Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

দহ
হামিরউদ্দিন মিদ্যা

গোরু-মোষগুলো নদীর পাড়ে ছেড়ে দিয়ে গাছের তলায় বসে ঝিমোচ্ছিল নুরু। কাল সারারাত জেগে সত্যপীরের পালাগান শুনেছে। চাষবাসের কাজ চুকে যাবার পর প্রতিবছর নুরুদের গ্রামে কুসুমডিহি থেকে সত্যপীরের গায়েনরা আসে। আসে বলতে ক্লাবের ছেলেরা চাঁদা তুলে নিয়ে আসে। রাত জাগার ফলে চোখটা একটু লেগে এসেছিল নুরুর। হঠাৎ লোহার পাড়ার গাজু রাখাল হাঁফাতে হাঁফাতে ছুটে আসে। 
‘নুরু! এই নুরু! তুই গাছে হেলান দিয়ে বসে বসে ঘুমাচ্ছিস, আর ওদিকে দেখ গে সর্বনাশ হয়ে গেছে! তোর দলের একটা মোষ দহে পড়ে গেছে। টপ টপ যা। এতক্ষণে মনে হয় তলিয়ে গেল!’
ঘুম-জড়ানো চোখেই ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়াল নুরু। মাটি থেকে গামছাটা তুলে, ধুলো ঝেড়ে কোমরে বাঁধল। বাঁ-হাতে নিল পাচন লাঠিটা। গোরু-মোষের দলটা সামনেই চড়ছে। মোষগুলোর দিকে চেয়ে দেখল, নিবারণ ঘোষের লেজকাটা মোষটা নেই। বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল নুরুর। পাগলের মতো ছুটতে লাগল দহের দিকে।
বন্যার পর পলি-বালি ফেলে ফেলে নদীটা অনেক দূর সরে পড়েছে। নদীর খামখেয়ালিপনায় জন্ম হয়েছে একটা চরের। আগে সবাই বলত, নতুন চর। সেই যে বছর লাগারডাঙার ঘোষদের একটা মোষ জল খেতে নেমে দহে পড়ে মরে গেল, সেই থেকেই মানুষের মুখে মুখে চরটার নাম হয়ে গেল মোষমরার চর। ওই চরের দহে প্রতিবছর কারও না কারও মোষ মরেই। রাখালরা তাই ভুল করেও ওইখানে গোরু-মোষ চরায় না। জায়গাটা ভয়ে ভয়ে পার করে, অনেক দূরে ফাঁকা ময়দানে ছেড়ে দেয়।
চরের ধারে বেশ কয়েকজন জড়ো হয়েছে। নুরুকে পাচন হাতে আসতে দেখে জেলেপাড়ার বংশী বলল, ‘বাঁচাতে পারলমনি ভাইপো। নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেল।’
দহের দিকে তাকিয়েই পাথরের মতো দাঁড়িয়ে পড়ল নুরু। মুখে কোনও কথা বেরল না। কচুরিপানার ফাঁকে অনেকটা জায়গা জুড়েই মোষটার দাপাদাপির চিহ্ন। দেখলেই বোঝা যায়, বাঁচার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল প্রাণীটা।
চরের ধার ঘেঁষে ডোবা মতো নিচু অংশটা নরম পাঁক-মাটিতে ভর্তি। বন্যার জল এখানে ঘুরতে ঘুরতে গর্তের সৃষ্টি করেছে। নদীখাতের এই নিচু অংশটাই দহ। শীতকালে নদীর জল শুকিয়ে গেলে বোঝা যায়, এই দহ থেকে ঝরে ঝরে জল নামে। সামনের অংশটা স্রোতে ভেসে আসা কতকগুলো কচুরিপানা দখল করে নিয়েছে। ওপর থেকে দেখলে মনে হবে শক্ত ডাঙা, কিন্তু পা দিলেই সর্বনাশ! চোরাবালির মতো টেনে নেবে নিজের গহ্বরে।
