নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: ঐক্যের সমস্ত বার্তা তলিয়ে গেল। কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেস ফিরল আগের চেহারায়। যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে জেলায় দল দীর্ণ চেহারা নিয়েছিল সেই চিত্রেরই যেন আবার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। শনিবার দুপুরে দলের একাদশ বর্ধিত জেলা কমিটির বৈঠকে ডাকই পেলেন না দলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। অন্যদিকে রবীন্দ্রভবনে হওয়া ওই বৈঠকে হাজির থাকলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ, দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া সহ একঝাঁক প্রথম সারির নেতা। জেলার ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ অন্যান্য নেতৃত্ব উপস্থিত ছিল। আবার দেখা যায়নি রবি ঘনিষ্ঠ শ্রমিক ও কৃষক নেতাকে। এদিনের সভায় রবি, পার্থর ডাক না পাওয়াকে কেন্দ্র করে জেলায় দলের অন্দরে ফের গোষ্ঠীকোন্দল মাথাচাড়া দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পার্থপ্রতিম রায় তো এক ধাপ এগিয়ে বলেই দিয়েছেন, বিষয়টি তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাবেন। যদিও দলের পক্ষে উদয়ন গুহ দাবি করেছেন, এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই।
এদিন দুপুরে বর্ধিত বৈঠক চলাকালীন রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, বৈঠকের কথা বলাই হয়নি। অন্যবার অফিস থেকে ফোন করা হয়। শুক্রবার জেলা সভাপতির সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনি কিছুই বলেননি। জানি না কী হচ্ছে! পার্থপ্রতিম রায়, পরিমল বর্মন, খোকন মিয়াঁদেরও ডাকা হয়নি।
পার্থপ্রতিম রায় বলেন, দলের কোর কমিটির একটি গ্রুপ রয়েছে। মিটিংয়ের বিষয়ে সেখানে জানানো হয়। সেখানে কোনও মেসেজ পাইনি। জেলা সভাপতিও ফোন করেননি। বিষয়টি আমি কোর কমিটির গ্রুপে লিখেছি। রাজ্য জানতে চাইলে জানাব, ডাকা হয়নি তাই যাই নি। এতে বিভাজন হচ্ছে কি না সেটা জেলা সভাপতি বলতে পারবেন।
উদয়ন গুহ বলেন, মঞ্চ ভর্তি ছিল। সবাইকে ডাকা হয়েছিল। কারও সমস্যা থাকতেই পারে। এখনও ঐক্য রয়েছে, কোনও গোষ্ঠী নেই। এখন আসেনি বলে আগামী দিনে আসবেন না, এমন কোনও মানে নেই। কেন বিভাজন, কোথায় বিভাজন, কিসের বিভাজন? আমাকে কেউ ফোন করে বলেনি, কেউ চিঠিও পাঠাননি। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে চলে এসেছি। এটা কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ১২ জানুয়ারির পর থেকে প্রত্যেক বিধানসভায় কর্মিসভা হবে। এদিন তারিখ দিতে বলা হয়েছে। কৃষক সংগঠনকে এদিন ডাকা হয়নি। শ্রমিকদের ডাকা হবে। এদিন শাখা সংগঠনের মধ্যে ছাত্র, যুব, মহিলা সংগঠনকেই ডাকা হয়েছে। রবিবাবু তো বলেছেন তিনি ডাকই পাননি? এই প্রশ্নের উত্তরে অভিজিৎবাবু কার্যত থেমে গিয়ে বলেন, কী আর বলি! নিজস্ব চিত্র।