সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
ভালবাসার এমন একটি পর্যায় আছে যেখানে পৌঁছলে আর কোনও কিছু চাওয়ার থাকে না, কোনও কিছু পাওয়ারও থাকে না। তখন বুকটা সব সময় যেন ভ’রে থাকে, জগৎটা তুচ্ছ মনে হয়।
নিজের ভেতর থেকে মহামায়াত্বকে সম্পূর্ণ সরাতে হবে। মহামায়া হচ্ছে মোহকরী শক্তি। প্রত্যেকের ভেতরে সেটি রয়েছে। যে তার নিজের ভেতরের মহামায়াত্বটিকে বিসর্জন দিতে পেরেছে, সে আর কোন কিছুতেই মুগ্ধ হয় না।
সব সময় বালকভাবে, শিশুভাবে থাকবে, যাতে কারও অদিব্য আকর্ষণ তোমাদের প্রতি না এসে পড়ে। কেউ যখন সত্যি-সত্যি শিশুভাবে, বালকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তার মধ্যে মহামায়াত্ব থাকে না, তার মধ্যে উপেক্ষার ভাবটা স্বাভাবিকভাবেই এসে যায়, সহজ সরল ভাবেই তার সমস্ত tendency-গুলি শিশুর মতো হয়ে যায়। মানুষের ভেতরে দুই-ই আছে, ফুল আর কাঁটা। আমরা ফুলটুকু গ্রহণ করবো। কাঁটা যখন পাবো তখন কষ্ট কি হবে না? কষ্ট ঠিকই হবে, কিন্তু তাই বলে কাঁটার পরিবর্তে কাঁটা দেব না। আমরা সাধু, আমরা ফুলই দিয়ে যাব জগৎকে।
যে যা নয়, সে যদি তাই সাজে—তবে সেটা তাকে মানাবে না, কিছুতেই মানাবে না। ঘন ঘন দর্শন হয়তো অনেকেরই হয়, কিন্তু দেখা যায়, তাদের বাসনা-কামনা, লোভ-ক্রোধ কিছুই যায় নাই। সেখানে বুঝতে হবে, তার সুকৃতির জন্য ঠাকুর হয়তো তাকে একটু কৃপা করছেন, কিন্তু সেটায় তার নিজের দিক থেকে একটা ফাঁকি রয়ে গেছে।
দেখা যায়, একজন গায়িকা স্টেজে ওঠামাত্র পাবলিক থেকে আজে-বাজে গানের ফরমাশ আসে, আবার আর একজন ভজন বা শ্যামাসংগীত-শিল্পী যখন ওঠে, তখন লোকে ভজন-শ্যামাসংগীতই আশা করে তার কাছে। কাজেই শিল্পীরা যদি দিব্য দিকে নিজেদের প্রতিভাকে বিকাশ করে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেই জিনিস পরিবেশন করে, তাহলে লোকের রুচিও পালটাতে বাধ্য।
মায়ের সঙ্গে ছেলের যে সম্পর্ক, লেখকের সঙ্গে তার লেখার সেই সম্পর্ক।
মানুষকে বলে ‘সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ জীব’। কিন্তু আমার তো মনে হচ্ছে—ভগবানের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এই আকাশ, ফুল, এই বিশ্বপ্রকৃতি। এদের মধ্যে বিদ্বেষের হানাহানিটা নেই। একটা ফুল, সে তার innocence নিয়েই ফোটে, আর সুরভিটুকু নিশ্চুপে বিলিয়ে ঝরে যায়।
আমাদের ঠাকুর সত্যানন্দদেবকে আমরা দেখেছি একেবারে সহজ অবস্থায়। একেবারে সহজ স্বাভাবিক শিশুর মতোই আমরা তাঁকে দেখেছি। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন—‘শিশুর মতো দু’হাত দিয়ে জগৎটাকে ছুঁই’। আমাদের ঠাকুরকে দেখে সেই কথাই মনে হয়—যেন শিশুর মতোই দু’হাত দিয়ে সমস্ত সাধনার জগৎটাকে ছুঁয়েছেন।