মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
মোদি সরকারের নোটবন্দির জেরে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দেশের মানুষকে। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মারাও গেছেন অনেকে। তাঁরা কিন্তু দেশেরই নাগরিক। সরকারের নোটবন্দির নীতির কারণে নাগরিকদের যে হয়রানি হয়েছে এবং যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের জন্য এতটুকু সহানুভূতি দেখায়নি এই সরকার। এই মৃত্যুগুলির দায়ও নেয়নি মোদি সরকার। অথচ এই নাগরিকদের ভোটেই কিন্তু মোদি সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এটা যেন তারা ভুলে না যায়। দেশের এই নাগরিকরা বিশ্বাস করেছিলেন যে তাঁদের জন্য ভালো কিছু হবে। প্রত্যাশা ছিল আচ্ছে দিনের। অর্থাৎ সুদিন ফিরবে। সেই স্বপ্নই দেখানো হয়েছিল তাঁদের। তাই নোটবন্দির সময়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও অনেক নাগরিককে বলতে শোনা গেছে, যদি কিছু ভালো হয় তার জন্য এই কষ্টটুকু সহ্য করতে তাঁরা রাজি। কিন্তু ভালো হয়নি। হয়নি তাঁদের স্বপ্নপূরণ। নোটবন্দির উদ্দেশ্য যে ব্যর্থ তা এখন প্রমাণিত। দেশ কালো টাকা মুক্ত হয়নি, এখন জাল নোটের রমরমা। আর জঙ্গিদের হাতে টাকা নেই এমনটাও নয়। সামগ্রিকভাবে আচ্ছে দিনের স্বপ্ন এখন দুরাশা মাত্র। দেশের অর্থনীতির হাল খুবই সঙ্গীন। বাজারে নগদের জোগান বাড়াতে সরকার এখন মরিয়া। অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধির জেরে দেশের মানুষের হাঁসফাঁস দশা। এর দায় কার? বাজেট ভাষণে সবকা বিশ্বাসের যে কথা বলা হচ্ছে তাতে দেশের আমজনতা এই সরকারের উপর বিশ্বাস ভরসা রাখবেন কীভাবে?
মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে মোদি সরকার। চাতুরি আর কৌশলের আশ্রয়ে বিভাজনের রাজনীতিতে মেতে উঠেছে এই শাসককুল। ফের তাদের নীতির কারণেই দেশে আবারও একেক পর এক দুঃখজনক অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে চলেছে। যার সাম্প্রতিক উদাহরণ হল, এই রাজ্যে পার্ক সার্কাসে অবস্থানে বসা এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু। এনআরসি, সিএএ’র আতঙ্ক মানুষকে যে কতটা তাড়া করে বেড়াচ্ছে তা এই ঘটনাতেই স্পষ্ট। শাহিনবাগই হোক বা পার্কসার্কাস—এনআরসি, সিএএ-র বিরোধিতায় বহু মানুষ আন্দোলনের অনড়, পথে নেমেছে। এনআরসি আতঙ্কে দেশের একের পর এক নাগরিকের মৃত্যু হলেও এই সরকারের কোনও হেলদোল নেই। সরকারি নীতি বা সিদ্ধান্তের জেরে দেশের নাগরিকদের মৃত্যু হলেও তাদের যেন কিছু যায় আসে না। তারা অনড়। তাই এইসব মৃত্যুর ঘটনার দায়ভার নিতেও কেন্দ্রের সরকার প্রস্তুত নয়। সহমর্মিতা জানানোর মানসিকতাটুকুও নেই কেন্দ্রের শাসকদলের সমর্থকদের। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের যুবকদের কর্মসংস্থানের কোনওরকম দিশা না দেখিয়ে, মূল্যবৃদ্ধিরোধের ব্যবস্থা না নিয়ে জনসম্পদ বেচে দেওয়ার উদ্যোগে তারা এখন মাতোয়ারা। এভাবেই কি গড়ে উঠবে বিকাশের ভারত? সহানুভূতির ভারত? কবে ঘুম ভাঙবে নরেন্দ্র মোদি সরকারের?