সন্তানের কর্ম সাফল্যে মানসিক প্রফুল্লতা ও সাংসারিক সুখ বৃদ্ধি। আয়ের ক্ষেত্রটি শুভ। সামাজিক কর্মে সাফল্য ... বিশদ
এনএসও-র এই বক্তব্যকে আরও উস্কে দিয়েছে দেশের কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টস বা সিজিএ-র দেওয়া তথ্য। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি আর্থিক বছরে বাজেট পেশের সময়ে সরকার জানিয়ে দেয়, কোষাগারের ঘাটতি জিডিপির কত শতাংশের মধ্যে রাখা হবে। চলতি আর্থিক বছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল জিডিপির ৪.৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ১৬ লক্ষ ১৩ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। সিজিএ জানিয়েছে, ইতিমধ্যে প্রথম সাত মাসে আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ফারাক দাঁড়িয়েছে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৪৬.৫ শতাংশ। এর অর্থ, এই আর্থিক বছরের বাকি পাঁচ মাসে কোষাগারের ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখতে হয়তো ব্যাপক হারে প্রকল্প ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটবে কেন্দ্রীয় সরকার। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে মূলত গরিব মধ্যবিত্তের উপর। তার মানে, একদিকে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারির মতো জ্বলন্ত সমস্যাগুলির সমাধানে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার, এর জেরে মার খাচ্ছে শিল্পের উৎপাদন, অন্যদিকে আয়-ব্যয়ের মধ্যে ঘাটতি ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখতে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ ছাঁটাইয়ের রাস্তায় হাঁটতে চাইছে সরকার। এর পরেও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বছর শেষের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৭.২ শতাংশ হবে বলে অসত্য আশ্বাস দিয়ে চলেছেন! আসলে মোদি জমানায় অনেক সত্যকেই আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে বারবার। কখনও কোভিড সময়কালকে ঢাল করা হয়েছে, কখনও বা রিপোর্ট চেপে রেখে প্রত্যাশার পারদ চড়ানো হয়েছে। স্বপ্ন দেখানো হয়েছে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির। যদিও ২০১৯ সালে সরকারি তরফে যে আর্থিক সেন্সাস হয়েছিল তার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, দেশের আর্থিক পরিস্থিতি যে আদৌ আশাব্যঞ্জক নয় তা কি সেই রিপোর্টেই উল্লেখ ছিল? তাই তা ধামাচাপা দিয়ে রেখে ফের আগামী এপ্রিলে আর্থিক সেন্সাস শুরু করার তোড়জোড় চলছে?
লজ্জার কথা হল, এই জিডিপিকে দেখিয়েই কেন্দ্রের শাসক দল লম্বাচওড়া ভাষণ দেয়। জিডিপির পরিমাপ যে কোনও দেশের আর্থিক স্বাস্থ্য বোঝার মাপকাঠি। যে দেশে জিডিপির হার যত বেশি অর্থনৈতিক পরিভাষায় সে দেশের আর্থিক অবস্থা তত ভালো বলে মনে করা হয়। মোদিবাহিনী গর্ব করে বলে, মোট জিডিপির অঙ্কে দুনিয়ায় পাঁচ নম্বরে রয়েছে ভারত। এই দাবির মধ্যে কোনও অতিরঞ্জন নেই। কিন্তু এই তথ্যের আড়ালেই লুকিয়ে রয়েছে আসল চেহারাটা। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মাথাপিছু জিডিপির হিসাবে ভারত রয়েছে ১৪০-এরও পরে! মোদি সরকারের বদান্যতায় এদেশে জিডিপি যে অতি ধনী ৩-৪ শতাংশ শ্রেণির সম্পদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, এই তথ্যই তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তেলা মাথায় তেল দেওয়ার মন্ত্রেও জিডিপির হার বাড়াতে ব্যর্থ এই সরকার। কারণ, অর্থনীতির প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই সরকারের ব্যর্থতা একে একে সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে।