Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

আবার নতুন দিল্লি
সমৃদ্ধ দত্ত

লর্ড কার্জনকে কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক চিঠি পাঠালেন। লিখলেন, বিহার আর ওড়িশাকে বাংলা থেকে পৃথক করে দেওয়া হোক। কিন্তু পূর্ববঙ্গকে যেন বিচ্ছিন্ন করা না হয়। বাংলার মানুষ ভাগ হয়ে যাবে, এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। লর্ড কার্জন প্রতিটি চিঠি পড়লেন। মতামত শুনলেন। কিন্তু তাঁর টার্গেট হল, বাঙালি জাতির বিভাজন।  বিভাজনের সহজ পন্থা হল ধর্মীয় ভেদাভেদ। মুসলিমদের বার্তা দেওয়া যাবে যে, তোমাদের জন্য আলাদা একটা রাজ্য দেওয়া হল। হিন্দু বাঙালি রেগে যাবে। নিজেদের মধ্যেই দোষারোপ করবে। সুখে থাকবে ব্রিটিশ। বঙ্গভঙ্গের সময় এগিয়ে আসছে। অথচ কার্জন কোনও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আর দেরি নয়। এবার একটাই পথ। ব্রিটিশকে বয়কট করতে হবে। তবে, বয়কট নামটা প্রথম প্রথম চললেও, কিছুদিনের মধ্যে আর একটা ভালো আকর্ষণীয় নাম পাওয়া গেল। স্বদেশি। কথাটির মধ্যে তেজ আছে। ১৯০৫ সাল। ১৬ অক্টোবর কার্যকর করা হবে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত। যতই দিন এগিয়ে আসছে, ততই তীব্র হচ্ছে বাঙালির প্রতিবাদ। দোকান বাজার তো বটেই, স্কুল কলেজেও অবরোধ অবস্থান শুরু হল। কিন্তু নতুন  প্রজন্মের এই অতি সক্রিয়তা আর উৎসাহে, এতটা আগ্রাসী মনোভাবে একটু যেন দ্বিধা, দোলাচলে পড়ছেন সিনিয়র কংগ্রেস নেতারা। বিশেষ করে গোপালকৃষ্ণ গোখলে। তিনি ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে। কিন্তু বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা আর যুবসমাজ যেন জ্বলছে। এগিয়ে আসছে বঙ্গভঙ্গ। 
১৩ জুলাই ‘সঞ্জীবনী’ পত্রিকায় বয়কটের ডাক দেওয়া হল খোলাখুলি। ৭ আগস্টে টাউন হলে বয়কটের প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল। স্বদেশির পক্ষে পরপর বক্তৃতা দিচ্ছেন একজন কবি। কখনও পড়ছেন ‘অবস্থা ও ব্যবস্থা’ নামক প্রবন্ধ। কখনও মেয়েদের স্বদেশি সভায় পাঠ করছেন অসামান্য ‘ব্রতধারণ’ ভাষণ। এভাবে সেই কবিকে কখনও দেখা যায়নি রাস্তায় নেমে রাজনীতি, ব্রিটিশ বিরোধিতা অথবা প্রকাশ্যে জাতির সম্মান নিয়ে আন্দোলনে নামতে। তিনি এতই ক্ষুব্ধ, আজ রাস্তায় নেমেছেন। সেই কবির নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর মাত্র সাতদিন পর বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হবে। ৯ অক্টোবর বাগবাজারে বিজয়া সম্মিলনীতেও প্রবলভাবে বয়কটের ঝাঁঝালো আহ্বানের পুরোধা সেই কবিই। 
কিন্তু বঙ্গভঙ্গ ঠেকানো গেল না।  তবে একটি দেশলাই কাঠি জ্বালিয়ে দেওয়া হল একটি জাতির অন্তরে। সাড়ে সাত কোটির বেশি জনসংখ্যার বাংলা ভাগের পক্ষে কার্জনের যুক্তি ছিল, এভাবে সবথেকে অবহেলিত হচ্ছে প্রদেশের ইস্টার্ন পার্ট। অর্থাৎ পূর্ব অংশ। সেখানে যাওয়া দুষ্কর। তাই কোনও উন্নয়ন পৌঁছয় না। ভাগ করে দিলে ছোট হয়ে যাবে প্রদেশ। সুবিধা হবে উন্নয়নে। এসব কথার কথা। বাঙালি বুঝল,  ডিভাইড অ্যান্ড রুল করতে চাইছে ব্রিটিশ। কার্জন তো ঩বটেই, ব্রিটিশ সরকার ভয় পেতে শুরু করল তখন, যখন দেখা গেল পুনে, বম্বে, পাঞ্জাবে ছড়িয়ে পড়েছে ওই আন্দোলন, অসন্তোষ। অন্য প্রদেশের মানুষও বাঙালির প্রতি এই অনাচারের বিপক্ষে সরব হতে। সবথেকে বড় ঝড় টের পেল খোদ কংগ্রেস। কলকাতা অধিবেশনে তীব্র ধিক্কারধ্বনি শুনতে হল সিনিয়র কংগ্রেস নেতাদের। তারা ব্রিটিশদের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে চলছেন, এই অভিযোগে কোণঠাসা নরমপন্থীরা।  স্বয়ং দাদাভাই নৌরজিকে আনতে হল সঙ্কট সামলাতে। ঐক্য বজায় রাখতে। কংগ্রেস ভেঙে যায় যায়। 
