মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
মধ্য মাঘের রাত তখন ঘন হচ্ছে। ঘড়ির কাঁটা পার করেছে ন’টার ঘর। জে ডবলু ম্যারিয়টের পুলসাইড তখন সুবেশ মানুষজনের সমাগমে আলোকময়। আলো-আঁধারির মোহাবেশ পুলসাইড ডেকেও। সকলেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ‘ইউভ’-এর জন্যে। এমন সময় সঞ্চালক কন্যার কণ্ঠে ধ্বনিত হল ‘ইউভ’-এর আগমন বার্তা। জ্বলে উঠল আলো। সুরের ঝংকার ছড়িয়ে পড়ল শীত রাতের বাতাসে।
পাঠক নিশ্চয়ই ভাবছেন ‘ইউভ’ কে? ইউভ কী? সঞ্চালক-কন্যার কথায় অভিনেত্রী নুসরত জাহান ও নিখিল জৈনের আদরের আত্মজা ইউভ। বস্ত্র ব্যবসায়ী নিখিলের ‘রঙ্গোলি’ ব্র্যান্ডে নতুন পালক ‘ইউভ’। ভারতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধনে তৈরি ‘ইউভ’। এই প্রজন্মের নারীদের জন্য এমন একটা ব্র্যান্ড তৈরির স্বপ্ন ছিল নিখিলের। কিন্তু অনুপ্রেরণার অভাব ছিল। নুসরতই প্রেরণাদাত্রী। শুধু প্রেরণা দেওয়াই নয়, ইউভের প্রতিটি কালেকশনের ফ্যাব্রিক বাছাই থেকে ডিজাইন তৈরি করা, এমব্রয়ডারির কারুকাজ থেকে সরোস্কির উজ্জ্বল প্রয়োগ — সবকিছুই হয়েছে নুসরতের হাত ধরে। আসলে নুসরতের মনের গভীরে ডিজাইনিংয়ের নেশা ছিলই। রঙ্গোলির সংস্পর্শে তা আত্মপ্রকাশ করল ‘ইউভ’ হয়ে। ২৫ জানুয়ারি জে ডবলু ম্যারিয়েটের পুলসাইডের এক আলোকোজ্জ্বল ফ্যাশন শো’য়ের মাধ্যমে প্রকাশ পেল ব্র্যান্ডটি। ছিল টলিউডের তারকাদের মেলা। তাঁরা ইউভের পোশাকে মডেল ললনাদের সঙ্গে পা মেলালেন র্যাম্পে।
মিমি চক্রবর্তী অবশ্য ইউভের কালেকশন পরলেও র্যাম্পে পা রাখেননি। তবে নুসরতের মনে যে অনেকদিনই এমন ইচ্ছে ছিল তার গল্প বললেন মিমি। অভিনেত্রী উষসী সেনগুপ্তর সুন্দর সঞ্চালনায় শো’টি অন্য মাত্রা পেয়েছিল।
প্রথম রাউন্ডে ছিল প্যালাজো ক্রপ টপ আর ট্রান্সপারেন্ট জ্যাকেটের কম্বিনেশনের চমক। ঠিক ওয়েস্টার্ন প্যালাজো নয়, পুরনো দিনের সারারা ধরনের প্রচুর ঘেরওয়ালা প্যালাজো। আর সি থ্রু জ্যাকেটের কাটও ছিল অভিনব। ক্যাজুয়াল পার্টিওয়্যার হিসেবে ইয়াং জেনারেশনের পছন্দ হবেই।
দ্বিতীয় রাউন্ডে ছিল লেহেঙ্গা চোলির সম্ভার। থ্রি ডি এমব্রয়ডারি উইথ মিরর ওয়ার্ক। খুব সুন্দর।
তৃতীয় রাউন্ডে গাউন, কিন্তু প্যাটার্নে ভারতীয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া। রং সাদা, অফ হোয়াইট, বেজ, ক্রিমিশ ইয়ালো। সরোস্কি স্টোন আর মুঘল পেন্টিংয়ের মিশ্রণে অভাবনীয় শিল্পসুষমা। জর্জেট, শিফন, অরগ্যাঞ্জা, লিনেন, ক্রেপ আর নেটের তরঙ্গে উত্তাল হল র্যাম্প।
চতুর্থ রাউন্ডে ডিসকো দিওয়ানের সুরে নৃত্যের ভঙ্গিমায় এলেন মডেল কন্যারা। রেডি শাড়ি আর লেহেঙ্গা শাড়ির কালেকশন চোখ ধাঁধানো।
শেষ রাউন্ডে রঙের বন্যা। ঘাঘরা চোলিতে বিদ্যুতের ঝলক। দেশি গার্লের সুরের ছন্দে পা মিলিয়ে র্যাম্পে স্বয়ং নুসরত। মুগ্ধ দর্শকদের আরও মুগ্ধ করে বললেন, তাঁর আত্মজা ইউভের কথা। সবশেষে রঙ্গোলির তিরিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে কেক কাটলেন স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির সঙ্গে। তখন তারকার আলোয় ঝলমল করছে পুলসাইড। জুন, তনুশ্রী, পায়েল, সৌরসেনী, পরমব্রত...সব্বাই শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিলেন নুসরত-নিখিলকে।