নদীতে নেমে যাওয়া একটা খালে জেলেপাড়ার কয়েকজন লোক মাছ ধরছিল। হঠাৎ তারা দহের দিক থেকে কীসের যেন ঘাঁই মারার শব্দ শুনতে পায়। কৌতূহলবশত খাল থেকে উঠে দহের কাছে এসে দেখে, একটা মোষ বিষ খাওয়া মাছের মতো খাবি খাচ্ছে। সঙ্গে কারও দড়িও ছিল না। এত তাড়াতাড়ি কী করবে কোনও উপায় খুঁজে পায় না কেউ। দেখতে দেখতেই তলিয়ে গেল মোষটা।
দহে মোষ পড়ার খবর শুনে অনেকেই ছুটে আসল। ভিড় জমে গেল মোষমরার চরে।
সামসের মল্লিক বলল, ‘আরে ও জয়নালের পো! বলি, মোষটা পড়ল কী করে অ্যাঁ? রাখালি করচিস, কুনু কাণ্ডজ্ঞান নাই বাপু! গাছতলায় বসে বসে ঘুমলে হবেক!’
নুরুর কাঁদোকাঁদো অবস্থা। কোনও উত্তর দিতে পারে না। 
ভিড় থেকে একজন ফোড়ন কাটে, ‘এবার মজা বুঝুক! মোষের দাম গচ্চা দিক নিবারণকে।’
কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পেয়ে পড়িমরি করে ছুটে এল নুরুর বাপ। সব ব্যাপারস্যাপার শুনে রেগে বোম! হাতে একটা কঞ্চি তুলে নুরুকে মারতে গেল। কিন্তু নুরুর গায়ে কঞ্চির ঘা পড়ার আগেই কয়েকজন জাপটে ধরল জয়নালকে।
‘আহ! কর কী জয়নাল। ছেলেটাকে মারলে মোষটা ফিরে আসবেক?’
বুড়ো কাশীনাথ বলল, ‘মারধর করিস না বাপ। অমন ছেলেকে আর ঘরে রাখিস না, বাইরে খাটতে পাঠিয়ে দে। গোরু-মোষের রাখালি করা ওর কম্ম নয়। সেবার দেখলি তো, আমার ধানের বীজতলাটা কেমন খেয়ে ন্যাড়া করে দিল।!
দুই
নিবারণ ঘোষ গ্রাম-ষোলোআনাকে  ডাক দিল। বিকালে পাঁচপাড়ার মাতব্বরদের ঘরে ঘরে বলে এসেছে। সবাই যেন সন্ধ্যায় আস্তানায় হাজির হয়ে যায়। খবরটা শোনার পর থেকেই জয়নালের বুকের ভেতরে শুরু হল ঢিপঢিপানি। নুরুর মা সান্ত্বনা দিল, ‘এত চিন্তা কর না গো! গাঁয়েতে পাঁচরকম ভালো-মন্দ মানুষই আছে। লেয্য বিচার করবেক বইকি!’
ময়না সান্ত্বনা দিলেও নুরুর বাপের মন মানে না। মাথার ওপর একরাশ দুশ্চিন্তার কালো মেঘ চক্কর কাটে। পরের জমিতে জন-মুনিষ খাটে জয়নাল। রাতদিন খেটেখুটে সংসারের তিন-তিনটে পেটের খোরাক জোগাড় করতেই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ যদি গ্রামের মাতব্বররা চাপ দেয়, তাকে মোষের পুরো দাম গচ্চা দিতে হবে, তাহলে কোথায় পাবে এত টাকা? কাকুতিমিনতি করলেও কি শুনবে!
