মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
ছবির গল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিচালক অর্জুন দত্ত জানালেন, ‘ছবিতে বন্ধুত্ব, স্বামী-স্ত্রী, মা ও সন্তান ইত্যাদি সম্পর্কের গল্প থাকলেও মূলত মা ও ছেলের সূক্ষ্ম সম্পর্ক নিয়ে ছবির কাহিনী আবর্তিত। ইন্দ্র দিল্লিতে এমএনসিতে চাকরি করে। সে অদিতির সঙ্গে লিভ ইন করে যা সকলে জানে। পাঁচ বছর আগেই ইন্দ্রর বাবা কৌশিক মারা গিয়েছেন। ইন্দ্রর মা সাথী কলকাতায় একা থাকেন। পাঁচ বছর পর ইন্দ্র কলকাতায় মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসছে। তার সঙ্গে মায়ের একটা দূরত্ব, সম্পর্কের একটা টানাপোড়েন আছে। সেই দূরত্ব আদৌ মিটবে কি না তা ছবি দেখলে বোঝা যাবে। সব সম্পর্কের মধ্যেই অনেক না বলা কথা থেকে যায়। তাই ছবির নাম অব্যক্ত,।’ ছবিতে সাথীকে দুটো সময়ে দেখা যাবে। প্রথম দিকে সাথীর বয়স ত্রিশ ঊর্ধ্ব। পরে পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব বয়সে অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় সাথী রূপে পর্দায় ধরা দিয়েছেন।
ছবির অন্যান্য শিল্পীরা হলেন, অনুভব কাঞ্জিলাল (ইন্দ্র), খেয়া চট্টোপাধ্যায় (অদিতি), দেবযানী চট্টোপাধ্যায় (ইন্দ্রর মামী), লিলি চক্রবর্তী (ইন্দ্রর দিদা), পিংকি বন্দ্যোপাধ্যায় (ছন্দ), সামন্তক দ্যুতি মৈত্র (ইন্দ্রর ছেলেবেলা)। এছাড়া আদিল হোসেনকে একজন ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে ছবিতে দেখা যাবে। নাম রুদ্র। ইন্দ্রর বাবা কৌশিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অনিবার্য ঘোষ।
সাথীরূপী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের পোশাক পরিকল্পনার দায়িত্বে পৌলমী গুপ্ত। পৌলমী বললেন, ‘পরিচালক আমাকে বলেন যে, কখনও যেন মনে না হয় দোকান থেকে পোশাক কিনে সাথীকে পরানো হয়েছে। তাই সাথীর শাড়ি বেশিরভাগ আমার মা, ঠাকুরমা এবং মেকআপ আর্টিস্ট অনিরুদ্ধ চাকলাদের মায়ের ওয়ার্ডরোব থেকে সংগ্রহ করেছি। এরপর শাড়িগুলোকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ওয়েদার করা হয়েছে। যাতে দেখলে মনে হয়, একবার অন্তত ব্যবহার করা হয়েছে। সাথী যে খুব ফ্যাশনেবল তা কিন্তু নয়। তবে নিজেকে সাজিয়ে যত্ন করে রাখে। তাই সাথীকে যেন একইসঙ্গে চিরাচরিত উত্তর কলকাতার গৃহবধূ এবং সেই সঙ্গে এলিগ্যান্ট দেখতে লাগে সেটা মাথায় রাখতে হয়েছে। ত্রিশ বছর আগের সাথীকে ঘরের দৃশ্যে বেশিরভাগ তাঁতের শাড়িতে দেখা যাবে। ধনেখালি, সুতোর বর্ডার দেওয়া ফুলিয়ার তাঁতের শাড়িতে, কখনও আবার আঁশ বর্ডার শাড়ি ব্যবহৃত হয়েছে। হাতে শাখা, পলার সঙ্গে সরু সোনার বালা, বাঁ হাতে নোয়া, গলায় সরু চেন, কানে ছোট দুল পরতে দেখা যাবে। এই সোনার গয়নাগুলো সবটাই আমার নিজস্ব। ঘরের দৃশ্যে হাত খোঁপা করে সিঁথিতে সিঁদুর এবং কপালে সিঁদুরের টিপ পরবে। বিয়ের একটি দৃশ্যে রানি কালারের বেনারসিতে অর্পিতাকে দেখা যাবে। গলায় সোনার নেকলেস, মফচেন, কানে ছোট কানবালা। খোঁপায় জুঁই ফুলের মালা, সিঁথিতে এবং কপালে সিঁদুরের টিপে তাঁকে দেখা যাবে।’
