সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
স্বামীজীর পথ উপনিষদ্ ও গীতা-নিরপেক্ষ নহে; এই সকলই স্বামীজীর দর্শনের ভিত্তি, অতএব উহাদের সহিতও স্বামীজীর সম্বন্ধ বিবেচনা করিতে হইবে। সর্বশেষে আমাদের বিবেচ্য স্বামীজীর রচিত পরিকল্পনা। আমরা এই ভাবেই স্তরে স্তরে অগ্রসর হইতেছি। পূজ্যপাদ স্বামী বিবেকানন্দ বনের বেদান্তকে লোকালয়ে প্রতিষ্ঠিত করিতে চাহিয়াছিলেন। তাঁহার প্রচারিত নরনারায়ণ-সেবার আকর এই অদ্বৈত বেদান্ত; এবং মানব-সমাজের উন্নতির জন্য তিনি যে পন্থ নির্দেশ করিয়াছেন তাহাও এই অদ্বৈত-ভূমির উপরই প্রসারিত। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেঃ যে অদ্বৈত বেদান্তকে এককথায় বর্ণনা করিতে গিয়া আচার্য শঙ্কর বলিয়াছেন, ‘ব্রহ্ম সত্যং জগন্মিথ্যা’—সেই অদ্বৈতবাদের জগদতীত তত্ত্বের সহিত ইহ জগতে নরনারায়ণ-সেবার বা সামাজিক অভ্যূদয়ের সামঞ্জস্য হইবে কিরূপে? আধুনিককালে কোন কোন মনীষী ইহাও বলিতেছেন যে ভারতের ধর্মগুলি সংসার-বিমুখ, উহার মূলীভূত দার্শনিক মতগুলি পরিবর্তন না ঘটিলে ঐ ধর্মগুলি কিরূপে জাগতিক উন্নতির প্রেরণা দিবে?
আপত্তি দুইটি সম্পূর্ণ বিভিন্ন স্তরের হইলেও তাহাদের মধ্যে একটা মৌলিক সাদৃশ্য আছে। উভয় প্রশ্নই আমাদের মনে সন্দেহ জাগাইতেছে যে, নেতিমূলক বেদান্ত বা যে কোনও সংসারবিমুখ ধর্মমত কোন ইতিমূলক চেষ্টার খোরাক জোগাইতে পারে না। আপাতদৃষ্টিতে তাহাই মনে হয় বটে, অথচ চরম নেতিপরায়ণ অদ্বৈত বেদান্তই স্বামী বিবেকানন্দের মতবাদের এবং কার্যধারার ভিত্তি।