আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
বৃহৎ ব্রহ্মাণ্ডেও—ব্রহ্মা, হিরণ্যগর্ভ বা সমষ্টিমহৎ প্রথমে আপনাকে নাম, পরে রূপাকারে অর্থাৎ পরিদৃশ্যমান্ জগদ্রূপে অভিব্যক্ত করেন। এই ব্যক্ত ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জগৎই রূপ। ইহাই পশ্চাতে অনস্থ অব্যক্ত স্ফোট রহিয়াছে। স্ফোট অর্থে সমুদয় জগতের অভিব্যক্তির কারণ শব্দব্রহ্ম। সমুদয় নাম অর্থাৎ ভাবের নিত্য-সমবায়ী উপাদান-স্বরূপ নিত্য স্ফোটই সেই শক্তি, যচ্ছারা ভগবান্ এই জগৎ সৃজন করেন; শুধু তাহাই নহে, ভগবান্ প্রথমে আপনাকে স্ফোটরূপে পরিণত করিয়া, পরে অপেক্ষাকৃত স্থূল এই পরিদৃশ্যমান্ জগদ্রূপে পরিণত করেন। এই স্ফোটের একমাত্র বাচক শব্দও আছে ওঁ। আর, কোনরূপ বিশ্লেষণ বলেই যখন আমরা ভাব হইতে শব্দকে পৃথক করিতে পারি না, তখন এই ওঙ্কার ও নিত্য-স্ফোট মধ্যে নিত্যসম্বন্ধ বর্ত্তমান। সুতরাং অনায়াসে মনে করা যাইতে পারে, সমুদয় নামরূপের জনকস্বরূপ ওঙ্কাররূপ এই পবিত্রতম শব্দ হইতে জগৎ সৃষ্ট হইয়াছে। তবে যদি বল যে, শব্দ ও ভাব নিত্যসম্বন্ধ বটে কিন্তু একটি ভাবের বাচক অনন্ত শব্দ থাকিতে পারে, সুতরাং সমুদয় জগতের অভিব্যক্তির কারণস্বরূপ ভাবের বাচক যে একটিমাত্র ওঙ্কারই তাহার কোন অর্থ নাই। এ কথা বলিলে আমাদের উত্তর এই, ওঙ্কারই এইরূপ সর্ব্বভাবব্যাপী বাচক শব্দ, আর কোন শব্দ এতত্তূল্য নহে। স্ফোটই সমুদয় ভাবের উপাদান অথচ উহা কোন পূর্ণ বিকশিত ভাব নহে; অর্থাৎ বিভিন্ন ভাবগুলির মধ্যে পরস্পর যে প্রভেদ তাহা যদি দূর করিয়া দেওয়া যায়, তাহা হইলে এই স্ফোটই অবশিষ্ট থাকিবে।আর যখন, যে কোন বাচক শব্দ দ্বারা অব্যক্ত স্ফোটকে প্রকাশ করিতে হইলে উহা তাহাকে এতদূর বিশিষ্ট করিয়া ফেলে যে তাহাতে আর স্ফোটকে প্রকাশ করিতে হইলে উহা তাহাকে এতদূর বিশিষ্ট করিয়া ফেলে যে তাহাতে আর স্ফোটত্ব থাকে না, তখন যে শব্দ দ্বারা উহা খুব অল্প পরিমাণে বিশেষভাবাপন্ন হয় আর যারা যথাসম্ভব উহার স্বরূপ প্রকাশ করে, তাহাই উহার সর্বাপেক্ষা প্রকৃত বাচক—ওঙ্কার, কেবলমাত্র ওঙ্কারই এইরূপ। কারণ অ, উ, ম এই তিনটি অক্ষর একত্রে “অউম্” এইরূপে উচ্চারিত হইলে উহাই সর্ব্বপ্রকার শব্দের সাধারণ বাচক হইতে পারে। ‘অ’ সমুদয় শব্দের ভিতর সর্ব্বাপেক্ষা অল্প বিশেষ ভাবাপন্ন। এই কারণেই শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলিয়া গিয়াছেন, ‘আমি অক্ষরের মধ্যে আকার।’ আর সমুদয় স্পষ্টোচ্চারিত শব্দই মুখগগ্বরের মধ্যে জিহ্বামূল হইতে আরম্ভ করিয়া স্পর্শ করিয়া উচ্চারিত হয়। ‘অ’ কণ্ঠ হইতে উচ্চারিত, ‘ম’ শেষ ওষ্ঠ শব্দ।