গ্রামের মধ্যবর্তী একটা স্থানের নাম আস্তানা। গ্রাম-ষোলোআনাকে কেউ ডাক দিলে এখানেই সবাই জড়ো হয়। সামান্য টুকিটাকি বিষয়ে পাড়ায় পাড়ায় বসলেই মিটে যায়। সন্ধ্যার একটু পরেই আস্তানায় লোকজন জড়ো হলে ষোলোআনার পক্ষ থেকে জয়নালকে ডাকতে পাঠানো হল। জয়নাল সুড়সুড় করে এসে এক কোণায় বসল। একটু পর নুরুও এল। 
সামাদ মল্লিক এবার সবাইকে চুপ করিয়ে শুরু করল, ‘আজ নিবারণ কী জন্য ডাক দিয়েছে সেকথা সবাই মোটামুটি জানো। তাও আর একবার শুনে রাখো, মোষ-মরার চরে ওর যে মোষটা আজ মরল, রাখালির শর্ত অনুযায়ী নুরুর কাছ থেকে তার ক্ষতিপূরণ দাবি করছে।’
পালপাড়ার রাসু মোড়ল বলল, ‘রাখাল নাবালক ছেলে, উ কী করে ক্ষতিপূরণ দিবেক! রাখালের গার্জেন তো এসেছে। কী বলতে চাইছে বলুক।’
জয়নাল কাকুতিমিনতি করে উঠল, ‘তুমরাই লেয্য বিচার করো। মোষটা তো আমার ছেলে নিজের থেকে ঠেলে ফেলে দেয়নি। অবলা জীব, পিয়াসের টানে চলে গেছে। উয়ার মরণ ছিল!’
 ‘মরণ ছিল বললে তো হবেকনি। চরানোর জন্য মাসে মাসে গোরু পিছু টাকা দিই। দেখভালের দায়িত্ব কার? মালিকের, না রাখালের?’ নিবারণ ঘোষ সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়।
ইলিয়াস মণ্ডল গ্রামের প্রবীণ মানুষ। চুপচাপ বসেছিল এতক্ষণ। আজ একটা কথা জানানোর সুযোগ পেয়েছে। খ্যাকখ্যাক করে গলা ঝেড়ে বলল, ‘রাখালের উপর পুরো দোষটা চাপালে হবেকনি বাপু। আমার কথা তুমরা নাও মানতে পারো। অনেক বছর থেকেই তো দেখছি, একটা জিনিস তুমরা কি খেয়াল করে দেখেছ কেউ, প্রতিবছর ওখানে শুধু মোষই মরে কেন? নদীর পাড়ে তো অনেক গোরু-ছাগলও চরে!’
ভ্রুঁ কুচকে তাকাল সবাই ইলিয়াসের দিকে। সিদ্দিক মণ্ডল বলল, ‘কী বলতে চাইছ চাচা?’
‘বানের পর যখন চর জাগল ওখানে, প্রথম যে মোষটা পড়েছিল দহে, সেই লাগারডাঙার বাবু ঘোষের মরা মোষটাকে আমিও তো দেখতে গিয়েছিলাম বাপু। হারিয়ে যাওয়া মোষটাকে সারাদিন তন্ন তন্ন করে খুঁজেছিল রাখাল, কিন্তু কোথাও তার দেখা মেলেনি। পরের দিন দহে একটা কালো মাথা ভাসতে দেখা গেল। ঠিক যেন কেউ মোষের মাথাটা কেটে কাদার ওপর নামিয়ে দিয়ে গেছে। শুনেছি ওই মোষটা ছিল বাঁজা। কিছুতেই পাল ধরে রাখত না।’
রাসু মোড়ল বলল, ‘তার সঙ্গে মোষ মরার কী সাথ?’
‘সাথ আছে গো, সাথ আছে। তুমরাই মিলিয়ে দেখো। আগের বছর মজলিডাঙার যে মোষটা মরল, ওটা কী মোষ ছিল? তার আগের বার ধলাচাঁদের মোষটা? এখনও পয্যন্ত যেক’টা মোষ মরেছে, প্রত্যেকটা মোষই মদ্দা। বুঝলে এবার? ও আরও অনেক মোষের প্রাণ নেবে।’
