সন্তানের কর্ম সাফল্যে মানসিক প্রফুল্লতা ও সাংসারিক সুখ বৃদ্ধি। আয়ের ক্ষেত্রটি শুভ। সামাজিক কর্মে সাফল্য ... বিশদ
ফিরে এল এতকাল পরে সেই পুরনো প্রশ্নটাই। তখন দায় চেপেছিল বব্বর খালসার উপর। অভিযোগের তির এবারও তাদের দিকে। কারণ, বুধবারের কাণ্ডে বন্দুকবাজটি খালিস্তানি জঙ্গি এবং সে একাধিক গুরুতর অভিযোগে জেলবন্দি ছিল। মুক্তি পাওয়ার পরও সে এতটুকু বদলায়নি। নারায়ণ এখনও উগ্র খালিস্তানি নষ্টামির খুল্লাম খুল্লা সাপোর্টার! খালিস্তানি জঙ্গিদের বেলাগাম সন্ত্রাসকে কেন্দ্র করে কানাডা ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব, প্রকাশ্য সংঘাতের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। কোনও পশ্চিমা রাষ্ট্রের সঙ্গে বৎসরাধিককাল যাবৎ ভারতের এমন দ্বৈরথ স্মরণকালের ভিতরে অভূতপূর্ব। স্বভাবতই বিস্ময় জেগেছে, খালিস্তানি জঙ্গিবাদের এপিসেন্টার যে পাঞ্জাব, সেখানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের বুদ্ধি-বিবেচনা, তৎপরতা এত নিম্নমানের! একজন চেনা জঙ্গি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সটান ঢুকে পড়ল স্বর্ণমন্দিরের মতো অত্যন্ত সুরক্ষিত স্থানে। এমনকী ওই দুর্বৃত্ত পৌঁছেও যেতে পারল সুখবীর সিং বাদলের কাছে পর্যন্ত, যাঁর বিশেষ নিরাপত্তা (জেড প্লাস ক্যাটিগরি) রয়েছে! কিন্তু ওই কেন্দ্রীয় বজ্র আঁটুনি কতটা পলকা তা নিমেষে প্রমাণ করে দিল খালিস্তানি জঙ্গি চৌরা।
কানাডা এবং আমেরিকা থেকে বব্বর খালসার তরফে যখন ভারতে হামলার হুমকি চলছে লাগাতার, তখন সেই সংগঠনের প্রাক্তন সক্রিয় সদস্য চৌরার গতিবিধি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের র্যাডারের বাইরে গেল কী করে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পাঞ্জাব পুলিসকে প্রতিমাসেই নাকি নির্দেশিকা এবং ইনপুট পাঠিয়েছে, ‘খালিস্তানি জঙ্গিরা স্লিপার সেলের মাধ্যমে ফের চাঙ্গা। তাদের মদত করছে সেই আদি ও অকৃত্রিম আইএসআই।’ শুধুমাত্র এই কথা মাথায় রেখেই গুরুদাসপুরে সীমান্ত সুরক্ষা অনেকখানি বাড়ানো হয়েছে। অতএব প্রশ্ন, তার সঙ্গে নজরদারির সংগতও যে সমান জরুরি সেটা কে মনে করিয়ে দেবে, পাকিস্তান! সত্যিই বিস্মিত করেছে বুধবারের ঘটনা। সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থা যে অতিশয় দুর্বল, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল চৌরার হিম্মত। কেননা, লোকটি ২০০৪ সালের জেল ভাঙা আসামি। পরবর্তীকালে আরডিএক্স রাখার মতো গুরুতর অপরাধেও জড়িয়েছে তার নাম। এহেন ভয়ঙ্কর জঙ্গি অন্তত পাঞ্জাবের মাটিতে বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে কোন ভরসায়? ২০১৫ সালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডেরা সাচা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমকে ‘সুবিধা’ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বাদলের বিরুদ্ধে। সেজন্য ‘অকাল তখত’ তৎকালীন উপ মুখ্যমন্ত্রীকে স্বর্ণমন্দির সাফাই করার সাজা দেয়। ‘সেবাদার’ ওই উপলক্ষ্যেই পর পর দু’দিন স্বর্ণমন্দিরে যান। কুখ্যাত জঙ্গিটি তখনই বাদলকে তাক করে। শ্যেনদৃষ্টির অধিকারী পুলিসকর্মী যশবীর সিংয়ের মাধ্যমে বাদল দৈবক্রমেই প্রাণ বাঁচাতে পেরেছেন। বিপদটি ঘটে গেলে অশান্তির আগুন কী আকার নিতে পারত, ভাবতেই শিউরে উঠেছেন সবাই। অকাল তখতসহ শান্তিকামী সকলেই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি উঠেছে। এ কোনও বাড়তি চাহিদা নয়। মোদ্দা দাবি হল, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যাবতীয় গলদ দূর করতে হবে। বিশেষ নিরাপত্তার অধিকারী এক নেতার অবস্থা যদি এই হয়, তবে অনুমান করা শক্ত নয় যে—নাগরিক সুরক্ষা কোন তলানিতে এদেশে! কেন কাশ্মীরি, খালিস্তানি, মাওবাদী এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে মোদি সরকার পদে পদে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। গোটা ব্যবস্থার সঙ্গে মোদি-শাহের আস্ফালনের কোনও মিল নেই।