আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
কাজের ব্যস্ততা, ছোটাছুটির মধ্যে শ্যাম্পু করার ঠিকমতো সময় পান না অনেকেই। তাই অলটারনেট ডে-তে শ্যাম্পু করার সময়টুকুও যখন মেলে না, তখন আফসোস হয় ভীষণ। চুল পরিষ্কার না হওয়ায় তেলচিটে ভাব এসে যায়। স্ট্রেট চুল থাকলে তা আরও নেতিয়ে পড়ে। কোঁকড়া চুলে অতটা না হলেও স্ক্যাল্পে সমস্যা হয়। আমাদের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ঘাম একটা বড় সমস্যা। ঘামের জন্যই অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় চুল ও স্ক্যাল্প। তাই এত ব্যস্ততার মধ্যে রোজ যখন চুল ভিজিয়ে শ্যাম্পু করার সময় পাওয়া যাচ্ছে না, কী করবেন ভেবে অস্থির হচ্ছেন তো? একটা সমাধান কিন্তু হাতের কাছেই আছে। অনেকে হয়তো জানেন। তবে অনেকেই আবার ওয়াকিবহাল নন এই উপায়টির সঙ্গে।
যখন খুশি যেখানে খুশি চুলের যত্নে ম্যাজিকের মতো কাজ করতে পারে ড্রাই শ্যাম্পু। হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন, শুকনো শ্যাম্পু! শ্যাম্পু আবার শুকনো হয় নাকি? পড়েই মনে এই ভাবনাটা আসছে তো? কিন্তু জেনে রাখুন, জিনিসটির নাম এটাই। নানা চেনা কোম্পানির ড্রাই শ্যাম্পু বাজারে রয়েছে। এই শ্যাম্পু আদতে এমন একটি প্রোডাক্ট যেটি চুল থেকে তেল, চিটচিটে ভাব এবং ময়লা দূর করে নিমেষে। ভেজা চুলে শ্যাম্পু করা, কন্ডিশনিং করার মতো অত সময় যখন হাতে নেই, তখন ভরসা হতে পারে ড্রাই শ্যাম্পু। বডি স্প্রে-র মতো এটি নিজস্ব কোম্পানির কন্টেনারে ভরা থাকে। কিছু ড্রাই শ্যাম্পু ফোম এবং পাউডার বেসড-ও হয়। ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করার পরে চুল আর ধুতে হয় না। হাতে কন্টেনারটি নিয়ে আট-দশ ইঞ্চি দূর থেকে মাথার ক্রাউনে সরাসরি অল্প পরিমাণে স্প্রে করতে পারেন এটি। তাছাড়া চুলের যেখানে যেখানে চিটচিটে ভাব রয়েছে, সেখানেও আলাদা করে লাগাতে পারেন এটি। ঘাড়ের দিকে ও কানের ঠিক ওপরেও স্প্রে করে নিতে পারেন। তারপর দু’-চার মিনিট ওভাবেই রাখুন। এবার আঙুল দিয়ে হেয়ার মাসাজ করে নিন। অনেকে ওয়ার্কআউট করার পরে মাথা ঘেমে যায় বলেও এটি ব্যবহার করেন।
আমাদের স্ক্যাল্পে হেয়ার ফলিকল থাকে। এই ফলিকল থেকে চুল তৈরি যেমন হয়, তেমনই তৈরি হয় সেবাম অর্থাৎ প্রাকৃতিক তেল যেটা আমাদের স্ক্যাল্প ও চুল নরম রাখে। কিন্তু পরিশ্রমের ফলে যদি আমাদের ঘাম বেশি হয়, তখন স্ক্যাল্পের তেল আর ঘাম ক্রমশ জমা হতে থাকে চুলের মধ্যে। ফলিকল থেকে তৈরি তেল যেমন উপকারী, তেমন সেটার সঙ্গে ঘাম মিশে তৈলাক্ত ভাব বেড়ে গেলেও বিপদ। তখনই দরকার পড়ে ড্রাই শ্যাম্পুর।
ড্রাই শ্যাম্পুতে অ্যালকোহল বা স্টার্চ বেসড উপাদান থাকে যা চুলের তেল ও ঘাম শুষে নেয়। অনেক ড্রাই শ্যাম্পুতে সুন্দর গন্ধও থাকে যাতে চুলের সুবাস হয় মনমাতানো। তবে মনে রাখবেন, এই ধরনের শ্যাম্পু চুলের টেক্সচার অনুযায়ী কাজ করে। এটা কিন্তু আপনার চুলের তৈলাক্তভাব কমাতে উপযোগী। তা বলে এটাকেই চুল পরিষ্কারের একমাত্র উপায় ভাববেন না। শ্যাম্পু করার সময় না পেলে মাঝেমধ্যে এটা ব্যবহার করে নিতে পারেন। তারপর শ্যাম্পু করার দিন নিয়ম মেনে চুল ভিজিয়ে সাধারণ শ্যাম্পু-কন্ডিশনার দিয়ে চুলের যত্ন করুন। ড্রাই শ্যাম্পু বেশি ব্যবহার করলে স্ক্যাল্প অতিরিক্ত শুকনো ও খসখসে হয়ে যেতে পারে। সপ্তাহে এক-দু’বার ব্যবহার করলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম। দু’দিনের বেশি ব্যবহার করলে জ্বালা করতে পারে স্ক্যাল্প। নন অ্যালকোহল পাউডার বেসড ড্রাই শ্যাম্পু তুলনায় কম ক্ষতিকর। এসব কথা মাথায় রেখেই ব্যবহার করবেন এই শ্যাম্পু। সাধারণ শ্যাম্পুর তুলনায় এই শ্যাম্পুর দাম একটু বেশি। পরিচিত অনেক কোম্পানিরই ড্রাই শ্যাম্পু বাজারে বা অনলাইনে পাওয়া যায়। চুলে যাদের তেলতেল ভাব এমনিই বেশি, তাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী এই শ্যাম্পু। ন্যাচারাল হেয়ারের জন্য হেয়ারটাইপ দেখে তবে এই শ্যাম্পু বেছে নিন। কার্লি চুলেও লাগাতে পারেন এই শ্যাম্পু। তবে কোঁকড়া চুলের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন, ড্রাই শ্যাম্পু লাগিয়ে মাসাজ করেই সঙ্গে সঙ্গে চুল আঁচড়াতে যাবেন না। তাহলে চুল আরও রাফ দেখাবে। কিছু সময় পরে চুল আঁচড়ে নেবেন।