নিবারণ ঘোষ এবার ধমকে থামিয়ে দিল ইলিয়াসকে, ‘তুমি চুপ করবে চাচা! ওসব আলফাল কিসসা এখন চালে তুলে রাখো তো! নিকুচি করেছে তুমার মোষমরার চরের! আমি বাপু স্পষ্ট কথা বলে দিচ্ছি, আমার মোষের পুরো দাম কিন্তু লাগবেক। তুমরা কী করছ করো, নাহলে আমি একাই ব্যবস্থা নিয়ে নেব।’
‘শান্ত হ নিবারণ, শান্ত হ!’ মনোয়ার মাস্টার চুপ করাল নিবারণকে। তারপর শান্ত গলায় বলল, ‘দেখ বাপ একটু বোঝার চেষ্টা কর! গাঁয়ে-ঘরে বাস একে-অপরের পাশে থাকতে হবে। গরিব মানুষ জয়নাল। গরিব না হলে কি আর ছেলেকে রাখালি করতে দেয়! কত আর বয়স নুরুর! এখন ওর স্কুলে পড়ার সময়!’
‘এ তুমার কেমন কথা হল মাস্টার! রাখালদের কুনু দায় নাই বলছ? তাইলে তো ওদের আরও লেজ মোটা হয়ে যাবেক।’ ঘোষপাড়ার কয়েকজন চ্যাংড়া ছেলে হইচই করে উঠল।
নুরু চুপচাপ শুনছিল সবার কথাবার্তা। কী আর করবে ও! লেখাপড়ার পাঠ কোনদিন চুকে গিয়েছে তার। কোনওরকম টেনেটুনে প্রাইমারি স্কুলটা গিয়েছিল। তারপর আর মন বসল না। একদিন মা বলল, ‘তুই লেখাপড়াও করবি না, আর সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়াবি, তা তো চলবেনি বাপু। বাপটা তোর একলা খেটেখুটে মরবে কি?’
কিছুদিনের মধ্যেই নুরুর কাজ একটা জুটে যায়। মল্লিক পাড়ার ঝড়ু মল্লিক জয়নালকে জানায়, তার গোরুগুলো যেন নুরু চরাতে নিয়ে যায়। কিছু হাতখরচের টাকা দেবে মাসে মাসে।
ঝড়ু মল্লিকের গোরু নিয়ে যেতেই গ্রামের আরও অনেকে আবদার করতে লাগল। এখন সব মিলিয়ে চল্লিশ-পঞ্চাশটা গোরু-মোষ রোজ খুলতে হয়। প্রত্যেক মালিক মাসে মাসে গোরু পিছু পঞ্চাশ টাকা করে দেয়। তাতে কোনওরকম টেনেটুনে সংসারের  হাটবাজার, তেল-মশলার জোগানটা হয়।
‘চুপ করো সবাই, চুপ করো!’ এবার গর্জে উঠল রাসু মোড়ল। ভিড়ের গুঞ্জন কমলে সরাসরি জয়নালের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘জয়নাল, তুমার কী বক্তব্য স্পষ্ট করে বলোদিনি। ছেলে তুমার রাখাল। রাখালির সব শর্ত মেনেই তো ছেলেকে কাজে নামিয়েছ। এখন কাঁইকুঁই করলে তো চলবেকনি।’
জয়নাল চুপ করে বসে থাকে। তা দেখে সিদ্দিক মণ্ডল বলল, ‘গচ্চায় পড়েছ, এখন চুপ করে বসে থাকলে রেহাই নাই জয়নাল। যাহোক একটা মীমাংসা করে নিতে হবে। তোমাদের বিচার নিয়ে আমরা সারারাত বসে থাকব নাকি!’
জয়নাল এবার মুখ খুলল। বলল, ‘আমার কাছে তো লগদ টাকা জমানো নাই। গরিব মানুষ, হঠাৎ কী করে একটা মোষের দাম দিই বলো!’
রাসু মোড়ল বলল, ‘তারজন্য তুমাকে সময় দেওয়া হবে।’
