সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
আমরা বাইবেলে পরিষ্কারভাবে দেখতে পাই, অন্যান্য সত্যদ্রষ্টা মহাপুরুষদের ন্যায় খ্রীস্ট ত্যাগের আদর্শ প্রচার করেছেন। যদি ভগবান চাও তবে বিত্তদেবতাকে ছাড়তে হবে। রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ ও অন্যান্য অবতারদের মতো খ্রীস্টের বাণীও সার্বজনীন। বৈরাগ্যহীন আধ্যাত্মিক জীবন অসম্ভব। তাঁর আত্মকথা: ‘কেউ যদি আমার অনুগামী হতে চায় তবে সে প্রথমে নিজেকে ভুলে যাক এবং নিজের দুঃখকষ্টরূপ ক্রুশ কাঁধে নিয়ে আমাকে অনুসরণ করুক। কারণ কেউ যদি নিজের প্রাণ বাঁচাতে চায় তবে সে তা হারাবে; আর কেউ যদি আমার জন্য প্রাণ হারায় তবে সে অনন্তজীবন লাভ করবে। কোন মানুষ যদি নিজের প্রাণ হারিয়ে নিখিল বিশ্ব পায় তবে তাতে কি লাভ? নিজের প্রাণের বিনিময়ে মানুষ কি দিতে পারে?’
এই ‘নিজেকে ভুলে যাওয়ার’ ও ত্যাগের প্রকৃত অর্থ কি? এর অর্থ এ নয় যে জগৎ এবং কর্তব্যাদি থেকে পলায়ন। এর অর্থ হচ্ছে ‘আমি’ ‘আমার’ রূপ স্বার্থপরতা ত্যাগ। এর মানে হচ্ছে ভগবানকে মন, প্রাণ ও হৃদয় দিয়ে ভালবাসা। শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন: ‘ভক্ত কেন ভগবানের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করে? পতঙ্গ আলো দেখলে আর অন্ধকারে ফেরে না; পিপড়া চিনির স্তূপে মরবে তবুও ফিরবে না। তেমনি ভক্ত কোন কিছু ভ্রূক্ষেপ না করে সচ্চিদানন্দ লাভের জন্যে আনন্দে প্রাণ দেয়।’ সুতরাং আমি তোমাদের বলছি: জীবনের ভাবনা ছেড়ে দাও। খাওয়া-পরার চিন্তা কোরো না। আহার থেকে জীবন এবং বসন থেকে দেহ কি শ্রেষ্ঠ নয়?
আকাশের পাখীদের দিকে তাকিয়ে দেখো—তারা বীজ বোনে না, শস্য কেটে গোলায় মজুত করে না; তবুও স্বর্গীয় পিতা তাদের আহার যোগান। তোমরা কি পাখীদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ নও? তোমাদের মধ্যে কি কেউ চিন্তার দ্বারা নিজেকে এক হাত লম্বা করতে পার? বস্ত্রের জন্য ভাবনা কি? বাগানের লিলি ফুলের গাছগুলিকে দেখো—তারা কেমন বাড়ে। তারা পরিশ্রম করে না, কাপড় তৈরী করে না।