পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
খাওয়া নিয়ে কিন্তু মহাপ্রভু জগন্নাথদেবের কোনও বাছবিচার নেই। তাঁকে যেমন অর্ঘ্য নিবেদন করা হয় তিনি তাই খেয়েই সন্তুষ্ট থাকেন। দেশে বিদেশে প্রভুর প্রসাদের ধরন ভিন্ন। বিদেশে যেমন রিসোতো রাইস, পিৎজা, পাস্তা টার্ট, মুজ, পেস্ট্রি বা চিজকেক দিয়ে প্রসাদ দেওয়া হয় তাঁর শ্রীচরণে। দেশের ভোগের মেনু আবার একেবারেই আলাদা। সেখানে ছাপ্পান্নভোগ থাকে মহাপ্রভুর প্রসাদে। নানাবিধ ছানা ও ক্ষীরের মিষ্টি, পায়েস ইত্যাদি নিবেদন করা হয় তাঁকে। এছাড়া নোনতার মধ্যে শুকনো প্রসাদ যেমন থাকে তেমনই পোলাও, খিচুড়ি, ডাল, ছানার ডালনা, কোপ্তা এইসবও দেওয়া হয় তাঁকে। দিনের বিভিন্ন সময়ে প্রভুর খাবারের ধরন ভিন্ন হয়ে যায়। প্রাতরাশ থেকে নৈশভোজ সবের পদই আলদা। আজ তাঁর প্রিয় দু’টি পদের রেসিপি জানালেন ইস্কন মন্দিরের সন্ন্যাসী রাধারমণ দাস।
রসবলি
মিষ্টি ছাড়া জগন্নাথের পুজো অসম্পূর্ণ। প্রভুর প্রিয় মিষ্টি থাকলে তো কথাই নেই। রসবলি এমনই এক মিষ্টি যা প্রভুর ছাপ্পান্ন ভোগের অন্যতম। এতে দারচিনির ফ্লেভার অন্য মাত্রা যোগ করে।
উপকরণ: প্যাটিগুলোর জন্য: ছানা ২০০ গ্রাম (দুধ থেকে বাড়িতেই কাটিয়ে নিতে পারেন। নাহলে মিষ্টির দোকানে অর্ডার দিয়ে আনাবেন), ময়দা ১ চা চামচ, সুজি ১ চা চামচ, দারচিনি গুঁড়ো চা চামচ, সাদা তেল প্রয়োজন মতো। দুধ তৈরি করার জন্য: ফুল ক্রিম মিল্ক ৫০০ মিলি, কনডেন্সড মিল্ক ৩-৪ টেবিল চামচ, পেস্তা ১ টেবিল চামচ, জাফরান ১ চিমটে।
পদ্ধতি: প্যাটিগুলো বানানোর জন্য ছানা চটকে মেখে নিন। তারপর তা সঙ্গে ময়দা, সুজি ও দারচিনি মিশিয়ে মেখে দিন। খুব ভালো করে মাখবেন। এবার তার থেকে ন’টা (প্রভুকে বিজোড় সংখ্যায় প্রসাদ দেওয়াই রীতি) ছোট প্যাটি তৈরি করুন। কড়াইতে সাদা তেল গরম করে এই প্যাটিগুলো আস্তে আস্তে ভেজে তুলুন। বেশ সোনালি করে ভাজবেন। দুধ ফুটিয়ে নিন। ফোটাতে ফোটাতে অর্ধেক করে নিন। তারপর তাতে কনডেন্সড মিল্ক মিশিয়ে ফোটাতে থাকুন। মিনিট দুয়েক ফুটিয়ে নামিয়ে নেবেন। দুধ ঘন হলে তাতে ছানার প্যাটিগুলো দিয়ে দিন। ঠান্ডা করে নিয়ে ঢাকা দিয়ে ফ্রিজে রাখুন। পরিবেশন করার সময় পেস্তা গুঁড়ো ও জাফরান ছড়িয়ে প্রভুকে নিবেদন করুন।
ডালমা
এই পদটি ডালের একটি ধরন যা সব্জি দিয়ে রান্না করা হয়। ওড়িশার জগন্নাথ মন্দিরেও এই পদটি প্রভুকে নিবেদন করার রীতি রয়েছে। কথিত আছে এই পদটি নাকি প্রভুর অতি প্রিয় পদগুলোর মধ্যে অন্যতম। এতই প্রিয় যে সব পদের রাজা বললেও অতিরঞ্জন হবে না।
উপকরণ: মুগ ডাল কাপ, বিউলির ডাল কাপ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, গোটা জিরে, ধনে, দারচিনি ও লবঙ্গ শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়ো করা ১ চা চামচ, শুকনো লঙ্কা ২টো, ঘি ১ টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, জল প্রয়োজন অনুযায়ী, গোলমরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, নারকেল কোরা ১ টেবিল চামচ, গোটা জিরে চা চামচ, হিং ১ চিমটে, সর্ষে চা চামচ, কুমড়ো মাঝারি টুকরো করে কাটা কাপ, কাঁচকলা টুকরো করে কাটা ১টা, বেগুন ছোট টুকরো করে কাটা ১ কাপ, কচু ছোট টুকরো করে কাটা ১ কাপ, রাঙা আলু টুকরো করে কাটা ১ কাপ, কাঁচা পেঁপে কুচি করে কাটা ১ কাপ, আদা কুচি ১ চা চামচ।
পদ্ধতি: সব সব্জি কেটে ধুয়ে রাখুন। একটা বাটিতে দু’রকম ডাল নিয়ে তা বারবার জলে ধুয়ে নিন। তারপর জলে কুড়ি মিনিট ভিজিয়ে রেখে দিন। এবার প্রেশার কুকারে জল সহ ডাল দিন। তারপর সব সব্জি দিন, হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, নুন দিয়ে প্রেশার কুকারের ঢাকা বন্ধ করে দুটো সিটি তুলুন। এরপর আঁচ বন্ধ করে ওই অবস্থায় রেখে দিন। স্টিম পড়ে গেলে ঢাকা খুলে রাখুন। এবার আবারও প্রেশার কুকার আঁচে বসিয়ে শুকনো খোলায় ভাজা মশলার গুঁড়ো তাতে মেশান। প্রয়োজনে অল্প নুন দিন। হিং, আদা কুচি শুকনো লঙ্কা, ঘি দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে দিন। সবটা একসঙ্গে ফুটে উঠলে ও সব্জি সব ডালের সঙ্গে মিশে গেলে বুঝবেন ডালমা তৈরি। এবার পরিবেশন করার সময় একটা মাটির পাত্রে ডালমা ঢালুন। উপর থেকে ঘি ও অল্প নারকেল কোরা ছড়িয়ে দিন। প্রসাদ হিসেবে তা গ্রহণ করুন।