নিবারণ ঘোষ হিসাব কষে নিল মনে মনে। তারপর জানাল, ‘মোষটার যা খাড়াই ছিল, এখনকার বাজারে চব্বিশ-পঁচিশ হাজার টাকা দাম হতো।’
দাম শুনে চমকে উঠল জয়নাল। এবার জোড়হাত করে অনুরোধ করল, ‘তুমরা গাঁয়ের পাঁচজনা আছো, একটা লেয্য    বিচার করো। এত টাকা আমি কোথায় পাব?’
রাসু মোড়ল এবার মীমাংসা করে দিল। বলল, ‘শুন নিবারণ, তুইও একটু     সহ্যধহ্য কর। জয়নালকে এতটা চাপ দিলে উ কি পারবেক? অর্ধেক টাকায় মেনে লে বাপ!’
নিবারণ মুখ গোঁজ করে বসেছিল। রাসু মোড়লের কথা শুনে বলল, ‘তুমরা যখন গাঁয়ের মাথা হয়ে বলছ, তাই দেক। তবে একটা কথা বলে দিলাম, ওর ছেলেকে আমি আর রাখাল রাখবনি।’
নিবারণের কথাতে আরও কয়েকজন সমর্থন জানাল, ‘হ্যাঁ, আমরাও আর উয়ার ওপর আস্থা পাচ্ছিনি। রাখালি করা উয়ার কম্ম নয়। সব হিসাব বুঝিয়ে, কাটছাঁট করে নিব। আজ নিবারণের মোষ মরল, কাল আবার অন্য কারও মোষ চলে যাবেক। নাকে কাঁদলে তো বার বার ছেড়ে দেওয়া যাবেকনি।’
রাসু মোড়ল বলল, ‘এসব তুমাদের নিজেদের ব্যাপার। যেটা ভালো বুঝবে, সেটাই করবে। এখন যেটা হচ্ছে সেটা আগে চুকুক।’ জয়নালের দিকে ঘুরে রাসু মোড়ল এবার বলল, ‘তুমি নিজের মুখেই বলো তো জয়নাল, কতদিনের মধ্যে টাকাটা দিতে পারবে?’
জয়নালের মাথার ওপর এখন কালবৈশাখীর ঝড়। সমস্ত ভাবনাচিন্তা ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে তার। না আছে বাপুতি বিঘাখানেক জমি, না আছে     জমানো পুঁজি। ভাত-মুড়ির চাল থেকে   শুরু করে তেলটি, নুনটি সবই কেনা। কোথায় সে এত টাকা পাবে! তার উপর নুরুকে যদি কেউ আর গোরু-মোষ চরাতে না দেয়!
মোড়ল বলল, ‘এত ভাবনাচিন্তার কিছু নাই জয়নাল,একমাস সময় দেওয়া হল তুমাকে। সামনের মাসের আজকের তারিখের মধ্যে টাকাটা ফেলতে হবে। না পারলে আরও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা।’
বিচার শেষ হলে আস্তানার জমাটি অন্ধকারকে খণ্ড খণ্ড করে জড়ো হওয়া মানুষগুলি নিজের নিজের ঘরে ফিরতে লাগল। অন্ধকারে গা মিশিয়ে একপাশে অনেকক্ষণ বোবার মতো দাঁড়িয়ে ছিল নুরু। দেখল, বাবার চলনে কোনও গতি নেই। টলমল করছে। নুরু নিজেও টের পেল, চারদিকে চাপ চাপ অন্ধকার। কালো পাঁক-মাটি আর ঘোলা জল। দম বন্ধ হয়ে আসছে। ওঠার জন্য আপ্রাণ হাত-পা ছোড়ার চেষ্টা করেও নড়তে পারছে না। কী করে নড়বে! আজ দহে শুধু নিবারণ ঘোষের মোষই তো পড়েনি। মোষটা মরে তাদের দুই বাপ-বেটাকেও ফেলে গিয়েছে দহে।
অলঙ্করণ : সোমনাথ পাল
28th  March, 2021
ছোঁয়া
বিতস্তা ঘোষাল
 

