বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মা এই অন্যায় আর চালাতে দিতে রাজি নন। তাঁর নির্দেশে প্রতি রাতে কলকাতাজুড়ে ‘নাকা চেকিং’ চালু হয়েছে। আর এই নির্দেশ মানতে গিয়েই সোমবার বিশেষ মূল্য দিতে হল এক ট্রাফিক কনস্টেবলকে। ঘটনাস্থল কড়েয়া থানায় সৈয়দ আমির আলি অ্যাভেনিউ বেকবাগান মোড়। কড়েয়া থানা এবং ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের পুলিসকর্মীরা ওই বিশেষ চেকিং চালাচ্ছিলেন রাত পৌনে ১১টা নাগাদ। হেলমেট না-পরা এক চালককে থামাতে গেলে সে হঠাৎ তার বাইকের গতি বাড়িয়ে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। সামনে একটি অটোরিকশ এবং অন্য একটি গাড়ি এসে পড়ায় বাইকচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ধাক্কা মারে এক বৃদ্ধাকে। বৃদ্ধা রাস্তায় পড়ে গিয়ে আঘাত পান। এই অবস্থায় বাইকচালক পালাতে আরও মরিয়া হয়ে ওঠে। তখন কর্তব্যরত এক ট্রাফিক কনস্টেবল ছুটে গিয়ে বাইকটিকে পিছন থেকে টেনে ধরেন। বাইকটি আরও গতি বাড়িয়ে ওই কনস্টেবলকে টেনে হেঁচড়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে শেষমেশ পালিয়েই যায়। বলা বাহুল্য, ওই পুলিস কর্মীটি এর ফলে গুরুতর জখম হয়ে আপাতত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তপন ওঁরাও নামে ওই সাহসী কর্তব্যপরায়ণ পুলিসকর্মীর প্রশংসা প্রাপ্য। একইসঙ্গে প্রশ্ন ওঠে তাঁর সহকর্মীরা সব দেখেও সামান্য এক বাইক আরোহীকে ঘটনাস্থলেই আটকাতে পারলেন না কেন? তাঁরা কী করছিলেন? তাঁদের সদিচ্ছা এবং ট্রেনিংয়ের মান নিয়ে এই শহর প্রশ্ন তুললে তা কি খুব অন্যায্য হবে?
আসলে বেপরোয়া বাইক চালানোর ব্যাধিটা ক্রনিক। আজ হঠাৎ সারাতে গেলে সারবে কেন? বছরের পর বছর পুলিসের একটি অংশ জেগে ঘুমিয়েছে। আজ যে সে হঠাৎ সত্যি সত্যিই জেগে উঠেছে, আইনভঙ্গকারীরা সেটা বুঝতে পারছে না। তাই এই সংঘাত। পুলিসের উচিত, এতে ভয় না-পাওয়া; যে ইচ্ছে তারা দেখাচ্ছে সেটাকে সদিচ্ছায় রূপান্তরিত করা। তাহলে রং নির্বিশেষে সমস্ত বাইক চালক এবং আরোহীকেই আইনের পথে আনা সম্ভব হবে। শুধু বাইক নয়, বেপরোয়া গাড়ি এবং অটোচালকদের ক্ষেত্রেও ট্রাফিক আইন যথাযথরূপে বলবৎ হওয়া জরুরি—শুধু যাত্রী বা পথচারীদের স্বার্থে নয়, ওই অভিযুক্তদেরও কল্যাণের জন্য। কারণ, আইনভাঙার কারণে অনাবশ্যক দুর্ঘটনা ঘটে গেলে স্বয়ং চালকটিকেও ভাগ্য রেয়াত নাও করতে পারে। এইসঙ্গে কানে মোবাইল ফোন/ হেডফোন গুঁজে কমবয়সি ছেলেমেয়েদের বাসে ওঠানামা করা কিংবা ওইভাবে অন্যমনস্ক হয়ে ব্যস্ত রাস্তা পেরনো অথবা সেই রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়ার বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ বাঞ্ছনীয়। পথনিরাপত্তা নিয়ে এত বিজ্ঞাপন এবং মাঝেমধ্যে ট্রাফিক সপ্তাহ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা তবেই সার্থক হয়ে উঠবে, নতুবা অনেকটাই ফালতু লোক দেখানো ব্যাপার বলে গণ্য হতে পারে।