ বলল, এত কম সময়ে মাটন রাঁধা সম্ভব নয়। 
আমরা দ্বিগুণ আনন্দে খেলাম। এসেছিলাম বেড়াতে হয়ে গেল বনভোজন। ফুলডুংড়ি পাহাড়ের পাদদেশে সবুজ ঘেরা ছোট্ট জঙ্গলে। ঘটমান ঘাটশিলায় এও কম কী! তবুও কেন যেন মেনে নিতে পারছিলাম না ঠিক। ভোম্বল বলল, ফিরে গিয়ে রিভিউ লিখব একটা। আমি বললাম, থাক। তার চাইতে বরং বীরেশের কথাই লিখি। 
18th  August, 2024
রাত্রিটা ভালো নয়

এটাই শেষ ট্রেন ছিল। স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে পথিক দেখল, চারদিকটা খুব ফাঁকা লাগছে। শীতকাল বলেই কী? নইলে এত তাড়াতাড়ি তো রাস্তাঘাট এমন শুনশান হয় না। তার পক্ষে অবশ্য এটা ভালোই। ভিড় থাকলে রিকশ পাওয়া দুষ্কর। আবার বেশি ফাঁকা হলেও রিকশওয়ালাগুলো সব পিটটান দেয়।
বিশদ

15th  September, 2024
প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড
শংকরলাল সরকার

কলকাতা থেকে ঘণ্টাখানেকের উড়ানে যখন গুয়াহাটি পৌঁছলাম তখন সন্ধ্যা হয় হয়। আগে থাকতে রাতের আশ্রয় ঠিক করেছিলাম পল্টন বাজারে। গিন্নি বলল, হিন্দুরা বিশ্বাস করে তীর্থস্থানে ধুলোপায়ে দেবদর্শন করতে হয়।  বিশদ

08th  September, 2024
সংসারের নানা দোষ কাটাবেন কীভাবে?

প্রাচীন মানুষরা নানা সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় জানতেন। সেইসব টোটকার প্রয়োগশক্তিতে সত্যিই শুভফল পাওয়া যায়। তাতে প্রার্থনার কথা যেমন আছে, তেমনই আছে কিছু সহজ পদ্ধতি। সংসারে সুখ-সমৃদ্ধি, অসুখ-বিসুখ, বাচ্চার নজর লাগা, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি, লেখাপড়ায় সাফল্য ইত্যাদি বিষয়ে এইসব টোটকা কাজে দেয়। এগুলি মূলত কুপিত গ্রহের শান্তি, দেবদেবীর স্তব কিংবা বিশেষ পুজোপাঠ। সংসারে ও ব্যবহারিক জীবনে এমন কিছু ছোটখাট ব্যাপার যা একটু অদলবদল করলে ভালো কাজ হয়। সেই সব উপায় বিভিন্ন শাস্ত্রও সমর্থন করে। তবে তার প্রয়োগবিধি অনেকেরই অজানা। সেকথাই জানালেন ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিশদ

08th  September, 2024
ফেরা
ছন্দা বিশ্বাস 

সোপান সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বলল, ‘তাহলে কী ঠিক করলি?’ পরমের হাতে সিগারেটটা অসহায়ভাবে পুড়ছিল। ওরা ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টেশনে ঢোকার মুখে বাঁ-পাশে একটা স্মোকিং জোনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। কয়েকজন জার্মান যুবতী দ্রুত সিগারেট নিঃশেষ করে ভিতরে ঢুকে গেল।  বিশদ

08th  September, 2024
গগনবাবু ও প্যাংলা তাপস
রম্যাণী গোস্বামী

গগনবাবু একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মোটামুটি উপরতলার কর্মী। যাদবপুরে নিজেদের ফ্ল্যাট। মাস গেলে ইএমআই বাদ দিলে মাঝারি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স, কয়েকটা মিউচুয়াল ফান্ড, হৃষ্টপুষ্ট গিন্নি, ফ্যাশানেবল কলেজ পড়ুয়া কন্যা এবং একটি মাহিন্দ্রা কেইউভি— এই হল মোটামুটি তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান। বিশদ

01st  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হনুমান মহারাজজি
সমৃদ্ধ দত্ত

 

সেই গল্পটা তো আমাদের সকলেরই জানা। মহাশক্তিশালী ভীম হস্তিনাপুর যাওয়ার পথে একটি জঙ্গল পেরচ্ছিলেন। তাঁর শরীরে তো একশো হাতির শক্তি। সেকথা সর্বজনবিদিত। দ্বিতীয় পাণ্ডব নিজেও সেকথা জানেন। সোজা কথায় তাঁর নিজের বাহুবল নিয়ে যে গর্ব ছিল একথাও অবগত আমরা।  বিশদ