অফিস থেকে বেরিয়ে নীচে বেশ খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে পর্ণা। এই দাঁড়িয়ে থাকাটা কোনও কিছুর অপেক্ষায় নয়। এটা তার অভ্যাস। আসলে একটানা চার দেওয়ালের ঘেরাটোপে কাজ করতে করতে ভীষণ হাঁফ ধরে যায়। গুমোট লাগে ঘরটা। বিশদ

09th  May, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ১১
জয়ন্ত দে

 

সহজের ফোনটা পেয়ে কেমন যেন চুপচাপ হয়ে গেলেন পিশাচ সাধু। তাহলে তাঁর খারাপ কথাগুলো মিলে গেলেও কারও ভালো ভবিষ্যদ্বাণী করলে, তা মেলে না! বঁড়শি বারবার জানতে চায় তার কী হয়েছে। অনুমান করে ফেলে ফোন করেছিল সহজ। সে স্বামীকে বোঝায়, না মিলুক, তবুও তিনি যেন মানুষকে ভালো কথাই বলেন। বিশদ

09th  May, 2021
ছোট গল্প
সম্ভবামি যুগে যুগে

 

মহাপ্রস্থানের পথে অর্জুনের পতনের পর ভীম ও যুধিষ্ঠির আরও উত্তরদিকে এগিয়ে গেলেন। সেই বরফে ঢাকা শ্বেত প্রান্তরে মৃত্যুর অপেক্ষা করতে করতে অর্জুনের মন আসন্ন স্বর্গ না নরক এই দুর্ভাবনার  থেকেও শেষজীবনের পরাজয় ও হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে রইল। তিনি চিরকালের শৌর্যাভিমানী। বিশদ

25th  April, 2021
পিশাচ সাধু
পর্ব  ১০

তেত্রিশ দিন হয়ে গেল অথচ সহজের জীবনে ক্যাপ্টেনের করা ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না। পরমেশ্বরের কথা শুনে ক্যাপ্টেনকে ফোন করে সহজ বলে দিল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’ সেদিন রাতেই বাড়ি ফিরে বাবার কাছ থেকে সহজ জানতে পারল, তার নামে একটি অফিসিয়াল চিঠি এসেছে। তারপর... বিশদ

25th  April, 2021
পিশাচ সাধু

 

হঠাৎ বর্ণিনীর সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়ে যায় সহজের। বনির গন্তব্য বিচিত্রদার বাড়ি। সহজকে সঙ্গী করে বনি। জনগণের স্বার্থে লড়াই করতে গিয়ে বহুবার পেটানি খাওয়া বিচিত্র ঘোষাল বিশ্বাস করে, এ দেশে একদিন বিপ্লব হবেই। কথায় কথায় বিচিত্রদাও সহজকে সাবধান করে দেয়, সে যেন পিশাচ সাধুর পাল্লায় না পড়ে। বিশদ

18th  April, 2021
মিষ্টু
উৎপল দাস

রিমা ভিতরে ভিতরে জ্বলে পুড়ে মরে। এ পৃথিবীতে কেউ নেই যে তার অবস্থা বোঝে। মিষ্টুকে বিদায় না করতে পারলে যেন ওর শান্তি নেই।  বিশদ

11th  April, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৮

সহজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় পরমেশ্বর শান্ত গলায় বলেছিল— বিচিত্রদা সেই বিরল মানুষ যারা এখনও মনে করে বিপ্লব হবে। কখন হবে, কীভাবে হবে কেউ জানে না, শুধুমাত্র একটা স্ফুলিঙ্গ। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল হয়ে যাবে। বিশদ

11th  April, 2021
বিদিশা কি ভানুমতী?
আশিস ঘোষ

বেশি কথা বা শব্দ, আলো এখন ভালো লাগছে না। বিদিশাকে বলতেই, ও টিউব লাইট নিভিয়ে জিরো পাওয়ারের নীল আলো জ্বালিয়ে দিল। জানলার পর্দা হাওয়ায় উড়ছে। বাইরের রাস্তায় গাড়ির শব্দ। বিদিশা আমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুই বলছে না। বিশদ

04th  April, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৭
জয়ন্ত দে

দারোগা বাড়ির নিমন্ত্রণে ক্যাপ্টেন হঠাৎ উদয় হল কেন? এ প্রশ্ন সহজের মনে অবিরাম ঘুরপাক খাচ্ছে। নচের সঙ্গে কথা বলে মনে হল, ক্যাপ্টেনকে সেদিন দারোগা বাড়িতে পাঠিয়েছিল পরমেশ্বরের পার্টনার শঙ্কর। সহজের কাছে আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে থাকে পুরো স্কিমটা। এদিকে, ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণীর আতঙ্ক থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না নচে। তারপর... বিশদ

