গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মোড়ার গ্রাম। বন-জঙ্গলে ঘেরা সুন্দর পরিবেশ। এই অঞ্চলের একটি অংশ আদিবাসীপাড়া নামে পরিচিত। জগন্নাথ, ঝুমারা আদিবাসী পরিবারের সদস্য। বাংলার বাইরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের উপর অত্যাচারের খবর তাঁরা পড়েছেন। মন কেঁদে উঠেছে, চোখ থেকে জল ঝরেছে। কিন্তু বাংলায় এমন একটি গ্রামে তাঁরা বসবাস করছেন, যেখানে সংস্কৃতির পীঠস্থান বিষ্ণুপুরের সঙ্গে তাঁরা একাত্ম্য হয়ে গিয়েছেন। তাঁদেরও আপন করে নিয়েছে গোটা এলাকা। জগন্নাথবাবু বললেন, আমাদের এখানে সকলে মিলেমিশে খুব ভালো আছি। একসঙ্গে উৎসব-অনুষ্ঠানে অংশ নিই। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বর্ধিত টাকা এই মাসেই পেয়েছেন, সেটাও জানিয়ে দিলেন ঝুমাদেবী।
ওই আদিবাসী পাড়ায় দেখা গেল, মাটির দেওয়ালের উপর তৃণমূল এবং বিজেপির পোস্টার লাগানো। জগন্নাথবাবু বললেন, আমার বাড়ির দেওয়ালেও পোস্টার আছে। ভোটের সময় এটা তো স্বাভাবিক। তবে উঠোনে যেখানে খাটিয়ায় বসে কথা হচ্ছিল, সেখান থেকেই হাত দিয়ে জগন্নাথবাবু দেখিয়ে দিলেন, এই মাটির বাড়িতে রাজনৈতিক দলগুলিকে পোস্টার আটকাতে নিষেধ করিনি। আশা একটাই, ভোট মিটলে বাড়ির সুরাহা যেন হয়।
নরেন্দ্র মোদির সরকার টাকা দিচ্ছে না, তার জন্য বাড়ি তৈরি করা যাচ্ছে না, রাজ্য সরকারের এই অভিযোগের কথা তাঁর কানেও পৌঁছেছে। প্রত্যাশার সুরে জানালেন, কোনও প্রতিশ্রুতি নয়। যে আমাদের দেখবে, তাঁদেরই সরকারে আসা উচিত। আশা করি, নতুন সরকারের হাত দিয়ে আমাদের ঘরের সমস্যা মিটবে।
এই গ্রামের আগেই পড়ে চৌকান গ্রাম। সেখানে একটি বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, মেশিনে বোরো ধান ঝাড়তে ব্যস্ত তিনজন। আর মাটিতে পড়ে থাকা ধান একত্র করছেন দু’জন। আর দু’জন বিচালির আঁটি দিয়ে গোলা ঘর তৈরি করছেন। একটা স্নিগ্ধ, প্রাণচঞ্চল ছবি। কাজের ফাঁকে অবনী লোহার, আলো লোহার, শুভদ্রা লোহাররা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে মাস পয়লাতেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা আসে। আসে বার্ধক্য ভাতা। শুধু প্রশ্ন একটাই, ঘরের সুরাহা কবে হবে? অবনীবাবু বললেন, আমাদের খেটে খেতে হয়। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ভাতা ও কৃষি সাহায্য যে উপকার এসেছে, তা বলতেই হয়। শুধু ঘরটা করে দিক, তাহলেই নিশ্চিন্ত।