মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
টাকার প্রশ্ন।
এবার বাজেটে স্বল্প সঞ্চয়ে বিনিয়োগ করার মতো কোনও উৎসাহ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে মেলেনি। উপরন্তু নয়া কর কাঠামোর কথা ঘোষণা করেছে সরকার। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছিল, মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীদের জন্য দারুণ খবর। খটকা লাগল, যখন অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, আগের নিয়মেও কর দেওয়া যাবে। নতুন নিয়মে আয়কর দিলে কোনও ছাড় পাওয়া যাবে না। আগের নিয়ম মেনে কর দিলে অনেক ছাড়ই মিলবে। এর থেকে প্রথম যে প্রশ্নটা মনে আসে, তাহলে কি নতুন কাঠামোয় লাভ হবে না? অর্থমন্ত্রী দাবি করেছেন, নয়া নিয়মে কোনও পরামর্শদাতার কাছে যেতে হবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্রনাট্য যে ক্লাইম্যাক্সে গিয়েছে, তাতে আগে যাঁরা ট্যাক্স পরামর্শের জন্য কারও কাছে যেতেন না, তাঁরাও এবার যাবেন। তার উপর নতুন আশঙ্কার কথা শুনিয়ে রেখেছেন নির্মলা। বলেছেন, ধীরে ধীরে আয়কর থেকে যাবতীয় ছাড় তুলে দেবে বলে সরকারের ভাবনা চিন্তা রয়েছে। এবার প্রশ্ন হল, যদি গৃহঋণ নিয়ে আয়করে কোনও সুবিধা না মেলে, তাহলে মানুষ সেদিকে ঝুঁকবে কেন? স্টেট ব্যাঙ্ক এই মুহূর্তেও দেশের সবচেয়ে ভরসাযোগ্য লেনদেন তথা সঞ্চয়ের মাধ্যম। এবং অনুসরণযোগ্যও বটে। ন্যূনতম যে হারে ব্যাঙ্ক লোন দিতে পারে, সেই এমসিএলআর কমিয়েছে তারা। আশা করা যায়, অন্য ব্যাঙ্কগুলিও সেই পথে হাঁটবে। একইভাবে ফিক্সড ডিপোজিটের ক্ষেত্রেও কিন্তু অন্য ব্যাঙ্কগুলির বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দেখানো পথে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এমনিতেই সেভিংস অ্যাকাউন্টে সাধারণ মানুষ এখন টাকা রাখে শুধু বাড়িতে থাকলে চুরি ডাকাতি হয়ে যাওয়ার ভয়ে। যাঁরা কোথাও বিনিয়োগ করে রাখতে পারেন, তাঁরা আর সেভিংসের ভরসায় থাকেন না। কিন্তু একটা বিষয় সরকারের অবশ্যই ভাবা উচিত... স্বল্প সঞ্চয় কমলে সামাজিক সুরক্ষায় আঘাত আসবে। একজন মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী তাঁর বেতন থেকে বাঁচানো টাকা ফিক্সড ডিপোজিট, এমআইএস, জীবনবিমা করে রাখেন ভবিষ্যতের কথা ভেবে। যাতে বৃদ্ধ বয়সে দুবেলা দুমুঠো খাবার অন্তত জুটে যায়। এখন তো এলআইসি বেসরকারিকরণের তির ছুঁড়ে জীবনবিমায় টাকা জমানোর ব্যাপারেও ভয় ধরিয়ে দিয়েছে মোদি সরকার। পাশাপাশি স্বল্প সঞ্চয়ে বা আরও স্পষ্ট করে বললে ফিক্সড ডিপোজিটে গ্রাহক সংখ্যা কমলে ব্যাঙ্কগুলিকে সেভিংস ও কারেন্ট অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ও তার আমানত বাড়াতে হবে। না হলে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়বে তারা।
কিন্তু তাতেও মানুষের দুর্ভোগ কমবে না। কারণ, স্বল্প সঞ্চয়ে ধাক্কা যদি সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক ফল নিয়ে আসে, তার দায় কে নেবে? ভবিষ্যতের ভিত শক্ত না করে যে অন্ধের দৌড় বর্তমান বিজেপি সরকার শুরু করেছে, তার ফল আশঙ্কাজনক। এ কিন্তু আসলে অভিমন্যুর চক্রব্যূহে প্রবেশ করার মতো। ফেরার রাস্তা জানা নেই...।