01st  September, 2024
ছেলের সঙ্গে দেখা
সন্দীপন বিশ্বাস

বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল সুভদ্রার। ঝাপানডাঙা স্টেশনে সে বসে আছে। এখানে এসেছিল এক গুরুবোনের বাড়ি। ফিরে যাচ্ছে উত্তরপাড়ায়, নিজের ঘরে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। এখনও কয়েকটা কাক ডাকছে। কেমন ক্লান্ত স্বর ওদের। স্টেশনের শেডের ওপর বসে কাকগুলো। বিশদ

25th  August, 2024
অভিশপ্ত কুলধারা

অলৌকিক তকমা স্থান-নামের সঙ্গে আলাদা মাত্রা যোগ করে। অলৌকিক ব্যাপার নিয়ে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী দু’পক্ষেরই নিজস্ব দাবিদাওয়া আর মতামত অন্তহীন।
  বিশদ

11th  August, 2024
দিল্লি দরবার
সমৃদ্ধ দত্ত

এমন কিছু নতুনত্ব নয়। এরকম দরবার এবং উৎসব আগেও হয়েছে। একবার সেই ১৮৭৭ সালে। ভারতের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বেশ কয়েক বছর পর মহারানি ভিক্টোরিয়ার ‘বিশেষ অভিষেক’ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিশদ

11th  August, 2024
হেড অফিসের বড়বাবু

বার দশেক হোঁচট খেয়ে প্রায় পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলে নিয়ে পার্থ এসে দাঁড়াল অফিসের গেটে। পার্থ বড়ুয়া। জুনিয়র অফিসার।
বিশদ

11th  August, 2024
ছোট গল্প: মাগুরমারি সাঁকো
সৌমিত্র চৌধুরী

বাঁকের মুখে স্টিয়ারিং ডান দিকে ঘুরাতেই চোখে পড়ল। একটা সাঁকো। মনে হচ্ছে বেশ পুরনো। দূর থেকে ব্রেকে আলতো করে পা ছোঁয়াল বিপুল। চাকা গড়িয়ে গড়িয়ে কিছুদূর এগল। পুলের কাছে আসতেই ব্রেকে আরও একটু চাপ দিয়ে থামিয়ে দিল। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল বিপুলের। বিশদ

04th  August, 2024
গুপ্ত রাজধানী: লালকেল্লা
সমৃদ্ধ দত্ত

জায়গাটা অনেকটাই কম। যেভাবে সাম্রাজ্য ছড়াচ্ছে আর হিন্দুস্তানের বাইরে থেকে আরও দলে দলে সমস্ত স্তরের মানুষ ভাগ্যান্বেষণে ক্রমাগত এসেই চলেছে, এরপর তো রাজধানীটাই ঩ঘিঞ্জি হয়ে যাবে। আরও বেশি খোলামেলা জায়গা দরকার। কোথায় নিয়ে যাওয়া যায় রাজধানী? বিশদ

04th  August, 2024
অতীতের আয়না: সাহেবদের হুঁকো বিলাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

মহিলা দিন কয়েক হয়েছে বিলেত থেকে এসেছেন এদেশে। এদেশীয় এক বিদুষী মেমসাহেবের সঙ্গে মহিলার বন্ধুত্ব হয়েছে। তার মতো খাঁটি ইংলিশ নন, তবে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা হওয়ায় বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করার জন্য তার বাড়িতে এসে দেখেন শ্রীমতী হেয়ার-ড্রেসারের তত্ত্বাবধানে কবরী সজ্জায় ব্যস্ত। বিশদ

04th  August, 2024
ছোট গল্প: জামাইয়ের মোবাইল 
বিপুল মজুমদার

হ্যালো অর্পি, শোন মা, সামনের জামাইষষ্ঠীতে ওঙ্কারকে একটা স্মার্টফোন দিতে চায় তোর বাবা। তা তোদের যদি কোনও চয়েস থাকে, ইয়ে মানে কোনও কালার বা কোম্পানি, তাড়াতাড়ি সেটা জানিয়ে দিস তো ভালো হয়।’ বিশদ

28th  July, 2024
একনজরে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারস্থলের কাছেই চলল গুলি। রবিবার ফ্লোরিডা গল্ফ ক্লাবের বাইরে দুই ব্যক্তির মধ্যে গুলির লড়াই বাধে। জানা যাচ্ছে, ওই ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই ট্রাম্প ক্লাব ...

আরজি কর কাণ্ডে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমেছে বাম, অতিবাম, কংগ্রেস, বিজেপি সহ তামাম বিরোধী দল। ...