নাগপুরের কংগ্রেস অধিবেশন ১৯০৭ সালে। কিন্তু সেখানে  অধিবেশন করা মানে আরও বড় বিপদ। গোটা শহরই তো বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে। সুতরাং হয়তো ভেস্তেই  যাবে অধিবেশন। তাই সরিয়ে নেওয়া হল এমন এক জায়গায়, যে শহর শান্ত। সুরাট। কোথায় শান্ত? বরং কংগ্রেসের বিদ্রোহীরা ওই শহরে অফিসিয়াল কংগ্রেস নেতাদের ধিক্কার দিয়ে পৃথক অধিবেশন করলেন। বিদ্রোহী আর চরমপন্থী এই যুবকদের বিক্ষোভ, আন্দোলন কতদিন টিকবে? প্রবীণ কংগ্রেস নেতাকর্মীরা ভাবছেন। তাঁরা জানতে চান, এদের নেতা কারা? দেখা গেল এঁদের নেতা দুই উজ্জ্বলতম অগ্নিশিখা। অরবিন্দ ঘোষ ও বালগঙ্গাধর তিলক। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী নামক কোনও ব্যক্তি তখনও অবতীর্ণ হননি ভারতীয় রাজনীতির মঞ্চে। কিন্তু প্রায় ১২ বছর পর তিনি যে আশ্চর্য কাজটি করবেন অসহযোগ আন্দালনের মাধ্যমে, সেটির প্রকৃত সূত্রপাত যেন করল বাঙালি সম্প্রদায়। অর্থাৎ ভারতবাসীর মনে ন্যাশনালিজম জাগ্রত করে, একটি স্বাধীন সত্তার ইচ্ছাকে উস্কে দিয়ে একজোট হওয়ার শপথ। বঙ্গভঙ্গের এই আন্দোলনের আগে কিন্তু গোটা দেশকে একসূত্রে বেঁধে ফেলার একটি আবেগের জন্ম হয়নি। 
সুতরাং, ন্যাশনালিজম নামক উচ্চ দর্শনটির জন্ম হল কলকাতার রাস্তায়। কিন্তু তার তীব্র প্রকাশ ঘটল বিহারের মুজফফপুরে ১৯০৮ সালের ৩০ এপ্রিল। ঩দুই টিনএজার একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়লেন। তাঁদের লক্ষ্য কলকাতার প্রাক্তন  চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস কিংসফোর্ড। সেদিন কেনেডিদের বাড়িতে কিংসফোর্ড এসেছিলেন তাস খেলতে। ফেরার সময় কিংসফোর্ড আর তাঁর স্ত্রী একটি গাড়িতে, আর একইরকম দেখতে আর একটি গাড়িতে ছিলেন কেনেডি পরিবারের মা ও মেয়ে। ওই দুই তরুণ ভুল গাড়িতে বোমা ছুঁড়লেন। কিংসফোর্ড বেঁচে গেলেন। এই প্রথম নয়। এর আগেও কিংসফোর্ডের বাংলোয় একটি বই পাঠানো হয়েছিল পার্সেলে। হার্বার্টের ব্রুমের লেখা ‘কমেন্টারিজ অন দ্য কমন ল’। আসলে সেটি বই ছিল না। ছিল বোমা। পরেশ মল্লিক নামক এক তরুণ বিপ্লবী সেটি পৌঁছে দিয়েছিলেন। বই খুললেই বিস্ফোরণ হবে। কিন্তু কিংসফোর্ড ব্যস্ত ছিলেন। পার্সেল না খুলে আলমারির উপর রেখে দিলেন। তারপর ভুলেই গেলেন। তাঁর ট্রান্সফার অর্ডারও এসে গেল। ডিস্ট্রিক্ট জজ। মুজফফরপুর। সেখানেই তাঁকে টার্গেট করলেন ওই দুই তরুণ। তাঁদের নাম ক্ষুদিরাম বোস ও প্রফুল্ল চাকী। 
দুই যুবা ব্যর্থ হলেন। কিন্তু বীরত্ব আর স্বাধীনতা সংগ্রামের আগুনটি চিরতরে জ্বালিয়ে  দিয়ে গেলেন। সে কাহিনি বাঙালির অন্তরে স্থপিত আজও। ব্রিটিশ সরকার ক্ষুদিরাম বোসকে ফাঁসি দিয়ে ভেবেছিল বাঙালি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে যাবে। আর কেউ মাথা তোলার সাহস পাবে না। কিন্তু ভুল। বরং দেখা গেল, ঘরে ঘরে এই দুই তরুণের বীরগাথার বন্দনা শুরু হয়েছে।  উজ্জীবিত হয়ে গেলেন হাজার হাজার তরুণ যুবা। সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকা ব্রিটিশ এবার প্রত্যাশিতভাবেই শুরু করল যথেচ্ছ ধরপাকড়। এভাবেই একদিন কলকাতার  মানিকতলা এলাকার মুরারিপুকুরের বাগানবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হল একঝাঁক যুবককে। তাঁরা নাকি চক্রান্ত করছিলেন। কাউকে পাঠানো হল আন্দামানে। কারও বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ ও হত্যার চক্রান্তের মামলা। এরকমই একটি মামলার নাম ইতিহাসে উজ্জ্বল। আলিপুর বোমা মামলা। 
১৯০৯ সালে ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া জ্যোতিষ্ক অরবিন্দ ঘোষের পক্ষে এক দৃপ্ত আইনজীবী আবেগ ও যুক্তির সংমিশ্রণে আদালতে বললেন, ‘এই অস্থিরতার যখন অবসান হবে,  এই বিতর্ক যখন নীরব হবে, দীর্ঘদিন পর যখন তাঁর জীবনাবসান হবে, তখন তাঁকে বলা হবে দেশপ্রেমের কবি, তাঁর সম্পর্কে বলা হবে জাতীয়তাবাদের গুরু, মানবিকতার প্রেমিক। তাঁর উচ্চারিত বাণী  প্রতিধ্বনিত হবে শুধুই এই দেশে নয়, সমুদ্র পেরিয়ে অন্য ভূখণ্ডগুলিতেও। তাই মাননীয় জুরিগণ ও বিচারপতি, আপনাদের আমি বলতে চাই, আজ এই মানুষটি দাঁড়িয়ে রয়েছেন শুধু এই আদালতের সামনে নয়, তিনি দাঁড়িয়ে রয়েছেন ইতিহাসের হাইকোর্টে!’ অরবিন্দ ঘোষের হয়ে আদালতে উপস্থিত হওয়া এই ব্যারিস্টারের নাম ছিল চিত্তরঞ্জন দাশ। আর বিচারপতি ছিলেন সি পি বিচক্রফট। ঘটনাচক্রে তিনি ছিলেন কেমব্রিজের কিংস কলেজে এই অভিযুক্ত অরবিন্দ ঘোষেরই সহপাঠী। এমনকী, অরবিন্দ ঘোষ গ্রিক ভাষার পরীক্ষায় প্রথম স্থান পাওয়ায় বিচক্রফট ফার্স্ট হতে পারেননি। সেকথা তিনি মনে রেখেছেন। আজ তিনি বাধ্য হলেন এই অসামান্য বাগ্মী আইনজীবীর যুক্তিজাল মেনে নিতে। বন্দিমুক্তি ঘটল অরবিন্দের। কিন্তু আচমকা তিনি নিজে সম্পূর্ণ চলে গেলেন অন্য জগতে। অধ্যাত্মবাদ ও ঈশ্বর বন্দনার এক অন্য বোধে। তবে তাঁর  প্রজ্জ্বলিত জাতীয়তাবাদের আগুন নিভল না। বরং ‘অনুশীলন সমিতি’, ‘যুগান্তর’ ইত্যাদি গোপন সংগঠনে ছড়িয়ে পড়ল আদর্শ। এই প্রথম ব্রিটিশ সরকার ভয় পেতে শুরু করল। কীভাবে শিক্ষা দেওয়া যায় বাঙালিকে? শুরু হল প্ল্যান।
