সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
শুধু বিচারশীলতাই মানুষের একমাত্র বৈশিষ্ট্য তা তো নয়। উদ্ভিদ, পশু ও মানুষের মধ্যে কতকগুলো গুণ অবশ্যই আছে যেগুলো আমরা প্রাণধর্ম ও জীবনধর্ম নামে অভিহিত করতে পারি। প্রাণধর্মের চেয়ে জীবন ধর্মশব্দটা অধিক অর্থবহ। যেমন অন্ন জলের ওপর নির্ভরশীল দেহের পক্ষে অকর্মন্যতা, অক্ষমতা, মৃত্যু, বিশ্রাম, প্রজনন, বৃদ্ধি, প্রতিকূল পরিবেশে আত্মরক্ষার তাগিদ—এইসব সাধারণ গুণ উদ্ভিদ, পশু ও মানুষ তিনেতে সমানভাবে রয়েছে। কারণ এগুলো হ’ল জৈব ধর্ম। যেখানে জীবন সেখানে এই গুণগুলো রয়েছে। উদ্ভিদে এর অতিরিক্ত কয়েকটি গুণ রয়েছে। যেমন মাটির নীচে থেকে প্রাণ রস আহরণ করা যা মানুষ করতে পারে না, পশুও পারে না। কিন্তু উদ্ভিদ মাটির নীচে থেকে এই ধরণের খাদ্য রস সংগ্রহ করে থাকে। এমন কী হাওয়া থেকেও সে খাদ্য সংগ্রহ করে। আবার হাওয়াতেই কিছুটা খাদ্য ছেড়ে দেয়। উদ্ভিদরা এই ধরনের কাজ করে, পশু ও মানুষেরা এ ধরনের কাজ করে থাকে, তবে অতটা নয়। আমরা এর নাম দিতে পারি উদ্ভিদ ধর্ম। উদ্ভিদের পক্ষে এটাই বৈশিষ্ট্য। তারপর আর একটা উদ্ভিদ ধর্ম হ’ল পা দিয়ে পান করা। যার জন্যে বৃক্ষকে সংস্কৃতে বলে ‘পাদপ’। উদ্ভিদ মানে যা মাটি ভেদ করে ওপর দিকে ওঠে। মহীরুহ মানে যা মাটির থেকে ওপরের দিকে ওঠে।
ঠিক তেমনি পশু জগতে কতকগুলো বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে। তার ভিত্তিতেই শ্রেণী বিভাজন হয়ে থাকে। কিছু জীব হ’ল মাংসাহারী, কিছু জীব অন্নভোজী। মাংসাশী যারা তারা মাছ-মাংস-ডিম খায়। প্রাকৃতিক নিয়মানুসারে মাংস কাটবার জন্যে বিশেষ ধরনের দাঁতের প্রয়োজন হয় যাকে বলি শ্বাদন্ত (canine teeth)। বিড়াল, কুকুর, বাঘ, সিংহ—এরা সব মাংসাশী জন্তু তাই এদের শ্বাদন্ত রয়েছে। আর গোরু, বানর, চমরী, হাতী—এদের শ্বাদন্ত নেই অর্থাৎ প্রকৃতির ইচ্ছা নয় যে এরা মাংসাহার করে। কিন্তু লোভী মানুষ কী করে? তার শ্বাদন্ত না থাকলেও সে সেদ্ধ করে বা অন্য কোনও উপায়ে মাংস খেতে প্রবৃত্ত হয়। এটা লোভের বশে খাওয়া। প্রকৃতির নিয়মানুসারে মানুষ মাংসাশী নয় ও মাংসাহারী হলে মানুষের মধ্যে কত শত রোগ হয়ে থাকে। নিরামিষাশী মানুষের রোগ কম হয়। কারণ সে তো স্বাভাবিক নিয়ম কানুন মেনে চলতেই অভ্যস্ত।