বৈদিক ভিলেজের রেস্তরাঁ ভূমি থেকে দু’টি জমকালো রান্নার রেসিপি দিলেন এগজিকিউটিভ শেফ।

দুর্গাপুজো কেটে গেলেও উৎসবের মরশুম এখনও কাটেনি। আর উৎসব মানেই অন্তহীন ভুরিভোজ। তার কিছু গতানুগতিক স্বাদে, কিছু বা একেবারেই ভিন্ন স্বাদে তৈরি। উৎসবের সময় এমনই চেনা-অচেনা রান্নার রেসিপির আয়োজন পাবেন বৈদিক ভিলেজের ভূমি রেস্তরাঁয়। একটু জমকালো বাঙালি খাবার যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের এই রান্না বিশেষ পছন্দ হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈদিক ভিলেজে উপস্থিত থেকে এসব স্বাদ না নিতে পারলেও কোনও অসুবিধা নেই। এখন বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন এমন রান্না। রেস্তরাঁর রেসিপি হাতের কাছেই মজুত আছে যে! হ্যাঁ, ভূমি রেস্তরাঁ থেকে সুস্বাদু দু’টি রান্নার উপকরণ ও পদ্ধতি থাকছে আজকের অন্দরমহলের পাঠকদের জন্য।
ইলিশের পুর ভরা কাঁকরোল
উপকরণ: কাঁকরোল ৫০০ গ্রাম, কাঁটা বাদ দেওয়া ইলিশ মাছের ফিলে ৭৫০ গ্রাম, কুচিয়ে নেওয়া রসুন ১ কোয়া, কাঁচালঙ্কা বাটা ২ চা চামচ, আলু সেদ্ধ ২ টো, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, সর্ষের তেল প্রয়োজন মতো, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, জিরে গুঁড়ো ২ চা চামচ, কালো জিরে সামান্য, নুন ও চিনি স্বাদ মতো, ধনেপাতা ২ টেবিল চামচ, চালের গুঁড়ো ও ময়দা আন্দাজ মতো।
পদ্ধতি: কাঁকরোলের গা থেকে রোঁয়া ফেলে তা লম্বালম্বি দু’টুকরো করে কেটে নিন। এবার এই কাঁকরোল নুন সহ গরম জলে দশ মিনিট ফুটিয়ে নিন। ইলিশ মাছের ফিলেগুলো ঠান্ডা জলে চুবিয়ে রাখুন। কাঁকরোল মোটামুটি সেদ্ধ হলে জল ঝরিয়ে শুকিয়ে নিন। তারপর তার ভেতর থেকে চামচের সাহায্যে নরম পাল্প বার করে নিন। কাঁকরোলের খোলাটা যেন অটুট থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ইতিমধ্যে কড়াইতে তেল গরম করে নিন। রসুন ভেজে কালো জিরে ফোড়ন দিন। তাতে পেঁয়াজ ভেজে নিয়ে ইলিশ মাছের ফিলে হাতের সাহায্যে ভেঙে দিয়ে দিন। এরপর বাকি সব মশলা, নুন ও মিষ্টি দিয়ে নাড়তে থাকুন। সব শেষে আলু ও কাঁকরোলের পাল্প দিয়ে নেড়ে নিন। পুর বেশ গা মাখা করে রান্না করুন। নামানোর আগে ধনেপাতা কুচি দিয়ে নেড়ে নিন। ইলিশ মাছের পুর রেডি। এবার তা আঁচ থেকে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে নিন। তারপর কাঁকরোলের খোলায় ভরুন। ইতিমধ্যে চালের গুঁড়ো, ময়দা, হলুদ গুঁড়ো আর নুন জলে গুলে একটা ঘন ব্যাটার তৈরি করুন। পুর ভরা কাঁকরোল সেই ব্যাটারে ডুবিয়ে ছাঁকা তেলে সোনালি করে ভেজে নিন। সাদা ভাতের সঙ্গে প্রথম পাতেই ইলিশের পুর ভরা কাঁকরোল পরিবেশন করুন।
কষা মাংস
উপকরণ: কারি কাট মাংস ১ কেজি, স্লাইস করে কাটা পেঁয়াজ ৩০০ গ্রাম, টম্যাটো কুচি ১৫০ গ্রাম, লবঙ্গ ৬ টা, ছোট এলাচ ৬ টা, দারচিনি ২ ইঞ্চি কাঠি, তেজপাতা ২ টো, শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো ২ চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, জিরে গুঁড়ো ১ চা চামচ, চেরা কাঁচালঙ্কা ২ টো, নুন স্বাদ মতো, সর্ষের তেল ১২০ মিলি, আদা-রসুন বাটা ৩০ গ্রাম।
পদ্ধতি: মাংস গরম জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। তারপর জল ঝরিয়ে শুকনো করে রেখে দিন। একটা তলা মোটা হাঁড়িতে সর্ষের তেল গরম করুন। তাতে গোটা মশলা ও তেজপাতা ফোড়ন দিন। মশলার সুগন্ধ বেরলে পেঁয়াজ দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজ নরম হলে আদা-রসুন বাটা দিন। মশলা কষতে কষতেই টম্যাটো কুচি দিন। এরপর একে একে গুঁড়ো মশলা দিয়ে কষিয়ে নিন। মশলা কষতে কষতে যখন তা থেকে তেল ছেড়ে আসবে তখন মাংস দিয়ে নেড়ে মেশান। একদম শেষে চেরা কাঁচা লঙ্কা দিন। স্বাদ মতো নুন দিন। মাংসের সঙ্গে সব উপকরণ মিশিয়ে নিয়ে পরিমাণ মতো উষ্ণ গরম জল দিন। এবার হাঁড়ির মুখ বন্ধ করুন। সামান্য আটা মেখে তা হাঁড়ির মুখে লাগিয়ে ঢাকা সিল করে দিন। এবার ঢিমে আঁচে মাংস আধ ঘণ্টা রান্না করুন। আধ ঘণ্টা পর আঁচ বন্ধ করে মাংস গ্যাসে মিনিট দশেক বসিয়ে রেখে দিন। তারপর ঢাকা খুলে দেখুন মাংস সেদ্ধ হয়েছে কি না। সেদ্ধ হলে এবং ঝোল গা মাখা হলে মাংস নামিয়ে নিন। গরম ভাত, লুচি বা পরোটা সহযোগে পরিবেশন করুন কষা মাংস।