...
১৯১১। ব্রিটিশ সরকারের হোম ডিপার্টমেন্টের মেম্বার জন  জেনকিন্স ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জকে একটি প্ল্যান দিলেন। বললেন, দু’টি কাজ করা যেতে পারে। বঙ্গভঙ্গ রদ করে দিয়ে আবার সংযুক্ত বাংলা করা হোক। তাহলে এই যে এত অসন্তোষ আর বাঙালিদের চরমপন্থী আগ্রাসন, এটাকে প্রতিরোধ করা যাবে। বলা যাবে, যে কারণে এত ক্ষোভ, সেটাই তো বাতিল করা হল। সুতরাং আর তো কোনও আন্দোলনের অর্থ নেই! আর দ্বিতীয় প্ল্যান হল, কলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক রাজধানী। ক্যাপিটাল শিফট করা হোক নর্থ ইন্ডিয়ায়। দিল্লিতে হলে সবথেকে ভালো। তবে ব্যাপারটা গোপন রাখা দরকার। আমরা কিছু করব না।  সিদ্ধান্ত লন্ডন অফিস নেবে। 
কথাটা মনে ধরল লর্ড হার্ডিঞ্জের। তিনি ২৫ আগস্ট একটি চিঠি লিখলেন, সিমলা থেকে লন্ডনে। সেক্রেটারি অফ স্টেট ফর ইন্ডিয়াকে। বললেন, প্রথমত, দিল্লি সেন্ট্রালি লোকেটড। এখান থেকে গোটা ভারতে যাতায়াত, নজর রাখা, প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে দ্রুত কার্যকর করা সহজ। কলকাতা একেবারেই একটি প্রান্তে। সেখানে সমস্যা হচ্ছে।  যেটা লিখলেন না, কিন্তু মুখে বললেন এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলকে, সেটা হল, এখন কলকাতা আর নিরাপদ নয়। ব্রিটেন থেকে বহু প্রতিনিধি, অতিথি, সরকারি আধিকারিক, পর্যটক আসেন ভারতে। কলকাতা যেভাবে চরমপন্থী হয়ে উঠেছে, সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। কখন যে আক্রান্ত হতে হবে। লর্ড হার্ডিঞ্জের পাঠানো প্রস্তাব পছন্দ হল স্বয়ং মহারাজা পঞ্চম জর্জের। তবে কোনও সিদ্ধান্ত জানালেন না। তিনি আসছেন ভারতে। আবার দরবার হবে। অভিষেক উৎসব। রাজা জর্জ এবং রানি মেরি। দিল্লিতে আয়োজিত হয়েছে উৎসব। 
রাজা ও রানি এলেন। অভিষেক পর্বে ভারতের  তাবৎ রাজা-মহারাজারাও এলেন। পঞ্চম জর্জ ও কুইন মেরি লালকেল্লার খোয়াব গাহ এর কাছে একটি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দিল্লির মানুষকে দর্শন দিলেন। এই খোয়াব গাহে সম্রাট শাহজাহান সারাদিনের ক্লান্তির পর বিকেলে এসে বিশ্রাম নিতেন।   রাজা জর্জ মনে করলেন ভারতে ব্রিটিশরাজ আর একটি মোগল সাম্রাজ্য হতে চলেছে। এই দরবার উৎসবেই স্বয়ং রাজা ঘোষণা করলেন বাঙালির সর্বনাশ। ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে। নতুন রাজধানী দিল্লি! বাঙালির ভাগ্যাকাশে সূর্যাস্তের শুরু! গোটা বাংলা  স্থম্ভিত! 
...
শাহজানাবাদে নয়। মোগলদের ওই শহরের দক্ষিণদিকে একটি পাহাড়ে করতে হবে নতুন রাজধানীর ক্ষমতার কেন্দ্র। গঠন করা হল একটি টাউন  প্ল্যানিং কমিটি। ইংল্যান্ডে কান্ট্রি হোমস আর বাগানবাড়ি তৈরি করা একজন আর্কিটেক্টকে বাছাই করা হল নতুন রাজধানী গড়ে তুলতে। তাঁর নাম এডউইন লুটিয়েনস। তাঁর সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ার জন এ বোর্ডি এবং মিউনিসিপ্যাল এক্সপার্ট এস সি সুইটনটন। ঠিক হল, এই তিনজন নতুন দিল্লির প্ল্যান করবেন। কিন্তু একা এত বড় একটা প্রজেক্টের ডিজাইন করা কতটা সম্ভব? তাই একটা প্রস্তাব দিলেন ইন্ডিয়া অফিসের স্যার টমাস হোল্ডারনেস। লুটিয়েনসকে বললেন, তোমার কাজটা শেয়ার করে নাও। তাহলে প্রজেক্টটা মন দিয়ে করতে পারবে। এখন জোহানেসবার্গে গভর্নমেন্ট বিল্ডিং করছে একজন ভালো আর্কিটেক্ট। ওকে সঙ্গে নাও। ওই আর্কিটেক্টের নাম হার্বার্ট বেকার। প্রথমে কিছুটা থমকে গেলেও নাম শুনে লুটিয়েনস ভাবলেন, আরে! এই লোকটা তো আমার পরিচিত! ভালোই হবে একসঙ্গে কাজ করতে। বহুকাল আগে আর্নেস্ট জর্জ অফিসে তাঁরা দু’জনেই কাজ করতেন লন্ডনে। সেখানে লুটিয়েনস ছিলেন অ্যাপ্রেন্টিস। আর এই হার্বাট তখন ড্রাফটসম্যান। পরবর্তীকালে পেশার কারণে দু’জনে ছিটকে গিয়েছেন। কিন্তু বেশ কিছুদিন চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল। ১৯১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বেকার এলেন ভারতে। শুরু হল লুটিয়েনস ও বেকারের যৌথ উদ্যোগে একটি নতুন শহর নির্মাণের কাজ। নিউ দিল্লি। 
