সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
কেন এই পরিকল্পনা? রেলের একটি সূত্রের বক্তব্য, প্রান্তিক স্টেশন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের জেনারেল কোচে ওঠার সময়ে বহু ক্ষেত্রেই নানা বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে থাকে। কে আগে কোচে উঠে সিটে বসবেন, তা নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা চলে যাত্রীদের মধ্যে। কোনও উৎসব বা সভা-সমিতি থাকলে সেই ভিড় বেড়ে যায় আরও। তাতে ট্রেনে ওঠার সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, জেনারেল কোচের আসন নিয়ে নানা অসাধু চক্রও কাজ করে বলে অভিযোগ। এসব আশঙ্কা দূর করতেই ‘বায়োমেট্রিক’ ব্যবস্থা পরীক্ষামূলকভাবে দেখা হচ্ছে।
কীভাবে কাজ করছে এই ব্যবস্থা? রেল সূত্রের খবর, কোনও যাত্রী যখন বাছাই করা ট্রেনের জেনারেল কোচে চড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে টিকিট কাটতে যাচ্ছেন, সেই সময় ‘বায়োমেট্রিক মেশিন’ দিয়ে তাঁর আঙুলের ছাপ নেওয়া হচ্ছে। তাতে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর জন্য নির্দিষ্ট টোকেন ইস্যু হয়ে যাবে। সংশ্লিষ্ট ট্রেনের জেনারেল কোচে যতজন যাত্রীর বসার কথা, ঠিক ততগুলি টোকেনই ইস্যু করা হচ্ছে। তাতে থাকছে ক্রমিক সংখ্যাও। প্রান্তিক স্টেশন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের জেনারেল কোচে ওঠার সময়ে ওই সংখ্যা অনুযায়ী লাইন দিয়ে দাঁড়াচ্ছেন যাত্রীরা। অনিয়ম এড়াতে গোটা পর্বটি তদারকিও করা হচ্ছে।
রেলের এক কর্তার কথায়, এই ব্যবস্থায় একদিকে যেমন জেনারেল কোচে ওঠার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে, তেমনই কোচের আসন ‘দখল’ নিয়ে অনিয়মও দূর করা সম্ভব হচ্ছে। এই ব্যবস্থার আরও একটি সুফল মিলবে বলে ধারণা রেলকর্তাদের। তাঁদের মতে, চিহ্নিত অপরাধীদের অনেক সময় আঙুলের ছাপের ‘ডেটা বেস’ তৈরি থাকে বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থাগুলির কাছে। আগামী দিনে ট্রেনে এমন কোনও ঘটনার তদন্তে অভিযুক্তকে শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে নয়া পরিকল্পনা কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারে।
গোটা বিষয়টি নিয়ে উৎসাহিত যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, ট্রেন সফরে সার্বিক নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে নয়া পরিকল্পনা কার্যকর ভূমিকা নেবে। যদিও প্রশ্ন উঠছে, আঙুলের ছাপ নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট যাত্রীর ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা বজায় থাকবে তো? পশ্চিমবঙ্গ রেল যাত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অপরেশ ভট্টাচার্য বলেন, মোটের উপর রেলের এই পরিকল্পনা ইতিবাচক। তবে কয়েকটি ইস্যু রয়েছে। প্রথমত, যাত্রীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, জনপ্রিয় দূরপাল্লার ট্রেনগুলির জেনারেল কোচে আসন সংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যাত্রী সফর করে থাকেন। কাজেই, আসন সংখ্যা বিচার করে টোকেন ইস্যু করা হলে জেনারেল কোচের সংখ্যা বাড়াতে হবে রেলকে।