সন্তানের কর্ম সাফল্যে মানসিক প্রফুল্লতা ও সাংসারিক সুখ বৃদ্ধি। আয়ের ক্ষেত্রটি শুভ। সামাজিক কর্মে সাফল্য ... বিশদ
২৩ জুলাই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট ভাষণ অনুসারে, ৩ অক্টোবর এই সংক্রান্ত আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। তা নেওয়ার কথা ছিল ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। সময়সীমা পরে বাড়িয়ে করা হয় ১৫ তারিখ। সব মিলিয়ে আবেদন জমা পড়েছে সাড়ে ৬ লক্ষাধিক। ঘোষণা করা হয়েছিল যে পাইলট ফেজে মোট ২৪টি ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ২৫ হাজার যুবক-যুবতী ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাবেন। তাঁরা যে সমস্ত ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ পাবেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্যাস ও শক্তি, ধাতু ও খনি, গাড়ি, ব্যাঙ্কিং ও এনবিএফসি, ভ্রমণ ও পর্যটন প্রভৃতি। ইন্টার্নশিপের সুযোগদাতা শীর্ষ সংস্থাগুলির মধ্যে নাম রয়েছে মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা, টিসিএস, এলঅ্যান্ডটি, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, মারুতি সুজুকি, টেক মাহিন্দ্রা, ওএনজিসি, বাজাজ ফিনান্স, আইশার মোটর, ম্যাক্স লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মুথুট ফিনান্স, শ্রীরাম ফিনান্স, জুবিল্যান্ট ফুডওয়ার্কস প্রভৃতি। ইন্টার্নশিপের পর ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প, পরিকাঠামো ও কনস্ট্রাকশন, আইটি ও সফটওয়্যার, খাদ্য শিল্প (এফএমসিজি) এবং টেলিকম ক্ষেত্রে চাকরি লাভের প্রশ্নে প্রশিক্ষিতরা অনেক বেশি এগিয়ে থাকবেন বলেও কেন্দ্রের দাবি। প্রশিক্ষণ লাভের সঙ্গে ট্রেনিরা আপাতত পাবেন প্রতিমাসে ৫,০০০ টাকা স্টাইপেন্ড। এই উদ্যোগে শামিল হয়েছে যে শ’তিনেক কোম্পানি, তারা দেবে ৫০০ টাকা এবং বাকি ৪,৫০০ টাকা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। এজন্য সরকার মোট ২ লক্ষাধিক কোটি টাকা খরচ করবে। এই উদ্যোগে শামিল হওয়ার জন্য দেশের সেরা ৫০০ কোম্পানিকে সরকার আহ্বান জানায়। কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) বাবদ কোম্পানিগুলির খরচ বিচার করেই এই ভলান্টারি পার্টিসিপেশনে তাদের আহ্বান জানানো হয়।
স্কিমটি নিয়ে সরকারের তরফে টিভিতে, কাগজে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে যে হাইপ তুলে দেওয়া হয়েছে তা সাম্প্রতিককালে অভূতপূর্ব। সব মিলিয়ে যুব শ্রেণি যখন বড় আশায় বুক বেঁধে রয়েছে, তখনই যেন শীতের ঠান্ডা জল ঢেলে দেওয়া হল তাতে! কেননা, সোমবার পিএমআইএস চালু করতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী। মোদি সরকারের কর্পোরেট বিষয়ষক মন্ত্রকের একটি সূত্র মিডিয়াকে জানিয়েছে, স্কিমটি অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হল। তবে এই স্থগিতাদেশ কবে উঠবে, আশায় আশায় বসে থাকা বেকার যুবরা সত্যিই কবে প্রশিক্ষণ পর্বে প্রবেশাধিকার পাবেন, তাও এই লেখা পর্যন্ত জানানো হয়নি। স্বভাবতই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে, সরকার আদৌ প্রস্তত নয়। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডসহ চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে যুব শ্রেণির ভোট বাগানোর জন্যই কি এই কৌশল করেছিল শাসক? আড়াই বছর আগে ১০ লক্ষ সরকারি চাকরি দেবেন বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য ২০২২-এর অক্টোবর থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লাগাতার হয়েছে ‘রোজগার মেলা’। কিন্তু পরবর্তীকালে আবিষ্কার হয় যে, তার মাধ্যমে কোনও অতিরিক্ত চাকরি দেওয়া হয়নি। চিরাচরিত প্রক্রিয়ার সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র বাড়িতে না-পাঠিয়ে ঢাক ঢোল বাজিয়ে শিঙা ফুঁকেই তা দেওয়া হয়েছিল রোজগার মেলা বসিয়ে! এই সরকার নিজগুণে ফের একবার প্রকাশ করল যে, কাজকর্ম নয়, প্রচারসর্বস্বতাই তার জিয়নকাঠি। তাই উৎণ্ঠিত আবেদনকারীদের একটাই প্রশ্ন, এটা কি নিছক তারিখ বদল নাকি প্রকল্প স্থগিত? এর জবাব সরকারকেই দিতে হবে এবং দ্রুত। না-হলে কাণ্ডটি ভোজে নিমন্ত্রিতদের খিদে পেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখার মতোই অভব্যতা হয়ে দাঁড়াবে।