স্থির হল, কাজটা ভাগাভাগি করে নেওয়া হবে। লুটিয়েনস  ডিজাইন করবেন গভর্নমেন্ট হাউস (আজকের রাষ্ট্রপতি ভবন) এবং গোটা নতুন শহরের লে আউট। তার মধ্যে থাকবে একটি অভিনব মার্কেট কমপ্লেক্স। যার নাম হবে কনট প্লেস। আর বেকার নির্মাণ করবেন দুটো সচিবালয় (আজকের নর্থ ব্লক ও সাউথ ব্লক)। গোটা প্রজেক্টের ৫ শতাংশ করে তাঁরা পাবেন ফি হিসেবে। কেমন হবে বিল্ডিংগুলো? লুটিয়েনস চাইছেন ইউরোপিয়ান ক্লাসিক স্ট্রাকচার। বেকারের পছন্দ এমন এক নতুন স্টা‌ইল, যা হবে ইম্পেরিয়াল। এমন এক স্থাপত্য যেখানে ইউরোপ স্টাইলে মিশে যাবে ভারতীয় কলা। 
সুতরাং দু’জনের ডিজাইনে দুরকম চিহ্ন পরিলক্ষিত হল। লুটিয়েনস যে ভাইসরয় হাউসের নকশা তৈরি করলেন, সেটায় ইউরোপীয় ক্লাসিকের ছাপ। বেকারের নর্থ ব্লক ও সাউথ ব্লকে রেনেসাঁ ও ইন্ডিয়ান স্টাইলের মেলবন্ধন। সেখানে দেখতে পাওয়া যাবে জালি, ছত্রী, নকশা। কিন্তু প্রাথমিক এই ডিজাইনের ফারাক একটা সময় সরাসরি মতান্তরে পরিণত হল। সেটা হল কাউন্সিল হাউস নির্মাণে। অর্থাৎ আজকের পার্লামেন্ট হাউস। বেকার চাইলেন  একটি ত্রিকোণ তৈরি করতে। কাউন্সিল অফ স্টেটস (রাজ্যসভা), লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি (লোকসভা) এবং  চেম্বার অফ প্রিন্সেস। কিন্তু লুটিয়েনসের ইচ্ছা গোল কলোসিয়াম ডিজাইন। প্রবল টানাপোড়েন। ঝগড়া। মতান্তর। কিন্তু  লুটিয়েনসের ইচ্ছাই পূর্ণ হল।
কিন্তু অন্য একটি মতপার্থক্য বন্ধুত্বে চিড় ধরালো। ভাইসরয় হাউস ও সেক্রেটারিয়েটকে একই উচ্চতায় রাখতে চাইলেন বেকার। যাতে মানুষের চোখে ভাইসরয় এবং প্রশাসন একই মাপের হয়। সেই কারণে ভাইসরয় হাউসকে একটু পিছিয়ে দিতে হল। যাতে সমমাপের মনে হয়। কিন্তু এর ফলে যেটা হল, সেটা লুটিয়েনস মানতে পারলেন না। রাজপথ থেকে অর্থাৎ রাইসিনা হিলসের থেকে উতরাই ধরে নেমে এসে মধ্যবিন্দুতে দাঁড়ালে সম্পূর্ণভাবে আর ভাইসরয় হাউসকে দেখা যায় না। শুধুই উপরের শীর্ষ গম্বুজ দৃষ্টিগোচর হয়। বহু বছর ধরে দুই ঩দিল্লি কারিগরের মধ্যে প্রবল অভিমান ও ক্ষোভ জমা হয়ে ছিল। পরস্পরকে লেখা চিঠিতে সেটা স্পষ্ট হয় ১৯২৫ সালে। 
প্ল্যানটা কী ছিল? রাইসিনা হিলসের উপর থেকে ভাইসরয় সোজা তাকালে দেখতে পাবেন পুরনো কেল্লা। অর্থাৎ শেরশাহ ও হুমায়ুনের নির্মাণ। মোগল থেকে ব্রিটিশ— একটি ইতিহাসের জার্নি  যেন সাড়ে ৩ কিলোমিটারেই প্রতিভাত। এর নাম রাজপথ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে নিউ দিল্লি নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় চার বছর পর আবার যখন শুরু হল, তখন নতুন একটি প্ল্যান সংযোজিত। ভাইসরয় হাউসের সামনের রাস্তা রাজপথ হয়ে প্রথমে মিশবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধসহ বিভিন্ন যুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনানীদের স্মৃতিস্তম্ভে। যার নাম হবে ইন্ডিয়া গেট। তার দু’দিকে গড়ে তোলা হবে সুরম্য বাগান। সবুজ বনানীতে ঘেরা জলাশয়, কৃত্রিম ঝর্ণাকে দু’দিকে রেখে রাজপথ যাবে পুরনো কেল্লায়।  যেখানে  এক সন্ধ্যার আজান শুনে তড়িঘড়ি কেল্লার শীর্ষ থেকে নামতে গিয়ে পোশাকে পা আটকে সিঁড়ি থেকে পড়ে যান সম্রাট হুমায়ুন। মৃত্যু হয় তাঁর। কী করছিলেন তিনি ছাদে? আকাশের শুকতারা দেখছিলেন! তারপর কী হল? কখন খবর পেলেন পুত্র ১৪ বছরের আকবর? সে অবশ্য অন্য গল্প। সকলের জানা। ১৯৩১ সালে সমাপ্ত হল নতুন দিল্লি। নতুন ব্রিটিশ প্রশাসনের পাওয়ার করিডর। নতুন দিল্লি এক অত্যাধুনিক শহরে পরিণত হল। ছবির মতো। যাকে গোটা বিশ্ব চেনে একটি নামে। লুটিয়েনস দিল্লি! 
...