এরপর পঞ্চাশ বছরের ঊর্ধ্বে তাঁকে বিধবার বেশে দেখা যাবে। তাই শাড়ির রং হয়েছে হোয়াইট, অফ হোয়াইট ইত্যাদি। যেহেতু সাথীর বয়স হয়েছে তাই তাঁকে ইস্ত্রি ছাড়া নরম শাড়ি পরানো হয়েছে। সরু বর্ডারের তাঁতের শাড়ি বেশি পরলেও একটা-দুটো দৃশ্যে প্যাস্টেল শেডের ছোট কুটির ছাপা শাড়িও সাথী পরেছেন। ব্লাউজের স্লিভ একটু ঢিলে, কোঁচকানো রাখা হয়েছে। এই সময়কালে খুব ছোট দুল, দু’হাতে একটা করে সরু চুড়ি, গলায় খুব সরু চেন পরেছেন সাথী। এছাড়া, সাথীর হাতের আঙুলে অল্প বয়স থেকে যে ধরনের মুক্তো, পলার আংটি রয়েছে সেটিও এই সময়ে দেখা যাবে। এছাড়া ছোট একটি দৃশ্যে হলুদ, লাল রঙের পচমপল্লি শাড়িতে দেখা যাবে। যা ইন্দ্রর পছন্দের। এটি একটি মনতাজ দৃশ্য। অর্পিতার লুকসের মেন্টর মেকআপ আর্টিস্ট অনিরুদ্ধ চাকলাদার।
ইন্দ্র অর্থাৎ অনুভব কাঞ্জীলালের পোশাক সম্পর্কে গৌরব বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘ইন্দ্র দিল্লিতে থাকে। তাই স্মার্ট ক্যাজুয়াল আউটফিটে ইন্দ্রকে রেখেছি। প্লেন ডেনিম ও চিনোসের সঙ্গে কনট্রাস্টে একরঙা স্মার্ট টি-শার্টে দেখা যাবে। ন্যারো ফিটেড চিনোসের কালার প্যালেট বেশিরভাগ লাইট ব্লু। জিনসের মধ্যে হালকা ও ডার্ক নেভি-ব্লু রং ইন্দ্রকে পরানো হয়েছে। একটা-দুটো দৃশ্যে ট্যান গ্রিন রঙের চাইনিজ নেকলাইন লিনেনের শার্টে ইন্দ্ররূপী অনুভবকে দেখা যাবে। সঙ্গে কালো রঙের জিনস পরেছেন এবং পায়ে কালো স্নিকার্স রয়েছে। একটা দৃশ্যে খয়েরি ফর্ম্যাল শ্যু’তে তিনি ধরা দেবেন। বাড়িতে লিনেন পাজামার সঙ্গে গোল গলার টি-শার্ট পরেছেন। সূতির টি-শার্টের কালার প্যালেট, ব্রাউন, ব্লু ইত্যাদি। একটা দৃশ্যে তাঁকে বাঁ-হাতে ঘড়িতে দেখা যাবে। মাথার চুল ব্যাক কোম্ব করা, মুখে হালকা দাড়ি আছে।
আদিল হোসেনকে লাইট ও ডার্ক ব্লু জিনসের সঙ্গে খাদি ও কলমকারি প্রিন্টেড শার্টে দেখা যাবে। অনির্বান ঘোষকে পাঞ্জাবি এবং ঘরের দৃশ্যে গোল গলার একটু লম্বা হাতার ওয়েস্টের সঙ্গে হোয়াইট পাজামাতে দেখা যাবে। তিনি গোল্ডেন ফ্রেমের চশমা পরেছেন। দেবযানী চট্টোপাধ্যায়কে পার্টিতে উজ্জ্বল রঙের কটন সিল্কের এবং ঘরের দৃশ্যে প্লেন তাঁতের শাড়িতে দেখা যাবে। খেয়া চট্টোপাধ্যায়কে এলাইন কাটের লং কুর্তি পরানো হয়েছে বলে জানালেন গৌরব।
কাহিনী ও চিত্রনাট্য অর্জুন দত্ত, সংলাপ অর্জুন দত্ত, আশীর্বাদ মৈত্র, ক্যামেরায় সুপ্রতীম ভোল। সম্পাদনা সুজয় দত্ত রায়, সুরকার সৌম্যরীত। গান গেয়েছেন জয়তী চক্রবর্তী, সৌম্যরীত নাগ। প্রযোজনা তৃনা ফিল্মস, রূপ প্রোডাকশন অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট, প্রযোজক তরুণ দাস, অঙ্কিত দাস, সুরেশ তোলানি।