উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
ভোট প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের খরচ বেঁধে দেয় নির্বাচন কমিশন। তাতে আবার নানা ভাগ থাকে। নিয়ম হল, এই বেঁধে দেওয়া অর্থ দিয়েই একটি দল বা প্রার্থী প্রচারসহ যাবতীয় কাজ করবেন। ভোটের পর সব প্রার্থীকেই হিসেব নিকেশ লিখিতভাবে জানাতেও হয়। প্রার্থী ও দলগুলি নিয়ম মেনে চলছে কি না তা দেখার জন্য আলাদা পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করে কমিশন। এসবই অবশ্য আদর্শ আচরণবিধির কথা। অনেকটা সদা সত্য কথা বলিবার মতো। কিন্তু ক’টি দল বা ক’জন প্রার্থী অক্ষরে অক্ষরে তা মেনে চলেন? ভোটে রাজনৈতিক দলকে এবং প্রার্থীদের ‘সাহায্য’ করতে টাকার ঝোলা নিয়ে নেমে পড়েন ব্যবসায়ীদের অনেকে। এরসঙ্গে অবশ্যই তাঁদের বিশেষ স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই এই বিষয়টি আর এখন অভিযোগ নয়, একেবারেই সত্য ঘটনা। ভোট যেন অনেকের সামনে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এনে দেয়। বিগত একাধিক নির্বাচনে টাকা বোঝাই গাড়ি বা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দিয়ে প্রচুর কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। ওই টাকাগুলি কোন ‘সাধু’ উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হতো তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আমাদের দেশের বহু মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নীচে। ভয় দেখিয়ে বা টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার বিষয়টি খুব একটা কষ্টসাধ্য নয় কোনও প্রার্থী বা রাজনৈতিক দলের কাছে। ভোটারকে প্রভাবিত করার এমন অপচেষ্টা রুখতেই নির্বাচন কমিশন এবং আয়কর দপ্তরের কড়া পদক্ষেপ জরুরি। যাতে নগদে কিংবা অন্য কোনও উপায়ে অবৈধ লেনদেন বন্ধ করা যায়। এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ যাতে কালো টাকা বা বেআইনি লেনদেনের হদিশ দিতে পারেন সেজন্য ইনভেস্টিগেশন উইং আয়কর দপ্তরে অস্থায়ী সেল চালু করেছে, যা ২ মে ভোট গণনা পর্যন্ত চালু থাকবে। উদ্যোগকে স্বাগত। তবে সাধারণ মানুষ যাতে নির্ভয়ে এ কাজে এগিয়ে আসতে পারেন তার জন্য তাঁদের নিরাপত্তার দিকটিতেও বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন। সেই ভরসাটুকু দিক নির্বাচন কমিশন।
গণতন্ত্রে ভোটারদের গুরুত্ব অপরিসীম। তাঁদের ভোটে প্রার্থী নির্বাচিত হন, অন্য প্রার্থী হন পরাজিত। নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনা করলে ভোটারের আস্থা নিঃসন্দেহে অনেকখানি বেড়ে যায়। যে-কোনও দায়িত্বশীল নাগরিকই চান ভোটে কালো টাকার রমরমা বন্ধ হোক। বন্ধ হোক ভোটারকে প্রলোভিত করার যাবতীয় অপপ্রচেষ্টা। নির্বাচন কমিশনের সক্রিয়তাই পারে ভোটে কালো টাকার ব্যবহার রুখতে। আশা করা যায়, ভোটকেন্দ্রিক খরচের উপর কড়া নজরদারি চালিয়ে কমিশন মানুষের মনে এ ব্যাপারে জেগে ওঠা যাবতীয় সংশয়ের অবসান ঘটাবে। মানুষ চায় না অতীতের কয়েকটি নির্বাচনের মতো এবারেও কালো টাকার ‘খেলা’ হোক। সাধারণ মানুষ ভোটে টাকার বেআইনি লেনদেনের হদিশ দিতে তখনই আগ্রহী হবেন যখন তাঁরা দেখবেন তাঁদের নিরাপত্তার জন্য নিশ্ছিদ্র প্রহরার ব্যবস্থা করেছে কমিশন। না-হলে যাবতীয় ভালো উদ্যোগ মাঠে মারা যাবে।