ফুটবলপ্রেমীদের জন্য বছরের সেরা সময়টা আসছে। আই লিগ। একটা সময় ছিল ফেডারেশন কাপ, রোভার্স, ডুরান্ড...। এখন কিন্তু দেশের সেরা দল বলে জাত চেনাতে গেলে আই লিগের টেবলে সবার উপরে নামটা থাকতে হয়। সত্যিকারের কুলীন বলতে যা বোঝায়, ঠিক সেটাই। ফুটবল... ময়দান... গ্যালারি। মনে পড়ে যাচ্ছে সেই ছোটবেলার কথা। বাবার সঙ্গে খেলা দেখতে যেতাম। বাবা মোহন বাগান সাপোর্টার। আজীবন। সেই সময়ের আবেগ, নস্টালজিয়া এখনও ছুঁয়ে যায়। বছরের পর বছর উপভোগ করে এসেছি দুই প্রধানের মহাযুদ্ধ। মাঠে গিয়ে দেখেছি, খেলা দেখছেন শচীন কর্তা (দেব বর্মন)। দিলীপ কুমারকে দেখছি মহামেডান স্পোর্টিংয়ের মাঠে বসে খেলা দেখছেন। আবার আমার নিজেরও প্রচুর মজার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এমন হয়েছে, খেলা দেখতে যাব, অথচ টিকিট নেই। কত চেষ্টা করলাম, তাও জোগাড় হল না। সেই গোটা দিনটা এত মন খারাপ গিয়েছে যে, কাজই করতে পারিনি। আবার প্রিয় দলের গ্যালারিতে টিকিট পাইনি... কিন্তু ম্যাচ তো দেখতেই হবে! অপজিশনের গ্যালারিতেই মরিয়া হয়ে বসে পড়েছি। সে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। আমার দল গোল করলে হাততালি দিতে পারছি না। আনন্দ লুকিয়ে রাখতে হচ্ছে। একটু প্রকাশ হলেই যে মুশকিল! মেরে আধমরা করে দেবে যে! আর মার যে একেবারে খাইনি, তাও নয়। একবার মোহন বাগান-ইস্ট বেঙ্গল ম্যাচ দেখতে গিয়েই তো ভিড়ের মধ্যে পড়ে মার খেয়েছিলাম। তারপরেও ম্যাচ দেখতে গিয়েছি। ওই যে বললাম, এই আবেগকে ভাষায় বোঝানো কঠিন।
হয়তো এখন আর আগের মতো মাঠে যাওয়ার সময় পাই না, সুযোগ পাই না খেলা দেখার। সেই অর্থে আজ আমার নির্দিষ্ট কোনও পছন্দের ক্লাবও নেই। কিন্তু ফুটবলের আবেগটা ছাড়তে পারিনি। কলকাতায় থাকি বা বাইরে, খোঁজটা মোটামুখি রাখি। ডার্বি হলে এখনও কাজের ফাঁকে একবার করে স্কোরটা দেখে নিই। মোহন বাগান তো আমাকে অনেকদিন আগেই ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ দিয়েছে। সে জন্য আমি গর্বিত... ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। অন্যদিকে ইস্ট বেঙ্গলেরও শতবর্ষ। তাই আমি চাই এ বছর যে ভালো খেলবে, সেই যেন জেতে। যারা ভালো পারফর্ম করবে, তাদের হাতেই যেন ওঠে কাপ। মাঝে মধ্যে টিভিতে দেখি, এখনও কত লোক স্টেডিয়ামে ভিড় করে। গলা ফাটিয়ে প্রিয় ক্লাবকে উত্সাহ জোগায়। এই সমর্থনটা বাংলার ফুটবলের জন্য খুবই ভালো। প্রার্থনা করি, এটা যেন চিরকাল থাকে।