04th  April, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস  পর্ব   ৬
জয়ন্ত দে

সহজের একটিমাত্র টিউশন টিকে আছে। মনোতোষ স্যারের কোচিং ক্লাস সে ছেড়ে দিয়েছে। সৃজনীকে পড়ানোর সময় মুখ ফস্কে সহজ বলে ফেলে, তার ভাগ্য খুলতে আর ঊনত্রিশ দিন বাকি। অথচ, প্রেমিকা বর্ণিনীকেও সে ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কিছু বলেনি। এদিকে, সহজকে পরমেশ্বর সাবধান করে, ‘পিশাচের ফাঁদের পড়িসনি।’ তারপর... বিশদ

28th  March, 2021
ভুল ফোন
কৌশানী মিত্র

ছেলেটি নরম। মেয়েটি কঠিন। ছেলেটির চোখে সারাক্ষণ জল টলটল করছে। আসলে জন্মানোর পর শুধু লড়াই করতে করতে দু-দণ্ড বসে কাঁদতে পারেনি কোনওদিন। এখন যেটুকু যা আছে তাইই ইমনের সামনে উপুড় করে দিতে পারলে যেন বেঁচে যায়। বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৫
জয়ন্ত দে

নচে রেগে গিয়ে ক্যাপ্টেনকে রিকশসুদ্ধু খালে ফেলে দেওয়ার সুপারি দিল নেত্রকে। স্ত্রীকে নিয়ে নেত্রর রিকশয় উঠলেন ক্যাপ্টেন। রিকশ এগতে থাকে আর স্বামীকে একের পর এক অনুযোগ করতে থাকে বঁড়শি। তারপর... বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

পিশাচ সাধু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন সহজের। নচেও তার ভবিষ্যৎ জানতে চায়। সাধু বলেন, ‘তুই অপঘাতে মরবি।’ শুনে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত নচে। তারপর... বিশদ

14th  March, 2021
তন্ত্রমন্ত্র
সৌমিত্র চৌধুরী

ঠক ঠক ঠক। অন্ধকার ঘর। মিনিট পাঁচেক হল কারেন্ট চলে গিয়েছে। নিজের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে বসে আছি। তবুও মশার কামড়। স্বস্তিতে বসতেও পারছি না। তার মধ্যে দরজায় টোকা।  বিশদ

14th  March, 2021
একনজরে
দলের নির্দেশে নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বনশ্রী খাঁড়া। তিনি সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী শিউলি সাহার মা। বিধানসভা ভোটে বনশ্রীদেবী তৃণমূলের হয়ে সেভাবে প্রচারে নামেননি বলে দলীয় নেতৃত্বের অভিযোগ। সেজন্য তাঁকে অবিলম্বে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল দল। ...

শেষ পর্যন্ত বিস্তর টানাপোড়েনের পর আলোচনায় বসতে চেয়ে শ্রী সিমেন্ট কর্তারা বুধবার চিঠি দিল ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবকে। ওই চিঠিতে এসসি ইস্ট বেঙ্গলের সিইও শিবাজি সমাদ্দার বলেছেন, ‘অবিলম্বে আলোচ্য বিষয়গুলি জানান।’ ...

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও সুষ্ঠুভাবে রেশনে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার উপর বিশেষ জোর দিচ্ছেন রাজ্যের নতুন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেশন গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে ...

