আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
খুবই সাধারণ কিছু জিনিস জোগাড় করে রাখলে বাড়িতে বসেই নখের যত্ন আপনার হাতের মুঠোয়। প্রথমে একটা বোল (বাটি) রাখুন। কটন বল বা এমনি তুলো হাতের কাছে রেখে দিন। এ ছাড়া লাগবে নেল ক্লিপার, নেল ফাইল, কিউটিকল স্টিক ও কিউটিকল অয়েল। প্রথমে নিজের দু’হাতের নখ সমান ও সুন্দর করে কেটে ফাইল করে নিন। আপনার যতটা ইচ্ছে নখের দৈর্ঘ্য রাখার, ততটা রেখেই শেপ রেখে কাটতে পারেন। তারপর করতে হবে ফাইলিং।
ফাইলিং কিন্তু সকলেই মনে করেন খুব সহজ একটা ব্যাপার। বিউটি এক্সপার্ট শ্যারন রডরিগেজ বলছেন, এই কাজটি একটু খেয়াল রেখে করতে হবে। ওপর থেকে নীচে ঘষে ঘষে ফাইলিং কখনওই করবেন না। তাতে নখের ক্ষতি হবে। ভেঙেও যেতে পারে। বরং একবার ডানদিক থেকে করতে করতে মাঝখানে আসুন এবং আবার বাঁদিক থেকে করতে করতে মাঝখানে আসুন। এভাবে ফাইলিং করলে নখের শেপও থাকবে, কোনও ক্ষতিও হবে না। নখ কাটা হয়ে গেলে এবার সামগ্রিকভাবে নজর দিতে হবে হাতের ওপর। দেখবেন, স্যালঁ-র মতো ম্যানিকিওর করতে পারেন আপনিও।
যে বোলটি নিয়েছিলেন, তাতে ঈষদুষ্ণ দুধ নিন। দুধ ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে, পাশাপাশি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে। দুধ না পেলে ঈষদুষ্ণ জল নিন, তাতে মাইল্ড সোপ মিশিয়ে নিন। তার সঙ্গে দু’-তিন ফোটা আমন্ড অয়েল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। সোপ ক্লিয়ার করবে এবং অয়েল আর্দ্রতা বজায় রাখবে। হাত দুটো মিনিট পাঁচেক সেই দুধে বা জলে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর হাত ধুয়ে শুকিয়ে নিন। অনেক স্যালঁয় ম্যানিকিওরের সময় কিউটিকল তুলে দেয়। কিন্তু বাড়িতে নিজে নিজে কিউটিকল তুলতে বারণ করছেন শ্যারন। কারণ নেল বেড আর নেলের মধ্যে থেকে কিউটিকল অনেকটা ঢাকনার মতো কাজ করে। সেটা নখকে রক্ষা করে। যে কোনও ইনফেকশন থেকেও বাঁচায়। তবে কিউটিকল তোলায় কেউ যদি অভ্যস্ত হন, তাহলে স্টেরিলাইজড কিউটিকল কাটার দিয়ে তা তুলতে পারেন, বললেন শ্যারন। অভ্যস্ত হলে কোনও ব্যথা লাগবে না। নখ লাগোয়া অতিরিক্ত সেই চামড়া তাঁরা সরিয়ে নিতে পারবেন।
তারপর অলিভ অয়েল বা আমন্ড অয়েল অথবা ক্রিম নেল বেডে লাগিয়ে নিন। তারপর পাতলা উডেন স্টিকের আগায় তুলো লাগিয়ে চামড়ার ওপর সেটা ভালো করে ছড়িয়ে দিন। একই পদ্ধতিতে অন্য হাতের যত্নও করুন। সবটা হয়ে গেলে দু’হাত ভালো করে ধুয়ে ব্রাশ দিয়ে নখ আলাদা করে পরিষ্কার করে নিন। তারপর হাত শুকিয়ে ময়েশ্চারাইজার বা হ্যান্ড ক্রিম লাগিয়ে নিন। সব শেষে একটু মাসাজ করে নিন নিজেই। কেউ আরও যত্ন চাইলে মুলতানি মাটি, চন্দনের গুঁড়ো এবং মধু মিশিয়ে হাতের ওপর লাগাতে পারেন। ইদানীং, বিশেষ করে লকডাউন পরবর্তী সময়ে হাতে সাবানের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় একটু বেশি যত্ন প্রয়োজন। সেদিক থেকে এই হাতের প্যাকের জুড়ি নেই। এই প্যাক লাগিয়ে মিনিট দশ রেখে হাত ধুয়ে ফেলুন। তারপর ময়েশ্চারাইজার বা হ্যান্ড ক্রিম লাগিয়ে মাসাজ করে নিন।
নখ সাফসুতরো করে তাতে নেলপলিশ লাগাতে পারেন পছন্দ মতো। কিন্তু একটা কালার লাগিয়ে কিছুদিন পর সেটার পরিবর্তে অন্য কালার লাগাতে মন চাইবে। তখন একটা জিনিস খেয়াল রাখুন, পুরনো নেলপলিশ তোলার জন্য অয়েল বেসড, অ্যাসিটোন ফ্রি রিমুভার লাগাবেন। যে কোনও জায়গায় এখন এমন রিমুভার পেয়ে যাবেন। অনেকটা তেলে ভেজানো টিস্যু পেপারের মতো দেখতে এগুলো। এগুলো দিয়ে নেলপলিশ তুলতে সময় লাগে ঠিকই, কিন্তু নখের চারপাশ এতে শুষ্ক হয়ে যাবে না। তাই এই ধরনের নেল রিমুভার ব্যবহার করাই ভালো।
নখ ভাঙার ধাত থাকলে জোর বাড়াতে প্রতি রাতে নখে খানিকটা তেল বা জিলেটিন ঈষদুষ্ণ জলে মিশিয়ে আঙুল ভিজিয়ে রাখুন। এতে নখের জোর বাড়ে।
আর বাড়িতে বসে নেল আর্ট করার ইচ্ছে হলে? তারও সহজ উপায় বাতলে দিলেন শ্যারন। একটা সাদা কাগজ থেকে চারটে সরু ফালি কেটে নিন। নখের একটা অংশ ফাঁকা রেখে কাগজের এক একটা ফালি স্ট্র্যাপের মতো লাগিয়ে নিন। বুড়ো আঙুল বাদ রাখুন। নখের ফাঁকা দিকে এঁকে শুকিয়ে নিন। তারপর কাগজের ফালি নখ থেকে তুলে দিন। এরপর বুড়ো আঙুল নিজের মতো সাজান। ব্যস নেল আর্ট রেডি।
ম্যানিকিওরের সময় না পেলে কয়েকটা নিয়ম মেনে চলুন: নখ দাঁতে কাটবেন না। নখ পরিষ্কার ও শুকনো রাখবেন। নিয়মিত কাটবেন। নেলপলিশ কাঠি বা ব্লেড দিয়ে তুলবেন না। বেশি জল ঘাঁটাঘাঁটির কাজ থাকলে গ্লাভস পরা অভ্যেস করুন।