শেষবার তিনি মাঠে নেমেছিলেন কোপা আমেরিকা ফাইনালে। খেতাবি লড়াইয়ে গোড়ালিতে চোট পেয়ে চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন লায়োনেল মেসি। তারপর কেটে গিয়েছে দু’মাস। চোট সারিয়ে মাঠে ...

আবার হিট অ্যান্ড রানের ঘটনা বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়ে। দ্রুতগতির গাড়ি পিষে দিল দুই বাইকযাত্রীকে। যার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন বছর সতেরোর এক কিশোর। গুরুতর জখম তাঁর ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

আয় বৃদ্ধি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। কর্মস্থলে সাফল্য ও প্রশংসা লাভের সম্ভাবনা। শরীর-স্বাস্থ্য বুঝে চলুন। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব ওজোন স্তর রক্ষা দিবস
১৭৩৬ - পোলিশ ডাচ পদার্থবিদ তথা প্রকৌশলী ও থার্মোমিটার উদ্ভাবক ড্যানিয়েল গ্যাব্রিয়েল ফারেনহাইটের মৃত্যু
১৮১২ - মস্কো শহরে এক অগ্নিকাণ্ডে এক দিনে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ শহর পুড়ে গিয়েছিল
১৯০৮- জেনারেল মোটরস কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠা
১৯১৬- ধ্রুপদী সংগীতশিল্পী এম এস শুভলক্ষ্মীর জন্ম
১৯৩১- হিজলি ক্যাম্পে বন্দিদের উপর গুলিতে হত দুই বিপ্লবী সন্তোষকুমার মিত্র এবং তারকেশ্বর সেনগুপ্ত
১৯৩২- নোবেলজয়ী স্কটিশ চিকিৎসক রোনাল্ড রসের মৃত্যু
১৯৪৫- রাজনীতিবিদ পি চিদাম্বরমের জন্ম
১৯৫৩- যুক্তরাষ্ট্রের রক্সি থিয়েটারে বিশ্বের প্রথম সিনেমাস্কোপ চলচ্চিত্র ‘দ্য রোব’ প্রদর্শিত
১৯৫৫- আন্তর্জাতিক কপিরাইট কনভেনশন চালু
১৯৮৭- বিশ্বের ২৭টি দেশ ভূ-পৃষ্ঠের বায়ু মন্ডলকে রক্ষা করার জন্য ক্লোরোফ্লোরো কার্বন গ্যাস ব্যবহারে বিধিনিষেধ প্রয়োগে চুক্তিবদ্ধ হয়



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.১০ টাকা ৮৪.৮৪ টাকা
পাউন্ড ১০৮.৬৪ টাকা ১১২.১৯ টাকা
ইউরো ৯১.৫৩ টাকা ৯৪.৭৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
14th  September, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৩,২০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,৫৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৯০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৬,৫৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৬,৬৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
14th  September, 2024

দিন পঞ্জিকা

৩১ ভাদ্র, ১৪৩১, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। ত্রয়োদশী ২৪/২০ দিবা ৩/১১। ধনিষ্ঠা নক্ষত্র ২৭/৪৫ দিবা ৪/৩৩। সূর্যোদয় ৫/২৭/৮, সূর্যাস্ত ৫/৩৫/৫৪। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪ মধ্যে পুনঃ ১০/১৮ গতে ১২/৪৪ মধ্যে। রাত্রি ৬/২২ গতে ৮/৪৫ মধ্যে পুনঃ ১১/৭ গতে ২/১৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/৯ গতে ৪/৪৬ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫৮ গতে ৮/২৯ মধ্যে পুনঃ ২/৩৪ গতে ৪/৫ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/৪ গতে ১১/৩২ মধ্যে। 
৩০ ভাদ্র, ১৪৩১, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। ত্রয়োদশী দিবা ১/১১। ধনিষ্ঠা নক্ষত্র দিবা ৩/৫১। সূর্যোদয় ৫/১৬, সূর্যাস্ত ৫/৩৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩ মধ্যে ও ১০/১৯ গতে ১১/৪৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/২৯ গতে ৮/৪৯ মধ্যে ও ১১/১০ গতে ২/১৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/১৪ গতে ৪/৫৩ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫৮ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ২/৩৫ গতে ৪/৭ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/৪ গতে ১১/৩২ মধ্যে। 
১২ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
কলকাতার সিপিকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

11:59:00 PM

আগামী কাল, মঙ্গলবার কলকাতা পুলিসে রদবদল করা হবে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

11:58:00 PM

স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

11:57:00 PM

অভয়ার উদ্দেশ্যে সমবেদনা জানিয়ে বৈঠক শুরু করি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

11:55:00 PM

আমরা উভয়পক্ষই খুশি, বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

11:55:00 PM

কিছু বিষয়ে সহমত কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে মতানৈক্য হয়েছে, জানালেন জুনিয়র ডাক্তাররা

11:53:00 PM