ঠিক ৯২ বছর পর আবার তৈরি হবে নতুন এক দিল্লি। প্রকল্পের নাম সেন্ট্রাল ভিস্টা রিডেভেলপমেন্ট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্থির করেছেন, নতুন  করে সাজিয়ে তোলা হবে এই লুটিয়েনস দিল্লিকে। ২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। ২০২৩ সালের মধ্যেই সমাপ্ত হবে। কী কী বদলে যাবে? প্রায় সব! প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন তৈরি হবে। হবে নতুন পার্লামেন্ট। নতুন সচিবালয়। বর্তমান পার্লামেন্টকে মিউজিয়মে পরিণত করা হবে। রাজপথের দু’পাশে প্রায় ১৯০০ গাছ সরিয়ে দিতে হবে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন লোককল্যাণ মার্গে। ১২ একর জমিতে গড়ে তোলা এই কমপ্লেক্সে মোট পাঁচটি বাংলো। এছাড়া অফিস বিল্ডিং, প্রেক্ষাগৃহ, কনফারেন্স হল, হেলিপ্যাড এবং একটি আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল। এই গোপন সুড়ঙ্গ সোজা সফদরজং এয়ারপোর্টের টারম্যাকে পৌঁছে গিয়েছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী ভবনে থাকবে ১০টি চারতলাবিশিষ্ট বাড়ি। ১৫ একর প্লট। সম্পূর্ণ নতুন পার্লামেন্ট ভবন গড়ে তোলা হবে ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে। 
বেকার ও লুটিয়েনস যে দিল্লি তৈরি করেছিলেন, সেখানে নতুন সংযোজন ঘটেছে একাধিকবার।  ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর বহু নতুন বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানত সেগুলি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্টস ১৯৮৫ সালে গড়ে তোলা হয়। সাহিত্য, ভিস্যুয়াল আর্টস, স্থাপত্য, ফোটোগ্রাফি, সঙ্গীত, নৃত্যকলার এক গবেষণাগার ও মেলবন্ধনকেন্দ্র। এই বিল্ডিং ভেঙে ফেলা হবে। সরকারের বহু মন্ত্রক ও বিভাগ যে ভবনগুলিতে রয়েছে সেই শাস্ত্রী ভবন, কৃষি ভবন আর থাকবে না। ধুলিসাৎ হবে। ভাঙা হবে জওহরলাল নেহরু ভবন। বিদেশমন্ত্রকের অফিস। ১৯৫৬ সালে নির্মিত দিল্লির অন্যতম গর্ব হিসেবে উপস্থাপিত একটি অসামান্য শৈলীর অট্টালিকা হল বিজ্ঞান ভবন। এটিও ভেঙে দেওয়ার প্ল্যান করা হয়েছে। উপরাষ্ট্রপতির বাংলো ভাঙা হবে। সবথেকে বেশি বিতর্ক দানা বেঁধেছে যে বিল্ডিং নিয়ে সেটি হল জাতীয় মিউজিয়াম, ন্যাশনাল আর্কাইভকে ভাঙা নিয়ে। যদিও সরকার জানিয়েছে, ন্যাশনাল আর্কাইভের মূল বিল্ডিং অটুট থাকবে। শুধু‌ই অ্যানেক্সি ভাঙা হবে। কী আছে সেখানে? ৪৫ লক্ষ ঐতিহাসিক ফাইল। ২৫ হাজার অতীত পাণ্ডুলিপি, ১ লক্ষাধিক মানচিত্র এবং দেড় লক্ষ মোগল আমলের নথিপত্র। সরকার আশ্বাস দিয়েছে, মিউজিয়াম অথবা আর্কাইভ, প্রতিটি নথি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। সংস্কৃতি মন্ত্রক জানিয়েছে, দিল্লির চরিত্র বদলের কোনও প্রয়াস হচ্ছে না। সরকারের দাবি, যখন নতুন সেন্ট্রাল ভিস্টা সামনে আসবে, তখন সকলেই বুঝবে কতটা নয়নাভিরাম এবং আধুনিক হয়েছে এই উদ্যোগ। সুতরাং এতকালের চেনা রাজধানী নতুন দিল্লির অনেকটা পাল্টে যাবে।
পুরনো টাকা বাতিল। পুরনো ট্যাক্স ব্যবস্থা বাতিল। পুরনো দিল্লি বাতিল। পুরনো পার্লামেন্ট বাতিল।
নতুন ভারত। মোদির ভারত! 
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : স্বাগত মুখোপাধ্যায়
30th  May, 2021
অবিস্মরণীয় চিত্রামৃত
শংকর

