গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের তিনটি দফা ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। আজ, সোমবার নেওয়া হবে চতুর্থ দফার ভোট। ইতিমধ্যেই রাজ্যে রাজ্যে বিভিন্ন দল যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানে মহিলাদের ঠাঁই হয়েছে ভীষণ কম। অতএব সহজ অনুমান এই যে, পরবর্তী লোকসভাতেও যথারীতি পুরুষেরই আধিপত্য প্রতিষ্ঠার আয়োজন চলেছে। প্রথম তিন দফায়, বেশিরভাগ রাজ্যে ভোটদানের হার সন্তোষজনক নয়। তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ছবি ধরা পড়েছে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজ্য গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, তৃতীয় দফাতেও ভোট পড়েছে ৬৬ শতাংশের কম। এই চিত্রের মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে অসম (৮৫.৪৫), পশ্চিমবঙ্গ (৭৭.৫৩), গোয়া (৭৬.০৬) প্রভৃতি কয়েকটি রাজ্য। ৭ মে তৃতীয় দফা পর্যন্ত বেশিরভাগ আসনের (২৮৫) ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। আজ চতুর্থ দফায় নেওয়া হবে ৯৬টি আসনের ভোট। স্বভাবতই, নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলিও চিন্তায় আছে ভোটপ্রদানের হার নিয়ে। তাপপ্রবাহ উধাও। গরম বেশ কমে গিয়েছে। তাই সবাই ভাবছেন, ভোটপ্রদানে খরা কি কাটতে চলেছে? উত্তরের জন্য চতুর্থ দফার ভোট সাঙ্গ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে বহু ক্ষেত্রেই মুখরক্ষা করে চলেছেন মহিলারা। এবারও তাঁদের মধ্যে বেশ আশাব্যঞ্জক ভোটদানের উৎসাহ দেখা গিয়েছে। বিশেষত বাংলায় প্রথম দুটি দফার মতো তৃতীয় দফাতেও ভোটদানের হারে পুরুষদের কার্যত ধরাশায়ী করেছেন বাংলার মেয়েরা। তৃতীয় দফায় পুরুষদের তুলনায় অন্তত ১১ শতাংশ বেশি ভোট দিয়েছেন তাঁরা। অনেকের মতে, লোকসভা নির্বাচনের ইতিহাসে এই প্রথমবারের জন্য মহিলাদের এতখানি অগ্রণী ভূমিকায় পাওয়া গিয়েছে।
আইনসভায় ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ইতিবৃত্ত মনে রাখার মতো। বিস্তর জলঘোলা করার পর পার্লামেন্টে বিল পাস হলেও সংরক্ষণের সুবিধা ভারতীয় নারী বাস্তবে কবে পাবেন? সংশয় এখনও কাটেনি। অন্যদিকে গহকোণ থেকে কর্মক্ষেত্র, রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব পর্যন্ত প্রায় সর্বত্র জারি রয়েছে বৈষম্যের ‘ঐতিহ্য’। তাহলে মহিলারা ভোটমুখী হতে যাবেন কোন আনন্দে? তাই মেয়েদের প্রতি বঞ্চনা, বৈষম্য দূর করার কথা আন্তরিকতার সঙ্গেই ভেবে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় একে একে চালু হয়েছে কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পর্যন্ত অনেকগুলি প্রকল্প। বাংলায় নারীর সশক্তিকরণের সদিচ্ছা ধরা পড়েছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত গঠনেও। বিধায়ক ও সাংসদ সংখ্যার বিচারেও বাংলার শাসক দল রেখেছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তৃণমূলের লোকসভার প্রার্থী তালিকা বলে দিচ্ছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিয়েও মমতার দলই আসলে ‘পার্টি উইথ আ ডিফারেন্স’। তারই ইতিবাচক প্রভাব এবার বাংলাজুড়ে বুথে বুথে ভোটদান চিত্রে। সব দলের উচিত, লম্বা-চওড়া ভাষণ ছেড়ে নারীর ক্ষমতায়নে যথার্থ আন্তরিক হওয়া।