বিতর্ক যতই থাকুক, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের অন্যতম ভরসার জায়গা বিদেশি সাহায্য। বুধবার তা আরও একবার স্পষ্ট  করে জানাল মোদি সরকার। করোনায় সহায়তার জন্য এদিন সেই দেশগুলির ভূয়সী প্রশংসা করেছে কেন্দ্র। বলা হয়েছে, এর ফলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই আরও সহজ হবে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৬৩৮ - সম্রাট শাহজাহানের তত্ত্বাবধায়নে দিল্লির লাল কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু
১৮৩৬ - ভারততত্ত্ববিদ স্যার চার্লস উইলকিন্সের মৃত্যু
১৮৮৭ - বাঙালি কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং প্রবন্ধকার রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৮৫৭: ম্যালেরিয়ার জীবাণু আবিষ্কারক রোনাল্ড রসের জন্ম
১৯১৮: নৃত্যশিল্পী বালাসরস্বতীর জন্ম
১৯৪৭: কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের মৃত্যু
১৯৫৬: আর্ট অফ লিভিং ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা তথা আধ্যাত্মিক নেতা শ্রীশ্রী রবিশঙ্করের জন্ম
১৯৬২: ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিলেন সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণাণ
১৯৬৭: ভারতের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিলেন জাকির হোসেন
১৯৯৫ - প্রথম নারী হিসেবে ব্রিটিশ বংশদ্ভূত এলিসনের অক্সিজেন ও শেরপা ছাড়াই এভারেস্ট জয়
২০০০ - ভারতের লারা দত্তের বিশ্বসুন্দরী শিরোপা লাভ
২০০৫ - বিশিষ্ট সঙ্গীতিশিল্পী উৎপলা সেনের মৃত্যু
২০১১: পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় তৃণমূল কংগ্রেসের



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭২.৬৭ টাকা ৭৪.৬৮ টাকা
পাউন্ড ১০১.৯৯ টাকা ১০৫.৫১ টাকা
ইউরো ৮৭.৪৯ টাকা ৯০.৭১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,৪৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৯৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৬৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭১,৬০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭১,৭০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৯ বৈশাখ ১৪২৮, বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১। দ্বিতীয়া অহোরাত্র। রোহিণী নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৫/১/১৪, সূর্যাস্ত ৬/৪/৩৬। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪০ গতে ২/৫১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে পুনঃ ১০/১৫ গতে ১২/৫২ মধ্যে। বারবেলা ২/৪৯ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৩৩ গতে ১২/৫৫ মধ্যে। 
২৯ বৈশাখ ১৪২৮, বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১। দ্বিতীয়া রাত্রি ৩/৩৬। রোহিণী নক্ষত্র শেষরাত্রি ৪/৮। সূর্যোদয় ৫/১, সূর্যাস্ত ৬/৬। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪০ গতে ২/৫০ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে। কালবেলা ২/৫০ গতে ৬/৬ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৩৪ গতে ১২/৫৬ মধ্যে। 
৩০ রমজান।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
শিবপুরে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বালকের মৃত্যু
কলকাতার পর এবার হাওড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল আজ ...বিশদ

07:43:56 PM

দুর্গাপুরে  দিদিকে গুলি, অভিযুক্ত ভাই
দুর্গাপুরে  দিদিকে গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ভাইয়ের বিরুদ্ধে। আজ, ...বিশদ

05:17:18 PM

ধনেখালিতে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু বিহারের দম্পতির
স্ত্রী জ্যোতিকে নিয়ে কলকাতায় শ্বশুরবাড়ি আসছিলেন বিহারের দ্বারভাঙ্গার বাসিন্দা সৌরভ ...বিশদ

04:07:09 PM

স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে এবার উঠতে পারবেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও
রেলকর্মীদের জন্য ‘স্টাফ স্পেশাল’ ট্রেনে এবার থেকে উঠতে পারবেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও। ...বিশদ

03:35:34 PM

গঙ্গায় মৃতদেহ ভেসে আসতে পারে, শুরু নজরদারি
উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের গঙ্গায় ভাসতে দেখা গিয়েছে অসংখ্য মৃতদেহ। আশঙ্কা, ...বিশদ

03:29:57 PM

পিছিয়ে গেল পরীক্ষা
করোনার জেরে পিছিয়ে গেল ইউপিএসসি-র প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। ইউপিএসসি-র প্রিলিমিনারি হওয়ার ...বিশদ

03:17:14 PM