অনন্তকালের মহামানবদের বাণী প্রচারে অনেক সময় লেগে যায়। কামারপুকুরের গদাধর চট্টোপাধ্যায় তার ব্যতিক্রম নন। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পাঁচ টাকা মাইনের পূজারী তাঁর অবসর সময়ে ভক্তজনদের কিছু বললেন, একজন স্কুল মাস্টার তা শ্রদ্ধার সঙ্গে শুনে বাড়ি ফিরে এসে নোটবইতে লিপিবদ্ধ করলেন। বিশদ

22nd  August, 2021
সারদা মায়ের 
স্বদেশি সন্তান
সমৃদ্ধ দত্ত

বরিশালের বানবীপাড়ার যোগেন্দ্রনাথ গুহঠাকুরতা ছিলেন স্বদেশপ্রেমী। সুতরাং নিজের কন্যাটিকেও সেভাবেই তিনি শিক্ষা দিয়েছেন। অন্য বালিকাদের সঙ্গে বড় হওয়ার সময় শিশুদের গ্রাম্য খেলাধুলোয় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি, বাবার কাছে মেয়েটি দেশভক্তির আকুলতাও শিখেছিল। যা সেই ছোট থেকেই তার মনের মধ্যে গেঁথে যায়। মেয়ের নাম প্রফুল্লমুখী। বিশদ

15th  August, 2021
অস্তকালের রবি
পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়

বারান্দায় বসে সন্ধ্যার সময় সুনন্দা, সুধাকান্ত ও ক্ষিতিমোহনবাবুর স্ত্রীকে মুখে মুখে বানিয়ে একটা দীর্ঘ গল্প শুনিয়ে তারপরে বাদলা বাতাস ঠান্ডা বোধ হওয়াতে ঘরে গিয়ে কেদারাতে বসেছিলুম, শরীরে কোনো প্রকার কষ্ট বোধ করিনি, অন্তত মনে নেই; কখন মূর্চ্ছা এসে আক্রমণ করল কিছুই জানি নে। 
  বিশদ

08th  August, 2021
ঘড়ির দর্পণে কলকাতা

‘বৈঠকখানায় মেকাবি ক্লাকে টাং টাং টাং করে পাঁচটা বাজলো, সূর্যের উত্তাপের হ্রাস হয়ে আসতে লাগলো। সহরের বাবুরা ফেটিং, সেলফ ড্রাইভিং বগী ও ব্রাউহ্যামে করে অবস্থাগত ফ্রেণ্ড, ভদ্রলোক বা মোসাহেব সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে বেরুলেন; কেউ বাগানে চল্লেন।’— মহাত্মা হুতোম লিখেছেন। 
বিশদ

01st  August, 2021
লোককথায় গাঁথা মহাকাব্য

‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ কেবল বাঁশবাদির কাহারদের জীবন আখ্যান নয়, এ এক মহাসময়ের সম্পাদ্য। আখ্যানের প্রতিটা বাঁকে মহাকাব্যিক চলন। মানুষের ক্রমে সভ্যতার পথে পা বাড়ানোর ইতিহাসে আগুন আবিষ্কারের আগে থেকেই তার দৃষ্টিশক্তি অন্ধকারেও প্রখর ছিল।
বিশদ

25th  July, 2021
অচেনা তারাশঙ্কর

আমার জীবনে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাব এমনই যে, তাঁর স্নেহধন্য হয়ে আজও নিজেকে আমি অতি সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। আমার তখন কতই বা বয়স, হাওড়া শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি।
বিশদ

25th  July, 2021
অশান্ত স্মৃতি
সোভিয়েত পতনের ৩০ বছর

দড়ি ধরে মারো টান, লেনিন হবে খানখান! এগারো ফুট উঁচু লাল গ্রানাইটের মূর্তিটা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তেই উল্লাসে ফেটে পড়েছিল জনতা। কেউ আনন্দে হাততালি দিয়েছেন, তো কেউ আবার প্রাণখুলে গেয়েছেন জাতীয় সঙ্গীত।
বিশদ

18th  July, 2021
কথা ও কাহিনিতে
বাংলার রথ
তরুণ চক্রবর্তী

এপার ওপার দু’দিকেই ঘন জঙ্গল আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকটি জনপদের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে পতিতোদ্ধারিণী গঙ্গা। সেই গঙ্গার নির্জন তীরে পাতায় ছাওয়া এক কুটিরে থাকতেন যে সন্ন্যাসী, হঠাৎই একদিন কোথায় যে উধাও হয়ে গেলেন!কবে কোথা থেকে এসে সেখানে তিনি ডেরা বেঁধেছিলেন, কী তাঁর নাম, তাও তো কেউ জানে না। বিশদ

11th  July, 2021
অচেনা সীমান্তে
অজানা গল্প

সীমান্ত....! দু’দেশের মাঝে কাঁটাতারের বেড়া। আর তার দু’দিকে বাস হাজার হাজার মানুষের। যেখানে কাঁটাতার নেই, সীমান্তের ‘উঠোন’ যেখানে উন্মুক্ত, সেখানে বাস করা যে কী কঠিন, কী যন্ত্রণাদায়ক, তা বোধহয় আমার-আপনার মতো বহু মানুষই জানেন না। বিশদ

04th  July, 2021
আদুর বাদুড়
চালতা বাদুড়

মাম্পস-র‌্যাবিস-নিফা-ইবোলা-হেন্ড্রা-সার্স-মার্স-কোভিড প্রভৃতি মারণ ভাইরাসের সূতিকাগার বাদুড়ের শরীর। অথচ বাদুড়ের টিকিটিও কস্মিনকালে তারা স্পর্শ করতে পারেনি। বাদুড় থেকে মানুষে সরাসরি সংক্রমণের নেই কোনও প্রাক-ইতিহাস। মধ্যবর্তী পোষক উট-ঘোড়া-শিম্পাঞ্জি-শুয়োর-পিপীলিকাভুক থেকেই সংক্রমিত হয়েছে মানুষ। নির্বিচারে অরণ্যনিধন, জীববৈচিত্র্যের সমূল বিনাশই প্রতিটা মহামারীর নেপথ্যের এক এবং অদ্বিতীয় কারণ। মানুষের কি সম্বিত ফিরবে না? সেই অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি মৃন্ময় চন্দ।   বিশদ

27th  June, 2021
জীবনের হার না
মানা জয়গান

মানসিক কাঠিন্য। হার-না-মানা স্পিরিট। নিজের উপর অটুট আস্থা। প্রবল টেনশনকে উড়িয়ে জয় ছিনিয়ে আনা। লর্ডসের বাইশ গজে ডান হাতে ব্যাট উঁচিয়ে ধরা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি সতীর্থদের কাছে এটাই। বিশদ

20th  June, 2021
লর্ডসে ইতিহাস ‘সব কিছু
তো এখান থেকেই শুরু’

১৯৯৬ সালের ঠিক আজকের দিনে লর্ডস স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছিল ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ। সেই টেস্ট ম্যাচেই শতরান করে ঐতিহাসিক অভিষেক হয়েছিল এক বাঙালি তরুণের। যাঁর হাত ধরে পরবর্তীকালে বদলে যায় ভারতীয় ক্রিকেটের গতিধারা— তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ২৫ বছর পর ফের একবার সেই ঐতিহাসিকক্ষণটি ফিরে দেখা। বিশদ

20th  June, 2021
অধিকারের শতবর্ষ

গ্রামের পথ। এক মহিলা দুপুর রোদে ছাতা নিয়ে চলেছেন। হঠাৎ সামনে চলে আসে এক ষণ্ডামার্কা লোক। সে মহিলাকে এগতে বাধা দেয়। মহিলা তাও এগতে চান। 
বিশদ

13th  June, 2021
বাঙালির গোয়েন্দাগিরি
সুখেন বিশ্বাস

বাঙালিদের কাছে ‘গোয়েন্দা’ শব্দটি অতি পরিচিত। সেই ছোটবেলা থেকেই মা-বাবার কাছ থেকে আমরা শুনে আসছি শব্দটি। হারানো জিনিস ফিরে পাওয়া, খুন-ডাকাতি বা যে কোনও রহস্য উন্মোচনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে ‘গোয়েন্দা’ শব্দটি। ছোটবেলায় চোর-পুলিস খেলেনি এইরকম শিশু-কিশোর খুব কমই আছে বাঙালি সমাজে। বিশদ

06th  June, 2021
একনজরে
দেশজুড়ে সরকারি সংস্থা বিক্রির কড়া সমালোচনা চলছে। তবু মোদি সরকার অনড়। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই সরকারের উপস্থিতি যে কমিয়ে আনা হবে, সরাসরি একথা জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বুধবার তিনি বলেছেন, দুটি ভাগে সরকারি সংস্থাকে বিভাজিত করা হচ্ছে। ...

একই বিষয় নিয়ে দুটি মামলা। প্রথমটির উল্লেখ না করেই দ্বিতীয়টি দায়ের করা হয়েছে। এমন অভিযোগে বাঁকুড়ার মেজিয়া এলাকা থেকে বেআইনি কয়লা তোলার দ্বিতীয় মামলাটি বুধবার খারিজ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক। ...

‘তালিবানের সেবায় পাকিস্তান নিজেকে নিয়োজিত করেছে। তালিবদের কখনই চাপের মুখে পড়তে হয়নি। পাকিস্তানকে ওরা বেস হিসেবে ব্যবহার করেছে। নির্দিষ্ট কোনও এলাকা নয়, গোটা পাকিস্তানই তাদের সাহায্য করতে উঠেপড়ে লেগেছিল।’ ...

দুয়ারের সরকারের ক্যাম্পে ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে আছেন মহিলারা। অন্যান্য লাইনে হুড়োহুড়ি থাকলেও শান্ত হয়েই প্রতীক্ষায় মহিলারা। অধিকাংশের মুখেই চওড়া হাসি। কোনও তাড়া নেই তাঁদের। কারণ ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৭২৩ - অণুবীক্ষণ যন্ত্রের আবিষ্কারক ওলন্দাজ বিজ্ঞানী আন্তেনি ভান লিউভেনহুকের মৃত্যু
১৮৬৯ - রহস্য কাহিনীকার ও সম্পাদক দীনেন্দ্র কুমার রায়ের জন্ম
১৯১০: নোবেল জয়ী সমাজসেবী মাদার টেরিজার জন্ম
১৯২০ - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়
১৯২০: অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম
১৯২৭ - ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কোম্পানি কলকাতায় প্রথম বেতার সম্প্রচার শুরু করে
১৯৩৪: কবি ও গীতিকার অতুলপ্রসাদ সেনের মৃত্যু
১৯৪৩ - আজাদ হিন্দ ফৌজ আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়
১৯৫৫ - সত্যজিত্ রায়ের চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালী’র মুক্তি লাভ
১৯৫৬: রাজনীতিক মানেকা গান্ধীর জন্ম
১৯৬৮: চিত্র পরিচালক মধুর ভাণ্ডারকরের জন্ম 
২০০৩ - লেখক ও ঔপন্যাসিক বিমল করের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.৩৭ টাকা ৭৫.০৮ টাকা
পাউন্ড ১০০.১১ টাকা ১০৩.৫৭ টাকা
ইউরো ৮৫.৫৯ টাকা ৮৮.৭১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮, ২০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৭৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬, ৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৪, ০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৪, ১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৯ ভাদ্র ১৪২৮, বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১। চতুর্থী ২৯/৪৪ অপরাহ্ন ৫/১৪। রেবতী নক্ষত্র ৪২/৫১ রাত্রি ১০/২৯। সূর্যোদয় ৫/২০/৫২, সূর্যাস্ত ৫/৫৬/১২। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৫৩ গতে ৩/৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৭/০ মধ্যে পুনঃ ১০/২৩ গতে ১২/৫৪ মধ্যে। বারবেলা ২/৪৭ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৩৮ গতে ১/৪ মধ্যে।
৯ ভাদ্র ১৪২৮, বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১। চতুর্থী অপরাহ্ন ৫/৩৪। রেবতী নক্ষত্র রাত্রি ১১/৫৫। সূর্যোদয় ৫/২০, সূর্যাস্ত ৬/০। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪৩ গতে ৩/৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৭/৩ মধ্যে ও ১০/১৯ গতে ১২/৪৪ মধ্যে। কালবেলা ২/৫০ গতে ৬/০ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৪০ গতে ১/৫ মধ্যে।
১৭ মহরম।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
তৃতীয় টেস্ট: প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড ২৯৮/৩ (চা বিরতি) 

08:49:20 PM

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ

08:44:00 PM

কাবুল বিস্ফোরণে ১৩ জনের মৃত্যু, রয়েছে একাধিক শিশুও 

08:21:08 PM

করোনা: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত ৭১৭, মৃত ৯ 

08:03:25 PM

কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণ, হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি 

07:54:59 PM

কমতে পারে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের ব্যবধান: সূত্র 

06:01:10 PM